হযরত সায়্যিদুনা আবু মুসলিম খাওলানী (رحمة الله) এর এক দাসী তাঁর প্রতি হিংসাবশত বিষ দিতে থাকে কিন্তু এর কোন প্রভাব তাঁর উপর পড়েনি। দীর্ঘদিন যাবত বিষ প্রয়ােগ করার পর দাসী তাকে বলতে লাগল, “দীর্ঘদিন ধরে আমি আপনাকে বিষ দিয়ে আসছি। কিন্তু আপনার উপর এর কোনাে প্রভাব পড়ছে না! তিনি বললেন: “এরূপ কেন করেছ?"
সে বলল: “এজন্য যে, আপনি (رحمة الله) খুবই বৃদ্ধ হয়ে গেছেন।” তিনি ইরশাদ করলেন: আমি পানাহারের পূর্বে : "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।" পাঠ করে নিই।"
(এর বরকতে বিষ হতে নিরাপত্তা লাভ করে থাকি) তিনি তাকে আযাদ (মুক্ত) করে দিলেন। (কালইউবী, ঘটনা-৬৪, ৫২ পৃষ্ঠা)
বে-নাওয়া মুফলিছ ও মুহতাজ গদা কোন্? কে মাই,
হাহিবে জুদো করম ওয়াহফ হে কিছ কা? তেরা। (যওকে নাত)
কুমন্ত্রণাঃ বর্ণনা ও ঘটনা সমূহ থেকে এটায় প্রকাশ পাচ্ছে بسم الله শরীফ পাঠ করে যদি বিষও খেয়ে নেয়া হয় তাহলে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না কিন্তু আমরা এত বড় ঝুঁকি কিভাবে গ্রহণ করব? কেননা আমাদের বাস্তব ধারণা এই, যদিও বা বিসমিল্লাহ পাঠ করেও কোন সুস্বাদু খাবার খেয়ে নেয়া হয়, তবুও পেট খারাপ হয়ে যায়।
কুমন্ত্রণার প্রতিকার: “গুলি" দ্বারা বাঘকেও মারা যায় যদি উন্নত মানের বন্দুক দিয়ে ভালভাবে ফায়ার (FIRE) করা হয়। অনুরূপভাবে। বুঝে নিন, ওযীফা ও দোয়া সমূহ গুলির ন্যায় আর পাঠকারীর মুখ বন্দুকের ন্যায়। দোয়াতাে ঐগুলােই কিন্তু আমাদের মুখ সাহাবা (রা.) ও আউলিয়া (রহ.) এর মত নয়। যে মুখে প্রতিদিন মিথ্যা, গীবত, চুগলখােরী, গালি-গালাজ, অন্যের মনে কষ্ট দেয়া ও দূর্ব্যবহার জারী আছে, তাতে ঐ প্রভাব কোত্থেকে আসবে? আমরা দোয়াতাে করি। কিন্তু যখন সমস্যা আসে তখন বুযুর্গানে দ্বীনের নিকট গিয়েই দোয়ার আবেদন করে থাকি, কেন? এ জন্য যে, প্রত্যেকের মনের মধ্যে এ ধারণা গেঁথে আছে, পবিত্র মুখ থেকে বের হওয়া দোয়া অধিক ফলপ্রসূ হয়ে থাকে। নিঃসন্দেহে "বিসমিল্লাহ" পাঠ করে খালিদ বিন ওয়ালীদ (رضي الله عنه) নিঃসংকোচে বিষ পান করে নেন। তাঁদের জবান পবিত্র, তাঁদের অন্তর পবিত্র, তাঁদের সম্পূর্ণ অস্তিত্ব গুনাহ থেকে পবিত্র। অতএব আল্লাহ্ তাআলার পবিত্র নাম এর বরকতে বিষ প্রভাব ফেলতে পারেনি। অনুরূপভাবে হযরত সায়্যিদুনা আবু দারদা ও সায়্যিদুনা আবু মুসলিম খুলানী (رحمة الله) আপন পবিত্র মুখে আল্লাহ তাআলার পবিত্র নাম নিতেন। তাই বিষ প্রভাবমুক্ত হয়ে যেত। অন্যথায় বিষ বিষই। তা মানুষকে কোন ভাবেই ছেড়ে দেয় না। এটা এ ভীতিকর ঘটনা থেকে বুঝার চেষ্টা করুন।
“কিতাবুল আযকিয়া”তে বর্ণিত আছে: একটি হজের কাফেলা সফররত অবস্থায়ঃ একটি ঝর্ণার নিকট পৌঁছল। জানা গেল, এ জায়গায় এক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তারের ঘর রয়েছে। তাদের নিকট যাওয়ার জন্য তারা এ বাহানা বের করল, জঙ্গলের একটি লাকড়ী দিয়ে নিজেদের একজন সঙ্গীর পায়ের গােড়ালীতে আঁচড় লাগিয়ে দিল, এতে রক্ত রঞ্জিত হয়ে গেল। অতঃপর তাকে নিয়ে ঐ ঘরের দরজায় পৌছ (এভাবে) আহ্বান করল: “এখানে কি সাপে কাটার চিকিৎসা করানাে সম্ভব?” আওয়াজ শুনে একটি ছােট্ট মেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসল। সে পায়ের গােড়ালীর ক্ষত স্থান গভীরভাবে দেখে বলল: “একে সাপে কাটেনি বরং যে বস্তুর আঁচড় তার লেগেছে সেটার উপর হয়তাে কোনাে নর সাপ প্রস্রাব করে গেছে। এখন এ ব্যক্তি আর বাঁচবে না। যখন সূর্যোদয় হবে তখন তার ইন্তিকাল হয়ে যাবে।" সুতরাং তাই হল, সূর্য উঠতেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। (হায়াতুল হাইওয়ানুল কুবরা, ১ম খন্ড, ৩৯১ পৃষ্ঠা হতে সংকলিত)
হার শায় ছে ঈয়া মেরে ছানে কি ছানাআতি,
আলমে হব আ-ঈনাে মে হে আ-ঈনা ছায কা। (যকে নত)
ইয়া রব্বে মুস্তফা (ﷺ) আমাদেরকে বার বার "বিসমিল্লাহ" পাঠ করার সৌভাগ্য নসীব কর, গুনাহ সমূহ থেকে ' মুক্তি দান করে আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ! আমাদেরকে মদীনা শরীফে সবুজ গম্বুজের ছায়ায় প্রিয় মাহবুব (ﷺ) এর জালওয়াতে শাহাদত ও জান্নাতুল বাকীতে দাফন এবং জান্নাতুল ফিরদাওসে তােমার মাদানী হাবীব (ﷺ) এর প্রতিবেশী হওয়ার সৌভাগ্য দান কর। তােমার প্রিয় মাহবুব(ﷺ) সকল উম্মতকে ক্ষমা করে দাও।
_______________
কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন