খতনাকৃত অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেছেন

 

খতনাকৃত অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেছেন 


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি খতনা কৃত অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেছেন না পরে খতনা করা হয়েছে? এ বিষয়ে মুহাদ্দেসীনে কেরামগনের মধ্যে কিছু মতভেদ রয়েছে।

তাবরানী আবু নাঈম, হাসানের সূত্রে, তিনি হযরত আনাস বিন মালেকের সূত্রে বর্ণনা করেন, হযরত আনাস (رضي الله عنه ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খতনা কৃত অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেছেন যেমন : (তিনি নিজেই এ বিষয়ে এরশাদ ফরমান:

من كرامتى على الله انى ولدت مختونا ولم ير احد سوأقى

অর্থাৎ- মহান আল্লাহর নিকট আমার এমনই এক মহা সম্মান রয়েছে যে, আমি খতনা অবস্থায়ই ভুমিষ্ট হয়েছি। কেউ আমার গুপ্তাঙ্গ দেখেনি।

ইবনে সা’দ আতা আল খোরাসানী হতে, তিনি ইকরামা হতে, তিনি ইবনে আব্বাস হতে, তিনি স্বীয় পিতা হযরত আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব (رضي الله عنه ) হতে বর্ণনা করেন যে



عن ابن عباس عن أبيه العباس بن عبد المطلب قال ولد النبي {صلى الله عليه وسلم} مختونا مسرورا واعجب ذلك عبد المطلب وحظي عنده وقال ليكونن لابني هذا شأن فكان له شأن.



হুযূর পাক (ﷺ) নালকাটা ও খতনা কৃত অবস্থাই জন্ম গ্রহণ করেন। আব্দুল মুত্তালেবের কাছে বিষয়টি অভিনব মনে হয়। ফলে তাঁর দৃষ্টিতে নবী করীম (ﷺ) এর সুবিশাল মর্যাদা বেড়ে যায়। তিনি বলেন: ليكونن لابنى هذا شان অর্থাৎ- আমার এ বৎসের অবশ্যই বিরাট শান হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে।



ইমাম আবু জা’ফর তাবারী স্বীয় তাবারী গ্রন্থে, হাকীম আবু আব্দুল্লাহ তিরমীযী স্বীয় গ্রন্থে বর্ণনা করেন যে, ولد النبى صلى الله عليه وسلم محنتونا معذورا অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খতনাকৃতও নাল কাটা অবস্থায়ই ভূমিষ্ট হন।



ইমাম ইবনে আব্দুল বার ‘তামহীদ, গ্রন্থে বলেন: রাসূলে পাকের জন্মের সপ্তম দিনে দাদা খাজা আব্দুল মুত্তালিব (رضي الله عنه ) তাঁর খতনা করে ঐ দিনে মেষ জবাই করে সমস্ত কুরাইশ নেতৃবৃন্ধকে দাওয়াত করে আপ্যায়নের মাধ্যমে দৌহিত্রের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কুরাইশরা আপ্যায়নের পর বলল: ওহে আব্দুল মুত্তালেব! নবজাতকের নাম কি রেখেছেন? তিনি বললেন: নাম রেখেছি মোহাম্মদ। কুরাইশরা বলল: আপনি কি নবজাতকের পারিবারিক নাম সমূহ অপছন্দ করলেন? আব্দুল মুত্তালিব জাবাবে বললেন:



اردت ان يحمده الله عذ وجل فى السماء وخلقه فى الارض



অর্থ:- আমি চেয়েছি মহান আল্লাহ পাক তাঁর প্রশংসা করবেন সুদুর আকাশে এবং তাঁর সৃষ্টি জমীনে। যারা বলে স্বয়ং জিব্রাঈল (عليه السلام ) তাঁর খতনা করেছেন তাদের এ অভিমত অত্যন্ত দুর্বল। ইমাম ইরাকী বলেন: এ সমস্ত বিষয়ে স্পষ্ট কোন দলীল প্রমাণিত হয়নি। তবে দাদা কর্তৃত নবজাতকের খতনা বিষয়ক ঘটনার ব্যাপারে ইমাম আহমদ (رضي الله عنه ) নিরবতা অবলম্বন করেন। ইমাম মুযযীকে বলা হয়েছিল তিনি বলেন: এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাকই বেশি জ্ঞাত।



হাম্বলী মাযহাবের এক অন্যতম ইমাম আবু বকর আব্দুল আযীয বিন জা’ফর বলেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নালকাটা খতনাকৃত অবস্থায় ভূমিষ্ট হন। তবে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (رضي الله عنه ) এর অন্য বর্ণনা মতে তিনি এ হাদীস বিশুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে নিরবতা অবলম্বন করেন।


ইমাম আবু আব্দুল্লাহ হাকীম নিশাপুরী বলেন: ان الاول قد توا ترت به الرواية অর্থাৎ- প্রথম অভিমত তথা ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নালকাটা ও খতনাকৃত অবস্থায় ভূমিষ্ট হন, এ হাদীসটি মুতাওয়াতীর পর্যায়ে পৌছে গেছে। ইমাম ছাখাভীর (رضي الله عنه ) এর মতে উপরোক্ত বাণীর সত্যতা প্রমাণিত হয় রাসূলে পাকের জননী মা আমেনা (رضي الله عنه ) এর বাণী : نظيفا শব্দের মাধ্যমে।

_______________

আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবাবী (ﷺ)

মূলঃ ইমাম নূরুদ্দীন মুল্লা আলী কারী আল হারুবী (رحمة الله)

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন