‘উলুমে ইমকামী এবং মা’আরিফে উজুরী


‘উলুমে ইমকামী এবং মা’আরিফে উজুরী সম্পর্কে: মানুষ যতােদিন জ্ঞান বুদ্ধির শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকে এবং আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য রঙে রঞ্জিত থাকে, ততােদিন সে মূল্যহীন থাকে। আল্লাহ ব্যতীত অন্য সবকিছুকে ভুলে যাওয়া, এই রাস্তার জন্য একান্ত আবশ্যক এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছু ফানা বা ধ্বংস হয়ে যাওয়া, সম্মুখে অগ্রসর হওয়ার জন্য প্রয়ােজন। যতক্ষণ না বাতিনী আয়না, ইমকান বা সম্ভাব্যের রঙ ও ময়লা হতে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়, ততােদিন তাতে আল্লাহর প্রকাশ অসম্ভব। কেননা, উলমে-ইমকানী বা সম্ভাব্য জ্ঞান, মাআরিফে উজবী বা আল্লাহ্ পরিচিতির জ্ঞানের সঙ্গে একত্রিত হওয়া এমনই অবাস্তব এবং অসম্ভব, যেমন দুটি ভিন্নধর্মী বস্তুর একত্রিত হওয়া অসম্ভব । 

একটি প্রশ্নঃ এখানে বড় ধরনের একটি প্রশ্ন দেখা দেয় এবং তা হলাে— আল্লাহতায়ালা যখন কোনাে আরেফকে বাকার সম্মানে বিভূষিত করার পর, নাকেস বা অসম্পূর্ণ লােকদের পূর্ণতা প্রদানের জন্য (সম্ভাব্য জগতের দিকে) ফেরত পাঠান, তখন তাঁর যে উলুমে ইমকানী বা সম্ভাব্য জ্ঞান দূরীভূত হয়েছিলাে তা পুনরায় ফিরে আসে। এমতাবস্থায়, “উলুমে ইমকানী এবং মা’আরিফে উজুবী একত্রিত হয়। অথচ আপনার বর্ণনানুসারে তা দুইটি বিপরীতধর্মী বস্তুর মিলনের মতাে। 

 উত্তরঃ ‘আরেফে বাকী বিল্লাহ বা আল্লাহর সান্নিধ্য প্রাপ্ত সাধক, ঐ সময়, যখন সে ইরশাদ ও হেদায়েতের জন্য ‘আলমে ইমকানে প্রত্যাবর্তন করে, তখন বরযখীয়াতের হুকুমসম্পন্ন হয়। এই সময় সে উজুব এবং ইমকানের মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপনকারী হয়ে দুই মাকামের নূরে রঞ্জিত হয়। এমতাবস্থায়, যদি দুটি মাকামের উলুম এবং মা’আরিফ একত্রিত হয়, তবে তাতে ক্ষতি কি? কেননা, বিপরীত বস্তুসমূহের মিলিত হওয়ার মাকামতাে আর এক রইলাে না, বরং তা কয়েকটি মাকামে রূপান্তরিত হলাে। সুতরাং এটা দুইটি ভিন্নধর্মী বস্তুর মিশ্রণ কিছুতেই নয়। 

_______________

কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ

কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি

অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন