শিয়া ও সুন্নি লেবাসধারী শিয়ারা মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) কে কাফের মুনাফেক বলে

 

শিয়া ও সুন্নি লেবাসধারী শিয়ারা মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) কে কাফের মুনাফেক বলে


এটা প্রমান করানোর জন্য বিভিন্ন জাল, জয়ীফ বর্ননা দিয়ে থাকে। নিচের বর্ননাটি তার মধ্যে অন্যতম।

❏ হাদিস ৩৮:

حدثني إسحاق ، حدثنا عبد الرزاق ، أنبأنا معمر ، عن ابن طاووس ، عن أبيه ، عن عبدالله بن عمرو بن العاص قال : كنت جالساً عند النبي صلى الله عليه وآله وسلم فقال : (( يطلع عليكم من هذا الفج رجل يموت يوم يموت على غير ملتي )) . قال : وتركت أبي يلبس ثيابه فخشيت أن يطلع فطلع معاوية ]

সরল অনুবাদঃ"আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ'স (رضي الله عنه) বলেন- আমি রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে)'এর নিকট বসে ছিলাম এমতাবস্তায় তিনি বললেন-" এ সংকীর্ণ উপত্যকা(বা রাস্তা) থেকে এমন একজন ব্যক্তি তোমাদের নিকট আসবে যে আমার মিল্লাত(ধর্ম)-এর উপর মৃত্যু বরণ করবে না..................( আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ'স বলছেন) অতঃপর সেখান থেকে মুয়াবিয়া(রাদিআল্লাহু আ'নহু) আসলেন!!!! (তার মানে সে মুরতাদ আর কেউই না মুয়াবিয়া!!-নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)



সনদ পর্যালোচনাঃ



শিয়া ও নামধারী সুন্নিদের দাবি:



এ হাদিসটি আছে বালাযুরীর "জুমালুম মিন আনসাবিল আশরাফ" ৫/১৯৭৮ কিতাবে। ইমাম বুখারী তার তারীখুল আওসাতেও এ হাদিস এনেছেন।


উনার মতে হাদিসটির সনদ মতন ২ টাই সহীহ!!! আর এ হাদীস বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে!এবং তার মতে শায়খ আহমাদ ইবনে সিদ্দীক আল গুমারী সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন তার কিতাব"جؤنة العطار" ২/১৫৪এ।


তাহকীকঃ


মূলত এ হাদিসটি ও এ প্রসঙ্গে সকল হাদিস এবং তার সনদ গুলো বাতিল ও জাল ২টি ছাড়া তবে সেখানে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) এর নাম নেই। (এ বিষয়ে নিচে আলোচনা হবে)।আপত্তিকারীরা সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ এ দাবী করে শায়খ আহমাদের হাওয়ালায়। আসলে তারা শায়খের কিতাব পড়ে নাই, মূলত তারা শিয়া পন্থী শায়খ হাসান ফারহান আল মালেকীর(যাকে তারা সুন্নী বলে কথিত দাবী করে!!) রেফারেন্সের উপর অন্ধ বিশ্বাস করে একে সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ বলে। সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ হাদিসটি এটি না বরং সেই হাদিস যেখানে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) এর নাম উল্লেখ নেই সেটি সহিহ মুসলিমের শর্তে সহীহ।(নিচে আলোচিত হবে ইনশা আল্লাহ)



এ হাদিসের সনদ কেউ বলেছেন মাওজু কেউ বা যঈফুন জিদ্দান।



ইবনে তাইমিয়া বলেন-


هَذَا الْحَدِيثُ مِنَ الْكَذِبِ الْمَوْضُوعِ بِاتِّفَاقِ أَهْلِ الْمَعْرِفَةِ بِالْحَدِيثِ، وَلَا يُوجَدُ فِي شَيْءٍ مِنْ دَوَاوِينِ الْحَدِيثِ الَّتِي يُرْجَعُ إِلَيْهَا فِي مَعْرِفَةِ الْحَدِيثِ، وَلَا لَهُ إِسْنَادٌ مَعْرُوفٌ


অর্থ-হাদিস শাস্ত্রে পন্ডিতদের ঐক্যমত্যে এ হাদিসটি মিথ্যাচার মূলক জাল হাদিস।......... আর এ হাদিসের সমর্থনে কোন মারুফ বা প্রসিদ্ধ হাদিসও নেই।"


➥ (মিনহাজুস সুন্নাহ ৪/৪৪৪)


ইমাম বুখারী(রহ) বলেন-


ويروى عن معمر عن بن طاوس عن أبيه عن رجل عن عبدالله بن عمرو رفعه في قصته وهذا منقطع لا يعتمد عليه


অর্থ- এর সনদ মুনকাতে' এর উপর আস্থা করা যাবে না।


➥ (তারীখুল আওসাতঃ৭১)



ইবনু জাওযী হজরত মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) জাহান্নামী এ বিষয়ক সকল হাদিসকে অত্যন্ত যঈফ বলেছেন।


➥ (আল ইলালুল মুতানাহিয়া ফিল আহাদীসিল ওয়াহিয়া, ১/২৮০)



ইবনু আদী(রহ) এ হাদিসের সনদের রাবীর ব্যাপারে বলেন-


قال إسحاق بن إبراهيم بن عباد أبو يعقوب الدبري الصنعاني استصغرني عبدالرزاق ، أحضره أبوه عنده وهو صغير جداً فكان يقول : قرأنا على عبدالرزاق أي قرأ غيره وحضر صغيراً وحدث عنه بحديث منكر


➥ (আল কামেল ১/৩৪৪)



এ বাতিল হাদিস কখনোই আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (رضي الله عنه) হতে পারে না কেননা তিনি হজরত মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) এর অনেক প্রশংসা করেছেন। তার ইতায়াত (আনুগত্য) করতে বলেছেন।


[সহীহ বুখারী হাঃ ৫৬৮২; সহীহ মুসলিম হাঃ ৪২৪৮; মাজমাউয যাওয়ায়েদ (সনদ হাসান) হাঃ ১৫৯২৪]



সুতরাং তিনি কি করে মুয়াবিয়া জাহান্নামি এর পক্ষে হাদিস বর্ণনা করতে পারেন?


এছাড়াও রাসুলুল্লাহ (ﷺ) মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) কে জাহান্নামী বা মুরতাদ বলতে পারেন না কারণ তার পাক জবান থেকে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) কে তিনি হিদায়াত প্রাপ্ত পথপ্রদর্শক ও জান্নাতী ঘোষণা করেছেন।


➥ সহীহ বুখারির হাদিসঃ ৬৬৯২



সহ ১ ডজন হাদিস গ্রন্থে সহীহ সনদে বর্ণিত হাদিস যেখানেঃ



❏ হাদিস ৩৮:



হজরত আলি ও মুয়াবিয়া (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)'র যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করে রাসূলে আকরাম (ﷺ) হাসান (رضي الله عنه)-কে দেখিয়ে বলেছেন :


إن ابني هذا سيد، وسيصلح الله به بين فئتين عظيمتين من المسلمين


অর্থ-"আমার এ নাতি(হাসান) সাইয়্যেদ! তাকে দিয়ে আল্লাহ অচিরেই মুসলিমদের মাঝে বিরাট ২ টি দলের সুলাহ (মীমাংসা) করিয়ে দিবেন (মানে আলী (رضي الله عنه) ও মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) দলের মাঝে)।"



এ হাদিসে রাসূলুল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলছেন যে, ২ টি দলই মুসলিম হবে,মানে আলীর (رضي الله عنه) এর দলও মুসলিম ও মুয়াবিয়া  (رضي الله عنه) এর দলও মুসলিম।


সুতরাং যদি মুয়াবিয়া  (رضي الله عنه) কাফের হয় তাহলে বুখারী সহ সকল হাদিস গ্রন্থের হাদিস গুলো অস্বীকার করা হবে।


এছাড়াও মুয়াবিয়া (رضي الله عنه)-কে মুরতাদ বলার হাদিসটির সনদ ও মতন গুলোতে ইজতেরাব (পরস্পর অসামঞ্জস্যতা) আছে।



এর একটি সনদ হচ্ছে-


إنما رواه ابن طاوس ، عن أبيه ، عن عبد الله بن عمرو أو غيره


(ক) এখানে উপরে উল্লেখিত হাদিসটির মতই হুবহু সনদ তবে সনদের শেষে তাউস বলছে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আ'স "অথবা" অন্য কারো কাছ থেকে বর্ণিত!! এখানে "আও গাইরুহু (অথবা তিনি ছাড়া অন্য কেউ)" শব্দ ও বাক্য দ্বারা এ হাদিসটির রাবী সনদে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে যার কারনে সনদেও ইজতেরাবের পাশাপাশি সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। সুতরাং এ হাদিস কি করে সহীহ হতে পারে?


(খ) আর ইবনু তাউস কখোনই তার বাবা তাউস থেকে হাদিস সরাসরি শুনেন নাই তাহলে কিভাবে এ হাদিস ও তার সনদ কে সহীহ বলা যায়?


(গ) তাছাড়াও এ সনদে একজন রাবী সাকেত হয়েছে(বাদ পড়েছে)। অন্য একটি বর্ণনায় ইবনু তাউস "ফুরখাশ"নামক মাজহুল (অজ্ঞাত) রাবী থেকে বর্ণনা করেছে।আল্লামা খাল্লাল এ সনদটি এভাবে বর্ণনা করেন-


رواه عبد الرزاق ، عن معمر ، عن ابن طاوس قال : سمعت فُرخاش يحدث هذا الحديث عن أبي عن عبد الله بن عمرو


(আল মুন্তাখাব মিন ইলালিল খাল্লাল ১/১২৮ তরজমা-১৩৬)



সুতরাং এখান থেকেও হাদিসটির বর্ণনা সহীহ প্রমান হচ্ছে না। স্ববিরোধি ও ইজতেরাব পূর্ণ সনদ কি করে গ্রহন যোগ্য হবে? তাহলে হাদিস গুলো সব দিক থেকেই ভুলে ভরা দেখা যাচ্ছে। এটাকে সহীহ বলার কোন প্রশ্নই আসে না। যেমনঃ



❏ হাদিস ৩৯:



মাজমাউয যাওয়ায়েদের এক সহীহ রেওয়াতে আছে-


قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يطلع عليكم رجل من هذا الفج من أهل النار وكنت تركت أبي يتوضأ فخشيت أن يكون هو فأطلع غيره فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: هو هذا


এ হাদিসটিও আব্দুল্লাহ ইবনু আমর থেকেই বর্ণিত ,এবং এর রাবীগন সহীহ। তবে এ হাদিসে পূর্বের হাদিসের মত "মুয়াবিয়া  (رضي الله عنه)"-এর নাম উল্লেখ নেই বরং উক্ত সাহাবীর বাবা আমর ইবনুল আ'সের বিষয়ে তার যে সন্দেহ ছিল তা নিরসনে তিনি "গাইরুহু (আমার বাবা ব্যতিত অন্য কেউ আসল)" শব্দ দ্বারা প্রকাশ করলেন। এ হাদিসটিতে হজরত মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) এর বিন্দু মাত্র নাম ও নিশানা উল্লেখ নেই।



অন্য একটি সহীহ হাদিস যা ইমাম তবারানী তার আওসাতে বর্ণনা করেন। ,


ليطلعن عليكم رجل يبعث يوم القيامة على غير سنتي ، أو على غير ملتي "


অর্থ-"তোমাদের নিকট এমন এক ব্যক্তি আসবে যে কিয়ামতের দিন আমার সুন্নতের উপর পুনরুত্থিত হবে না।"


➥ (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১/১৪৭)



এখানেও নির্দিষ্ট কোন লোকের ব্যাপারে বলা হচ্ছে তা বুঝা যাচ্ছে না।


সুতরাং সহীহ হাদিসের বিপরীতে হাদীস জাল করতে গিয়ে জালিয়াতীরা সব দিক থেকেই ধরা খেয়েছে।কেনই বা ধরা খাবে না আল্লাহ যে নিজেই সাহাবা বিদ্বেষীদের দিফা করে(সূরা হজ্জ)


➥ মুসনাদে আহমাদে ১১/৭১; 



ইমাম তবারানী তার আওসাতে ইমাম বাযযার তার মুসনাদে আবার এ হাদিসের ব্যক্তির নাম ''হাকাম" বলা হয়েছে, সেখানেও মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) এর নাম ও নিশানা নেই। হাদিসটি হচ্ছে-


عن أبي أمامة بن سهل بن حنيف عن عبد الله بن عمرو قال : كنا جلوسا عند النبي صلى الله عليه وسلم، وقد ذهب عمرو بن العاصي يلبس ثيابه ليلحقني، فقال ونحن عنده: (ليدخلن عليكم رجل لعين)، فوالله ما زلت وجلا أتشوف داخلا وخارجا حتى دخل فلان يعني الحكم).


আর এটিই হচ্ছে সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ।


হজরত মুয়াবিয়া  (رضي الله عنه) মুরতাদ হয়ে মারা যাবেন এবিষয়ক হাদিসটির আরেকটি সমস্যা হচ্ছে সে সনদে ইমাম আব্দুর রাযযাক আস সানআনী(রহ) রয়েছেন।১ম কথা হচ্ছে তিনি এ হাদিস কিন্তু তার কিতাবে বর্ণনা করেন নাই।২য়ত উনি একদল বড় বড় মুহাদ্দিসদের নিকট সমালোচিত আরেক দল মুহাদ্দিসদের নিকট সমালোচনার সাথে প্রশংসিত (তার তাওসিক বা জরাহ বর্ণনা এখানে উদ্দেশ্য না)।তার ব্যাপারে প্রসিদ্ধ রায় হচ্ছে উনি শেষ বয়সে ভুলে যেতেন,গুলিয়ে ফেলতেন তার অন্ধ হওয়ার পরে তার থেকে তার লিখিত কোন কিতাব ব্যতিত কোন হাদিস বর্ণিত হলে তা গ্রহনযোগ্য হবে না।


(আল কামেল ফি যুয়াফায়ির রিজাল, ইবনু আদি ৬/৫৪৫;সুয়ালাতু আবী আব্দিল্লাহ ইবনু বুকাইর ওয়া গাইরুহু,দারুকুতনী পৃঃ৩৫;আস সিকাত,ইবনু হিব্বান ৮/৪১২;শরহু ইলালুত তিরমিযী,ইবনু রাজাব আল হাম্বালী ২/৫৭৭-৫৭৮,৫৮০;মীযানুল ই'তেদাল,যাহাবী ২/৬০৯ নং-৫০৪৪;তারীখুল কাবির,বুখারি ৬/১৩০ নং-১৯৩৩; তাহযিবুল কামাল ফি আসমায়ির রিজাল কিতাবে আব্দুর রাযযাক সানানী (রহ)'র তরজমা)



যেহেতু এ হাদিসটি ইমাম আব্দুর রাযযাক(রহ) তার কোন কিতাবে বর্ণনা করেছেন বলে আমরা জানি না,আর আব্দুর রাযযাক থেকে বকর ইবনু হুশাইম আর ইসহাক নামক রাবী বর্ণনা করেছে যারা গ্রহনযোগ্য না। তাই এ হাদিস গ্রহন করা যাবে না।



আসুন জেনে নিই রাবীদ্বয়ের ব্যাপারেঃ


(ক) বকর ইবনু হুশাইম মাজহুল রাবি।তার কোন পরিচয় পাওয়া যায় না।


(খ) এ হাদিসের সনদে ইসহাক ইবনু ইবরাহিম আদ দুবুরী রয়েছে(কেউ কেউ ধারনা করে ইসহাক ইবনু ইসরাঈল বুঝেছে যেমনটি ফারহান হাসান আল মালেকী।অথচ আব্দুর রাযযাক থেকে এ রাবির কোন হাদিস বর্ণনা প্রমানিত নয়।)।


আর এ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আদ দুবুরী সমালোচিত রাবী। (মুকাদ্দামায়ে ইবনুস সালাহ পৃঃ৩৫৫)


সে ইমাম আব্দুর রাযযাক থেকে অনেক মুনকার হাদিস বর্ণনা করত।



ইমাম ইবনু আদি ও ইমাম যাহাবী বলেন-


قال إسحاق بن إبراهيم بن عباد أبو يعقوب الدبري الصنعاني استصغرني عبدالرزاق، أحضره أبوه عنده وهو صغير جداً فكان يقول: قرأنا على عبدالرزاق أي قرأ غيره وحضر صغيراً وحدث عنه بحديث منكر


(আল কামেল ১/৩৪৪;সিয়ারু আ'লামিন নুবালা ১৩/৪১৭)


তাছাড়া ইবরাহিম আল হাররানী বলেন-"ইসহাকের যখন ৬-৭ বছর তখন ইমাম আব্দুর রাযযাক মারা গেছেন।" (শরহু ইলালিত তিরমিযি ২/৫৮১)



যদি সে তার থেকে শুনেও থাকে তাহলে এ উক্তির দ্বারা প্রমানিত হল সে ইমামের অন্ধ হওয়ার পরে হাদিস শুনেছে।সুতরাং উপরে উল্লেখিত নীতির ভিত্তিতেও তার হাদিস গ্রহনযোগ্য নয়।


তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন যারা একে সহীহ মনে করে-


১।এ হাদিস বলার পরেও কি করে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) হজরত মুয়াবিয়া-কে ওহী লিখক হিসেবে নিযুক্ত রাখলেন?


২।রাসূলের সাহাবীরা কেন ব্যাপক ভাবে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) এর জাহান্নামি ও মুরতাদ হওয়ার প্রসঙ্গে তার বিরুদ্ধে অবস্থান করলেন না। বরং তার আমীরত্ব গ্রহন করলেন?


৩।নামধারী সুন্নিদের নিকট তো আশাকরি উমার (رضي الله عنه) কাফের বা জালেম না?যদি তাই হয় তাহলে ১০ম হিজরীতে এ হাদিস জানা সত্ত্বেও কি করে তিনি সাহাবীদের পরামর্শে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه)কে শামের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করলেন? যদি বলে জানত না, তাহলে বলব একজন সাহাবী মুরতাদ হবে এ কথার তো ব্যাপক প্রচলন থাকার কথা আর হজরত উমরের মত এত বড় সাহাবী ও অন্য সাহাবারা এটা জানবে না এটা কেমন করে হয়?



❏ হাদিস ৪০:


 


তাদের অভিযোগ হলো আল্লাহর রসুল আমীরের মুয়াবিয়ার প্রতি বদ্দোয়া করে গেছেন। তার সমর্থক দলিল হিসাবে নিম্নোক্ত হাদীসটি পেশ করে।



حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ بَشَّارٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - قَالاَ حَدَّثَنَا أُمَيَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ الْقَصَّابِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنْتُ أَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَوَارَيْتُ خَلْفَ بَابٍ - قَالَ - فَجَاءَ فَحَطَأَنِي حَطْأَةً وَقَالَ ‏"‏ اذْهَبْ وَادْعُ لِي مُعَاوِيَةَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَجِئْتُ فَقُلْتُ هُوَ يَأْكُلُ - قَالَ - ثُمَّ قَالَ لِيَ ‏"‏ اذْهَبْ وَادْعُ لِي مُعَاوِيَةَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَجِئْتُ فَقُلْتُ هُوَ يَأْكُلُ فَقَالَ ‏"‏ لاَ أَشْبَعَ اللَّهُ بَطْنَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى قُلْتُ لأُمَيَّةَ مَا حَطَأَنِي قَالَ قَفَدَنِي قَفْدَةً ‏.‏



আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি বালকদের সাথে খেলায় লিপ্ত ছিলাম। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে আসলেন। তখন আমি একটি দরজার পিছনে লুকিয়ে থাকলাম। তিনি বলেন, তিনি আমাকে তাঁর হাতকে চাপড়ে বললেন, যাও, মু’আবিয়াকে আমার কাছে ডেকে আনো। তিনি বলেন, তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং বললাম, তিনি খাচ্ছিলেন। (আমি ফিরে আসলাম) তিনি বলেন, তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, যাও , মু’আবিয়াকে আমার নিকট ডেকে নিয়ে আসো। তিনি বললেন তাকে ডেকে নিয়ে এসো, তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং এসে বললাম, তিনি খাচ্ছেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্ তার পেটভর্তি  করবে না। ইবনে মুসান্না বলেন, আমি উমায়্যাকে বললাম, حَطَأَنِي এর অর্থ কি? তিনি বললেন, قَفَدَنِي قَفْدَةً অর্থাৎ তিনি আমার পিঠ চাপড়ালেন।


সহি মুসলিম, হাদীস নং-৬৩৯০



উক্ত হাদীসের উপর ভিত্তি করে  তাদের বক্তব্য , আল্লাহর রসুল আমীরে মুয়াবিকে বদ দোয়া করেছেন। আর তাদের অভিযোগ হলো মুয়াবিয়া যদি মোমিন হতেন, তাকে আল্লাহর রসুল বদদোয়া করার প্রশ্ন আসে না । তিনি মোমিন বা সাহাবী ছিলেন না, যা আল্লাহর রসুলের বদদোয়া প্রমাণ করে।এছাড়া উক্ত হাদীসের উপর ভিত্তি করে কেও কেও আবার, আল্লাহর রসুল তাঁকে লানত দিয়েছেন বলে চালিয়ে দেয়।



এইবার উক্ত অভিযোগের উপর আমার জবাবঃ প্রথমে তো উক্ত হাদীসটি খাবরে ওয়াহিদই নয় বরং  গরীব প্রকৃতির। এক্ষেত্রে হজরতে ইবনে আব্বাস থেকে একমাত্র শ্রোতা হলেন আবু হামজাহ। তিনি ছাড়া আর কোন ববর্ণনাকারী পাওয়া যায়নি। আর যারা উসুলে হাদীস সম্বন্ধে সামান্য জ্ঞান আছে, তারা জানে গরীব হাদীসের মতন গারীব হয়। আমরা পুর্বেই জেনেছি খাবরে ওয়াহিদের সেই হাদীসকে বলে যাতে সরাসরি সন্দেহ থাকে। যেহেতু হাদীসটি গরীব প্রকৃতির, বলা যেতে পারে তার মতন তেমন নিক্ষুঁত নাও হতে পারে বা ক্ষুঁত থাকতে পারে । তাই উক্ত হাদীসের মতনেও ক্ষুঁত থাকতে পারে, এটা মানলে ভুল হবে না।



দ্বিতীয়  জবাব শিয়ারা উক্ত হাদীসের উপর ভিত্তি করে, আল্লাহর রসুল আমীরে মুয়াবিয়াকে লানত দিয়েছেন বলে চালিয়ে দিলেও, উক্ত হাদীসে কোথাও লানত শব্দ নেই। হাদীসে আছে  لا أشبع الله بطنه  অর্থ আল্লাহ তার পেট ভরাবেনা।  তাই এখানে লানত শব্দতো নেই বরং হাদিস দ্বারা বদ দোয়া  প্রমাণ হয় না।  এখানে বলা হয়েছে আল্লাহ পেট ভরাবেন না, বলা হয়নি যে আল্লাহ কখনো পেট ভরাবেন না। যদি বলতেন তাহলে  


لا أشبع الله بطنه إبدأً


এই শব্দটি উল্লেখ থাকতো। কিন্তু আল্লাহর রসুল সেটা বলেননি, বলেছেন আল্লাহ পেট ভরাবেন না। এখানে ঘটনার দিনের কথা বলা হয়েছে, যে আজ আল্লাহ তার পেট ভরাবেন না। আসলে এটা ছিলো আল্লাহর রসুলের ইয়ারকির ছলে বলা কথা, যে যতবারই পাঠাই ততবারই দেখে খাচ্ছে, সে এত খাচ্ছে!! অতএব আল্লাহ তার পেট ভরাবেনা না। আমরাও সমাজের বুকে দেখি কেও অনেক্ষন ধরে খেলে ইয়ারকির ছলে বলে থাকি আজ তার খাওয়া শেষ হবে না বা আজ তার পেট ভরবে না। কিন্তু যেহেতু আল্লাহর রসুলের স্ববাবগত চরিত্রের মধ্যে ছিলো, যেকোনো জিনিশকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেওয়া তাই তিনি আমাদের মত পেট ভরবে না  না বলে, বললেন আল্লাহ তার পেট ভরাবেন না। এটা ছিলো তার ইয়ারকির ছলে বলা একটি বাক্য মাত্র।


তৃতীয়ঃ শিয়ারা যদিও দাবি করছে আল্লাহর রসুল বদ দোয়া করেছেন, কিন্তু এখানে বোদ্দোয়ার কোন কারণই দেখা যাচ্ছে না। আর তিনি বিনা কারণে কাওকে বদ দোয়া দেবেন, সেটা হতে পারেনা। এই ধরণের কথা  যারা বলে তাদের এই ধরণের মন্তব্য তার চারিত্রিক বৈশিষ্টের বিরোধীতা করেন।কারণ কাওকে এইভাবে বিনা কারণে বদ্দোয়া দিয়ে তার প্রতি প্রতিশোধ নেবেন না। যা নিম্নোক্ত হাদীস প্রমাণ করে



❏ হাদিস ৪১:



باب صِفَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم



حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ مَا خُيِّرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَمْرَيْنِ إِلاَّ أَخَذَ أَيْسَرَهُمَا، مَا لَمْ يَكُنْ إِثْمًا، فَإِنْ كَانَ إِثْمًا كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنْهُ، وَمَا انْتَقَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِنَفْسِهِ، إِلاَّ أَنْ تُنْتَهَكَ حُرْمَةُ اللَّهِ فَيَنْتَقِمَ لِلَّهِ بِهَا‏.‏


হজরতে আইশা (رضي الله عنه) হইত বর্ণিত, তিনি বলেন আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যখনই দু’টি জিনিসের একটি গ্রহণের ইখতিয়ার দেয়া হত, তখন তিনি সহজ সরলটি গ্রহণ করতেন যদি তা গোনাহ না হত। যদি গোনাহ হত তবে তা থেকে তিনি অনেক দূরে সরে থাকতেন। আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যাক্তিগত কারনে কারো থেকে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন করা হলে আল্লাহ্কে রাযী ও সন্তুষ্ট করার মানসে প্রতিশোধ নিতেন।


বুখারী সরিফ, অধ্যায় -আহাদিসে আম্বিয়া, হাদীস নং-৩৩০৮


উক্ত হাদীস থেকে প্রমাণ হয় এক বিশেষ কারণ ছাড়া আল্লাহর রসুল কারোর উপর প্রতিশোধ নেন না। যদি কারোর প্রতি প্রতিশোধ নেন তাহলে আল্লাহর সীমা লঙ্ঘনকারীদের উপর নেন। আর এখানে আমীরে মুয়াবিয়া কোন সীমা লঙ্ঘন করেননি। তিনি যদি জানতেন আল্লাহর রসুল ডাকছেন অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিতেন এবং তার নিকট যেতেন।কিন্তু তিনি জানতেনই না যে, তাকে আল্লাহর রসুল ডেকেছেন। কারণ ইবনে আব্বাস তাকে বলেনই নি যে, আল্লাহর রসুল তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। তাই এখানে বদ দোয়া দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া আল্লাহর রসুল এমন নরম স্বভাবের ছিলেন যে কাফীর বা মুশরিকদেরও বিনা কারণে বদ দোয়া করতেন না।



❏ হাদিস ৪২:



حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَا : حَدَّثَنَا مَرْوَانُ يَعْنِيَانِ الْفَزَارِيَّ ، عَنْ يَزِيدَ وَهُوَ ابْنُ كَيْسَانَ ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ  ، قَالَ  : قِيلَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ عَلَى الْمُشْرِكِينَ قَالَ : إِنِّي لَمْ أُبْعَثْ لَعَّانًا ، وَإِنَّمَا بُعِثْتُ رَحْمَةً


আবু হুরাইরাহ (رضي الله عنه) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন,আল্লাহর রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কে বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল ! আপনি মুশরিকদের উপর বদদুআ করুন। তিনি বললেন, “আমি তো অভিসম্পাতকারীরূপে প্রেরিত হইনি; বরং আমি প্রেরিত হয়েছি রহমতস্বরূপ।”


সহি বুখারী, কিতাবুল বিররে ওয়াস্বালাত ওয়াল আদাব, হাদীস নং-৪৮৩২



উক্ত হাদীস দ্বারা বোঝা যায় আল্লাহর রসুল যখন তখন মুশরিকদেরও বদ্দোয়া করতেন না। অতএব বলা যায় শিয়ারা "‏ لاَ أَشْبَعَ اللَّهُ بَطْنَهُ এই শব্দকে নিয়ে বদ্দোয়া বলে লাফালাফি করলেও ইহা বদ্দোয়া ছিলো না,কারণ তিনি অকারণে বদ দোয়া করতেন না। তিনি ইয়ারকির ছলে অনেক সময় এধরণের শব্দ ব্যবহার করতেন, যা নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা বোঝা যায়।



❏ হাদিস ৪৩:



حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو مَعْنٍ الرَّقَاشِيُّ - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا عُمَرُ، بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ أَبِي طَلْحَةَ، حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ كَانَتْ عِنْدَ أُمِّ سُلَيْمٍ يَتِيمَةٌ وَهِيَ أُمُّ أَنَسٍ فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْيَتِيمَةَ فَقَالَ ‏"‏ آنْتِ هِيَهْ لَقَدْ كَبِرْتِ لاَ كَبِرَ سِنُّكِ ‏"‏ ‏.‏ فَرَجَعَتِ الْيَتِيمَةُ إِلَى أُمِّ سُلَيْمٍ تَبْكِي فَقَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ مَا لَكِ يَا بُنَيَّةُ قَالَتِ الْجَارِيَةُ دَعَا عَلَىَّ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ يَكْبَرَ سِنِّي فَالآنَ لاَ يَكْبَرُ سِنِّي أَبَدًا - أَوْ قَالَتْ قَرْنِي - فَخَرَجَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ مُسْتَعْجِلَةً تَلُوثُ خِمَارَهَا حَتَّى لَقِيَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَا لَكِ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَدَعَوْتَ عَلَى يَتِيمَتِي قَالَ ‏"‏ وَمَا ذَاكِ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ زَعَمَتْ أَنَّكَ دَعَوْتَ أَنْ لاَ يَكْبَرَ سِنُّهَا وَلاَ يَكْبَرَ قَرْنُهَا - قَالَ - فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ ‏"‏ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ أَمَا تَعْلَمِينَ أَنَّ شَرْطِي عَلَى رَبِّي أَنِّي اشْتَرَطْتُ عَلَى رَبِّي فَقُلْتُ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أَرْضَى كَمَا يَرْضَى الْبَشَرُ وَأَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُ الْبَشَرُ فَأَيُّمَا أَحَدٍ دَعَوْتُ عَلَيْهِ مِنْ أُمَّتِي بِدَعْوَةٍ لَيْسَ لَهَا بِأَهْلٍ أَنْ تَجْعَلَهَا لَهُ طَهُورًا وَزَكَاةً وَقُرْبَةً يُقَرِّبُهُ بِهَا مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ أَبُو مَعْنٍ يُتَيِّمَةٌ ‏.‏ بِالتَّصْغِيرِ فِي الْمَوَاضِعِ الثَّلاَثَةِ مِنَ الْحَدِيثِ ‏.‏



আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,হজরতে আনাসের (رضي الله عنه) মা উম্মু সুলায়মার নিকট এক ইয়াতীম মেয়ে ছিল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখে বললেন, এ তুমি সেই মেয়ে? তুমি তো অনেক বড় হয়েছ;কিন্তু তুমি দীর্ঘায়ু হবে না। তখন ইয়াতীম মেয়েটি উম্মু সুলায়মের নিকট এসে কাঁদতে লাগল। তখন উম্মু সুলায়ম (رضي الله عنه) বললেন, তোমার কী হয়েছে? হে আমার স্নেহের মেয়ে! মেয়েটি বলল, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বদ্দু’আ করেছেন।তিনি বলেছেন, আমি দীর্ঘায়ু হব না। সুতরাং এখন থেকে আমি বয়সে আর বড় হব না। অথবা সে আমার জুড়ি বলেছিলেন। এ কথা শুনে উম্মু সুলায়ম (رضي الله عنه) তাড়াতাড়ি গায়ে চাদর দিয়ে বেরিয়ে পড়েন এবং আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে দেখা করেন। তখন তাঁর উদ্দেশে আল্লাহর রসূল  সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কী ব্যাপার, হে উম্মু সুলায়ম! তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি কি আমার ইয়াতীম মেয়েটিকে বদ্দু’আ করেছেন? তিনি বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! এটা কেমন কথা! বদ্দু’আ করব কেন? উম্মু সুলায়ম বললেন, সে তো মনে করেছে যে, আপনি তাকে বদ্দু’আ করেছেন যেন তার বয়স না বাড়ে কিংবা তার সমবয়সীর বয়স বৃদ্ধি না পায়। রাবী বলেন , তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হেসে বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! তুমি বোধহয় জান না যে, আমার রবের সাথে এ মর্মে আমি শর্ত করেছি এবং আমি বলেছি যে, আমি একজন বাশার । একজন বাশার যাতে সন্তুষ্ট থাকে আমিও তাতে সন্তুষ্ট হই। আমিও রাগান্বিত হই যেভাবে একজন বাশার রাগান্বিত হয়ে থাকে। সুতরাং আমি আমার উম্মতের কোন লোকের বিরুদ্ধে বদ্দু’আ করলে সে যদি তার যোগ্য না হয় তাহলে তা তার জন্য পবিত্রতা, আত্মশুদ্ধি ও কুরবাত সৃষ্টি করে  দাও, যার দ্বারা কিয়ামাতের দিনে সে তোমার নৈকট্য অর্জন করতে পারে।


আবূ মা’ন (রহঃ) উল্লেখিত তার হাদীসে তিন জায়গায় (يتيمة এর স্থলে) يُتَيِّمَةٌ (তাসগীর) রূপে উল্লেখ করেছেন, যার অর্থ ছোট ইয়াতীম মেয়ে।


সহি মুসলিম হাদীস নং৬৩৮৯



উক্ত হাদীস দ্বারা বোঝা যায় যখন ইয়াতিম মেয়ের মা টি আল্লাহর রসুলকে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি আমার মেয়েকে বদ দোয়া করেছেন তিনি কিন্তু  وَمَا ذَاكِ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ এ কেমন কথা উম্মে সুলাইম? এই বলে তা অস্বীকার করেছেন।অর্থাৎ তিনি বলতে চাইলেন এ কেমন কথা বলছো কেণ বিনাকারণে বদ্দোয়া করতে যাবো?তার এই অস্বীকার প্রমাণ করে তিনি মজা করেছিলেন মাত্র। যেমন উক্ত হাদীসে  لاَ يَكْبَرَ سِنِّي তার বয়েস যেন না বাড়ে উক্ত কথা দ্বারা মজা করেছিলেন  অনুরূপভাবে لا أشبع الله بطنه তার পেট ভরাবে না বলে মজা করেছিলেন মাত্র। আর উক্ত হাদীস থেকে দ্বিতীয় যে বিষয়টি জানা যায়, তা হলো  আল্লাহর রসুলের ওয়াদা অনুযায়ী যে বদ্দোয়ার হকদার নয় তার জন্য রয়েছে কল্যান।যদিও শিয়াদের কথা যুক্তির খাতিরে ক্ষনিকের জন্য মানা যায় যে, আল্লাহর রসুল বদ দোয়া দিয়েছিলেন সেক্ষেত্রে আল্লাহর রসুলের ওয়াদা অনুয়ায়ী আমীরে মুয়াবিয়া জন্য কল্যাণ সাধিত হয়েছে।আল্লাহর রসুলের ওয়াদা অনুযায়ী তিনি কিয়ামতের দিন পবিত্রতা অর্জন করবেন এবং আল্লাহর কুরবাত হাসিল করবেন।আমীরে মুয়াবিয়াও বদ দোয়ার হকদার ছিলেন না কারণ তিনি জানতেনই না আল্লাহর রসুল তাকে ডেকেছেন।তাই যদি যুক্তির খাতিরে মানা যায়,আল্লাহর রসুল বদদোয়া করেছিলেন তাহলে তাঁর ওয়াদা অনুযায়ী আমীরে মুয়াবিয়ার জন্য দোয়া হয়ে দাঁড়াবে। যদিও তারা আরো একটি বর্ণনা দ্বারা নিজেদের দাবি প্রমাণ  করতে চায় তাই তাদের দাবির সমর্থক যে দলিলটি পেশ করে তাা দেখে নেওয়া দরকার।



❏ হাদিস ৪৪:



أخبرناه أبو عبد الله الحافظ ، حدثنا : علي بن حمشاد ، حدثنا : هشام بن علي ، حدثنا : موسى بن إسماعيل ، حدثنا : أبو عوانة ، عن أبي حمزة ، قال : سمعت إبن عباس ، قال : كنت ألعب مع الغلمان فإذا رسول الله (ص) قد جاء فقلت : ما جاء إلاّ إلي فإختبأت على باب فجاء فحطأني حطأة ، فقال : أذهب فإدع لي معاوية ، وكان يكتب الوحي ، قال : فذهبت فدعوته له فقيل : إنه يأكل ، فأتيت رسول الله (ص) فأخبرته فقال : فأذهب فادعه فأتيته فقيل : إنه يأكل ، فأتيت رسول الله (ص) فأخبرته فقال في الثالثة : لا أشبع الله بطنه ، قال : فما شبع بطنه ، قال : فما شبع بطنه إبدأً ،


হাদীস বর্ণনা করেছেন আবু আব্দুল্লাহ আল হাফিজ তিনি বলেন আমাকে হাদিস বর্ণনা করেছেন হামশাদ। তিনি বলেন আমাকে হাদিস বর্ণনা করেছেন হিশাম বিন আলী। তিনি বলেন আমাকে হাদিস বর্ণনা করেছেন মুসা বিন ইসমাইল। তিনি বলেন আমাকে হাদিস বর্ণনা করেছেন আবু আওয়ানাহ।তিনি বলেন আবু হামজা হইতে বর্ণিত তিনি বলেন আমি ইবনে আব্বাসকে বলতে শুনেছি, একদা আল্লাহর রসুলকে আসতে দেখা গেলো, তিনি আমার দিকেই আসছিলেন। অতঃপর আমি একটি দরজার পিছনে লুকিয়ে গেলাম তখন তিনি আমার পিঠে চাপড় দিয়ে বললেন যাও মুয়াবিয়াকে ডেকে নিয়ে এসো, তিনি ওহী লিখতেন।


তিনি বলেন আমীরে মুয়াবিয়াকে ডাকতে তাঁর নিকট গেলাম, বলা হলো তিনি খাচ্ছেন।আমি ফিরে এসে আল্লাহর রসুলকে বললাম তিনি খাচ্ছেন। তিনি আবার বললেন যাও তাকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো।আমি দ্বিতীয়বার তার নিকট গেলাম, তখনও বলা হলো তিনি খাচ্ছেন। পুনরায় আল্লাহর রসুল বললেন যাও তাকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো।  আমি তাঁকে জানালাম তিনি খাচ্ছেন। তৃতীয়বারে তিনি বললেন আল্লাহ তার পেট ভরাবেন না। তিনি বললেন (ইবনে আব্বাস) তার পেট ভরেনি, এরপর তার পেট কখনো ভরেনি।


দালাইলু নবুয়াহ, হাদীস নং-২৫০৬



উক্ত হাদীস সম্পর্কে কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে জবাবটি দেওয়ার চেষ্টা করবো। প্রথমতঃ فما شبع بطنه إبدأً ، এই উক্তিটি রসুলের নয়, হজরতে ইবনে আব্বাসের বলে বোঝা যাচ্ছে। যদিও উদ্ধৃতাংশটি হজরতে আব্বাস থেকেও প্রমাণিত নয়।কারণ আমরা দেখেছি উক্ত বর্ণনায় ও বুখারী সরিফ উভয় বর্ণনায় হজরতে ইবনে আব্বাস থেকে একমাত্র শ্রোতা হলেন আবু হামজা। পুর্বে বুখারী সরিফের বর্ণনায় দেখেছি আবু হামাজাহ এই অতিরিক্ত অংশটি হজরতে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেনি। এর থেকে বোঝা যায় অতিরিক্ত অংশটি হজরতে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত হয়নি।এর পরে হয়তো শিয়াগন বলতে পারে আবু হামজাহ হয়তো فما شبع بطنه إبدأً ،অংশটি বর্ণনা করেছিল, যা আবু আওয়ানাহ বর্ণনা করেছে। হয়তো আবু হামজাহ থেকে সাবাআ উদ্ধৃতাংশটি ছেড়ে দিয়েছে!! তাহলে এর উপর আমার উত্তর থাকবে যে আবু আওয়ানাও থেকেও উক্ত অংশটি প্রমাণিত নয়  অর্থাৎ আবু আওয়ানাও আবু হামজাহ থেকে অতিরিক্ত অংশটি বর্ণনা করেননি যা নিম্নোক্ত বর্ণনাগুলি দ্বারা বোঝা যায়।



❏ হাদিস ৪৫:



حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عِيسَى أَبُو بِشْرٍ الرَّاسِبِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُولُ كُنْتُ غُلَامًا أَسْعَى مَعَ الْغِلْمَانِ فَالْتَفَتُّ فَإِذَا أَنَا بِنَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَلْفِي مُقْبِلًا فَقُلْتُ مَا جَاءَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا إِلَيَّ قَالَ فَسَعَيْتُ حَتَّى أَخْتَبِئَ وَرَاءَ بَابِ دَارٍ قَالَ فَلَمْ أَشْعُرْ حَتَّى تَنَاوَلَنِي فَأَخَذَ بِقَفَايَ فَحَطَأَنِي حَطْأَةً فَقَالَ اذْهَبْ فَادْعُ لِي مُعَاوِيَةَ قَالَ وَكَانَ كَاتِبَهُ فَسَعَيْتُ فَأَتَيْتُ مُعَاوِيَةَ فَقُلْتُ أَجِبْ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنَّهُ عَلَى حَاجَةٍ


হাদিস বর্ণনা করেছেন বাকর বিন ঈসা আবু বিশর রাসবি। তিনি বলেন আমাকে হাদিস বর্ণনা করেছেন আবু আওয়ানাহ। তিনি বলেন আবু হামজাহ বর্ণনা করে বলেন আমি ইবনে আব্বাসকে বলতে শুনেছি, একদা আমি গোলামদের সহিত খেলা করছিলাম। সেই সময়বআল্লাহর রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে আসছিলেন।আমি (তাকে আসতে দেখে)একটি দরজার পিছনে লুকিয়ে গেলাম। আমি বুঝতেই পারিনি তিনি আমার পিছনেই এসে গিয়েছিলেন।এমনকি তিনি আদর করে আমার পিঠে চড় মারলেন এবং বললেন যাও মুয়াবিয়কে ডেকে নিয়ে এসো, তিনি আল্লাহর রসুলের কাতিবে ওহি ছিলেন। আমি আমীরে মুয়াবিয়ার নিকট গেলাম। বললাম নবী তাকে  প্রয়োজনে ডেকেছেন।


মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৯৭৯



❏ হাদিস ৪৬:



حَدَّثَنَا يُونُسُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هِشَامٌ ، وَأَبُو عَوَانَةَ ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ الْقَصَّابِ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ إِلَى مُعَاوِيَةَ يَكْتُبُ لَهُ ، فَقَالَ : إِنَّهُ يَأْكُلُ ثُمَّ بَعَثَ إِلَيْهِ فَقَالَ : إِنَّهُ يَأْكُلُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : لاَ أَشْبَعَ اللَّهُ بَطْنَهُ


হাদীস বর্ণনা করেছেন ইউনুস। তিনি বলেন আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ।তিনি বলেন আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন হিসাম ও আবু আওয়ানাহ। ইবনে আব্বাস হইতে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আমীরে মুয়াবিয়ার নিকট পাঠালেন,তাকে দিয়ে ওহী লেখাতে। তিনি ফিরে এসে আল্লাহর রসুলকে জানালেন তিনি খাচ্ছেন। আবার আল্লাহর রসুল তাকে আমীরে মুয়াবিয়ার নিকট পাঠালেন।তিনি ফিরে এসে বললেন তিনি খাচ্ছেন।তখন আল্লাহর রসুল বললেন আল্লাহ তার পেট ভরাবেন না।


মুসনাদে আবু দাউদ তিয়ালিসি, খন্ড - ৪ পৃষ্ঠা-৪৬৪



উক্ত বর্ণনাগুলি দ্বারা বোঝা যায় উভয় বর্ণনায় না তো আবু হামজা, হজরতে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন না তো আবু আওয়ানাহ আবু হামজাহ থেকে অতিরিক্ত অংশটি বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া ইমাম বাইহাকি, ইমাম আবু দাউদ তিয়ালিসি ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল থেকে অনেক পরের মুহাদ্দিস। যেখানে আবু দাউদ তিয়ালিসি ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল যথাক্রমে ২০৪ ও ২৪১ হিজরি অন্য দিকে ইমাম বাইহাকি ৪৫৮ হিজরি।  তারা দুজনের উল্লেখিত হাদীসে, হজরতে ইবনে আব্বাস ও আবু হামজাহ সুত্রে আবু আওয়ানাহ থেকে অতিরিক্ত অংশটি বর্ণিত নেই। অতএব বোঝা যায় অতিরিক্ত অংশটি পরে সংযোজন হয়েছে। তাছাড়া আগেই বলেছি উক্ত বর্ণনাটি গরীব প্রকৃতির। একমাত্র আবু হামজাহ ব্যাতীত ইবনে আব্বাস থেকে অন্য কোন শ্রোতা পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে একি ব্যক্তির উদ্ধৃতির মধ্যে এমন হেরফের বা ভিন্নতা কোন মতে গ্রহনযোগ্য নয়।  


চতুর্থঃ উক্ত বর্ণনাগুলিতে একটি ইতিবাচক দিকও ফুটে ওঠে,যাতে আমীরে মুয়াবিয়ার ফজিলত প্রকাশ পায়। উক্ত বর্ণনাগুলি দ্বারা কোথাও বোঝা যায় তাকে আল্লাহর রসুল ওহী লিখতে ডাকছিলেন আবার কোথাও বোঝা যায়, কোন একটা প্রয়োজনে ডাকছিলেন। যদি ওহী লিখতে ডাকছিলেন সেক্ষেত্রে ফজিলত তো রয়েছেই আর যদি প্রয়োজনে ডাকছিলেনও ধরে নেওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ও তার ফজিলত প্রকাশ পায়।কারণ এতে আল্লাহর রসুলের মুহাব্বতই প্রকাশ পেয়েছে। কেননা হজরতে ইবনে আব্বাস বার বার খালি হাতে ফিরে এসেছেন।আর তার এত সাহাবা থাকা সত্ত্বেও আমীরে মুয়াবিকে দিয়েই খিদমত করাবেন বলে স্থির করেছিলেন, যে কারণে হজরতে ইবনে আব্বাস খালি হাতে ফিরে এলেও বার বার তাকেই ডাকছিলেন। কাওকে আল্লাহর রসুল খিদমতের জন্য স্থির করে নেওয়া এর চেয়ে বড় ফজিলতের ব্যাপার কি হতে পারে। 

________________

আমীরে মুয়াবিয়া (রা.) সম্পর্কে  বিতর্কের সমাধান কৃতঃ আবু আইয়্যুব কাদেরী (সম্পাদিত)

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন