হজরত খাজা বাকী বিল্লাহের প্রতি আকীদা


হজরত খাজা বাকী বিল্লাহের প্রতি আকীদা সম্পর্কে:

আমরা চার ব্যক্তি, আমাদের মাের্শেদ হজরত খাজা বাকী বিল্লাহ্ র. এর খেদমতে, অন্য সকল লােক অপেক্ষা বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ছিলাম। হজরত খাজা র. সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকের আকীদা বা বিশ্বাস ভিন্ন ভিন্ন ছিলাে এবং এইজন্য আমাদের ব্যক্তিগত হালও পৃথক ছিলাে। এই ফকিরের অটল বিশ্বাস ছিলাে এই যে, এ ধরনের সােহবত ও সমাবেশ এবং তারবীয়াত (প্রতিপালন) ও হেদায়েত, রসুলেপাক সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের যামানার পরে, কখনাে কারাে হাসিল হয়নি। আর এ জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতাম যে, যদিও খায়রুল বাশার সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের পবিত্র সােহবত বা সাহচর্য নসীব হয়নি, তবুও আমার মাের্শেদের মতাে এমন মর্যাদাসম্পন্ন সােহবতের সৌভাগ্য হতে মাহরুম হইনি। আমাদের শায়েখ হজরত খাজা র. অবশিষ্ট তিন ব্যক্তি সম্পর্কে এইরূপ বলতেনঃ ‘অমুক ব্যক্তি তাে আমাকে পূর্ণতার অধিকারী বলে মনে করে, তবে সাহেবে ইরশাদ (হেদায়েতের পথ প্রদর্শক) বলে ধারণা করে না। আর তার নিকট ইরশাদের মরতবা, তাকমীলের মরতবা হতে উচ্চ’ । আর ঐ ব্যক্তি সে আমার সাথে কোনাে সম্পর্কই রাখে না। আর তিনি তৃতীয় ব্যক্তি সম্পর্কে বলতেনঃ ‘সে আমাদের অস্বীকারকারী। বস্তুতঃ, আমরা প্রত্যেকে আমাদের ধারণা ও বিশ্বাস অনুযায়ী মারেফাতের অংশ হাসিল করেছি।

শায়েখের মহব্বতে আধিক্য প্রকাশ না করা সম্পর্কেঃ প্রকাশ থাকে যে, মুরীদের স্বীয় পীর সম্পর্কে উত্তম ও পূর্ণ হওয়ার ধারণা- মহব্বতের ফল ও সম্পর্কের পরিণতি স্বরূপ হয়ে থাকে, যা ফায়দা আদান প্রদানের কারণ হয়। কিন্তু এটা জরুরী যে, কেউ যেনাে স্বীয় পীরকে ঐ সমস্ত বুজুর্গ ব্যক্তিদের উপর ফযীলত বা শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান না করে, যাদের বুজুর্গী এবং ‘আজমত বা শ্রেষ্ঠত্ব শরীয়তের মধ্যে নির্ধারিত আছে। কেননা, এমন ধারণা করা বাহুল্যের কারণ হয়ে থাকে, যা নিন্দনীয় ব্যাপার। শিয়া মতাবলম্বীদের ভ্রষ্টতা এই যে, তারা কেবলমাত্র আহলে বায়েতগণের প্রতি মহব্বতের আধিক্য প্রকাশ করে। আর নাসারারা বা খ্রিস্টানগণ এই মহব্বতের আধিক্য প্রকাশ হেতু হজরত ঈসা আ. কে আল্লাহর বেটা বানিয়ে ফেলেছে। যার জন্যে তারা চিরস্থায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। শরীয়তে যাদের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারিত আছে, তাঁরা ব্যতীত, অন্যান্য লােকদের উপর নিজের পীরকে যদি কেউ ফযীলত দেয়, তবে তা জায়েয বা বৈধ। বরং এরকম করা তরীকতের উন্নতির জন্য ওয়াজিব স্বরূপ। এই ফযীলত প্রদান করা মুরীদের ইচ্ছানুযায়ী হয়, বরং মুরীদ যদি যােগ্য হয়, তবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার মধ্যে এই ধারণার সৃষ্টি হয় এবং সে এর অসীলায় পীরের কামালাতসমূহ অর্জন করে। যদি এইরূপ ফযীলত প্রদান মুরীদের স্বেচ্ছাকৃত হয় এবং সে বাস্তবের বিপরীত এ ধরনের বিশ্বাসের সৃষ্টি করে, তবে তা জায়েয নয় এবং এর দ্বারা তার কোনাে লাভও হয়

_______________

কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ

কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি

অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন