মাতৃ বিয়োগ ও মাতুলালয়ে প্রকাশিত মোজেজা
হুযূরে পাকের মাতা আমেনা (رضي الله عنه)ا মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থান “আবওয়া” নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন। কারও মতে শিআবে আবী রবে, তবে কামুস গ্রন্থের বর্ণনানুযায়ী রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মা জননী মক্কার নাবেগা গৃহে ইন্তেকাল করেন এবং তথায়ই তাঁর সমাধিস্থ স্থান বিদ্যমান।
ঐতিহাসিক ইবনে সাদ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এর সুত্রে ইমাম যুহরী ও আছেম ইবনে আমর হযরত ইবনে কাতাদাহ হতে বর্ণনা করেন যে, মহানবী (ﷺ) এর বয়স যখন ছয় বছর, তখন তাঁর মা জননী তাঁকে নিয়ে মদীনায় বনি আদী ইবনে নাজ্জারে চলে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুধমাতা ও পরিচারিকা উম্মে আয়মন (رضي الله عنه)ا। আমেনা শিশুকে নিয়ে নাবেগার গৃহে পৌছেন এবং সেখানে দীর্ঘ একমাস অবস্থান করেন। রাসূলে পাক (ﷺ) এ সময়কার বহু ঘটনাবলী স্মরণ রেখেছিলেন। তিনি এ গৃহের দিকে তাকিয়ে বলতেনঃ
فقال ههنا نزلت بى امى واحسنت القوم فى بئر بنى عدى بن النجار وكان قومه من اليهود يختلفون ينظرون إلى-
অর্থাৎ- আমার মা জননী আমাকে এ স্থানে নিয়ে এসেছিলেন। আমি বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের ক্ষদ্র জলাশয়টিতে সাতাঁর কাটতাম। ইহুদীরা তখন আমার দিকে গভীর দৃষ্টিতে থাকাতো।
হযরত উম্মে আয়মন বলেনঃ
فسمعت احدهم يقول هونبى هذه الامة وهذه دارهجرته فو عيت ذالك كله من كلامهم ثم رجعت به امه الى مكة فلما كانت با الابواء تو فيت-
অর্থ:- আমি এক ইহুদীকে তাঁর ব্যাপারে বলতে শুনলাম সে বলল, ইনি এ উম্মতের নবী এবং এটা তাঁর হিজরত ভূমি।
আমি একথাটি স্মৃতির আয়নায় সংরক্ষিত করে রাখি। অতঃপর স্বীয় মাতা আমেনা (رضي الله عنه) তাঁকে মক্কায় নিয়ে আসেন। পথিমধ্যে আবওয়া নামক স্থানে তিনি ইন্তেকাল করেন।
হাফিজে হাদীস ইমাম জালালুদ্দিন সূয়ুতী (رضي الله عنه) এর মতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মাতা-পিতা নিঃসন্দেহে তথা জান্নাতবাসী। তবে জমহুর উলামায়ে কেরামগনের মধ্যে ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رضي الله عنه) প্রাথমিক যুগে এর বিরোধিতা করলে ও পরবর্তীতে ইমাম আবু হানিফা (رضي الله عنه) এর মাসআলার উপর একমত হয়ে অতীত ভূলের উপর অনুশোচনা করে জান্নাতী হওয়ার স্বপক্ষে দলীল সাব্যস্ত করেন।
ইমাম সূয়ুতীর মতে আমি হুযূরে পাকের মাতা-পিতা জান্নাতী হওয়া প্রসঙ্গে স্বতন্ত্র একটি রেসালাহ প্রণয়ন করেছি।
হযরতের মাতৃ বিয়োগের পরে স্বীয় দুধ মাতা হযরত উম্মে আয়মন (رضي الله عنه) সার্বীক পরিচারিকার কাজে আত্ম নিয়োগ করেন। এজন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর মর্যাদা দিতে যেয়ে বললেন: انت امى بعد امى অর্থাৎ- আপনি আমার মায়ের অবর্তমানে আরেক (দ্বিতীয়া জননী)। নবী (ﷺ) এর রক্ষনাবেক্ষণকারী দাদা আব্দুল মুত্তালিব (رضي الله عنه) এর ইন্তেকালের সময় রাসূলে পাকের বয়স ছিল ৮ বছর, কারও মতে ৯ বছর, কারও মতে ১০ বছর, কারও মতে ৬ বছর, এবং দাদার বয়স ছিল ১১০ বছর, কারও মতে ১৪০ বছর। তাঁর ইন্তেকাল পরবর্তীতে স্বীয় চাচা খাজা আবু তালেব তাঁর লালন পালনের গুরু দায়ীত্বভার গ্রহন করেন। আবু তালেবের অপর নাম আব্দে মনাফ ছিল। খাজা আব্দুল মুত্তালিব (رضي الله عنه) ইন্তেকাল পূর্ব মুহুর্তে আবু তালেবকে এ অছিয়ত করে যান যে, তিনি যেন তাঁর নাতি মোহাম্মাদের দেখা শুনা করেন।
উল্লেখ্য যে, খাজা আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) ছিলেন খাজা আবু তালেবের একই মায়ের গর্ভজাত ভ্রাতা। নবীজী (ﷺ) দীর্ঘ দিন খাজা আবু তালেবের ছত্রচ্ছায়ায় ছিলেন। হযরতের নবুওয়তী দায়ীত্ব পাওয়ার সাত বছর পর আবু তালেব মৃত্যু বরণ করেন।
_______________
আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবাবী (ﷺ)
মূলঃ ইমাম নূরুদ্দীন মুল্লা আলী কারী আল হারুবী (رحمة الله)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন