মানুষ অন্য কারাে সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না
প্রশ্ন (১৪): আপনার বলার উদ্দেশ্য কি এই যে, মানুষ বলতেই আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারাে সাহায্য ব্যতীত চলতে পারে না?
উত্তর : জী হ্যাঁ। যেমন ধরুন, আপনি কাজে যাচ্ছেন। হঠাৎ আপনার গাড়িটি রাস্তায় আটকে গেল। ধাক্কা দেওয়ার দরকার হল। কী করবেন? নিরুপায় হয়ে রাস্তার লােকজনদের কাছেই আবেদন করতে হবে, ভাই মেহেরবানী করে গাড়িতে একটু ধাক্কা লাগাবেন কি? কেউ হয়ত দয়াপরবশ হয়ে ধাক্কা দেবেন। তা হলেই তাে আপনার গাড়িটি চলতে পারবে। আপনি দেখলেন যে, আপনার কোন প্রয়ােজন দেখা দিল। আপনি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারাে থেকে সাহায্য চাইলেন। তারা সাহায্য করলও। আপনিও উদ্ধার পেলেন। আপনি যদি বলেন, এ তাে জীবন্ত মানুষেরাই সাহায্য করেছে।
তা হলে ওফাতের পরেও সাহায্যের এমন সব দলিল পেশ করছি, যে সাহায্যের সুফল প্রতিটি মুসলমান ভােগ করছেন। যেমন:
৫০ এর স্থলে ৫ ওয়াক্ত নামায কীভাবে হল?
হযরত সায়্যিদুনা আনস رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ থেকে বর্ণিত, নবী করিম صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “আল্লাহ্ তায়ালা আমার উম্মতের উপর ৫০ ওয়াক্ত নামায ফরজ করে দিয়েছিলেন। আমি যখন হযরত মুসা عَلَیۡهِ السَّلَام এর নিকট এলাম তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ্ তায়ালা আপনার উম্মতের উপর কী ফরজ করে দিয়েছেন? আমার কথা শুনে তিনি বললেন, আপনি আপনার রবের নিকট পুনরায় যান। আপনার উম্মতেরা এত নামাযের ক্ষমতা রাখে না। আমি পুনরায় আল্লাহর দরবারে গেলাম। তা থেকে কিছু কমিয়ে দেওয়া হল। যখন হযরত মূসা عَلَیۡهِ السَّلَام এর নিকট আবার এলাম, তিনি আমাকে আবার পাঠিয়ে দিলেন। আল্লাহ্ বললেন, ঠিক আছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায । কিন্তু পঞ্চাশেরই স্থানে। কেননা, আমার কথার পরিবর্তন হয় না । এবার মুসা عَلَیۡهِ السَّلَام এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আল্লাহর দরবারে।
আবার যাওয়ার প্রস্তাব করলেন। আমি জবাবে বললাম, আবার আল্লাহর নিকট যাওয়া আমার লজ্জা বােধ হচ্ছে! (ইবনে মাজাহ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ১৬৬। হাদিস: ১৩৯৯)
আপনারা দেখলেন তাে, হযরত মুসা কলীমুল্লাহ عَلَیۡهِ السَّلَام তারপ্রকাশ্য ওফাতের আড়াই হাজার বছর পর প্রিয় নবী صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم উম্মতের জন্য এই সাহায্যটি করলেন যে, মেরাজ রজনীতে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের স্থলে পাচ ওয়াক্তে নিয়ে এলেন। আল্লাহ্ তাআলা জানতেন যে, নামায পাঁচই থাকবে। কিন্তু পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায নির্ধারণ করে দিয়ে পরে দুইজন প্রিয় বান্দার মাধ্যমে পাঁচে নিয়ে আসবেন। এখানে সূক্ষ্ম কথাটি হল, যেসব লােক শয়তানের কুমন্ত্রনায় পড়ে ওফাত প্রাপ্তদের সাহায্য ও সহযােগিতার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করে ফেলে, তারাও পঞ্চাশ না পড়ে পাঁচই তাে পড়ে থাকে। অথচ পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্ধারণে নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারাে সাহায্য অন্তর্ভূক্ত।
_____________________
হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন