মওলা আলীর ইখলাছ

 

মওলা আলীর ইখলাছ 


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! মওলা মুশকিল কোশা, আলী মুরতাদ্বা, শেরে খােদা كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এতই বাহাদুর হওয়া সত্ত্বেও অহংকার, রিয়াকারী এবং লৌকিকতা ইত্যাদি প্রত্যেক প্রকারের হীনমন্যতা থেকে পাক পবিত্র এবং আমল ও ইখলাছের প্রতীক ছিলেন। যেমন : হযরত আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ বলেছেন : “হযরত সায়্যিদুনা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  এক যুদ্ধে কাফিরকে পরাস্ত করলেন এবং কাফিরকে হত্যা করার ইচ্ছায় তার বুকের উপর বসে পড়লেন। পরাস্ত কাফির! মওলা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  এর দিকে থুথু নিক্ষেপ করল। তখন মওলা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  পরাস্ত কাফিরকে ছেড়ে দিলেন, বুক থেকে উঠে দাঁড়ালেন। ঐ কাফিরটি এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে, তখন মওলা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  বললেন, তােমার এমন আচরণে আমার রাগ এসে গেল, এখন তােমাকে হত্যা করা আমার ব্যক্তিগত রাগের কারণে হত, ঈমানের কারণে নয়। তাই আমি তােমাকে ছেড়ে দিলাম। সে কাফির! মওলা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  এই ইখলাছ দেখে মুসলমান হয়ে গেল।”

 (মিরকাতুল মাফাতিহ, ৭ম খন্ড, পৃ: ১২, ৩৪৫১ নং হাদীসের বর্ণনায়)।


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আপনারা দেখলেন তাে! আমীরুল মুমিনীন, মওলা মুশকিল কোশা, হযরত শেরে খােদা, আলী মুরতাদ্বা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর ইখলাছের বরকতে কাফিরের ভাগ্যে ইসলামের মত এক মহা মূল্যবান নে’মত নসীব হল । এমনিভাবে আমাদের আগেকার বুজুর্গানে কেরামগণও সর্বদা নিজের নেক আমল গুলােকে যাচাই করে দেখতেন, যে এই আমল আবার যেন অন্য কাউকে দেখানাের জন্য হয়ে না যায়! যদি কোন নেক আমলে নফস ও শয়তানের অনুপ্রবেশ অথবা লােক দেখানাে ভাবের বিন্দুমাত্র সন্দেহ অনুভব করতেন, তখন সাথে সাথে তা থেকে বাঁচার জন্য বরং অনেক সময় তাে ঐ নেক আমলকে দ্বিতীয়বার করার চেষ্টা করতেন। যেমন : 


৩০ বছরের নামায পুনরায় আদায় করেছেন


 এক বুযুর্গ  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ ৩০ বছর পর্যন্ত মসজিদের ১ম কাতারে জামাআতের সাথে নামায আদায় করতে থাকেন। একবার ১ম কাতারে তার জায়গা হল না, তখন তিনি ২য় কাতারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এতে তাঁর লজ্জা অনুভব হতে লাগল যে, লােকেরা কী বলবে, দেখাে! আজ এই ব্যক্তিটির ১ম কাতার ছুটে গেছে। এই খেয়াল আসতেই তিনি সংযত হয়ে যান আর নিজ অন্তরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন যে, হে নফস! আমি ৩০ বছর পর্যন্ত যে নামায ১ম কাতারে আদায় করেছিলাম, তা কি লােকদের দেখানাের জন্য ছিল? তােমার যে আজ লজ্জা লাগছে? অতএব তিনি বিগত ৩০ বছরের নামায পুনরায় আদায় করেন এবং পূর্ণ সততা ও ইখলাছের উজ্জল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেন। (ইহইয়াউল উলুম, ২য় খন্ড, পৃ: ৩০৬) 

আল্লাহ তায়ালার রহমত তাঁদের উপর বর্ষিত হােক এবং তাঁদের সদকায় আমাদের বিনা হিসেবে ক্ষমা হােক। 


 দে হুসনে আখলাক্ব কি দৌলত,

 কর দে আতা ইখলাছ কি নে'মত।

 মুঝ কো খাজানা দে তকওয়া কা,

 ইয়া আল্লাহ! মেরি ঝুলি ভর দে। 

(ওয়াসাইলে বখশিশ, পৃ-১০৯) 

_____________________

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন