তাকদীরের ব্যাপারে কুমন্ত্রণা
শয়তান তাকদীরের ব্যাপারেও অন্তরে কুমন্ত্রণা প্রদান করতে থাকে, যেমন; যা কিছু তাকদীরে লেখা রয়েছে, আমরা তা এড়িয়ে যেতে পারি না, তাকদীরে সামনে একান্তই অপারগ, আমরা তো তাই করি, যা তাকদীরে লিপিবদ্ধ রয়েছে, অতঃপরও কবর ও জাহান্নামে শাস্তি কেন? ইত্যাদি। নিঃসন্দেহে এটাও শয়তানের ধোকা, এই বিষয়ে চিন্তাও করবেন না, অন্যথায় শয়তান পথভ্রষ্ট করবে, “أَعُوْذُ بِالله” পাঠ করে এই অভিশপ্তকে তাড়িয়ে দিন। যে যেরূপ করার ছিলো, সেরূপই লিখে দেয়া হয়েছ।
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! মনে রাখবেন! যে যেরূপ করার ছিলো, আল্লাহ তায়ালা তা আপন ইলম দ্বারা জ্ঞাত হলেন এবং তার জন্য তেমনই লিখে দিয়েছেন, আল্লাহ তায়ালার জ্ঞান ও লিখা কাউকে বাধ্য করেনি। বিষয়টি এই সাধারণ উদাহরণ দ্বারা বুঝার চেষ্টা করুন, যেমনটি বর্তমানে আইনানুযায়ী খাবার এবং ঔষধ ইত্যাদির প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ (Exp. Date) লেখা হয়ে থাকে, শিশুরাও এইবিষয়টি বুঝে যে, কোম্পানির যেহেতু অভিজ্ঞতা রয়েছে যে, এই জিনিসটি অমুক তারিখের পর নষ্ট হয়ে যাবে, তাই সম্ভাব্য তারিখ লিখে দেয়, তবে কোম্পানির (Exp. Date) লিখে দেয়াতে সেই জিনিসটিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নষ্ট হওয়াতে বাধ্য করেনি, যদি তা না’ও লিখা হতো তবুও সেই জিনিসটি নির্দিষ্ট সময়ের পর নষ্ট হয়েই যাবে।
তাকদীর সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফতোয়া
এপ্রসঙ্গে দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনার প্রকাশিত ৬৯২ পৃষ্ঠা সম্বলিত কিতাব “কুফরিয়্যা কালেমাত কে বারে মে সাওয়াল জাওয়াব” এর ৫৮৩ থেকে ৫৮৫ পৃষ্ঠায় রয়েছে: ফতোয়ায়ে রযবীয়া ২৯তম খন্ডের ২৮৪ থেকে ২৮৫ পৃষ্ঠায় একটি প্রশ্নোত্তর উপস্থাপন করা হলো। প্রশ্ন: “যায়েদ” বলে যা হয়েছে এবং হবে সবই আল্লাহ তায়ালার আদেশেই হয়েছে এবং হবে, তবে বান্দাকে কেন গ্রেফতার করা হবে এবং তাকে কেন শাস্তির উপযুক্ত
করা হলো? সে এমন কি কাজ করলো, যাতে আযাবের অধিকারী হলো? যা কিছু তিনি (অথার্ৎ আল্লাহ তায়ালা) তাকদীরে লিখে দিয়েছেন, তাই হয়, কেননা কোরআনে পাক দ্বারা প্রমাণিত যে, তার বিনা অনুমতিতে একটি কণাও নড়ে না, তবে বান্দা নিজের কোন ক্ষমতায় ঐ কাজটি করলো, যে কারণে সে দোযখী হলো বা কাফিরহলো অথবা ফাসিক হলো। তাকদীরে যদি মন্দ কাজ লিখা থাকে তবে মন্দ কাজ করবে এবং ভাল লিখা থাকলে তবে ভাল। সবার্বস্থায় তাকদীরের অনুগত, তবে কেন তাকে অপরাধী বানানো হয়? চুরি করা, যেনা করা, হত্যা করা ইত্যাদি যা বান্দার তাকদীরে লিখে দেয়া হয়েছে, তেমনই হবে, অনুরূপভাবে নেক কাজ করার ব্যাপারেও। উত্তর: “যায়েদ পথভ্রষ্ট, বেদ্বীন (নাস্তিক), তাকে কেউ জুতা মারলে কেন সে অসন্তুষ্ট হয়? এটাও তো তাকদীরে ছিলো। কেউ তার সম্পদ ছিনিয়ে নিতে চাইলে সে কেন বিগড়ে যায়? এটাও তো তাকদীরে ছিলো, এটা শয়তানী কর্মকান্ডের একটি প্রতারণা, যা লিখে দেয়া হয়েছে, আমাদের তা করতে হবে (অথচ কখনো এরূপ নয়) বরং যা আমরা করতাম, তা তিনি (অথার্ৎ আল্লাহ তায়ালা) তাঁর ইলম দ্বারা জেনে লিখে দিয়েছেন।” মাকতাবাতুল মদীনার প্রকাশিত “বাহারে শরীয়াত” এর ১ম অংশের ২৪ পৃষ্ঠায় সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকত হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) লিখেন: “খারাপ কাজ করে তাকদীরের দিকে ইঙ্গিত করা এবং আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছার দোহায় দেয়া খুবই গর্হিত কাজ, বরং আদেশ এরূপ যে, যা ভাল কাজ করবে তা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বলবে এবং যা খারাপ কাজ সংগঠিত হয়েছে তা নিজের অপূর্ণতা জ্ঞান করবে।”
_____________
কিতাব: ওয়াসওয়াসা এবং এর প্রতিকার
লেখক: আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন