(প্রথম ১০টি মাদানী ফুল তাফসীরে নঈমী ১ম পারা, ৪৪ নং পৃষ্ঠা হতে নেয়া হয়েছে)
১)بسم الله الر حمن الر حيم কুরআনে পাকের সম্পূর্ণ আয়াত কিন্তু কোন সূরার অংশ নয় বরং সূরা সমূহের মধ্যে পৃথকের জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে। এজন্য নামাযে এটা নিম্ন স্বরেই পাঠ করা হয়। তবে যে হাফিয তারাবীতে সম্পূর্ণ কুরআনে পাক খতম করেন, তিনি অবশ্যই যে কোন সূরার সাথে একবারبسم الله الر حمن الر حيم উচ্চস্বরে পাঠ করবেন।
(২)সূরা তাওবা ব্যতীত অন্যান্য প্রতিটি সূরাبسم الله الر حمن الر حيم দ্বারা : আরম্ভ করবেন। যদি সূরা তাওবা হতেই তিলাওয়াত আরম্ভ করেন। তাহলে তিলাওয়াতের জন্যبسم الله الر حمن الر حيمপাঠ করে নিন।
(৩)ফতােওয়ায়ে শামীতে রয়েছে, হুক্কা পান করার সময়, দুর্গন্ধযুক্ত বস্তুসমূহ (কাঁচা পিয়াজ ও রসুন ইত্যাদি) খাওয়ার সময়بسم الله الر حمن الر حيم না পড়া উত্তম।
(৪) টয়লেটে গিয়েبسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করা নিষেধ।
৫) নামাযী যখন নামাযে কোন সূরা পাঠ করেন তখন প্রথমে নিম্নস্বরেبسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করা মুস্তাহাব। |
(৬) যে মর্যাদাপূর্ণ কাজبسم الله الر حمن الر حيمব্যতীত শুরু করা হয় তার মধ্যে বরকত হয় না।
(৭) যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানাে হয়। তখন যিনি নামাবেন তিনি এটা পাঠ করবেন:بسم الله الر حمن الر حيم জুমা, উভয় ঈদ, বিবাহ ইত্যাদির খুতবা /২ / ৩ দ্বারা শুরু করবেন অর্থাৎ (শুরুতে)بسم الله الر حمن الر حيم নিম্নস্বরে পাঠ করবেন। অতঃপর যখন কুরআন পাকের আয়াত আসবে তখন খতীব উচ্চস্বরে بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করুন।।
(৯) পশু-পাখী যবেহ করার সময়بسم الله - পাঠ করা (অর্থাৎ আল্লাহু তাআলার নাম নেয়া) ওয়াজিব। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা হয় (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার নাম নেয়া না হয়) তাহলে পশু মৃত সাব্যস্ত হবে। যদি ভুলে না নেয়া হয়, তবে পশু হালাল হিসেবে গণ্য হবে।
(১০) যবেহে ইতিরারী যেমন শিকারী তীর বা বর্শা ইত্যাদি ধারালাে বস্তু দিয়ে যদি শিকার করে আর এসব বস্তু নিক্ষেপ করার সময়بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করে নেয় তাহলে পশু (পাখী) যদি তার নিকট পৌঁছতে পৌঁছতে মরেও যায় তবুও তা হালাল হবে।
অনুরূপভাবে যদি পালিত পশু আয়ত্ব থেকে চলে যায় যেমন গরু কুপের মধ্যে পড়ে গেল অথবা উট পালিয়ে গেল। তখন যদি بسم الله الر حمن الر حيم পড়ে তীর বা বর্শা অথবা তলােয়ার মেরে দেয়া হয় তাহলে সেগুলাে হালাল হবে।بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করে লাঠি বা পাথর মারলে কিংবা বন্দুক দিয়ে গুলি করলে বা ছােট পাথর খন্ড ছুড়ে মারলে এবং তাতে বন্য পশু বা পাখী মারা গেলে তাহলে তা (খাওয়া) হারাম কেননা এটা রক্ত প্রবাহিত হওয়ার কারণে নয় বরং আঘাত পাওয়াতে মরে গেছে। তবে যদি আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় হাতে এসে যায় তাহলে শরীয়াত অনুযায়ী যবেহ করলে হালাল হয়ে যাবে।
যে বন্য পশু বা পাখী আয়ত্বের মধ্যে রয়েছে সেটা হালাল হওয়ার জন্য যবেহ করা আবশ্যক অর্থাৎ আল্লাহর নাম নিয়ে সেটাকে নিয়মানুযায়ী যবেহ করতে হবে।
(১১) হযরত সায়্যিদুনা শায়খ আবুল আব্বাস আহমদ বিন আলী বুনী (رحمة الله) বলেন: যে ব্যক্তি নিয়মিত ভাবে ৭ দিন পর্যন্ত প্রতিদিনبسم الله الر حمن الر حيم ৭৮৬ বার (শুরু ও শেষে ১বার করে দরূদে পাক) পাঠ করবেان شاءالله عزوجلতার প্রত্যেক উদ্দেশ্য পূরণ হবে। এখন উদ্দেশ্য কোন মঙ্গল লাভের জন্য হােক বা কোন অমঙ্গল দূর হওয়ার জন্য কিংবা ব্যবসা ঠিকভাবে চলার জন্য হােক। (শামসুল মাআরিফ, অনুদিত, ৭৩ পৃষ্ঠা)।
(১২) যে কোন ব্যক্তি শােয়ার সময়بسم الله الر حمن الر حيم
২১ বার (শুরু ও শেষে একবার দরূদ শরীফ) পাঠ করে নেয়। ঐ রাতে শয়তানের অনিষ্ট, চুরি, হঠাৎ মৃত্যু ও প্রত্যেক প্রকারের বিপদ আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে। (প্রাগুক্ত, ৭৩ পৃষ্ঠা)
(১৩) যে ব্যক্তি কোন অত্যাচারির সম্মুখেبسم الله الر حمن الر حيم বার (পূর্বে ও পরে ১ বার দরূদ শরীফ) পাঠ করবে, ঐ জালিমের অন্তরে পাঠকারীর প্রভাব সৃষ্টি হবে এবং জালিমের অনিষ্ট থেকে সে রক্ষা পাবে। (প্রাগুক্ত, ৭৩ পৃষ্ঠা)
(১৪) যে ব্যক্তি সূর্য উঠার সময় সূর্যের দিকে মুখ করেبسم الله الر حمن الر حيم ৩০০ বার ও দরূদ শরীফ ৩০০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাআলা তাকে এমন জায়গা থেকে রিযিক দান: করবেন, যেটা তার কল্পনাতেও আসবে না এবং (প্রতিদিন পাঠ করাতে)ان شاءالله عزوجل
এক বৎসরের মধ্যে আমীর ও ধর্নাঢ্য হয়ে যাবে। (প্রাগুক্ত, ৭৩ পৃষ্ঠা)
(১৫) স্মরণ শক্তিহীন ব্যক্তি যদিبسم الله الر حمن الر حيم ৭৮৬ বার (শুরু ও শেষে ১ বার দরুদ শরীফ সহ) পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিয়ে এ পানি পান করে নেয়, তাহলেان شاءالله عزوجلতার স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং যা শুনবে তা স্মরণে থাকবে। (প্রাগুক্ত, ৭৩ পৃষ্ঠা)
(১৬) যদি অনাবৃষ্টি হয়, তখনبسم الله الر حمن الر حيم - ৬১ বার (শুরু ও শেষে ১ বার দরূদ শরীফ সহ) পাঠ করে অতঃপর দোয়া করলেان شاءالله عزوجلবৃষ্টি হবে। (প্রাগুক্ত, ৭৩ পৃষ্ঠা)
(১৭)بسم الله الر حمن الر حيم কাগজে ৩৫ বার লিখে (পূর্বে ও পরে ১ বার দরূদ শরীফ) ঘরে টাঙ্গিয়ে দিলে শয়তান ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং খুব বরকত হবে। যদি দোকানে টাঙ্গিয়ে দেয়া হয় তাহলেان شاءالله عزوجلব্যবসায় খুব উন্নতি হবে। (প্রাগুক্ত ,৭৩, ৭৪ পৃষ্ঠা)।
(১৮) ১ লা মুহাররামুল হারামেبسم الله الر حمن الر حيم ১৩০ বার লিখে বা লিখিয়ে যে কেউ নিজের কাছে রাখবেন অথবা প্লাষ্টিকে মুড়িয়ে, মােটা প্লাষ্টিক বা চামড়া দিয়ে সেলাই করে হাতে, গলায় পরিধান করবেন। (কোন প্রকার ধাতব পদার্থের খােলের ভিতর কোন ধরনের তাবীজ পড়বেন না। এটার মাসআলা সমূহ পূর্বেই আলােচনা করা হয়েছে)। ان شاءالله عزوجل সারাজীবন ঐ ব্যক্তির বা তার ঘরে কারাে কোন প্রকারের ক্ষতি সাধিত হবে না। (প্রাগুক্ত, ৭৪ পৃষ্ঠা)
(১৯) যে মহিলার বাচ্চা বাঁচে না, তিনিبسم الله الر حمن الر حيم ৬১ বার লিখে বা লিখিয়ে নিজের নিকট রাখবেন (ইচ্ছা করলে তাতে বাতাস ঢােকার জন্য প্লাষ্টিকে মুড়ে কাপড়, মােটা প্লাষ্টিক বা চামড়া দিয়ে সেলাই করে গলায় কিংবা হাঁতে বেঁধে নিতে পারেন) ان شاءالله عزوجل বাচ্চা জীবিত থাকবে। (প্রাগুক্ত, ৭৪ পৃষ্ঠা)
(২০) بسم الله الر حمن الر حيم ৭০ বার লিখে মৃতের কাফনে দিয়ে দিন। ان شاءالله عزوجل মুনকার নকীর এর প্রশ্নের জবাব সহজ হবে। (উত্তম হল, মৃতের চেহারার সামনে কিবলার দিকের দেয়ালে মিহরাবের ন্যায় তাক বানিয়ে তাতে রাখুন। এর সাথে আহাদনামা ও মৃতের পীরের শাজারা ইত্যাদিও রেখে দিন)। (প্রাগুক্ত, ৭৪ পৃষ্ঠা)
(২১) بسم الله الر حمن الر حيم কোনাে ক্বারী বা আলিম সাহিবকে পাঠ করে শুনাবেন। যদি হরফ সঠিকভাবে উচ্চারণস্থল হতে আদায় না হয় তাহলে শিখে নিন অন্যথায় লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
(২২) লিখার সময় যবর, যের, পেশ ইত্যাদি লাগানাের প্রয়ােজন নেই। যখনই পরিধান করা, পানি পান করা বা টাঙ্গানাের জন্য তাবীয। হিসেবে কোন আয়াত কিংবা ইবারত লিখবেন, তখন বৃত্তাকার হরফ। সমূহের বৃত্ত খালি রাখতে হবে। যেমন- الله এর মধ্যে ه এর এবং رحمنও رحيمএ م দু'টোতে এর বৃত্ত খালি রাখবেন।
(২৩) কাপড় খােলার সময় بسم الله الر حمن الر حيم পড়ে নিলে জ্বীনেরা সতর দেখতে পারবেনা। (আমালুল ইয়াওম ওয়াল লাইলা, কৃত ইবনে সুন্নী, ৮ পৃষ্ঠা) কামরার দরজা, জানালা, আলমারীর দরজা, যতবার খেলবে বা লাগাবে ততবার এমনকি পােষাক-পরিচ্ছদ বাসনপত্র ইত্যাদি বস্তু সমূহ রাখা ও নামানাের সময় প্রত্যেকবার بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করার : অভ্যাস গড়ে নিন। ان شاءالله عزوجل দুষ্ট প্রকৃতির জ্বীন আপনার ঘরে প্রবেশ করা, চুরি করা ও আপনার জিনিসপত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে।
(২৪) যানবাহন (গাড়ি ইত্যাদি) পিছনে গেলে কিংবা তাতে ধাক্কা লাগলে بسم الله الر حمن الر حيم শরীফ পাঠ করুন।
(২৫) মাথায় তেল দেয়ার পূর্বে - ০২ / ৩ পড়ে নিন।
অন্যথায় ৭০ জন শয়তান মাথায় তেল দেয়াতে অংশগ্রহণ করে নেয়।
(২৬) ঘরের দরজা বন্ধ করার সময় স্মরণ করে بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করে নিন।ان شاءالله عزوجل শয়তান ও দুষ্ট জ্বীন ঘরে প্রবেশ করতে পারবেনা। (সহীহ বুখারী, ৬ খন্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা)
(২৭) রাতে পানাহারের পাত্র بسم الله الر حمن الر حيم শরীফ পাঠ করে ঢেকে দিন। যদি ঢাকার জন্য কোন বস্তু না থাকে। তাহলে بسم الله الر حمن الر حيم বলে সেগুলাের মুখে শলা ইত্যাদি রেখে দিন। (প্রাগুক্ত) মুসলিম শরীফের এক বর্ণনায় রয়েছে, বছরে একটি রাত এমনও আসে, যে রাতে ওয়াবা (রােগ বালা ও মহামারী) অবতীর্ণ হয়। যে সব তৈজষপত্র ও পানির পাত্র ইত্যাদির মুখ বন্ধ থাকে না, যদি ঐ দিক দিয়ে এটি অতিক্রম করে তখন তা এতে নেমে পড়ে। (মুসলিম শরীফ, ১১১৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ২১১৪)
(২৮) শােয়ার পূর্বে بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করে ৩ বার বিছানা ঝেড়ে নিন। ان شاءالله عزوجل কষ্টদায়ক বস্তু, জীব-জন্তু হতে নিরাপত্তা লাভ হবে।
(২৯) ব্যবসা বাণিজ্যে বৈধ লেন-দেনের সময় অর্থাৎ যখন কারাে কাছ থেকে নেন তখন بسم الله الر حمن الر حيم- পাঠ করুন এবং যখন কাউকে দেন। তখনও بسم الله الر حمن الر حيم পড়ুন ان شاءالله عزوجل খুব বরকত হবে।
ইয়া রব্বে মুস্তফা (ﷺ) আমাদেরকে بسم الله الر حمن الر حيم এর বরকত সমূহ দ্বারা সৌভাগ্যশালী করুন এবং প্রত্যেক নেক ও বৈধ কাজের শুরুতে পাঠ করার তাওফীক দান করুন।امين بجاه النبى الا مين صلى الله عليه وسلم
_______________
কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন