সময়ের প্রতি মর্যাদাবান ব্যক্তিগণের মূল্যবান বানী সমূহ

 

সময়ের প্রতি মর্যাদাবান ব্যক্তিগণের মূল্যবান বানী সমূহ


(১) আমিরুল মুমিনীন শেরে খােদা আলী رَضِیَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ইরশাদ করেন, “এ দিন সমূহ তােমাদের জীবনের পাতা স্বরূপ। তাই উত্তম আমল দ্বারা তােমরা এ পাতা সমূহকে সাজিয়ে নাও।

(২) হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ বিন মাসউদ رَضِیَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  বলেছেন, “আমি আমার অতীত জীবনের সেসব দিনের জন্য বেশী অনুতাপ বােধ করি, যেসব দিনে আমার আমলনামাতে আমি সাওয়াব অর্জন করতে পারিনি।” 

(৩) হযরত সায়্যিদুনা ওমর বিন আবদুল আজিজ رَضِیَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  বলেছেন, দৈনন্দিন তােমাদের বয়স কমে যাচ্ছে। সুতরাং তােমরা সৎ কাজ করতে কেন অবহেলা করছ? একদা কেউ তাঁকে বলল, হে আমিরুল মুমিনীন! এ কাজটি আপনি আগামী কালের জন্য রেখে দিন। জবাবে তিনি বললেন, “দিনের কাজ দিনে অনেক কষ্ট করে শেষ করি যদি আমি আজকের কাজও আগামী দিনের জন্য রেখে দিই, তাহলে দুইদিনের কাজ কিভাবে একদিনে শেষ করতে পারব? আজকের কাজ আগামী কালের জন্য রেখে দিও না। আগামী কাল আরেকটি কাজ করতে হবে। 

(৪) হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ বলেছেন, হে মানুষ! তুমি কয়েকটি দিনের সমষ্টি মাত্র। যদি তােমার জীবন থেকে একটি দিন চলে যায়, তবে মনে রেখাে, তােমার জীবনের একটা  অংশও চলে গেল। (আত্ তাবকাতুল কুবরা লিল মুনাবি, খন্ড-১১, পৃ-২৫৯, দারে সাদির, বৈরুত)।


(৫) হযরত সায়্যিদুনা ইমাম শাফেয়ী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেছেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ আহলুল্লাহদের সহবতে ছিলাম। তাঁদের সােহবতে থেকে আমি দুটি মূল্যবান বিষয় শিখতে পেরেছি। (১) সময় তরবারীর ন্যায়। সুতরাং নেক আমল দ্বারা তােমরা তাকে কর্তন করাে। অন্যথা অনর্থক কাজে ব্যস্ত রেখে তা তােমাদের কর্তন করবে, (২) তােমরা স্বীয় নফসের হিফাজত করাে, তােমরা যদি নফসকে ভাল কাজে ব্যস্ত না রাখ তাহলে তা তােমাদেরকে মন্দ কাজে ব্যস্ত রাখবে। 

(৬) ইমাম রাযী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেছেন, “আল্লাহর শপথ! আহারের সময় আমার জ্ঞান চর্চা বন্ধ থাকলে আমার বেশী আফসােস লাগে। কেননা সময় অতি মূল্যবান সম্পদ।” 



জীবনে সময়ের মূল্য বুঝা 


 (৭) অষ্টম শতাব্দীর প্রখ্যাত শাফেয়ী মাজহাবের আলেম সায়্যিদুনা শামসুদ্দিন আসবাহানী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ সম্পর্কে হাফেজ ইবনে হাজর رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  লিখেছেন, তিনি এ ভয়ে পানাহার কম করতেন যে, বেশী খেলে হয়ত ঘন ঘন প্রস্রাব পায়খানার প্রয়ােজন দেখা দিতে পারে। ফলে বারবার শৌচাগারে গেলে সময় নষ্ট হতে পারে। (আদ দুরারুল কামেনা লিল আসলানী, খন্ড-৪র্থ, পৃ-৩২৮, দারে ইহইয়ায়িত্তারাসীল আরবী, বৈরুত)। 

(৮) হযরত আল্লামা যাহবী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  তাযকিরাতুল হুফফাজ কিতাবে খতিবে বাগদাদী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি পথ চলার সময়ও কিতাবাদি পাঠ করতেন। যাতে আসা যাওয়ার সময়ও অযথা নষ্ট না হয়। (তাযকিরাতুল হুফফাজ, খন্ড-৩য়, পৃ-২২৪, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)।


(৯) হযরত সায়্যিদুনা জুনাইদ বাগদাদী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  মুমূর্ষ অবস্থায় কুরআন শরীফ পাঠ করছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি এ মুমুর্ষ অবস্থায় কুরআন শরীফ পাঠ করছেন? তিনি বললেন, আমার আমল নামা চিরতরে বন্ধ হতে যাচ্ছে। তাই আমি তাড়াতাড়ি তাতে কিছু সংযােজন করতে চাচ্ছি। (সায়দুল খাতির লে ইবনে যওযী, পৃ-২২৭, মাকতাবায়ে নজার মােস্তফা আল বাজ)। 

_______________

কিতাব: অমূল্য রত্ন

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন