ইজাযত হাসিল করা পূর্ণতার উপর নির্ভরশীল নয়

 

ইজাযত হাসিল করা পূর্ণতার উপর নির্ভরশীল নয়, এ প্রসংগেঃ কখনাে এমন হয় যে, কোনাে কামেল বুজুর্গ কোনাে নাকেস বা অপূর্ণ মুরীদকে তরীকতের তালিম দেয়ার জন্য ইজাযত প্রদান করেন এবং উক্ত নাকেস ব্যক্তির মুরীদদের আধিক্যের কারণে ঐ নাকেস ব্যক্তির কাজও পূর্ণতায় পৌছে যায়। হজরত খাজা নকশবন্দ (কাদ্দাসা সিররুহু) মাওলানা ইয়াকুব চরখী র. কে কামালাতের দরজায় পৌঁছানাের আগেই তরীকতের তালিম দেওয়ার জন্য ইজাযত প্রদান করেন এবং বলেন, “হে ইয়াকুব! তুমি আমার কাছ থেকে যা কিছু পেয়েছে, তা অন্যের কাছে পৌছে দাও।'

অথচ অবস্থা এই ছিলো যে, মাওলানা ইয়াকুব চরখী র. তরীকতের পূর্ণতা হাসিল করেন খাজা আলাউদ্দীন আত্তার কাদ্দাসা সিররুহুর নিকট থেকে। এইজন্য হজরত মাওলানা আব্দুর রহমান জামী, স্বীয় গ্রন্থ ‘নাফহাতুল উনসে' ইয়াকুব চরখী র. কে সর্বপ্রথম খাজা আলাউদ্দীন আত্তারের মুরীদ হিসাবে উল্লেখ করেছেন এবং পরে তার নেসবত বা সম্পর্ক খাজা নকশবন্দ র. এর সাথে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

 বস্তুতঃ কোনো কামেল বুজুর্গ যখন স্বীয় কোনো মুরীদকে, বেলায়েতের বা ওলীত্বের কোনো দরজা হাসিলের পর, তরীকতের তালিম প্রদানের জন্য ইজাযত প্রদান করেন, তখন এ ইজাযতটিও ঐ প্রকারের হয়। এমতাবস্থায় সেই মুরীদ একদিকে কামেল এবং অন্যদিকে নাকেস বা অপূর্ণ হয়। 

আর যে মুরীদ বেলায়েতের দুই বা তিনটি দরজা হাসিল করে,তার অবস্থাও তেমনি হয়। সে একদিকে পূর্ণ বা কামেল হয় এবং অপরদিকে নাকেস বা অপূর্ণ থাকে। 

কেননা, সর্বশেষ স্তরে পৌঁছানোর আগে সমস্ত দরজা বা স্তরগুলিকে এক হিসাবে কামেল বলা যেতে পারে এবং 

অন্য হিসাবে নাকেস ও বলা হয়। এতদসত্ত্বেও কোনো কামেল ওলী যখন স্বীয় কোনো মুরীদকে বেলায়েতের কোনো মাকাম হাসিলের পর, তাকে তরীকতের তালিম প্রদানের ইজাযত প্রদান করেন, তখন তা পূর্ণতার শেষ স্তর হাসিলের উপর নির্ভর করে না।

 একটি সন্দেহের অপনোদনঃ স্মর্তব্য যে, অপূর্ণতা যদিও ইজাযত বা অনুমতি লাভের পথে অন্তরায়, তথাপিও যখন কোনো কামেল ব্যক্তি, যে অন্য ব্যক্তিকেও কামেল বানাতে সক্ষম- কোনো নাকেস বা অপূর্ণ ব্যক্তিকে নিজের নায়েব বা প্রতিনিধি হিসাবে মনোনীত করেন এবং উক্ত ব্যক্তির হাতকে নিজের হাত হিসাবে বিবেচনা করেন। এমতাবস্থায় অপূর্ণতার ক্ষতি মারাত্মক হয় না। আল্লাহ্ সুবহানুহু তায়ালা সব বিষয়ের হাকীকত সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।

_______________

কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ

কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি

অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন