তাজাল্লীয়ে যাতের প্রেক্ষিতে আম্বীয়াদের মর্তবার পার্থক্য সম্পর্কেঃ হজরত মােহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম সমস্ত নবী-রসুলদের সরদার। অন্যান্য সাধারণ লােকদের তুলনায় তার মর্যাদা কি, তা বলাই বাহুল্য। হজরত ঈসা ও মুসা আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম তাজাল্লীয়ে যাতের মাকাম থেকে, যােগ্যতা ও মর্তবা অনুযায়ী অংশ প্রাপ্ত। যেমন হক তায়ালা হজরত মুসা ‘আলায়হিস্ সালামকে সম্বােধন করে বলেছেনঃ “আমি তাে তােমাকে আমার জন্য বেছে নিয়েছি, অর্থাৎ আমার যাতের জন্য মনােনীত করেছি। আর হজরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম হলেনঃ “আল্লাহর রূহ' এবং আল্লাহর কলেমা বা কথা। তার ও সারওয়ারে আলম আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালামের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। অপরপক্ষে, হজরত ইবরাহীম আলায়হিস্ সালাত ওয়াস্ সালাম যদিও তাজাল্লীয়ে সিফাতের মাকামের অধিকারী, তথাপিও তিনি সূক্ষ্মদর্শী। ঐ বিশেষ অবস্থা, যা আমাদের পয়গম্বর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালামের তাজাল্লীয়ে যাতের মাকামে নসীব হয়, ঐ অবস্থা হজরত ইবরাহীম আলায়হিস্ সালামের তাজাল্লীয়ে সিফাতের মাকামে হাসিল হয়। যদিও উভয়ের মধ্যে যােগ্যতার পার্থক্য বিদ্যমান। সুতরাং, এই কারণে তিনি হজরত ঈসা ও মুসা আলায়হিমাস সালাম হতে উত্তম। পরম্ভ হজরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম, হজরত মুসা আলায়হিস্ সালাম হতে উত্তম এবং তাঁর মর্তবা হজরত মুসা আ. এর উপরে। তিনি ছিলেন সূক্ষ্মদৃষ্টিসম্পন্ন। তার পরের মর্যাদার অধিকারী হজরত নূহ আলায়হিস্ সালাম। যদিও হজরত নূহের আ. মাকাম তাজাল্লীয়ে সিফাতের মাকামে হজরত ইবরাহীম আ. থেকে অনেক ঊর্ধ্বে, তথাপিও উক্ত মাকামে হজরত ইবরাহীম আ. এর একটি বিশেষ মর্যাদা আছে, যা অন্য কারাে নসীব হয়নি। কিন্তু পায়রবী বা অনুসরণের ফলে, তাঁর আওলাদরা এই মাকাম হতে অংশ প্রাপ্ত হয়েছেন। হজরত আদম আলায়হিস সালামের দরজা হজরত নূহ আ. এর পরে। আমাদের নবী সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এবং সমস্ত আম্বীয়া আলায়হিমুস সালামদের উপর দরূদ ও সালাম। উপরােক্ত আলােচনাটি ঐ জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত, যা আমার রব আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন এবং তিনি স্বীয় ফল ও করমে একথা আমাকে ইলহাম এর মাধ্যমে জানিয়েছেন। অবশ্য সঠিক ব্যাপার তাে আল্লাহ্ সুবহানুহুই জানেন।
_______________
কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ
কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন