হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর খােদা প্রদত্ত গুণাবলী

 

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  এর খােদা প্রদত্ত গুণাবলী


হযরত সায়্যিদুনা আবু ছালেহ  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ থেকে বর্ণিত,একবার হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুআবিয়া رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ হযরত সায়্যিদুনা দিরার رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  কে বললেন, “আমার নিকট হযরত সায়্যিদুনা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  এর গুণাবলী বর্ণনা করুন। হযরত সায়্যিদুনা দিরার رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  আরজ করলেন, আমীরুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদুনা আলী মুরতাদ্বা শেরে খােদা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর জ্ঞান ও মারেফতের অবস্থা পরিমাপ করা দূরের কথা, কল্পনাও করা যাবে না। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  আল্লাহর ব্যাপারে এবং তাঁর দীনের সংরক্ষণের ব্যাপারে খুব দৃঢ় মনােবল রাখেন। চুলছেড়া বিশ্লেষণমূলক কথাবার্তা বলেন, এবং অতি ন্যায়পরায়নতার সাথে কাজ আদায় করতেন। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  জ্ঞান বিজ্ঞানের ভান্ডার ছিলেন। উনার কথাবার্তা হিকমতে পরিপূর্ণ ছিল। দুনিয়ার চাকচিক্যকে খুব ভয় করতেন। রাতের অন্ধকারে আল্লাহ তা'আলার ইবাদতে রত থাকেন। আল্লাহর কসম! তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  অতিমাত্রায় ক্রন্দনকারী, গম্ভীর এবং খুবই চিন্তিত থাকতেন। নিজের নফসের হিসাব নিতেন, মােটা পােষাক পছন্দ করতেন। আর মােটা রুটি খেতেন। আল্লাহর কসম! দাপট, শান শওকত আর প্রভাব প্রতিপত্তির এমন অবস্থা ছিল যে, আমরা প্রত্যেকেই তাঁর সাথে কথাবার্তা বলার সময় ভয় করতাম। অথচ আমরা যখন উপস্থিত হতাম তখন সাক্ষাতের ক্ষেত্রে তিনিই আগে আসতেন। আর আমরা যখন প্রশ্ন করতাম তখন উত্তর বলে দিতেন, এবং আমাদের দাওয়াত কবুল করে নিতেন। 

যখন হাসতেন তখন দাঁত গুলােকে এমন মনে হত যেন মােতির মালা। তিনি পরহেযগার মুত্তাকী লােকদের সম্মান করতেন। অসহায় মিসকীনদের ভালবাসতেন। কোন শক্তিশালী অথবা সম্পদশালী ব্যক্তিকে তার অযথা কামনায় ভরসা দিতেন না। কোন দূর্বল অসহায় ব্যক্তি তাঁর ন্যায় বিচার থেকে নিরাশ হতেন না। অসহায়রা জানত এখানে অবশ্যই ন্যায় বিচার মিলবে। আল্লাহর শপথ! আমি দেখেছি, যখন রাত আসত, তখন তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  নিজের দাঁড়ি ধরে অঝাের নয়নে কান্না করতেন, আর আহত ব্যক্তির মত কাতরাতেন। 

আমি মওলা আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এটা বলতে শুনেছি যে, “ওহে দুনিয়া! তুমি কি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ, নাকি এখনও আমাকে কামনা কর? হে ধোঁকাবাজ দুনিয়া! তুই আমার থেকে দূরে সরে যা, তুই অন্য কাউকে গিয়ে ধোঁকা দে, আমি তােকে তিন তালাক দিয়ে দিয়েছি। এখানে আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই । তাের বয়স খুবই কম আর তাের সহায় সম্বলও নেমত অতি তুচ্ছ অতি নগণ্য। তাের ক্ষতিকর দিক খুবই বেশি। হায় আফসােস! আখেরাতের সফর খুবই দীর্ঘ আর পাথেয় অতি অল্প এবং রাস্তা খুবই বিপদ সঙ্কুল ও আঁকা বাকা।” 

এটা শুনে হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুয়াবিয়া رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  এর চোখ থেকে অনবরত অশ্রু ঝরতে লাগল । অবশেষে তাঁর দাড়ি ভিজে গেল, আর সেখানে উপস্থিত লােকেরাও অঝােড় নয়নে কাঁদতে রইল । অতঃপর তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  বললেন, “আল্লাহ তায়ালা আবুল হাছান হযরত সায়্যিদুনা আলী মুরতাজা, শেরে খােদা كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর প্রতি রহমত বর্ষণ করুন। আল্লাহর কসম! তিনি এমনই ছিলেন।” (উয়ুনুল হিকায়াত, পৃ-২৫)। 

_____________________

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন