মহব্বতে যাতী ও মহব্বতে সিফাতীর পার্থক্য

 

মহব্বতে যাতী ও মহব্বতে সিফাতীর পার্থক্য সম্পর্কেঃ একদা আমি দরবেশদের এক জামাতের সাথে উপবিষ্ট ছিলাম । এ সময় আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের মহব্বতে বিভোর হয়ে বলি-‘আঁ-হজরত রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের মহব্বত আমার উপর এমনভাবে গালেব বা জয়ী হয়েছে যে ,আমি হক সুবহানুহু ওয়া তায়ালাকে এই কারণে প্রিয় মনে করি যে, তিনি মোহাম্মদের রব। উপস্থিত সকলে আমার এই বাক্য শ্রবণে স্তম্ভিত হয়ে যান, কিন্তু কেউ ই কিছু বলতে সাহস পান না।

আমার এই বক্তব্য, হজরত রাবেয়া বসরী র. এর উক্তির সম্পূর্ণ খেলাফ। তিনি বলেছিলেন, “আমি স্বপ্নে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আরয করি যে , আল্লাহ তায়া'লার মহব্বতে আমি এতোই বিভোর যে,আপনার মহব্বতের জন্য সেখানে কোনাে স্থান খালি নেই।' উপরোক্ত উভয় উক্তি ই মত্ততাপ্রসূত। কিন্তু আমার কথার মধ্যে বাস্তবতা আছে।  হজরত রাবেয়া বসরী র. এই উক্তিটি করেছিলেন পূর্ণ মত্ত অবস্থায় আর আমি বলেছি সজ্ঞান অবস্থায়। তাঁর উক্তিটি ছিলো সিফাতের মর্তবায় থাকাকালে এবং আমার উক্তিটি ছিলো যাতের মর্তবা থেকে প্রত্যাবর্তনের পর। কেননা , যাতের মর্তবার মধ্যে এই ধরনের মহব্বতের কোনাে স্থান নেই । সকল নেসবতই এই মর্তবার নিচে অবস্থিত । কেননা , সেখানে আছে কেবল হতবুদ্ধিতা এবং অজ্ঞতা। বরং এই মর্তবায় মানুষ আনন্দের সাথে মহব্বতে অস্বীকার করে ।কোনাে ভাবেই নিজেকে আল্লাহর মহব্বতের যোগ্য বলে নিজেকে মনে করে না। মহব্বত এবং মারেফাত, কেবল মর্তবায়ে সিফাতের মধ্যইে হয়ে থাকে , মর্তবায় যাতের মধ্যে হয় না। বস্তুতঃ লোকেরা যাকে ‘মহব্বতে যাতী্' বলেছে, তার অর্থ 'যাতে আহদীয়াত্' বা একক যাত নয়; বরং ওটা ঐ যাত, যার সাথে বিভিন্ন ‘সিফাত বা গুণ মিশ্রিত । কাজেই হজরত রাবেয়া বসরী র. এর ঐ মহব্বত ছিলো গুণ মিশ্রিত সত্তার সাথে। আল্লাহ্ সুবহানুহু ওয়া তায়া'লাই সত্য কথাকে অন্তরে নিক্ষেপকারী । সাইয়্যেদুল বাশার সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের উপর এবং তাঁর পবিত্র পরিবার পরিজনদের উপর দরূদ ও সালাম।

_______________

কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ

কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি

অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন