সুন্নতের অনুসরণ ও বিদআত পরিত্যাগ সম্পর্কেঃ সুন্নতের উপর আমল এবং বিদ’আত পরিহার করার জন্য সচেষ্ট হওয়া দরকার। বিশেষতঃ এমন বিদ্আত পরিহার করা জরুরী যা সুন্নতকে খতম করে দেয়। যেমন রসুলেপাক সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের ইরশাদঃ “যে ব্যক্তি আমাদের এই দীনের মধ্যে নতুন কিছু আমদানী করবে, সে অবশ্যই পরিত্যজ্য।'
ঐ জামাআতের ব্যাপারে আশ্চর্যবােধ হয়, যারা দীনের মধ্যে নিত্যনতুন বিষয় সংযােজন করে। এমতাবস্থায় যে দীন সবদিক থেকে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়েছে এবং পূর্ণতার শেষ প্রান্তে উন্নীত হয়েছে। যারা দীনের মধ্যে নতুন বিষয়ের সংযােজনের মাধ্যমে এর পূর্ণতা প্রদানের জন্য সচেষ্ট; তাদের কি এতটুকু আশংকা নেই যে, আল্লাহ্ না করুন-এই নতুন বিষয়ের সংযােজনের ফলে হয়তাে দীন খতম হয়ে যাবে? যেমন, পাগড়ীর শাল্লা (বা ঝুলন্ত অংশ) কাঁধের মাঝখানে ছেড়ে রাখা সুন্নত। কিন্তু অনেক লােক একে বামদিকের কাঁধে ঝুলিয়ে রাখতে পছন্দ করে এবং এই ব্যাপারে তারা মৃতদের অনুসরণে আগ্রহী। আর বহু লােক এই ব্যাপারে তাদের অনুসরণ করছে। তারা একথা জানে না যে, তাদের এই ধরনের আমল সুন্নতের পরিপন্থী। তারা সুন্নতকে পরিত্যাগ করে, বিদআতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে যা পরিশেষে হারামের স্তরে গিয়ে পৌঁছায়। হজরত মােহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা উত্তম, না মৃতদের সঙ্গে। রসুল আকরাম সল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম তাে ছিলেন এমন মৃত্যুর অধিকারী, যা দৈহিক মৃত্যুর আগে সংঘটিত হয়। ঐ সমস্ত লােকেরা মুরদার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হয়, অথচ তাদের উচিত ছিলাে রসুল পুর নূর সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলােঃ মৃতের কাপনের মধ্যে পাগড়ী ব্যবহার করাই তাে বিদ্আত, এমতাবস্থায় পাগড়ীর শামলার ব্যাপারে কি বলার আছে। অবশ্য পরবর্তীকালের কিছু উলামাদের অভিমত হলােঃ যদি মৃতব্যক্তি দীনের আলেম হয়, তবে তার কাফনের সময় পাগড়ী দেওয়া মুস্তাহসান বা ভালাে। কিন্তু ফকীরের অভিমত এই যেঃ কাফনের সুন্নত পরিমাণের মধ্যে বেশী করা, সুন্নতের পরিবর্তনের মতােই এবং আসল সুন্নত পরিবর্তনের উদ্দেশ্য হলাে, সুন্নতকে পরিত্যাগ করা। আল্লাহ্ সুবহানুহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে হজরত মােস্তফা সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের বুলন্দ সুন্নতের পায়রবীর উপর সুদৃঢ় রাখুন। আর আল্লাহতায়ালা ঐ বান্দার উপরও রহম করুন, যে আমার এই দোয়ার উপর আমীন বলে । (আল্লাহুম্মা আমীন)।
_______________
কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ
কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন