মৃতদের কাছে সাহায্য কেন চাইবেন?

 

মৃতদের কাছে সাহায্য কেন চাইবেন? 


প্রশ্ন (৮): মেনে নিলাম, জীবিতরা একে অপরকে সাহায্য  করতে পারে। বনে-জঙ্গলে বান্দাদের ডাক দেওয়াও বুঝে এসেছে। কারণ, আজকাল বনে-জঙ্গলেও পুলিশের মােবাইল টিম সাহায্যের জন্য কখনও কখনও হাজির হয়ে যায় । যদিও হাদিস শরীফে পুলিশ উদ্দেশ্য নয়। তবু মানুষ তাদের নিকট থেকে সাহায্য প্রার্থনা করতে পারে । মােবাইল ফোনের মাধ্যমে কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকা যেতে পারে কিন্তু 'মৃত লােক’ থেকে কীভাবে সাহায্য চাওয়া যেতে পারে? 

উত্তর : যে বাস্তবে মৃত তার নিকট থেকে নি:সন্দেহে সাহায্য চাওয়া যাবে না। কিন্তু আম্বিয়া, আউলিয়ারা তাে ইন্তিকালের পরে ও জীবিত থাকেন। আর এভাবে আমরা জীবিতদের কাছে সাহায্য চেয়ে থাকি। এরা জীবিত। এ বিষয়ে দলিলগুলাে দেখে নিন: 


 

আম্বিয়ায়ে কেরামগণ জীবিত 


নবীগণের কেবল সামান্য মুহূর্তের জন্য মৃত্যু আসে। অত:পর তৎক্ষণাৎ তাঁদেরকে তেমন জীবন দান করা হয়ে থাকে, যেভাবে দুনিয়াতে ছিল। নবীগণের জীবন (আলমে বরযখের জীবন) রূহানী, শারীরিক, দুনিয়াবী। (তারা) সেভাবে যথাযথ জীবিত থাকেন যেভাবে দুনিয়াতে ছিলেন। (ফতাওয়ায়ে রজভীয়া, খন্ড ২৯, পৃষ্ঠা: ৫৪৫) তাজেদারে মদীনা, নবী করীম صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: 


اِنَّ اللّٰهَ حَرَّمَ عَلَى الۡاَرۡضِ اَنۡ تَأكُلَ اَجۡسَادَ الۡاَنۡبِيَاءِ فَنَبِیُّ اللّٰهِ حَیٌّ يُّرۡزَقُ٭

 

অথাৎ : আল্লাহ তায়ালা নবীগণের শরীর মােবারককে মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন। আল্লাহর নবীগণ জীবিত থাকেন। তাঁদের রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে। (ইবনে মাজাহ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৯১। হাদিস: ১৬৩)। 


জানা গেল যে, নবীগণ জীবিত। তাছাড়া সহীহ হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত যে, তারা হজ্বও আদায় করে থাকেন এবং নিজ নিজ মাজারগুলােতে নামাযও পড়ে থাকেন। 

যেমন: হযরত সায়্যিদুনা আনাস رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ থেকে বর্ণিত, নবী পাক صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: اَلۡاَنۡبِیَاءُ اَحۡیَاءٌ فِیۡ قُبُوۡرِهِمۡ يُصَلُّوۡنَ  অর্থাৎ : ‘সমস্ত নবী নিজ নিজ কবরগুলােতে জীবিত রয়েছেন, তাঁরা সেখানে নামায আদায় করে থাকেন।' (মুসনদে আবি ইয়ালা, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২১৬, হাদিস: ৩৪১২)। 


হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুনাদী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ বলেন, এই হাদিসটি সহীহ। (ফয়যুল কদীর, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩৯) ওলামায়ে কেরাম বলেছেন,বিভিন্ন সময়ে মানুষ মুকাল্লিফ (শরীয়তের দায়িত্বভূক্ত) থাকে না,তা সত্ত্বেও স্বাদ নেওয়ার জন্য তারা আমল আদায় করে থাকেন। যেমন, নবীগণের নিজ নিজ কবরগুলােতে নামায পড়া, অথচ দুনিয়াই হচ্ছে আমলের জায়গা, আখিরাত নেক কাজ করার জায়গা নয়। 



হযরত সায়্যিদুনা মুসা عَلَیۡهِ السَّلَام আপন মাজারে নামায পড়ছিলেন


হযরত সায়্যিদুনা আনাস رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ থেকে বর্ণিত, নবী করীম صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “মেরাজ রজনীতে হযরত মূসা عَلَیۡهِ السَّلَام এর পাশ দিয়ে আমার গমন হয়েছিল। তখন তিনি লাল টিলার পাশে নিজ কবরে নামায পড়ছিলেন।” (মুসলিম, পৃষ্ঠা: ১২৯৩, হাদিসঃ ২৩৭৪)। 


আম্বিয়া কো ভি আজল আনি হে,

 মগর এয়সি হে কেহ ফকত আনী হে।। 

পির উসী আন কে বাদ উন কি হায়াত, 

মিছলে সাবেক ওহী জিসমানী হে।

 রূহ তাে সব কি হে জিন্দা উন কা,

 জিসমে পুরনূর ভি রূহানী হে। 

(হাদায়িকে বখশিশ শরীফ) 

_____________________

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন