মৃতদের সাথে কথাবার্তা
প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা ! হযরত সায়্যিদুনা মওলা আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর মহানত্ব ও মর্যাদার একটি আলােকিত দিক এটাও যে, আল্লাহ তায়ালার দানক্রমে তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কবরবাসীদের সাথে কথােপকথন করার প্রমাণ আছে। এমনটি হযরত সায়্যিদুনা ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী শাফেয়ী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ শরহুস সুদুরে’ বর্ণনা করেন, হযরত সায়্যিদুনা সায়ীদ ইবনে মুসাইয়্যাব رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন, আমরা আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর সাথে কবরস্থান ? অতিক্রম করছিলাম। তিনি كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ ইরশাদ করলেন اَلسَّلَامُ علَیۡكُمۡ یَا اَهۡلَ الۡقُبُوۡرِ وَرَحۡمَةُ اللّٰه অর্থাৎ “হে কবরবাসীরা! তােমাদের উপর শান্তি ও আল্লাহ তায়ালার রহমত বর্ষিত হােক। এবং ইরশাদ করলেন:“হে কবরবাসীরা! তােমরা তােমাদের খবর বলবে না আমরা তােমাদেরকে বলব?” সায়্যিদুনা সায়্যিদ ইবনে মুসাইয়াব رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন যে, আমরা কবর থেকে وَعَلیۡكَ السَّلَامُ وَرَحۡمَةُ اللّٰه এর আওয়াজ শুনি এবং কোন কবরবাসী বলল যে, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি আমাদের সংবাদ দিন যে, আমাদের মৃত্যুর পর কি হল? হযরত আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ইরশাদ করলেন : শুনে নাও! তােমাদের
মাল বন্টন হয়ে গেছে। তােমাদের স্ত্রীরা অপর বিবাহ করে নিয়েছে। । তােমাদের সন্তানরা এতীমের মধ্যে গণ্য হয়ে গেছে। যে ঘরকে তােমরা অনেক মজবুতভাবে বানিয়েছিলে সেখানে তােমাদের শত্রু বসবাস করছে। এখন তােমরা নিজেদের অবস্থা শুনাও। এটা শুনে
একটি কবর থেকে আওয়াজ আসতে লাগল : হে আমীরুল মুমিনীন । আমাদের কাফন ছিড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আমাদের চুল ঝরে বিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। আমাদের চামড় সমূহ টুকরা টুকরা হয়ে গেছে, আমাদের চোখগুলাে বের হয়ে গন্ডদেশে চলে এসেছে এবং আমাদের নাকের ছিদ্র থেকে পুঁজ বের হচ্ছে, আর আমরা যা কিছু আগে পাঠিয়েছি (অর্থাৎ যা আমল করেছি) তা পেয়েছি। যা কিছু পিছনে রেখে এসেছি, তাতে ক্ষতিসাধন হয়েছে। (শরহুস সুদূর, পৃ-২০৯, ইবনে আসাকির, খন্ড-২৭, পৃ-৩৯৫)।
আখেরাত কি ফিকির করনি হে জরুর,
জিন্দেগী এক দিন গুজারনি হে জরুর।
কবর মে মায়্যিত উতরনি হে জরুর,
জেইসি করনি ওয়াইসি ভরনি হে জরুর।
একদিন মরনা হে আখের মওত হে,
করলে জু করনা হে আখের মওত হে।
শিক্ষণীয় মাদানী ফুল
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এ ঘটনা থেকে হযরত মওলা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ মহানত্ব, মর্যাদা এবং শ্রবণশক্তির এক ঝলক দেখার মত যে তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ মৃতদের থেকে তাদের কবরের অবস্থা জিজ্ঞাস করলেন, উত্তর শুনলেন এবং তাদেরকে দুনিয়াবী অবস্থা বর্ণনা করলেন। নিঃসন্দেহে এটা তাঁর মহান কারামত । আবার এ রেওয়াতে আমাদের জন্য শিক্ষণীয় মাদানী ফুলও রয়েছে, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে থাকাবস্থায় নিজের আকীদা ও আমলকে সংশােধন করবে না, দুনিয়াবী কামনা সমূহের জালে আটকা পড়ে পরকালের প্রতি অলস থাকবে তার কবর তার জন্য কঠিনতম ঘরে পরিণত হবে এবং এ দুনিয়ার অনর্থক চিন্তাভাবনা এবং কামনা সমূহ তার কোন কাজে আসবে না। বরং শুধু দুনিয়ার সম্পদ জমা করার চিন্তায় লেগে থাকা ব্যক্তি আর এ অবস্থায় মরে অন্ধকার কবরের সিড়ি অতিক্রমকারী নিজের দুনিয়াবী সম্পদ থেকে কোন উপকার লাভ করতে পারবে না। হকদার ও ওয়ারিশগণ তার সম্পদের উপর দখল করবে বরং সম্পাদ অর্জনের জন্য ঝগড়া করে নিজেদের রাস্তা ধরবে এবং এ অপদার্থ মানুষ সম্পদ জমা করার চিন্তায় মত্ত থেকে হালাল হারামের পার্থক্য ভুলে বসা এবং গুনাহে ভরা জীবনযাপন অতিক্রম করার কারনে জাহান্নামের আগুনের হকদার বিবেচিত হবে।
দৌলতে দুনিয়া কে পিছে তু ন জা,
আখেরাত মে মাল কা হে কাম কিয়া?
মালে দুনিয়া দো জাহা মে হে ওয়াবাল,
কাম আয়ে গা ন পেশে যুলজালাল।
_____________________
হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন