কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ অস্বীকার
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ হল ঈমানী কালেমা বা কালেমায়ে তাইয়্যিবাহ। এই কালেমার দুটি অংশ পবিত্র কুরআন মাজীদের আলাদাভাবে এবং হাদিস শরীফে যুক্তভাবে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কিছু সালাফি শায়খগণ এই কালেমা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তাদের দাবি এই কালেমা নাকি পৃথিবীর কোন কিতাবে বর্ণিত হয় নাই। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর সাথে ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ যুক্ত করা শিরক। ইহা পাশাপাশি লিখা যাবে না। ইহা নাকি ইহুদি খ্রিস্টানদের চক্রান্তের ফসল। এই কালেমার মাধ্যমেই নাকি আমাদের ঈমান আকিদার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। নিম্নে আব্দুর রহিম সালাফি নামক জনৈক শায়খের বক্তব্যটি একটু দেখুন, তিনি বলেছেন:
‘আমাদের দেশে আকিদার ত্রুটিটি ঢুকিয়ে দিয়েছে সর্বপ্রথম ইহুদি খ্রিস্টানদের চক্রান্তের মাধ্যমে। ইহুদি খৃস্টানদের চক্রান্তের মাধ্যমে, সর্বপ্রথম যেই জিনিসটির মাধ্যমে মানুষের ঈমান ধ্বংশ করা যায় সেই জিনিসটি হইল কালিমার বাক্য। সেই জিনিসটি কি? কালিমার বাক্য। তাওহীদের বাক্য। বলতে পারেন সেটা কি? লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তারপর ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’’ বলেছেন? ভুল, ভুল। এই জাগায় যারা আছেন: আলেম-উলামা, হাজী গাজী, অনেক লোক আছেন আমার বিশ্বাস। একজন লোক হাত দেখাইয়া বলেন যে আমার এই চক্ষু দুইটি দিয়ে বুখারি শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিজি শরীফ, আবু দাউদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম, সুনানে কুবরা, বায়হাকী তারপরে মুসনাদে আহমদ, তারপরে কি বলে? ফতহুলবারি, তারপরে এই ধরনের যত কিতাব আছে মিযানুল ইতেদাল, মুহল্লা মুবনি ইনায়া, বিনায়া, নেহায়া, মবসুত, মুহিত, যত কিতাব আছে পৃথিবীর বুকে একটা কিতাবের মধ্যে লেখা দেখেছেন একজাগায় হাদিসে রাসূল থেকে প্রমাণিত যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ দেখেছেন একজনে হাত দেখান। কি প্রমাণিত হল? নাই। অথচ এদেশের মাটিতে এই কালিমা পড়ানো হয়েছে, শিখানো হয়েছে, মক্তব থেকে শিখানো হয়েছে। কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। রোগী যখন সর্বরোগে আক্রান্ত হয় তখন ডাক্তার হিমশিম খেয়ে যায় কোন রোগের ঔষধ দিয়ে আবার রোগী মাইরা পালাই। সর্বরোগে আক্রান্ত এই জাতি। কোন রোগের ঔষধটি দেব? সর্বপ্রথম যেই বাক্যটি মুসলমানদের জন্য শিখা প্রয়োজন, সেই বাক্যটি আজ পর্যন্ত মুসলিম জাতিকে সুন্দরভাবে শিখানো হয় নাই। সঠিকভাবে বিশুদ্ধভাবে শিখানো হয় নাই। আজও পর্যন্ত মুসলিম জাতি ঘোলাটের মধ্যে রয়েছে। সর্বপ্রথম ঈমান আনার জন্য যেই বাক্যটি শিখা দরকার সেই বাক্যটি শুদ্ধ করে এদেশে আলেমরা শিখায় নাই। এজন্য দায়ী হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নাসারা, মজুসি, ইহুদি নয়। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি তারা নয়। এজন্য আমার মত মৌলভীরা দায়ী।’ (ইউটিউব থেকে সংগৃহীত)
সম্মানিত পাঠক! এতক্ষণ আপনারা জনৈক সালাফি শায়খের মস্তিষ্ক প্রসূত বক্তব্যটি শুনলেন। এবার আমি প্রমাণ করব যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ ইহাই হল ঈমানের কালেমা। ইহা কোন ইমাম মৌলভীর কথা নয়। ইহুদি নাসারাদের তৈরিকৃত নয়। বরং কুরআন মাজীদ ও হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।
উল্লেখ্য যে, এ ব্যাপারে আমার লিখিত স্বতন্ত্র একটি কিতাব রয়েছে কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ। সেখানে আমি প্রায় ৮টি তাফসির ও ১০টির অধিক হাদিস গ্রন্থের উদ্ধৃতি সহকারে প্রমাণ করেছি যে, এই কালিমাই হল ঈমানের কালিমা। পাঠকদের সুবিধার্থে নিম্নে এ প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
_________________
কিতাবঃ হাদিস নিয়ে সালাফিদের জালিয়াত
লেখকঃ হাফিজ মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ ইকরাম উদ্দিন
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন