চিল আর শকুন

 

চিল আর শকুন


আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছিল চিল আর শকুন

অসীম-অনস্ত নীল আকাশ । মেঘমুক্ত নির্মল পরিবেশ। শকুন তার বন্ধু চিলকে বলল ওহে চিল, আমি কত দৃরদৃষ্টিসম্পন্ন তুমি কি তা জানো?  তুমি কি জানো, এত উপর থেকেও আমি নিচের সবকিছু দেখতে পাই? 


চিল বলল হয়তো তোমার কথা সত্যি । কিন্তু ভাই, কথার কোনো মূল্য নেই। তুমি দূরের জিনিস কেমন দেখতে পাও, এসো তার একটা পরীক্ষা হয়ে যাক। শকুন এককথায় রাজি। উড়ে উড়ে তারা এল বহুদূরের এক জঙ্গলের মাথায় । চিল জানতে চাইল নিচে কী আছে তুমি কি তা সব দেখতে পাচ্ছ? শকুন গভীর দৃষ্টি দিয়ে নিচে তাকাল।


ভাই, তুমি যদি বিশ্বাস করো, তবে শোনো বনের পাশে ঠিক এ স্থানটিতে একটা গমের দানা আছে, আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।

চিল এই কথায় বিস্মিত হল। সে তো কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। এবং বিশ্বাসই করতে পারল না, এতদূর থেকে একটা গমের দানা দেখা সম্ভব। শকুন বলল শুরু হোক আমাদের পরীক্ষা। 


তখন চিল আর শকুন দুজনেই উড়ে উড়ে নিচের দিকে নামতে লাগল। শকুন বিজয়গর্বে উৎফুল্ল।কারণ আরেকটু নামলেই সত্যি সত্যি সে গমের দানাটা সংধহ করতে পারবে । যখনই সে গমটা আনতে গেছে তৎক্ষণাৎ তার পায়ে শিকারির ফাদ আটকে গেল । শকুন টের পেল-_তার আর মুক্তি নেই । অনেকক্ষণ চেষ্টা করল । কিন্তু যতই চেষ্টা করে ততই কঠিন বন্ধনে বেচারা

আটকে যাচ্ছে।


বোঝা গেল, শকুনের ভাগ্যে আর মুক্তি নেই। 

এই ঘটনায় চিল অতিশয় দুঃখিত হল। 

সে বলল কী আশ্চর্য ব্যাপার, অতদূর থেকে তুমি সামান্য গমটি দেখতে পেলে, আর এত নিকটে এসে বড় ফাঁদের বন্ধন তোমার চোখে পড়ল না। তোমার দূরদৃষ্টির পরিণাম বড় ভয়াবহ । এই বিপদের সময় দূরদৃষ্টি দিয়ে তোমার তো কোনো উপকার হল না।

শকুন আর কিছুই বলল না ।


এখন আমি মৃত্যুপথযাত্রী । আমার এখন সুক্ষ বিচার-বিবেচনা নেই । অনন্ত সাগরে কূল নেই, কিনারা নেই সেখানে সাঁতারের বাহাদুরি দেখানোর মানে নেই। এখন আমি নিদারুণ  বিপদে পড়েছি এই সময় আমার দূরদৃষ্টির কোনো অর্থ হয় না।

___________

শেখ সাদীর গল্প

আমীরুল ইসলাম

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন