ইত্তেবায়ে রসুল স. সম্পর্কেঃ এই ফকীর কখনাে বেতেরের নামায রাতের প্রথম অংশে এবং কখনাে শেষ অংশে আদায় করতাে । এক রাতে আমার উপর প্রকাশ পায় যে ,বেতেরের নামায শেষ রাতে আদায় করবার নিয়তে যে মুসল্লী নিদ্রা যায়, তার নেক আমল লিপিবদ্ধকারী ফিরিশতা, বেতেরের নামায আদায়কালীন সময় পর্যন্ত সমস্ত রাত তার আমলনামায় নেকী লিপিবদ্ধ করতে থাকে । সুতরাং বেতেরের নামায বিলম্বে আদায় করাই উত্তম। এতদসত্ত্বেও এই ফকীরের নিকট , বেতেরের নামায আদায়ে দেরী বা তাড়াতাড়ি করার মধ্যে, সাইয়্যেদুল বাশার (তাঁর ও তাঁর পরিবার পরিজনদের উপর দরূদ ও সালাম) এর পায়রবী করা ছাড়া আর কিছুই গ্রহণীয় নয়। আমি কোনাে ফযীলতকে নবীপাক সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের পায়রবীর সমতুল্য মনে করি না। হজরত রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বেতেরের নামাযকে কোনাে সময় রাতের প্রথম অংশে এবং কোনাে সময় শেষাংশে আদায় করতেন। এই ফকীর নিজের সৌভাগ্য তাতেই মনে করে যে , যে কোনাে কাজের মধ্যে আঁকা-হজরত সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর সাদৃশ্য হাসিল হােক । যদিও এই সাদৃশ্য কেবল সূরত বা আকৃতিগত হােক না কেনো কিছু লোক , কোনাে কোনাে সুন্নতের ব্যাপারে রাত্রি জাগরণের নিয়তে অন্যান্য কাজকে প্রাধান্য দেয় । তাদের অদূরদর্শিতার জন্য আমার বিস্ময় লাগে । আমি তো হাজার রাত্রি জাগরণকে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের পায়রবী ব্যতীত, অর্ধ দানার যবের মূল্যে ও খরিদ করি না।আমি রমজান মাসের শেষ দশদিন ইতিকাফ করার জন্য বসি।এই সময় আমি সাথীদের বলি,রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের পায়রবী ব্যতীত, তারা যেনো অন্য কোনাে নিয়ত না করে । কেননা , আমাদের এই একাগ্রতা ও দুনিয়ার সহিত সম্পর্ক কর্তনে কি লাভ হতে পারে ? বরং আমাদের যদি একটি সুন্নতের পায়রবী হাসিল হয়, তবে তার বিনিময়ে আমরা শতবার গ্রেফতারকে কবুল করতেও প্রস্তুত। বস্তুতঃ রসুলেপাক সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের পায়রবীর অসিলা ব্যতীত, আমরা হাজার একাগ্রতা ও দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক কর্তনে রাজী নই। যেমন কোনাে কবির ভাষায়ঃ
ঘরেতে যার মজুদ আছে
চিরন্তন কুসুম কানন,
বাগীচা ও বসন্তে তার
কতোটুকু বলো প্রয়াজেন।
আল্লাহ্ সুবহানুহু ওয়া তায়া'লা আমাদেরকে তাঁর স. পূর্ণ অনুসরণের তওফীক দান করুন। রসুল স. ও তাঁর পরিবার পরিজনদের প্রতি পূর্ণ দরূদ ও সালাম।
_______________
কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ
কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন