মুতাশাবিহাতের ব্যাখ্যা

 

মুতাশাবিহাতের ব্যাখ্যা সম্পর্কেঃ এই ফকীরের উপর প্রকাশ পায় যে , কোরআন মজিদের মধ্যে হক সুবহানুহু ওয়া তায়ালার ‘কুরব' বা নৈকট্য, ‘মায়ীআত' বা সংসর্গ এবং 'ইহাতা' বা আবষ্টেন শব্দগুলি ব্যবহার করেছেন ; এটা আল কোরআনের মুতাশাবিহাতের অন্তর্ভুক্ত। যেমন - হাত, মুখ ইত্যাদিও।

একইরূপে আওয়াল, আখির, জাহির , বাতিন ইত্যাদি শব্দগুলিও মুতাশাবিহাতের অন্তর্গত। আমরা যদিও বলি, ‘হক, সুবহানুহু তায়া'লা আমাদের নিকটবর্তী কিন্তু আমরা জানি না কুরব্ বা নৈকট্য কি? একইরূপে আমরা বলি ,আওয়াল বা আদি; কিন্তু আমরা অবহিত নই যে , আওয়ালের অর্থ কি ? এই কুরব্ এবং ‘আওয়ালের যে অর্থ আমরা জানতে বা বুঝতে পারি , হক সুবহানুহু ওয়া তায়া'লা তা থেকে পবিত্র এবং সম্মানিত । আমাদের কাশফ্ বা আত্মিক দর্শন ও মুশাহিদায় বা তত্ত্বজ্ঞানে যা কিছু আসে , হক্ তায়ালা তা থেকে বুলন্দ মর্তবার অধিকারী এবং পবিত্র । হক্ তায়া'লার নৈকট্য ও সংসর্গ সম্পর্কে কিছু তথাকথিত সুফীয়ানে কেরাম কাশফ দ্বারা অবহিত হয়ে বলেছেন যে , আল্লাহ্ খুবই কাছে এবং আমাদের সাথেই আছেন , একথা সঠিক নয়। তারা ‘ফিরকাহে মুজাসসিমা' বা আকৃতিধারী গোত্রের  অন্তর্ভূত হয়েছেন । কিছু সংখ্যক আলেম এ ব্যাপারে ভিন্নতর ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন । তারা কুরব্ বা নৈকট্যের দ্বারা ‘কুরবে ইলমী' বা ‘জ্ঞানজাত' নৈকট্য অর্থ গ্রহণ করেছেন । তারা এইরূপ ব্যাখ্যার প্রেক্ষিতে  ‘য়াদুন্ বা হাতের ব্যাখ্যা করেছেন - ‘কুদরত্' বা শক্তির দ্বারা এবং ‘অজুহুন' বা চেহারার  ব্যাখ্যা করেছেন -‘মাত্' বা সত্ত্বা দিয়ে ।যারা তাবীলকারী বা ব্যাখ্যাকার তাদের দৃষ্টিতে এটা জায়েয বা বৈধ। আমরা তাবীল বা ব্যাখ্যা করাকে জায়েয মনে করি; বরং তাদের তাবীলকে হক্ সুবহানুহু তায়া'লার ইলমে বা জ্ঞানে সমর্পণ করি। প্রকৃত ইলম আল্লাহরই নিকট , যিনি পবিত্র । হেদায়তের অনুসারীদের প্রতি সালাম।

_______________

কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ

কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি

অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন