প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! জানা গেল, হুযুরে আকদাস ﷺ এর ইশ্ক ও মুহাব্বতের বিষয়ে তাঁর প্রতি অত্যাধিক আদব রক্ষা করা, ঈমান বৃদ্ধির উপায় এবং ঈমানের মুল। এটাকে এভাবে বুঝুন যে, যদি কোন গাছের শিকড় কেটে যায় তবে ঐ গাছটি শুকিয়ে যায়। আর এর ফল ও ফুলগুলো পচে গলে ঝড়ে যায়। ঠিক তেমনি তাযিমে মুস্তাফা ﷺ , ঈমান নামের বৃক্ষের শিকড়ের (মূল) ভূমিকা পালন করে। এটা ছাড়া ঈমান নামক বৃক্ষ ও সবুজ শ্যামল থাকতে পারেনা এবং নেক আমল রূপে এর ফুল ও ফল নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং নিজের নেকী সমূহ সুরক্ষিত রাখার জন্য এবং বৃক্ষ রূপী ঈমানকে বাড়ানোর জন্য রাসূল ﷺ'র আদবকে অত্যাবশ্যাকীয় করে নিন। সাহাবায়ে কিরাম رضي الله عنه এর তাযিমে রাসূল ﷺ'র এমন এমন কাহিনী লিখেছেন, যার উদাহরণ পাওয়া অসম্ভব ।
আসুন! শানে রিসালাতের এই মুর্ত প্রতিকদের ইশ্কে মুস্তাফা ﷺ'র কয়েকটি ঘটনা শ্রবন করি:
▶১. বর্ণিত আছে; হুযুর ﷺ'র এর সাহাবীরা অত্যাধিক আদব ও সম্মানের কারণে তাঁর দরজায় নখ নিয়ে করাঘাত করতেন।
🔺(শরহে শাদ্ধা নি মালা আলী ক্বারী, ৭ম খন্ড ৭১ পৃষ্ঠা)
▶২. এরূপ হুদাইরিয়া সন্ধির বৎসর কুরাইশরা হযরত সায়্যিদুনা ওরওয়া বিন মাসঊদ رضي الله عنه কে (তখনও ঈমান আনয়ন করেননি) শাহানশাহে দো'আলম, নূরে মুজাসসাম ﷺ এর কাছে প্রের ণ করলেন। তখন তিনি দেখলেন যে, হুযুর ﷺ যখন অযু করতেন তখন সাহাবারে কিরামগণ رضي الله عنه ওজুর পানি নেওয়ার জন্য ̈ এতই দ্রুত যেতেন যেন মনে হতো যে তারা একে অপরের সাথে ঝগড়া করছেন। যখন থুথু মোবারক ফেলতেন বা নাক পরিষ্কার করতেন তখন সাহাবারে কিরামগণ رضي الله عنه তা হাতে নিয়ে (তাবাররূক স্বরূপ ) নিজের চেহারায় এবং শরীরে মালিশ করে নিতেন। তিনি তাঁদের কোন আদেশ করলে তা তৎক্ষণাৎ পালন করতেন এবং যখন তিনি ﷺ কথা বলতেন তখন তাঁর সামনে নিশ্চুপ থাকতেন এবং সম্মানার্থে হুযুর ﷺ এর দিকে চোখ তুলে তাকাতেন না। যখন হযরত সায়্যিদুনা ওরওয়াহ বিন মাসউদ رضي الله عنه মক্কাবাসীদের নিকট ফিরে গেলেন তখন তিনি বললেন: হে কুরাইশ গ্রোত্র! আমি কাইসার ও কিসরা এবং নাজ্জাশীর দরবারেও গিয়েছি কিন্তু আল্লাহ তায়ালার কসম! আমি কোন বাদশাহকে তার গোত্রের মাঝে এরূপ শান ও শওকত আর সম্মান ও মযার্দা দেখিনি,যেমন শান (হযরত) মুহাম্মদ মুস্তাফা ﷺ এর তাঁর সাহাবী رضي الله عنه'র মাঝে দেখেছি।
🔺(শিফা, কদ্বল, ফি আদাতিস সাহাবা ফি তাযেমীহে,২/৩৮)
▶৩. একবার হুযুর ﷺ হযরত সায়্যিদুনা আব্বাস رضي الله عنه থেকে জিজ্ঞাসা করা হলো; আপনি বড় না রাসলুল্লাহ ﷺ বড়? তখন তিনি উত্তরে বললেন: অর্থাৎ বড়তো তিনিই, কিন্তু অামি তাঁর আগে জন্মগ্রহণ করেছি। 🔺(কানযুল উম্মাল, ১৩/২২৪, হাদীস- ৩৭৩৪৪)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আপনারা দেখলেন তো! সাহাবায়ে কিরাম رضي الله عنه হুযুর ﷺ এর প্রতি কিরূপ ভালবাসা ও সম্মান করতেন, বয়সে বড় হওয়া সত্বেও বড়ত্বের ইঙ্গিত রাসলুল্লাহ্ ﷺ এর প্রতিই করতেন। আমাদের ও উচিৎ যে, আমরা ও ইশ্কে মুস্তাফা ﷺ 'র প্রদীপ না শুধু নিজের অন্তরে প্রজ্জলিত করবো বরং নিজের সন্তান সন্তুতিদেরও পূর্ব পুরুষদের ইশ্কে রাসূলের সুন্দর সুন্দর কাহিনী শুনিয়ে শৈশব থেকেই তাদের অন্তর কে রাসূল ﷺ'র ভালবাসায় মজবুত করবো। এর জন্য দাওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কতৃক প্রকাশিত ২৭৪ পৃষ্ঠ সম্বলিত কিতাব “সাহাবায়ে কিরাম কা ইশ্কে রাসূল ﷺ এর অধ্যয়ন অত্যন্ত উপকারী হবে। তাছাড়াও দাওয়াতে ইসলামীর সুবাসিত মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে তিন দিনের মাদানী কাফেলায় সফর মাদানী ইনআমাতের উপর আমল, মাদানী মুযাকারা এবং সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় অংশগ্রহণ করার বরকতে ইশ্কে রাসূল ﷺ'র মহাসম্পদ অর্জিত হবে। প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! জানা গেল, একজন মুসলমানের জন্য তাযিমে মুস্তাফা (মুস্তাফার সম্মান) এতই গুরুত্ব বহন করে যে, এটা ছাড়া ঈমানের দাবী করা অহেতুক (বেকার)।
____________
কিতাব : তাজীমে মুস্তাফা ﷺ
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন