হুযূর পূর নূর (ﷺ) এর বংশগত আভিজাত্য; তাঁর জন্মস্থানের ও বেড়ে ওঠার স্থানের সম্মান ও মর্যাদা


মহানবী (ﷺ)-এর উচ্চবংশ ও জন্মস্থানের সম্মান এবং তাঁরই বেড়ে ওঠার স্থানের মর্যাদা সম্পর্কে কোনো প্রমাণ বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না। এটা গোপন কোনো বিষয় নয়।


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বনূ হাশেম গোত্রের শ্রেষ্ঠদের মধ্য হতে আবির্ভূত হন, আর কুরাইশ গোত্রেরও মূল হতে তিনি আগমন করেন। বাবা ও মায়ের উভয় বংশীয় দিক থেকেই তিনি আরবদের মধ্যে মহত্তম ও সর্বাধিক শক্তিশালী গোত্রভুক্ত। মক্কার মানুষের মধ্য হতেই তাঁর আবির্ভাব, যা আল্লাহ ও তাঁর বান্দাদের কাছে সবচেয়ে মহান এক দেশ/রাজ্য।


❏ হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান: “আমি বনী আদমের এক শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম হতে আরেক শ্রেষ্ঠ প্রজন্মে (মানে ঔরসে) প্রেরিত হতে থাকি, যতোক্ষণ না আমি যে প্রজন্মে প্রেরিত হয়েছি, তাতে পৌঁছেছি।” [আল-বুখারী]


❏ হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন মহানবী (ﷺ)-এর হাদীস, যিনি ইরশাদ ফরমান: “আল্লাহ (ﷻ) তাঁর সৃষ্টিকুলকে পয়দা করেন এবং আমাকে তাদের শ্রেষ্ঠ প্রজন্মের শ্রেষ্ঠজনদের মাঝে প্রেরণ করেন। অতঃপর তিনি বিভিন্ন গোত্র বেছে নেন এবং আমাকে শ্রেষ্ঠ গোত্রে প্রেরণ করেন। এরপর তিনি পরিবারগুলো বাছাই করেন এবং তাদের মধ্যে সেরা এক পরিবারে আমাকে প্রেরণ করেন। আমি ব্যক্তি হিসেবে তাদের মধ্যে সেরা এবং পরিবারের বেলায়ও তাদের মাঝে সেরা।” 

[আল-বায়হাকী ও আত্ তিরমিযী]


❏ হযরত ওয়া’ইলা ইবনে আসকা’ (رضي الله عنه) বলেন যে, হুযূর পাক (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, “আল্লাহ (ﷻ) পয়গম্বর ইবরাহীম (عليه السلام)-এর সন্তানদের মধ্য হতে পয়গম্বর ইসমাঈল (عليه السلام)-কে পছন্দ করে নেন, আর তিনি ইসমাঈল (عليه السلام)-এর সন্তানদের মধ্য হতে বনূ কেনানা-কে বেছে নেন। অতঃপর তিনি বনূ কেনানা’র মধ্য হতে কুরাইশ গোত্রকে বেছে নেন; আর কুরাইশ গোত্রের মধ্য হতে বনূ হাশেমকে পছন্দ করেন। তিনি বনূ হাশেম হতে আমাকে পছন্দ করেন।” [আত্ তিরমিযী বলেন এই হাদীসটি সহীহ; মুসলিমেও এটা বর্ণিত হয়েছে]


❏ হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে আত্ তাবারানী (رحمة الله) বর্ণিত, এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, “মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ (ﷻ) তাঁর সৃষ্টিকুলের মধ্য হতে বনূ আদমকে পছন্দ করেন। এরপর তাদের মধ্য হতে আরবদেরকে পছন্দ করে নেন। অতঃপর আরবদের মধ্য হতে তিনি কুরাইশদেরকে বেছে নেন। এরপর কুরাইশদের মধ্য হতে বনূ হাশেমকে পছন্দ করেন। অতঃপর বনূ হাশেমের মধ্য হতে আমাকে পছন্দ করেন। আমি-ই সেরাদের সেরা। যে কেউ আরবদেরকে ভালোবাসলে আমার প্রতি ভালোবাসার সূত্রেই তাদেরকে ভালোবাসে। যে কেউ আরবদেরকে ঘৃণা করলে আমার প্রতি ঘৃণার কারণেই তাদেরকে ঘৃণা করে।”


❏ হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন যে, মহানবী (ﷺ)-এর রূহ মোবারক নূর তথা জ্যোতির আকৃতিতে আল্লাহর কাছে অবস্থান করছিলেন পয়গম্বর আদম (عليه السلام)-এর সৃষ্টির ২০০০ বছরেরও আগে। ওই নূর আল্লাহর প্রশংসারত ছিলেন, আর ফেরেশতাকুল তাঁরই (ওই নূরেরই) প্রশংসার অনুসরণে (আল্লাহর) প্রশংসায় মুখর ছিলেন। আল্লাহ (ﷻ) যখন পয়গম্বর আদম (عليه السلام)-কে সৃষ্টি করেন, তখন তিনি ওই নূরকে আদম (عليه السلام)-এর কোমরে (ঔরসে) স্থাপন করেন।


❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, “আল্লাহ (ﷻ) আমাকে এই দুনিয়াতে পয়গম্বর আদম (عليه السلام)-এর ঔরসে প্রেরণ করেন, এরপর পয়গম্বর নূহ (عليه السلام)-এর ঔরস হয়ে পয়গম্বর ইবরাহীম (عليه السلام)-এর ঔরসে প্রেরণ করেন। আল্লাহ (ﷻ) পবিত্র ঔরস হতে পবিত্র গর্ভে আমাকে স্থানান্তর করতে থাকেন, যতোক্ষণ না আমি আমার পবিত্র পিতামাতার ঘরে বেলাদতপ্রাপ্ত হই। তাঁদের (পূর্বপুরুষদের) কেউই কখনো অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হননি।”


মহানবী (ﷺ)-এর প্রশংসায় হযরত আব্বাস (رضي الله عنه)-এর রচিত বিখ্যাত কবিতা (ওপরের) এই হাদীসের নির্ভরযোগ্যতার সাক্ষ্য বহন করে।

________________

কিতাবঃ আশ শিফা [অসম্পূর্ণ]

মূল: ইমাম কাজী আয়াজ (رحمة الله)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন


সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন