অন্ধের চোখ মিলে গেল

 

অন্ধের চোখ মিলে গেল


হযরত সায়্যিদুনা ওসমান বিন হুনাইফ رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ থেকে বর্ণিত, এক অন্ধ সাহাবী رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ  প্রিয় নবী صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, আল্লাহর দরবারে দুআ করুন, যেন আমি ভাল হয়ে যায়। ইরশাদ করলেন, “যদি তুমি চাও তাহলে দুআ করব, অন্যথায় সবর কর। আর এটা তােমার জন্য উত্তম হবে।” । তিনি আরজ করলেন, হুজুর صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  দুআ করে দিন। তখন তাকে নির্দেশ দেয়া হল যে, ওযু কর এবং ভালভাবে ওজু কর আর দুই রাকাআত নামায পড়ে এই দুআটি পড় :

 اَللّٰهُمَّ اِنِّیۡ اَسۡئَلُكَ اَتَوَسَّلُ وَاَتَوَجَّهُ اِلَیئكَ بِنَبِّكَ مُحَمَّدٍ نَّبِیِّ الرَّحۡمَةِ٭ يَا مُحَمَّدُ اِنِّیۡ تَوَجَّهۡةُبِكَ اِلٰی رَبِّیۡ فِیۡ حَاجَتِیۡ هٰذِهٖ لِتُقۡضٰی لِیۡ٭ اَللّٰهُمَّ فَشَفِّعۡهُ فِیّ٭ 


অনুবাদ : ইয়া আল্লাহ! আমি তােমার নিকট প্রার্থনা করছি এবং উছিলা পেশ করছি আর তােমারই প্রতি মনােনিবেশ করেছি তােমার নবী মুহাম্মদ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর মাধ্যমে, যিনি দয়ালু নবী। 

টীকা : এই দুআটি ওযিফা হিসেবে পাঠ করার সময় “ইয়া মুহাম্মদ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর স্থলে ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم বলবেন। এর প্রমাণ ফাতাওয়ায়ে রবীয়া শরীফের ৩০ তম খন্ডের রিসালা “তাজালিল ইয়াক্বীন” এর পৃষ্ঠা নং ১৫৬-১৫৭ এর মধ্যে দেখুন) 


আমি হুজুর নবী করীম صَلَّى اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর মাধ্যমে আমার প্রতিপালকের প্রতি আমার হাজত সমূহ নিয়ে মনােনিবেশ হচ্ছি, যাতে আমার হাজত সমূহ পূর্ণ হয়ে যায়। হে আল্লাহ! তাঁর সুপারিশ তুমি আমার পক্ষে কবুল করে নাও। হযরত সায়্যিদুনা ওসমান বিন হানিফ رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা উঠতেই পারলাম না, কথা বলছিলাম। এমন সময় সে আমাদের নিকট এল। মনে হল যেন, সে কখনও অন্ধই ছিল না! (বাহারে শরীয়ত, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬৮৫, হাদিস: ১৩৮৫। তিরমিযী, : ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩৬, হাদিস: ৩৫৮৯। আল মুজামুল কবীর, ৯ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩০, হাদিস: ৮৩১১)।



 'ইয়া রাসূলাল্লাহ' সম্পন্ন দোয়ার বরকতে কাজ হয়ে গেল


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এই পবিত্র হাদিস থেকে দূর থেকে 'ইয়া রাসুলাল্লাহ' বলার অনুমতি পাওয়া যায়। কেননা, সেই সাহাবী আলাদা হয়ে এক কোণায় গিয়ে চুপি চুপি 'ইয়া রসুলাল্লাহ’ বলে আহবান করেছেন। আর সত্য এই যে, এই অনুমতিটি সেই অন্ধ সাহাবীটির জন্য বিশেষিত ছিল না। বরং ওফাতের পর প্রকাশ্যভাবে কেয়ামত সংঘঠিত হওয়া পর্যন্ত এর বরকতগুলাে বিদ্যমান রয়েছে। হযরত সাইয়েদুনা ওসমান বিন হুনাইফ رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ আমীরুল মুমিনীন, জামেউল কুরআন হযরত সাইয়েদুনা ওসমান বিন আফফান رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ এর খেলাফত কালে এই দোয়াটি এক অভাবীকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। তাবারানীতে শরীফে রয়েছে, কোন ব্যক্তি তার কোন হাজত নিয়ে হযরত সায়্যিদুনা ওসমান বিন হুনাইফ رَضِيَ اللّٰهُ  تَعَالٰی عَنۡهُ এর দরবারে হাজির হয়। তখন তিনি বললেন, ওযু করে নাও। এর পর মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামায পড়ে নাও। অত:পর এই প্রার্থনাটি কর: (এখানে সেই দোয়াটিই শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল যা এক্ষুণি হাদিস শরীফের আগের পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে) এবং (বললেন, এই দোয়ার শেষ শব্দ) হাজতী জায়গায় তােমার হাজতের নাম নেবে। লােকটি চলে গেল । যা তাকে বলা হয়েছিল সে তাই করল। তার হাজত পূর্ণ হল। (আল মুজামুল কবীর, ৯ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩০, হাদিস: ৮৩১১)। 

_____________________

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন