কালামুল্লাহর পথ প্রদর্শক হওয়া সম্পর্কেঃ সুলুকের রাস্তায় চলার পথে আমার পথপ্রদর্শক হলাে - কালামুল্লাহ বা আল্লাহর কালাম। এই দৃষ্টিতে আমার পীর বা মাের্শেদ হলাে কোরআন মজীদ।যদি কোরআনে করীমের হেদায়েত না আসতাে, তবে সত্য মাবুদের ইবাদতের পথ প্রকাশিত হতাে না। এই রাস্তার প্রতিটি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বস্তু ‘আমি-ই ইলাহ' এই আওয়াজ দেয় এবং পথচারীকে স্বীয় উপাসনায় লিপ্ত করে। যদি উক্ত বস্তু তুলনীয় হয়, তবে নিজেকে অতুলনীয় হিসাবে প্রকাশ করে। আর যদি তা সাদৃশ্যযুক্ত হয়, তবে নিজেকে সাদৃশ্যবিহীন অবস্থায় প্রকাশ করে। এখানে ইমকান বা সম্ভাব্যতা, ওজুব বা আবশ্যকতার সঙ্গে মিশ্রিত এবং ধ্বংস ও স্থায়ীত্ব একই সূত্রে গ্রথিত। যদি তা বাতিল বা মিথ্যা হয়, তবে তা হক বা সত্যের আকৃতিতে এবং যদি গুমরাহ হয়, তবে হেদায়েতের সুরতে প্রকাশিত হয়। বেচারা সালেক বা পথচারী, একজন অন্ধ মুসাফিরের মতাে হয়ে যায় এবং প্রত্যেককে ‘এইতাে আমার রব’ মনে করে তার দিকে মুখ ফিরায়। হক সুবহানুহু ওয়া তায়ালা স্বীয় প্রশংসায় ইরশাদ করেন- যমীন ও আসমানের স্রষ্টা। আর তিনি স্বীয় শানে আরাে ইরশাদ করেন- “পূর্ব ও পশ্চিমের রব। আমার ‘উরুজ বা ঊর্ধ্বগমনের সময় যখন এই খেয়ালী মা'বুদসমূহকে আমার সম্মুখে পেশ করা হলাে, তখন তারা উপরােক্ত গুণের অধিকারী নয় বলে স্বীকার করলাে এবং সকলে ধ্বংস হয়ে গেলাে। এমতাবস্থায় আমি ‘আমি অস্তগামী ও ধ্বংসশীলদের ভালােবাসি না' একথা বলতে বলতে ঐ সমস্ত খেয়ালী মাবুদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম এবং যাতে ওয়াজিবুল ওজুদ বা আল্লাহ তায়ালার যাত ব্যতীত অন্য কাউকে আমার কিবলাহে তাওয়াজ্জুহ মনে করলাম না। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে এই ব্যাপারে হেদায়েত প্রদান করেছেন। আল্লাহ্ যদি আমাদেরকে হেদায়েত না দিতেন, তবে আমরা কিছুতেই হেদায়েতপ্রাপ্ত হতাম না। অবশ্যই আমাদের রবের রসুলগণ সত্যসহ আগমন করেছিলেন।
_______________
কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ
কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন