আল্লাহ্ যখন সাহায্যকারী, তাে অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়ার প্রয়ােজন কি?


আল্লাহ্ যখন সাহায্যকারী, তাে অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়ার প্রয়ােজন কি?

 

প্রশ্ন (১৩) : এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী, যে ব্যক্তি মনকে এভাবে বানিয়ে ফেলে যে, সে কেবল আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে। কারণ, আল্লাহ্ তায়ালা যেক্ষেত্রে সাহায্য করার ক্ষমতাবান,তা হলে কেবল তার কাছেই সাহায্য চাওয়াই তাে হবে সাবধানতা। 

উত্তর : নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা সাহায্য করতে ক্ষমতাবান। বাস্তবে সকল কর্ম তিনিই সম্পাদন করেন। কেউ যদি কেবল আল্লাহ্ তায়ালার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করে, তা হলে তার উপর কোনরূপ অভিযােগ নেই। তা সত্ত্বেও সাবধানতাবশত: অন্যের কাছে সাহায্য প্রার্থনা না করা শয়তানেরই এক বড় শয়তানি। কেন সে লােকটির মনকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। যে কারণে সে ‘সাবধানতার' নামে একটি কুমন্ত্রনার উপরই আমল করে যাচ্ছে। হতে পারে সে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারাে কাছে সাহায্য চাইল, তাতে কোন ভুল হল। সে যদি কুমন্ত্রনার শিকার না হয়ে থাকত, তা হলে সেটিকে 'সাবধানতা’ নাম দিল কেন? তাকে তার কুমন্ত্রনার চিকিৎসা করা দরকার । কেননা, সেই কুমন্ত্রনায় না পড়ার জন্য কুরআন-হাদিসে বিভিন্ন জায়গায় নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল স্বয়ং অন্যের 

কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার অনুমতি দিচ্ছেন। অথচ এরা নিজেদের কুমন্ত্রনার মারটি দিচ্ছে সাবধানতার আড়ালে। এমন লােকদের পক্ষে কুর’আন করীমের নিচের ছয়টি পবিত্র আয়াত ঠান্ডা মাথায় অনুধাবন করা উচিত। আল্লাহ্ নয় এমন কারাে থেকে সাহায্য প্রার্থনা করার বিষয় সাফ সাফ হরফে পরিষ্কার আলােচনা বিদ্যমান। যেমন: 

(১) সৎকাজে তােমরা একে অপরকে সাহায্য কর: وَ تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَ التَّقۡوٰی ۪ وَ لَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ ۪

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : “তােমরা সৎকাজ ও পরহেজগারিতে একে অপরের সাহায্য করবে। গুনাহ্ ও অত্যাচারমূলক কাজে পরস্পর সাহায্য করাে না।” (পারা: ৬, সূরা মায়িদা, আয়াত: ২)।

 (২) ধৈৰ্য্য আর নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। وَ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ  কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : 

“তােমরা ধৈৰ্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর।” (পারা: ১, বাকারা, আয়াত- ৪৫) 

(৩) হযরত সেকান্দার যুলকারনাইন  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ সাহায্য চাইলেনঃ যখন হযরত সায়্যিদুনা সেকান্দার যুলকারনাইন  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ পশ্চিম দিকে সফর করেছিলেন। তখন কোন এক জাতির অভিযােগে ইয়াজুজ, মাজুজ এবং সেই জাতির মধ্যে দেওয়াল প্রতিষ্ঠা করতে তাদেরকে তিনি বললেন:فَاَعِیۡنُوۡنِیۡ بِقُوَّۃٍ  কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : “তােমরা আমাকে শক্তি দিয়ে সাহায্য কর।” (পারা: ১৬, সূরা: আল কাহাফ, আয়াত: ৯৫) 

(৪) আল্লাহর দীনকে সাহায্য কর: اِنۡ تَنۡصُرُوا اللّٰہَ یَنۡصُرۡکُمۡ  

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : “তােমরা যদি আল্লাহর দীনকে সাহায্য কর, তা হলে আল্লাহ তােমাদের সাহায্য করবেন।” (পারা: ২৬, সুরা মােহাম্মদ, আয়াত-৭)। 

 (৫) আল্লাহ ছাড়া অন্য কারাে কাছ থেকে স্বয়ং নবী কর্তৃক সাহায্য প্রার্থনা করা: হযরত সাইয়েদুনা ঈসা রূহুল্লাহ্ عَلَیۡهِ السَّلَام ইরশাদ করেন: 

مَنۡ اَنۡصَارِیۡۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ قَالَ الۡحَوَارِیُّوۡنَ نَحۡنُ اَنۡصَارُ اللّٰہِ ۚ 

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : “কারা হবে আল্লাহর দিকে আমার সাহায্যকারী। হাওয়ারীরা বলল, আমরা হব আল্লাহর দীনের  সাহায্যকারী।” (পারা: ৩, সুরা আলে ইমরান, আয়াত-৫২)।

 (৬) আল্লাহ্ কর্তৃক আল্লাহ ছাড়া এমন কাউকে সাহায্যকারী ঘােষণা প্রদান: 

فَاِنَّ اللّٰہَ  ہُوَ مَوۡلٰىہُ  وَ جِبۡرِیۡلُ وَ صَالِحُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ۚ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ  بَعۡدَ  ذٰلِکَ ظَہِیۡرٌ ﴿۴﴾  

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : “নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের সাহায্যকারী, জিবরাঈল, নেক্কার মুমিন অত:পর ফেরেশতারা সাহায্যের উপর রয়েছে।” (পারা: ২৮, সুরা তাহরীম, আয়াত- ৪) 

কুন কা হাকেম কর দিয়া আল্লাহ্ নে ছরকার কো। কাম শাখোঁ সে লিয়া হে আপ নে তলােয়ার কা। (সামানে বখশিশ)। 

_____________________

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন