মহরে নবুওত দর্শনে এক ইয়াহুদীর অচেতন হওয়া

 

মহরে নবুওত দর্শনে এক ইয়াহুদীর অচেতন হওয়া


ইমাম হাকীম নিশাপুরী (رضي الله عنه ) স্বীয় মুস্তাদরেকে হাকীমে হযরত আয়েশা সিদ্দেকা (رضي الله عنه ) হতে একখানা হাদীস বনর্ণা করে বলেন: মক্কায় এক ইয়াহুদী ব্যবসায়ী ছিল। রাসূলে পাক (ﷺ) এর শুভাগমনের রাত্রে সে কুরাইশদের সম্বোধন করে বলল :



يا معشر قريش هل و لد فيكم الليلة مولود فقال القوم والله ما نعلمه قال احفظوا ما اقول لكم و لد هذه الليلة نبي هذه الأمة الأخيرة بين كتفيه علامة فيها شعرات متواترات كأنهم عرف فرس لا يرضع ليلتين وذلك ان عفريتا من الجن أدخل اصبعه في فمه فمنعه الرضاع فتصدع القوم من مجلسهم وهم يتعجبون من قوله فلما صاروا إلى منازلهم اخبر كل انسان منهم أهله فقالوا قد ولد لعبد الله بن عبدالمطلب غلام سموه محمدا فالتقى القوم حتى جاءوا اليهودي فأخبروه الخبر قال فاذهبوا معي حتى انظر اليه فخرجوا به حتى أدخلوه على آمنة فقال اخرجي إلينا ابنك فاخرجته وكشفوا له عن ظهره فرأى تلك الشامة فوقع اليهودي مغشيا عليه فلما أفاق قالوا ويلك ما لك قال والله ذهبت النبوة من بني اسرائيل أفرحتم به يا معشر قريش أما والله ليسطون بكم سطوة يخرج خبرها من المشرق إلى المغرب.



অর্থাৎ- হে কুরইশগন! আজ রাত্রে তোমাদের কারো ঘরে কি কোন নবজাত শিশু জন্ম নিয়েছে?


সকল কুরাইশগন সমস্বরে বলে উঠল আমরা এ বিষয়ে জানিনা। সে বলল, তবে সন্ধান করে দেখ। কেননা আজ রাত্রে এ সর্বশেষ যুগের উম্মতের নবীর শুভ জন্ম হয়েছে। তাঁর উভয় স্কন্ধের মধ্য খানে ক্রমাগত চুল বিদ্যমান রয়েছে, দেখতে মনে হয় যেন ঘোড়ার প্রচলিত চুলের মত। আবার তাঁর ঘাঢ়ের চুল গুলো ও পরস্পর সংযুক্ত। তিনি ক্রমাগত দু রাত্র পর্যন্ত দুধ পান করবেন না। কেননা আফরীত নামক বিশাল জ্বিন স্বীয় হস্ত তাঁর মুখের উপর রেখে দিয়েছে। অত:এব তোমরা যেয়ে অনুসন্ধান করে দেখ। এর সত্যতা প্রমানিত হবেই।



তার কথামতো কুরাইশরা মক্কায় যেয়ে একে একে এর সত্যতা প্রমাণের উদ্দেশ্যে পরস্পর জিজ্ঞাসা করতে লাগলো। সেখানকার লোকেরা তাদেরকে বলল, আজ রাত্রে আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালেবের পুত্র সন্তান হয়েছে। তারা তাঁর নাম রেখেছে মোহাম্মদ। অত:পর কোরায়শরা ইহুদীর কাছে পৌছে সুসংবাদ জানিয়ে দিল। সে বলল : আমাকে নিয়ে চল। আমি এ শিশুকে দেখতে চাই।



এক পর্যায়ে তারা ইয়াহুদীকে নিয়ে আমেনার ঘরে প্রবেশ করে আমেনাকে বলল, তোমার কোলের এ সন্তানটি আমাদের নিকট বের করে দাও। ফলে তিনি স্বীয় সন্তানটিকে তাদের সামনে বের করে দিলে পর তারা বাচ্ছার পিঠ মোবারকের কাপড় সরিয়ে দিল ফলে তারা ইয়াহুদীর কথা মতো বাচ্ছার পৃষ্টের ঐ সৌন্দর্য তিলক তথা মোহরে নবুওয়ত দেখতে পেল। ইহুদী লোক তা দর্শনে বেহুশ হয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে রইল।



জ্ঞান ফিরে আসার পর লোকের তাকে বলল, তোমার সর্বনাশ হোক, তোমার কি হয়েছে যে, এ অবস্থা হলো? সে বলল, আল্লাহর কসম, ওহে কুরাইশগন! আজ থেকে চিরতরে বনী ইস্রাইল থেকে মোহাম্মাদী নবুওয়তী চলে গেল। আল্লাহর কসম, আজ থেকে তোমাদের মধ্য থেকে ক্ষমতার কর্তৃত্ব চলে গেল, সে তোমাদের জন্য এমন বিজয় অজর্ন করবে যে, সংবাদ প্রাচ্য হতে পাশ্চাত্য পর্যন্ত চড়িয়ে পড়বে।



ইমাম ছাখাবীর মতে উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমানিত হল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর স্কন্ধদ্বয়ের মধ্যখানে নবুওয়তী মোহরাংকিত হয়ে জন্ম লাভ করেছিলেন। ইমাম সাখাভীর মতে মোহরে নবুওয়ত ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর এমন গুরুত্ব পূর্ণ নিদর্শন যে, পূর্ব যুগীয় আহলে কিতাবী ইহুদীরাও তা জানতো এবং পরস্পর জিজ্ঞাসা করতো এমনকি এ আশা ও পোষন করতো যে, ঐ মোহরে নবুওয়ুত তাদের মধ্যেই আসবে। কিন্তু কুরাইশ বংশে আহমদী নূরের শুভাগমনে সকল ঝলপনা কলপনার আবসান ঘটলো। সম্রাট হিরাক্লিয়াস একদল বাহিনী রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দরবারে এ উদ্দেশ্য পাঠিয়েছিলেন যে, তারা যেন খতমে নবুওয়ত দেখে আসে। যেমন : তাঁর বক্তব্য من ينظرله خاتم النبوة ومن يخبره عنه অর্থাৎ- কে আছ যে তাঁর মোহরে নবুওত দেখে এসে এর সংবাদ আমার কাছে উপস্থাপন করবে? যেহেতু ইতিপূর্বে তাঁর নিকট দুজন ফেরেস্তা এসে তাঁর বক্ষ বির্দীন করত: কলবকে হেকমত তথা জ্ঞান বিজ্ঞানে পরিপূর্ণ করেদেন। ফেরেস্তাদ্বয় নবুওয়তের সীল মোহর অষ্কিত করে যান। তা বিশুদ্ধ বর্ণনা উল্লেখ্য যে:-

হুযূরে পাকের ইন্তেকাল পরবর্তীতে তাঁর মোহরে নবুওয়তের সীল মোহর উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল, এ সংক্রান্ত হাদীসের সনদ দুর্বল।

_______________

আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবাবী (ﷺ)

মূলঃ ইমাম নূরুদ্দীন মুল্লা আলী কারী আল হারুবী (رحمة الله)

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন