কোরআনের আয়াতের সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা সম্পর্কেঃ আল্লাহ্তায়ালা ইরশাদ করেছেনঃ ‘ওহে ঈমানদারগণ! তোমরা ঐ সমস্ত পবিত্র বস্তু ভক্ষণ কর, যা আমি তোমাদেরকে রিযিক আকারে প্রদান করেছি এবং তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো, যদি তোমরা একান্তভাবে তাঁরই ইবাদাতের অভিলাষী হও।’
এ আয়াতের মধ্যে এরূপ সম্ভাবনা আছে যে, এ শর্তটি (যদি তোমরা একান্ত ভাবে তারই ইবাদতের অভিলাষী হও) এই জন্যই লাগানো হয়েছে, যা খাওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে- (অর্থাৎ পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো) অর্থাৎ আমি যে রিযিক তোমাদের দিয়েছি, তা থেকে সুস্বাদু বস্তুসমূহ ভক্ষণ কর। তবে তার জন্য শর্ত হলোঃ তোমরা ইবাদাতের জন্য আল্লাহর জাতকেই নির্ধারিত করবে। আর যদি তোমাদের তরফ হতে এটা সত্য না হয়, বরং যদি তোমরা নিজেদেরকে খেলা ধুলায় লিপ্ত রাখার জন্য, তোমাদের প্রবৃত্তির ইবাদত বা অনুসরণ করো, তবে এ সমস্ত সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করবে না। কেননা এমতাবস্থায় তোমরা রোগগ্রস্ত এবং বাতিনী বা গোপন রোগে আক্রান্ত হবে। আর রিযিক হিসাবে তোমাদের যা দেয়া হয়েছে, এসবের মধ্যে সুস্বাদু বস্তুগুলি তোমাদের জন্য ধ্বংসকারী হলাহল বা বিষের ন্যায়। অবশ্য যখন তোমাদের বাতিনী রোগ নিরাময় হবে, তখন তোমাদের জন্য এই সুস্বাদু খাদ্য ভক্ষণ করা বৈধ হবে। কাশশাফ গ্রন্থের প্রণেতা আল্লামা যামাখশারী ‘শোকর’ শব্দের অর্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে এ স্থানে তাইয়েবাত্ বা পবিত্র শব্দের তাফসীর মুসতালাজ্জ্ত অর্থাৎ সুস্বাদু বস্তু করেছেন।
১. আবুল কাসিম মাহমুদ ইবন আমর-যিনি আল্লামা যামাখশারী সাহেবে কাশশাফ হিসাবে প্রসিদ্ধ। তিনি আরবী ভাষা ও সাহিত্যের এবং দীনের অভিজ্ঞ আলেম ছিলেন। তিনি ৪৬৭ হিজরীর ২৭শে রজব, খাত্তারযিম নামকস্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মক্কায় অবস্থান করে ইলমে দীন শিক্ষা করেন, এ জন্য জারুল্লাহ্ বা আল্লাহর প্রতিবেশী খিতাবে ভূষিত হন। তিনি মুতাযিলা মতাবলম্বী ছিলেন। জানা যায় পরে তিনি সুন্নী মত গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তাফসীরে কাশশাফ গ্রন্থের রচয়িতা হিসাবে খুবই প্রসিদ্ধ। তিনি ৫৩৮ হিজরীর, আরাফার দিন, খাত্তারযিমে জুরজানীয়া নামক স্থানে ইনতিকাল করেন।
_______________
কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ
কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন