ছয় দিক সম্পর্কে

 

ছয় দিক সম্পর্কেঃ হজরত খাজা নকশবন্দ কাদ্দাসাল্লাহু তায়া’লা সিররুহুল  আকদাস বর্ণনা করেছেনঃ প্রত্যেক শায়েখের আয়নার দুইটি দিক আছে, কিন্তু  আমার আয়নার ছয়টি দিক। কিন্তু আজ পর্যন্ত, এই বুজুর্গ খাদ্দানের কোনো  খলীফাই এই পবিত্র কথার ব্যাখ্যা প্রদান করেননি; এমন কি কেউ ইশারা  ইংগিতেও কিছু বলেননি। এই নিকৃষ্ট ও নগণ্য ব্যক্তির সাধ্য কি যে, এ কথার  ব্যাখ্যা ও বিস্তৃত বর্ণনার জন্য মুখ খোলে?  

বস্তুতঃ হক সুবহানুহু তায়া’লা স্বীয় ফযল ও করমের দ্বারা এই গুঢ় রহস্যের  কথা এই অধমের নিকট প্রকাশ করেন এবং এর হাকীকত তাঁরই ইচ্ছামতো ব্যক্ত  করেন। এই হেতু মনে জাগে যে, এই দু®প্রাপ্য মোতির বর্ণনা লেখনীর মাধ্যমে  পেশ করি। ইস্তিখারা করার পর এই সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে যে, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা, যেন তিনি ত্রুটি হতে হেফাজত করেন এবং বর্ণনার শক্তি দান  করেন।  

জানা দরকার যে, আয়নার অর্থ হলো আরেফের কলব বা দিল যা রূহ ও  নফসের মধ্যে একটি বরজখ স্বরূপ। আয়নার দুই দিকেই অর্থ হলো রূহের দিক  এবং নফসের দিক। কাজেই সালেক যখন কলবের মাকামে উন্নীত হয়, তখন তার  দুই দিকই তার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। ঐ দুটি মাকামের সেই সমস্ত জ্ঞান ও  মারেফাত— যা কলবের সাথে সম্পৃক্ত, তার উপর প্রকাশ পেতে থাকে।  

পক্ষান্তরে, হজরত খাজা নকশবন্দের র. তরীকা এর বিপরীত এক  মহাসম্মানিত তরীকা। এই তরীকায় ‘শেষ বস্তুকে প্রথমেই’ আনা হয়েছে। কাজেই  এই তরীকায় কলবের আয়নায় ছয়টি দিক দেখা যায়। যার বিস্তারিত বিবরণ হলোঃ  

এই মহান তরীকার বুজুর্গদের নিকট এই অবস্থা প্রকাশিত হয় যে, ছয়টি  লতিফা (অর্থাৎ নফস, কলব, রূহ, সের, খফী এবং আখফা) এর যা কিছু মানব  দেহের মধ্যে মওজুদ এবং তা এককভাবে কলবের মধ্যেই বিদ্যমান আছে। এই  ছয় দিকের দ্বারা ছয় লতীফা অর্থ নেয়া হ’য়েছে।  

বস্তুতঃ অন্যান্য সমস্ত তরীকার মাশায়েখদের সায়ের কলবের বহির্ভাগ পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং এই বুজুর্গদের (নকশবন্দীয়া তরীকার) সায়ের কলবের অভ্যন্তর  পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর এই সায়েরের মাধ্যমে তাঁরা কলবের মূল থেকে মূলে  পৌঁছে থাকেন এবং এই ছয়টি লতীফার যাবতীয় ইলম ও মারেফাত কলবের  মাকামে প্রকাশ পেতে থাকে। কিন্তু এগুলি ঐ ইলম ও মারেফাত যা কলবের  মাকামের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এটাই হজরত খাজা নকশবন্দ কাদ্দাসাল্লাহু তায়া’লা  সিররূহু কর্তৃক বর্ণিত মহান বর্ণনা।  

এই মাকামে, এই অধমের উপর, ঐ সমস্ত বুজুর্গদের বরকতে বহুকিছু প্রকাশ  পেয়েছে এবং বিশদভাবে পর্যালোচনার পর বাস্তব জ্ঞান হাসিল হয়েছে যা এই  আয়াতের আলোকে— ‘তোমার রবের প্রদত্ত নেয়ামতের কথা বলে দাও’ প্রাপ্ত এই  অতিরিক্ত কাশফের কিছু রহস্য এবং বাস্তবজ্ঞানের কিছু নমুনা বর্ণনা করছি।  ভুলত্রুটি থেকে মুক্ত থাকা এবং বিবরণ প্রদান শক্তি সম্পূর্ণই আল্লাহরতরফ  থেকে।  

কলবের পাঁচটি স্তর সম্পর্কেঃ প্রকাশ থাকে যে, কলব যেমন ছয় লতীফাকে  একত্রিত করে; একইভাবে কলবের-কলবও এই সমস্ত লতীফার সঙ্গে সংযুক্ত  থাকে। কিন্তু কলবের মধ্যে বৃওের সংকীর্ণতা হেতু অথবা অন্য কোনো গোপন  রহস্যের কারণে, উল্লেখিত ছয়টি লতীফা থেকে দুটি লতীফা আংশিকভাবে প্রকাশ  পায় না। যার একটি লতীফায়ে নফস এবং অপরটি লতীফায়ে আখফা।  

১. দুইটি বিপরীত বস্তুর সম্মিলিত অবস্থা। 

এই অবস্থা ঐ কলবেরও যা তৃতীয় স্তরে হয়ে থাকে, যেখানে লতীফায়ে খফীও  প্রকাশ পায় না। এই অবস্থা ঐ কলবেরও যা চতুর্থ স্তরে হয়ে থাকে, যেখানে  লতীফায়ে সের প্রকাশ পায় না। কিন্তু এই স্তরে লতীফায়ে কলব এবং লতীফায়ে  রূহ্ প্রকাশিত হয়ে থাকে। পঞ্চম স্তরে লতীফায়ে রূহও প্রকাশ পায় না।  এমতাবস্থায়, কেবলমাত্র কলবই অবশিষ্ট থাকে, যা মূলতঃ অবিমিশ্র এবং সেখানে  অন্য কিছু কখনোই গৃহীত হয় না।  

এইস্থানে, উচ্চ তত্ত্বজ্ঞান সম্পর্কে কিছু জানা দরকার, যাতে ঐ মারেফাতের  দ্বারা সর্বশেষ প্রান্ত এবং উদ্দেশ্যের সর্বশেষ স্তরে পৌঁছানো যায়। কাজেই, আল্লাহ  সুবহানুহু তায়া’লার অনুগ্রহে আমি বলছিঃ যা কিছু এই বিশাল জগতে ব্যাপকভাবে  পরিদৃশ্যমান, তার সবকিছুই এই ‘ছোট্ট জগতে’ সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশিত। এই  ‘ছোট্ট জগৎ এর অর্থ— মানবদেহ। কাজেই যখন ছোট্ট জগতের রঙ বিদূরিত করে  তাকে আলোকিত করা হয়, তখন তাতে আয়নার মতো ঐ সমস্ত জিনিস প্রকাশিত  হয়, যা ব্যাপকভাবে এই ‘বিশাল জগতে’ দেখা যায়। কেননা, রঙ বিদূরিত হওয়ার  কারণে এবং আলোকিত হওয়ার ফলে তার আধারটি প্রশস্ত হয়ে যায় এবং তার  সংকীর্ণতা দূর হয়ে যায়। কলবেরও ঠিক এমনই অবস্থা, যার সম্পর্ক এই  মানবদেহের সঙ্গে সেরূপই, যেরূপ সম্পর্ক আলমে সগীরের সাথে আলমে  কবীরের। অর্থাৎ ব্যাপকতা ও সংকীর্ণতার দিক দিয়ে। কাজেই ‘আলমে আসগর’  বা ‘ক্ষুদ্রতম জগৎ’ যার নাম হলো- কলবের নাম, যখন তাকে শানিত করা হয়  এবং তার উপর আপতিত জুলমাত ও অন্ধকার বিদূরিত করা হয়, তখন তাতে  আয়নার ন্যায় ঐ সমস্ত বস্তু প্রতিফলিত হতে থাকে, যা ‘আলমে সগীর’ বা  মানবদেহের মধ্যে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। কলবের কলবের সাথে- কলবের  ও ঠিক এই সম্পর্ক। অর্থাৎ তাতেও ব্যাপকতা ও সংকীর্ণতার সম্পর্ক বিদ্যমান।  আর কলবের কলবের মধ্যে ব্যাপকতার বা বিস্তৃতির প্রকাশ, কলবের পবিত্রতা ও  নূরানীয়াতের কারণে হয়, যদিও তা মূলে খুবই সংকীর্ণ।  

ঐ কলবের অবস্থা— যা তৃতীয় স্তরে হয় এবং ঐ কলবেরও যা চতুর্থ স্তরে  হয়, ব্যাপকতা ও সংকীর্ণতা এইরূপেই হয়ে থাকে। অর্থাৎ তৃতীয় স্তরে যা বিস্তৃত  হয়, চতুর্থ স্তরে তা সংকীর্ণ হয়ে থাকে। আগের স্তরের বিস্তৃতি, এই দুটি স্তরে তার  বিকাশ শানিত ও নূরান্বিত হওয়ার ফলে হাসিল হয়। আর এই অবস্থা ঐ  কলবেরও যা পঞ্চম স্তরে হয়। যদিও তা অবিমিশ্র এবং সেখানে অন্যকিছুই গৃহীত  হয় না, তবুও পরিপূর্ণ পবিত্রতা হাসিলের পর তার মধ্যে ঐ সমস্ত বস্তু প্রকাশ  পেতে থাকে, যা তামাম জাহান অর্থাৎ ‘আলমে কবীর’, আলমে সগীর’ এবং  অন্যান্য আলমে বিরাজিত। যেমন আগে আলোচিত হয়েছে। 

কাজেই, কলব (পঞ্চম স্তরে) সংকীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিস্তৃত এবং অবিমিশ্র হওয়া  সত্ত্বেও প্রশস্ততম। আর ক্ষুদ্রতম হওয়া সত্ত্বেও বৃহত্তমও। দুনিয়াতে কোনো কিছুই  কলবের মতো নয়। এই আশ্চর্যজনক ও দুর্লভ লতীফার সমকক্ষ এমন কিছুই নেই,  যদদ্বারা মহান স্রষ্টা আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়া’লার সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করা  যায়।  

বস্তুতঃ এই লতীফার মধ্যেই মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানুহু ও তায়া’লার ঐ  সমস্ত আশ্চর্যজনক ও দুর্লভ নিদর্শনাবলী প্রকাশ পায়, যা অন্য মাখলুকের মধ্যে  প্রকাশ পায় না। হাদীছে কুদসীতে বর্ণিত আছেঃ ‘না আমার আসমান আমাকে  ধারণ করতে পারে, না আমার যমীন; কিন্তু আমাকে ধারণ করতে পারে— আমার  মু’মিন বান্দার কলব।’  

‘আলমে কবীর’ বা এই বিশাল জগৎ, যদিও প্রকাশের দিক দিয়ে সবচাইতে  প্রশস্ত আয়নাস্বরূপ, তথাপি তার স্বীয় আধিক্যতা ও ব্যাপকতার কারণে— যাতে  বারী তায়া’লার সংগে কোনোরূপ সংস্রব নেই; যাঁর মধ্যে কখনো আধিক্যতা বা  ব্যাপকতা পাওয়া যায় না। ঐ যাতের সমকক্ষ ঐ বস্তুই হতে পারে, যা সংকীর্ণ  হওয়া সত্ত্বেও বিস্তৃততম, অবিমিশ্র হওয়া সত্ত্বেও প্রশস্ততম এবং ক্ষুদ্রতম হওয়া  সত্ত্বেও বৃহত্তমও। যখন এমন কোনো ‘আরেফ’— যিনি মারেফাতের পূর্ণ অধিকারী  এবং যার শুহুদ বা দর্শনও নির্ভুল— এই মাকামে পৌঁছান, যাঁর অস্তিত্ব দুর্লভ এবং  মর্যাদায় যিনি সম্ভ্রান্ত; তখন এই আরেফ সমগ্র জাহান এবং সমস্ত বিকাশমান বস্তুর  কলব বা হৃদয়স্বরূপ হয়ে যান। এইরূপ ব্যক্তিই বেলায়েতে মোহাম্মাদী স. এর  সত্যিকার হকদার এবং ‘দাওয়াতে মোস্তফার’ মর্যাদায় বিভূষিত হন— তাঁর প্রতি  দরূদ ও সালাম।  

বস্তুতঃ সমস্ত কুতুব, আওতাদ ও আব্দাল তাঁর বেলায়েতের বা ওলীত্বের  দায়েরা বা বৃত্তের মধ্যে দাখিল হন এবং আফরাদ এবং আওলীয়াদের সকলেই  তাঁর হেদায়েতের আলোকে স্নাত হন। কেননা, এইরূপ ব্যক্তিই রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু  আলায়হি ওয়া সাল্লামের স্থলাভিসিক্ত হন এবং আল্লাহরহাবীব সল্লাল্লাহু আলায়হি  ওয়া সাল্লামের হেদায়েত থেকে হেদায়েত প্রাপ্ত হন।  

এই মহান নেসবত— যা খুব কমই পাওয়া যায়, মুরাদীন বা শেষপ্রান্তে উপনীত ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত। মুরীদদের জন্য এই কামালাত হাসিল করা  সম্ভব নয়। এটাই মারেফাতের সর্বোচ্চ পূর্ণতা এবং সর্বশেষ স্তর, যার উপর আর  কোনো স্তর নেই এবং এর চাইতে অধিক মর্যাদাশালী আল্লাহর দান আর কিছুই  নেই। এই পর্যায়ের কোনো কামেল আরেফ যদি হাজার বৎসর পরেও পাওয়া যায়,  তবু তাঁকে গণীমত মনে করতে হবে। তাঁর বরকতই দীর্ঘদিন এবং অধিক সময়  জারী থাকে। ইনিই সেই কামেল আরেফ— যার কথাবার্তা প্রতিষেধকতুল্য এবং যাঁর দৃষ্টি রোগমুক্তির কারণস্বরূপ। হজরত ইমাম মাহদী এই উত্তম উম্মতের মধ্যে  এই মহান নেসবতের সংগে অতিসত্বর আগমন করবেন। এ যে আল্লাহতায়ালার  অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা এই অনুগ্রহ প্রদান করেন; আর আল্লাহ তো মহান  অনুগ্রহকারী।  

এই সম্মানিত নেয়ামত হাসিল সম্পর্কেঃ এই সম্মানিত নে’য়ামত সুলূক ও  জযবা উভয়পথে বিস্তারিতভাবে হাসিল হয়; যা সম্পুর্ণ ফানা ও পূর্ণ বাকার এক  একটি মাকাম পর্যায়ক্রমে অতিক্রম করার উপর নির্ভরশীল। আর এই অবস্থা  সাইয়্যেদুল মোরসালীন, হাবীবে রব্বুল আ’লামীনের পূর্ণ পায়রবী করা ব্যতীত  হাসিল করা সম্ভব নয়। তাঁর ও তাঁর পরিবার পরিজনদের প্রতি দরূদ ও সালাম।  মহান আল্লাহর শোকর যে, তিনি আমাকে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া  সাল্লামের পূর্ণ অনুসরণের তওফীক দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানুহু তায়া’লার নিকট  এই দরখাস্ত, তিনি যেনো আমাকে রসুলেপাক স. এর পরিপূর্ণ পায়রবী করার  তওফীক অটুট রাখেন, এর উপর দৃঢ়তা দান করেন এবং তাঁর শরীয়তের উপর  অটল থাকার তওফীক নসীব করেন।  

আল্লাহ্তায়ালা ঐ সমস্ত বান্দাদের উপরও রহম করুন, যারা আমার এই  দোয়ার উপর আমীন বলে।  

এই মা’আরিফ ঐ সমস্ত সূক্ষ্ম তত্ত্ব ও গোপন রহস্যের অন্তর্ভুক্ত, যে সম্পর্কে  শ্রেষ্ঠ ওলীদের মধ্যে কেউ কিছুই বলেননি এবং সম্মানিত বুজুর্গ ব্যক্তিদের কেউ  এদিকে ইংগিতও করেননি। হক সুবহানুহু তায়া’লা তাঁর এই বান্দাকে স্বীয়  হাবীবের তোফায়েলে এই গোপন রহস্যাদি প্রকাশের জন্য নির্বাচিত করেছেন।  তাই কোনো ফার্সী কবির ভাষায়ঃ  

আসে যদি কভু বৃদ্ধার দুয়ারে-সুলতান,  

হ’য়োনা তাতে হে খাজা, কভু- পেরেশান।  

হক তায়া’লা শানুহুর কবুলিয়ত, কোনো কারণের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং  কোনোকিছুর অনুসারীও নয়। বরং তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন এবং যেরূপ ইচ্ছা  হুকুম দেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতের দ্বারা খাস্ করে নেন এবং তিনি  মহান মর্যাদার অধিকারী। আমাদের নেতা হজরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু ‘আলায়হি  ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবার পরিজনদের উপর দরূদ, সালাম এবং বরকত নাযিল  হোক। সমস্ত আম্বীয়া, মুকাররবীন, ফিরিশতা এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি  মোবারকবাদ। যারা হেদায়েতের অনুসারী এবং মোহাম্মদ মোস্তফা সল্লাল্লাহু  ‘আলায়হি ওয়া সাল্লামের পূর্ণ অনুসারী। 

_______________

কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ

কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি

অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন