মাযারে মান্নত-নযরানা দেয়া যাবে?

 প্রশ্নকারী

মুহাম্মদ জিয়া উদ্দীন সিদ্দীকী

হাটহাজারী, চট্টগ্রাম


প্রশ্ন : একটি মাসিক পত্রিকায় দেখলাম, মাযারে যে সমস্ত ফকির ও মিসকীন থাকে তাদেরকে টাকা দিলে তা সাদকা হিসেবে গণ্য হবে। আর মাযারে নযরানা বা উপহার হিসেবে টাকা দিলে তা জায়েয হবে না, এটা নিষিদ্ধ ও মূলত হারাম। পত্রিকাটির প্রশ্নোত্তরটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত? শরীয়তের দৃষ্টিতে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।


উত্তর : মাযারে নযরানা বা উপহার হিসেবে টাকা দেওয়া হারাম ও জায়েয হবে না বলা ওলীবিদ্বেষীর পরিচায়ক এবং সত্যকে গােপন করার অপপ্রয়াস মাত্র। শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন বস্তুকে জায়েয বলার জন্য সুস্পষ্ট দলিলের প্রয়োজন হয় না। কেননা প্রত্যেক বস্তুর আসল হল জায়েয। কিন্ত কোন বস্তুকে নাজায়েয, নিষেধ ও হারাম বলার জন্য স্পষ্ট দলীল-প্রমাণের প্রয়ােজন হয়। আর দলীল-প্রমাণ ছাড়া হারাম বলা সমীচীন নয়। বরং জঘন্য অপরাধ।


আউলিয়া-এ কেরাম হলেন দুনিয়ার বুকে মহান আল্লাহর নিদর্শন। তাই তাঁদেরকে সম্মান করা প্রত্যেকের উপর ফরয এবং তাঁদের মাযার সমূহ হল মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া হাসিলের কেন্দ্র। সে কারণে মুমিনগণ দুনিয়া আখিরাতের সফলতার জন্য ওলীদের মাযারে ভিড় করে এবং মাযারে বসে কোরআন মজীদ, ওযীফা তিলাওয়াত ও মিলাদ-কিয়াম করে সাহেবে মাযারের ওসীলা ধরে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে। অতএব যিয়ারতকারীদের সুবিধার জন্য এবং সাহেবে মাযারের মর্যাদা প্রকাশের জন্য বিশেষত মাযারের সংরক্ষণ, শােভাবর্ধন, সম্প্রসারণ ও দৈনন্দিন নিত্য নতুন প্রয়ােজনের কারণে অনেক টাকা-পয়সার প্রয়ােজন হয়।


সুন্নী মুমিনগণ উল্লিখিত প্রয়ােজন মেটানাের জন্য এবং সৃষ্টিকুলের মাঝে প্রকৃত ওলীর শান মান প্রকাশে সহযােগিতা করার লক্ষ্যে মাযারে টাকা-পয়সা হাদিয়া স্বরূপ পেশ করেন। সুতরাং ওটা উত্তম আমল ও বৈধ। এ দ্বারা আল্লাহর ওলীর শুভদৃষ্টি হাসিল হয় এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা অর্জন সক্ষম হয়। তবে এসব টাকা দিয়ে যেন দ্বীন, ঈমান ও গরীব- দুঃখীদের যেন সেবা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা অবশ্যই কর্তব্য, নতুবা পরকালে জবাবদিহী করতে হবে। 

(যুগ জিজ্ঞাসা,পৃষ্ঠা - ১০৪,১০৫)।


উত্তর দিয়েছেন :-  মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান (মা:জি:আ:)




Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন