চল্লিশটি রূহানী চিকিৎসা


দরূদ শরীফের ফযীলত হযরত শায়খ আহমদ ইবনে মানসূর (رحمة الله) এর যখন ওফাত হল, তখন সিরায় শহরের কোন এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখল, তিনি (رحمة الله) সীরাযের জামে মসজিদের মেহরাবে দাঁড়িয়ে আছেন। তখন তাঁর শরীরে উন্নতমানের জান্নাতী পোষাক শােভা পাচ্ছিলাে। আর তাঁর মাথায় মুকুট সজ্জিত ছিল। স্বপ্ন দ্রষ্টা লােকটি তাঁর অবস্থা জিজ্ঞাসা করলেন: তখন তিনি | বললেন: “আল্লাহ্ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন আমাকে দয়া করেছেন এবং আমাকে তাজ পরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন। জিজ্ঞাসা করল: ‘কি কারণে?' তিনি বললেন: আমি নবীয়ে রহমত, শফিয়ে উম্মত, তাজেদারে রিসালাত (ﷺ) এর উপর বেশী পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করতাম। আর এ আমল কাজে এসে গেল। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ তাআলার জন্য, যিনি সমস্ত বিশ্ববাসীর প্রতিপালক।


(আল কওলুল বদী, ২৫৪ পৃষ্ঠা)




প্রতিটি ওয়াজিফার শুরু ও শেষে একবার করে দরূদ শরীফ পাঠ করে নিন। ফলাফল প্রকাশ না হওয়া অবস্থায় অভিযােগের পরিবর্তে নিজের অসতর্কতার কারণে দুর্ভাগ্য মনে করুন এবং আল্লাহ্ তাআলার হিকমতের প্রতি দৃষ্টি রাখুন।



১.هوالله الر حيم যে প্রত্যেহ নামাযের পর ৭ বার পাঠ করবে, ان شاءالله عزوجل শয়তানের ক্ষতি হতে বেঁচে থাকবে এবং তার ঈমানের সাথে মৃত্যু নছীব হবে।



২.يا مليك যে গরীব ব্যক্তি প্রত্যেহ ৯০ বার পাঠ করবে, ان شاءالله عزوجل দরিদ্র অবস্থা হতে মুক্তি লাভ করবে।



৩.يا قدوس যে কেউ সফর অবস্থায় এ ওয়াযিফা পড়তে থাকবে, ان شاءالله عزوجل ক্লান্তি বা অবসাদ হতে নিরাপদ থাকবে।



৪. يا سلام ১১১ বার পাঠ করে অসুস্থ ব্যক্তির উপর ফুক দেয়াতে আরােগ্য লাভ হবে।



৫.يا مهيمن ": যে কোন চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তি প্রত্যেহ ২৯ বার পাঠ করে নিবে, ان شاءالله عزوجل তার দুশ্চিন্তা দূর হবে।



(৬) يا مهيمن ": প্রত্যেহ ২৯ বার পাঠকারী ان شاءالله عزوجل প্রত্যেক বিপদ-আপদ হতে নিরাপদ থাকবে।  



(৭) يا عزيز "৪১ বার, বিচারক বা অফিসার ইত্যাদির নিকট (জায়িয উদ্দেশ্য পূরনের জন্য) যাওয়ার পূর্বে পাঠ করে নিন, ان شاءالله عزوجل ঐ বিচারক বা অফিসার দয়ালু হয়ে যাবে।



(৮) يا متكبر ": প্রতিদিন ২১ বার পাঠ করে নিন, ভয়-ভীতিপূর্ণ স্বপ্ন দেখে থাকলে ان شاءالله عزوجل এটার বরকতে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখবে না। (চিকিৎসার সময় হতে আরােগ্য লাভ হওয়া পর্যন্ত)



(৯) يا متكبر": ১০ বার স্ত্রীর সাথে “মিলন" করার পূর্বে পাঠকারী ان شاءالله عزوجل নেককার সন্তানের পিতা হবে।



(১০) يا بارئ : ১০ বার, যে কেউ প্রত্যেক জুমা (শুক্রবারে) পড়ে নিবে, ان شاءالله عزوجل তার পুত্র সন্তান হবে।



(১১) يا قهار ": ১০০ বার, যদি কোন বিপদ আসে তবে পাঠ করুন ان شاءالله عزوجل বিপদ দূর হয়ে যাবে।



(১২) يا وهاب ": যে প্রত্যেহ ৭ বার, পাঠ করবে,ان شاءالله عزوجل সে মুস্তাহাবুদ দাওয়াত হয়ে যাবে। (অর্থাৎ তার প্রত্যেক দোয়া কবুল হবে)।



(১৩) يا فتاح ”: ৭০ বার, প্রত্যেহ যে ফজর নামাযের পর দু'হাত সিনা অর্থাৎ বুকের উপর রেখে পাঠ করবে, ان شاءالله عزوجل তার অন্তরের মরিচা ও ময়লা দূর হবে।



(১৪) يافتاح ": ৭ বার, যে প্রতিদিন (দিনের যে কোন সময়) পাঠ করবে, ان شاءالله عزوجل তার অন্তর আলােকিত হবে।



(১৫) يا قا بض ياباسط ": ৩০ বার, যে প্রতিদিন পাঠ করবে, সে ان شاءالله عزوجل শত্রুর উপর বিজয় লাভ করবে।।




(১৬) “يارافع ": ২০ বার, যে প্রতিদিন পাঠ করবে, ৬৯'এ তার উদ্দেশ্য পূরণ হবে।



(১৭) “ يابصير ": ৭ বার, যে কেউ প্রত্যহ আসরের সময় (অর্থাৎ আসর শুরুর সময় হতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত যে কোন সময়) পাঠ করে নিবে, ان شاءالله عزوجل আকস্মিক মৃত্যু বরণ করা হতে নিরাপদ থাকবে।



(১৮) “ياسميع: ১০০ বার, যে প্রত্যেহ পাঠ করবে ও পাঠকালে কথা-বার্তা বলবেনা এবং পাঠ করে দোয়া করবে, ان شاءالله عزوجل যা প্রার্থনা করবে তা পাবে।



(১৯) يا حكيم ": ৮০ বার, যে প্রত্যেহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর পাঠ করবে, ان شاءالله عزوجل  কারাে মুখাপেক্ষী হবে না।



(২০) “يا جليل ": ১০ বার পাঠ করে যে নিজের কোন সম্পদ ও মালপত্র এবং টাকা-পয়সা বা মূল্যবান বস্তুর ইত্যাদির উপর ফুক দেয়, ان شاءالله عزوجل এটি চুরি হওয়া হতে নিরাপদ থাকবে।



(২১) “ يا شهيد ": ২১ বার, যে সকালে (সূর্য উঠার আগে আগে) অবাধ্য ছেলে-মেয়ের কপালে হাত রেখে আসমানের দিকে মুখ করে পাঠ করবে, তার ছেলে-মেয়ে নেককার ও বাধ্যগত হবে।





(২২) “ياوكيل": ৭ বার, যে প্রতিদিন আসরের সময় পাঠ করে নিবে, ان شاءالله عزوجل বিপদ-আপদ, দুর্ঘটনা হতে নিরাপত্তা লাভ করবে।  



(২৩) يا حميد: ৯০ বার, যার মন্দ কথা বলার অভ্যাস যায় না, সে পাঠ করে কোন খালি পেয়ালা বা গ্লাসে ফুক দিয়ে দেয়। প্রয়ােজন অনুযায়ী সেটা দিয়ে পানি পান করুন, ان شاءالله عزوجل অশ্লীল কথা বলার অভ্যাস দূর হয়ে যাবে। (একবার ফুক দেয়া গ্লাস বছরের পর বছর ব্যবহার করা যাবে)।



(২৪) يا محصى ": ১০০০ বার, যে কেউ প্রত্যেক জুমার রাতে (অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের মধ্যবর্তী রাতে) পাঠ করে নিবে,ان شاءالله عزوجل কবর ও কিয়ামতের শাস্তি হতে নিরাপদ থাকবে।



(২৫) “يا محيى”: ৭ বার পাঠ করে পেট ফাঁপা, পেট বা যে কোন স্থানে ব্যথা হােক অথবা শরীরের কোন অঙ্গ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, নিজের উপর ফুক দিয়ে দিন, ان شاءالله عزوجل উপকার হবে। (চিকিৎসার সময় হতে আরােগ্য লাভ পর্যন্ত কমপক্ষে ১ বার)



(২৬) “يا محيى-يا مميت": ৭ বার, যে প্রতিদিন পাঠ করে নিজের (শরীরের) উপর ফুঁক দেয়, ان شاءالله عزوجل (তাকে) যাদু ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।



(২৭) “ياواجد": যে কেউ খাবার খাওয়ার সময় প্রত্যেক গ্রাসের (পূর্বে) পাঠ করতে থাকবে, ان شاءالله عزوجل ঐ খাবার তার পেটে নূর | ; হবে এবং রােগ দূর হয়ে যাবে।।




(২৮) “ ياماجد ": ১০ বার, পাঠ করে শরবতের উপর ফুক দিয়ে যে পান করে নিবে, ان شاءالله عزوجل সে (কঠিন) রােগে আক্রান্ত হবে না।



(২৯) “يا واحد ": ১০০১ বার, যার একাকী অবস্থায় ভয় লাগে, তবে একাকী অবস্থায় পাঠ করে নিন, ان شاءالله عزوجل তার অন্তর হতে ভয় ভীতি দূর হয়ে যাবে ।



(৩০) يا قادر"যে অযুর মধ্যে প্রত্যেক অঙ্গ ধােয়ার সময় পাঠ করার অভ্যাস করে নেয়, ان شاءالله عزوجل  শত্রু তাকে কু-পথে পরিচালিত করতে পারবে না।



(৩১) “يا قادر": ৪১ বার, বিপদ এসে গেলে পাঠ করে নিন,ان شاءالله عزوجل বিপদ দূর হয়ে যাবে।



(৩২) “يا مقتدر": ২০ বার, যে প্রতিদিন পাঠ করে নিবে, ان شاءالله عزوجل সে রহমতের ছায়ায় থাকবে।



৩৩) يا مقتدر: ২০ বার, যে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে পাঠ করে নিবে, তার সকল কাজে আল্লাহ্ তাআলার সাহায্য সাথে থাকবে।



৩৪) يااول"১০০ বার, যে প্রতিদিন পাঠ করে নিবে,ان شاءالله عزوجل তার স্ত্রী তাকে ভালবাসবে।



(৩৫) “يامانع يا معطي": ২০ বার, স্ত্রী অসন্তুষ্ট হলে স্বামী, আর স্বামী অসন্তুষ্ট হলে স্ত্রী, শােয়ার পূর্বে বিছানায় বসে পাঠ করলে,ان شاءالله عزوجل আপােষ হয়ে যাবে। (সময়সীমা: উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত)।



(৩৬) “يا ظاهر": ঘরের দেয়ালে লিখে দিন, ان شاءالله عزوجل দেয়াল নিরাপদ থাকবে।



(৩৭) “يارءوف": ১০ বার, যে কোন জালিম হতে মযলুম অথবা মযলুম ব্যক্তিকে জালিম থেকে বাঁচাতে চায় এবং তার পাওনা উসূল করে দিতে চায়, সে যেন (এ ওয়াযীফা) পাঠ করার পর ঐ জালিমের সাথে কথা বলে, “ان شاءالله عزوجل  জালিম ব্যক্তি তার সুপারিশ গ্রহণ করে নিবে।



(৩৮) ياغنى": মেরুদন্ড, হাঁটু, শরীরের বিভিন্ন স্থানের জোড়া ইত্যাদি ও শরীরের যে কোন স্থানে ব্যথা হােক, চলা-ফেরা, উঠা-বসার সময় পাঠ করতে থাকুন, ان شاءالله عزوجل  ব্যথা দূরিভূত হয়ে যাবে।



(৩৯) يا مغنع": ১ বার পাঠ করে হাতে ফুক দিয়ে ব্যথার স্থানের উপর মালিশ করাতে ان شاءالله عزوجل শান্তি লাভ হবে।



(৪০)يا نافع " ২০ বার, যে কেউ কোন কাজ শুরু করার পূর্বে পড়ে নিবে, ان شاءالله عزوجل ঐ কাজ তার ইচ্ছা অনুযায়ী পূরণ হবে।

_______________

কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন