জিব্রাঈল (আঃ)'র গােসলের সময় ডানা থেকে ঝরে পরা পানির ফোঁটা থেকে ফেরেস্তা সৃষ্টি

 

জিব্রাঈল (আঃ)'র গােসলের সময় ডানা থেকে ঝরে পরা পানির ফোঁটা থেকে ফেরেস্তা সৃষ্টি



(৯) আবু শেখ আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) এর সুত্রে বর্ণনা করেন। রাসূলে খােদা (ﷺ) এরশাদ ফরমান,


ان في الجنة لنهرا ما يدخله جبرئیل دخلة فيخرج فينتفض الاخلق الله من کل قطرة تقطر منه ملکا


অর্থাৎ নিশ্চয়ই জান্নাতে একটি নহর আছে। যখন হযরত জিব্রাইল আলায়হিস সালাম এতে গিয়ে বাইরে এসে ডানা পরিস্কার করেন তখন তার ডানা থেকে যতগুলো ফোঁটা ঝরে পড়ে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক ফোঁটা থেকে একেকজন ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন। অথচ হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام)-এর ছয়শ' ডানা রয়েছে। যদি তিনি একটি ডানা বিছিয়ে দেয় তাহলে আসমানের উপরিভাগ ঢেকে যাবে।



(১০) ইবনে আবী হাতেম, আকীলী এবং ইবনে মারদুভিয়া হযরত আবু হােরায়রা (رضي الله عنه)'র সূত্রে রেওয়ায়েত করেন, রাসূলে খােদা (ﷺ) ইরশাদ ফরমান,


في السماء الرابعة نهر يقال له الحيوان يدحله جبريل كل یوم فينغسس فیه الغماسة منه یخرج فينتفض انتفاضة فبحرج عنه سبعون الف قطرة يخلق الله من كل قطرة ملكا هم الذين یٶمرون ان یاتوا اللبیت المعمور فیصلوا فيفعلون ثم يخرجون فلا یعودون اليه ابدا ویولی عليهم احدهم ثم يؤمران يقف بهم في السماء موقفا يسبحون الله الى ان تقوم الساعة


অর্থাৎ চতুর্থ আসমানে একটি নহর আছে যাকে ‘হায়াতের নহর’ বলা হয়। জিব্রাইল আলাইহিস্ সালাম এতে প্রত্যেক দিবসে একবার ডুব দিয়ে ডানা ঝাড়েন। যা থেকে সত্তর হাজার ফোঁটা ঝরে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক ফোঁটা থেকে একেকটি ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন। তারা আদিষ্ট হয় বায়তুল মামুরে গিয়ে নামায পড়তে যান। যখন নামায পড়ে বেরিয়ে আসে অতঃপর তাতে আর কখনাে যায় না। তাতে একজনকে তাদের নেতা বানানাের নির্দেশ দেয়া হয় যেন আসমানে তাদেরকে নিয়ে এটি স্থানে দন্ডায়মান হয়। কিয়ামত অবধি তারা আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করতে থাকবেন। 



▪ ইবনে মুনযিরও এ ধরণের বর্ণনা উল্লেখ করেন, কিন্তু তাতে নহরের উল্লেখ ছিলাে না।


▪ তিনি বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে হযরত আবু হােরায়রা (رضي الله عنه)'র সূত্রে ব্যক্ত করেন।


▪ কিন্তু ইবনে হাজর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন এটা হাদীসে মাওকুফ এর দ্বারা তিনি প্রমাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন।



সুতরাং বুঝা গেলাে, এ হাদিসে মাওকুফ মারফুর ন্যায়। (অর্থাৎ, এই হাদীসটি মাওকুফ হলেও মারফুর ন্যায় গ্রহণযোগ্য)



🔺ইমাম আহমদ রেযা  (رحمة الله) বলেন,


فصح الحديث وسقط مانقل القاسي عن الولي العراقي ان لم يثبت في ذالك شیٸ فقد أثبت الحافظ وفوق كل ذي علم عليم


অর্থাৎ হাদীসটি বিশুদ্ধ।


▪ আর আলফাসী (رحمة الله) ওলীয়ে ইরাকী (رحمة الله) থেকে যা বর্ণনা করেছেন তা অকেজো হয়ে গেছে, কেননা এর দ্বারা তিনি কিছুই প্রমাণ করতে পারেননি।


▪ অবশ্যই হাফেজ ইবনে হাজর (رحمة الله) এর দ্বারা প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বলাই বাহুল্য যে, প্রত্যেক জ্ঞানীর উপর ও জ্ঞানী রয়েছেন।



(১১) আতা, মােক্বাতিল এবং দোহাকের রেওয়ায়েতের বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে এভাবে এসেছে,


ان عن يمين العرش نهرا من نور مثل السموات السبع والارضين السبع والبحارالسبع يدخل فيه جبريل عليه السلام کل سحرو ويغتسل فيه فسزداد نورا الى نوره وجسالا الى جماله ثم ينتفض فیخلق اللّٰه تعالی من کل نقطه تقع من ریشه كذا كذا الف ملك يدخل منهم البيت السبعون الفا ثم لايعودون اليه الى ان تقوم الساعة


অর্থাৎ ‘আরশের ডানদিকে নুরের একটি নহর রয়েছে। যেটা সপ্ত আসমান, সপ্ত জমীন ও সাত সমুদ্রের বরাবর। প্রত্যেক ভোরে হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام) তথায় গােসল করেন। যা দ্বারা তার নূরের উপর, সৌন্দর্যের উপর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। অতঃপর ডানা ঝাড়েন। এ থেকে যে পানির ফোঁটা ঝরে পড়ে আল্লাহ তায়ালা তা থেকে শত সহস্র ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন, যা থেকে সত্তর হাজার বায়তুল মামুরে যায়। অতঃপর কিয়ামত পর্যন্ত সেখানে আর ফিরে যায় না।



▪ ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী  (رحمة الله) 


আল্লাহ তায়ালার বাণী- ویخلق ما لا تعلمون


এর ব্যাখ্যায় এটা উল্লেখ করেন।

_____________

কিতাবঃ ফেরেস্তা সৃষ্টির ইতিবৃত্ত [আল হেদায়াতুল মােবারাকা ফী তাখলীকে মালায়েকা"র বাংলা রূপ]

মূলঃ ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী (রঃ)

অনুবাদঃ আবু সাঈদ ইউসুফ জিলানী

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন