রোগ ও অসুস্থতার ফযীলত

 

রোগ ও অসুস্থতার ফযীলত


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে,তিনি বলেন:- আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এরুপ বলতে শুনেছি যে,যে ব্যক্তি এক রাত অসুস্থ থাকে এ অবস্থায় যে,সে আল্লাহ পাকের ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট ও তাঁর দেয়া কষ্টে ধৈর্যশীল,সে এরুপ নিস্পাপ হয়,যেরুপ সে মাতৃগর্ভ থেকে নিস্পাপ হয়ে জন্ম নিয়েছে। (আল - ফাতহুর রব্বানী,পৃ:- ২২২)।


** হযরত খাওলা বিনতে হারাম সালামিয়া

রদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন : রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," অসুস্থ লোক আল্লাহর মেহমান,

যতক্ষন না সে সুস্থ হয়।প্রতিদিন তার জন্য সত্তর জন শহীদের আমলের সওয়াব লিখা

হয়।যদি আল্লাহ তাকে সুস্থতা দান করেন,তবে সদ্যপ্রসূত শিশুর ন্যায় নিস্পাপ হয়ে যায়। আর যদি ইন্তেকাল করেন,তবে বিনা হিসাবে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন। মুআযযিন আল্লাহর প্রহরী,প্রত্যেক আযানের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এক হাজার নবীর সওয়াব দান করবেন।ইমাম আল্লাহর উজির,

প্রত্যেক নামাযের বদৌলতে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এক হাজার সিদ্দীকের সওয়াব দান করেন। আলিম হচ্ছেন আল্লাহর উকিল,তার কথার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে কিয়ামত দিবসে নূর দান করবেন এবং প্রতি কথার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য হাজার বছরের ইবাদতের সওয়াব দান করবেন।আর পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীরা আল্লাহর সেবক।জান্নাতই একমাত্র তাদের এনাম।( পুরষ্কার)।( তাম্বিহুল গাফিলীন,

পৃ:- ২২৮)।


** হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে,

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যে ব্যক্তি কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়,সে যেন আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোযা রাখে।আর ঐ দিনটি সাতশ দিনের সমপরিমান।যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির সাথে কবরস্থানে গেল,সে যেন আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোযা রেখেছে। আর ঐ দিনটি সাতশ দিনের সমপরিমান। (তাম্বিহুল গাফিলীন,

পৃ:- ৪৩৯)।


** নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেন," রোগীর অবস্থা জিজ্ঞেস

করার পূর্ণতা হচ্ছে,তার কপালে বা হাতের

উপর নিজের হাত রেখে জিজ্ঞেস করবে;

কেমন আছেন?।যে লোক রোগীর খোঁজ নেয়,

সে যেন জান্নাতের খেজুর বাগানে বসল,সে

যখন উঠে,তখন ৭০ হাজার ফেরেস্তা রাত

পর্যন্ত তার জন্য রহমতের দো'আ করে।

(ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,পৃ:-:৪১২)।


** হযরত আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,আল্লাহ তায়ালা বলেন,আমি যখন আমার কোন বান্দাকে তার দু'টি প্রিয় বস্তু সম্পর্কে বিপদগ্রস্থ করি,আর সে তাতে সবর করে;।আমি তাকে সেগুলোর পরিবর্তে জান্নাত।দান করব।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৪৬৩,পৃ:- ২৪১)।


** হযরত আবু হুরায়রা ও হযরত আবু সাঈদ।খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা নবী করীম

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে

বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলমানের

প্রতি পৌঁছেনা কোন বিপদ, কোন রোগ;কোন

ভাবনা,কোন চিন্তা ; কোন কষ্ট বা কোন দু:খ।

এমনকি ফুটে না তার শরীরে কোন কাঁটা।যা

দ্বারা মাফ করেন না আল্লাহ তার গুনাহসমূহ।

( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,

হাদীস নং-১৪৫১,পৃ:- ২৪০)।


** হযরত আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন,"কোন মুসলমানকে যখন

শারীরিক বিপদে ফেলা হয়,তখন ফেরেশতাকে বলা হয়,তার জন্য লিখতে

থাকো ; সে যে নেক কাজ( পূর্বে) করত,

তারপর যদি আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান

করেন; তাকে ( গুনাহের কলুষ হতে) ধুয়ে পাক

করে নেন।আর যদি তাতে উঠায়ে নেন,তাকে

মাফ কিরে দেন এবং তার প্রতি রহম করেন।

( শরহে সুন্নাহ,মিশকাত শরীফ, হাদীস নং-

১৪৭৪,পৃ:- ২৪২)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে জ্বরের কথা বলা হল,তখন এক ব্যক্তি জ্বরকে মন্দ বলে উঠল।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন," জ্বরকে মন্দ বলিও না। তা গুনাহসমূহকে দূর করে - যেভাবে (কামারের) হাপর লোহার মরিচা দূর করে।(ইবনে মাজাহ শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৪৯৭,

পৃ:- ২৪৫)।


** হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যখন তুমি কোন রুগীর

নিকট যাবে,তাকে তোমার জন্য দো'আ করতে

বলবে।কেননা,তার দো'আ ফেরেশতাদের

দো'আর ন্যায়।( ইবনে মাজাহ শরীফ,মিশকাত

শরীফ,হাদীস নং- ১৫০২,পৃ:- ২৪৫)।


** হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী

রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নবী করীম

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,তিঁনি বলেছেন," যে কোন মুসলমান পুরুষ বা নারী কোন বিপদে পড়বে,তারপর তাকে স্বরণ করবে; যদিও দীর্ঘদিন পরে হয় এবং তজ্জন্য " ইন্না লিল্লাহ" পড়বে,নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাকে তখন নূতন করে সাওয়াব দিবেন - যেদিন সে বিপদে পড়েছিল সে দিনের মত পরিমান সাওয়াব।( মুসনাদে আহমদ ও বায়হাকী শুআবুল ঈমান,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৬৬৭,পৃ:-২৬৭)।



রোগ থেকে মুক্তি

___________

** আল্লাহর মাহবুব,দানায়ে গুয়ুব,মুনাযযাহুন আনিল উয়ুব হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জ্ঞান মূলক বানী হচ্ছে," এটা খাও,ইহা (মুনাক্কা অর্থাৎ শুকনো বড় কিসমিস) উত্তম খাবার, ইহা রগ এবং জোড়াকে মজবুত করে।দুর্বলতা দূর করে,রাগকে ঠান্ডা করে ; কফ দূর করে,

চেহারার উজ্জলতা বৃদ্ধি করে ও মুখকে

সুগন্ধিময় করে তোলে।"( কাশফুল খিফা,খন্ড -

২য়,হাদীস নং- ২৮৪,পৃ:- ৪৩১,ক্ষুধার ফযীলত,পৃ:- ১৩৯)।


** ইমাম বায়হাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি

হযরত আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা

করেন,নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু আনহার কাছে তাশরিফ আনলেন।তখন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন এবং জ্বরকে মন্দ বলতেছেন।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন," জ্বরকে গালি দিওনা, সে তো আদিষ্ট হয়েছে।হ্যাঁ,যদি তুমি চাও - তবে তোমাকে এমন দো'আ শিখিয়ে দেবো তুমি এই দো'আ পড়লে,আল্লাহ তোমার থেকে এই জ্বর দূরীভূত করে দেবেন।তিনি আরজ করলেন,আমাকে শিখিয়ে দিন।তখন তিঁনি বলেন,তুমি এই দো'আ পড়:-( আরবী উচচারণ পড়ে উল্লেখ করা হবে)।" হে আল্লাহ! আমার হালকা পাতলা চামড়া ও চিকন হাড্ডিকে প্রচন্ড জ্বরের জ্বালা ও ব্যথা থেকে দয়া করে মুক্তি দান করুন।হে জ্বর! তুমি যদি মহান আল্লাহর উপর ঈমান রাখ তবে মাথায় ব্যথা দিওনা।মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করো না আর রক্ত ও মাংস পানাহার করো না এবং তুমি

মুশরিকদের কাছে চলে যাও।" হযরত আনাছ

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,হযরত আয়েশা

রদ্বিয়াল্লাহু আনহা এই দো'আ পাঠ করলে

তাঁর জ্বর চলে যায়।( হুজ্জাতুল্লাহি আলাল

আলামিন,খন্ড -২য়,পৃ:- ২২৪,বিষয় ভিত্তিক

মু'জিযাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম,পৃ:- ৮৩)।


** হযরত সায়্যিদুনা ইবনে সালিম

রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,যদি কেউ গমের

তৈরী শুকনো রুটি নিয়মানুসারে খায়,তাহলে

মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন রোগ তার কাছে আসতে

পারবে না,অর্থাৎ - কখনো সে রোগাক্রান্ত

হবে না।তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো,নিয়ম

কিরুপ? বললেন - ক্ষুধা লাগলে খাবেন আর

পরিতৃপ্ত হওয়ার পূর্বে হাত গুটিয়ে নেবেন।

( ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,খন্ড - ৩য়,পৃ:- ৯৫,

ক্ষুধার ফযীলত,পৃ:-৭৭)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

থেকে বর্ণিত,তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন,

তিঁনি বলেন:- কালজিরার মধ্যে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর সকল রোগের চিকিৎসা নিহিত আছে।ইবনে শিহাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন,সাম অর্থ মৃত্যু। আর হাব্বাতুস সাওদা অর্থ মাওনীয বা কালজিরা।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ।মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ৪৩২১,পৃ:- ৬৪১)।


** ইমাম বায়হাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি

ইয়াযিদ ইবনে নুহ ইবনে যাকওয়ান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন। আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার দাঁতের ব্যথা আমাকে প্রচন্ড কষ্ট দিচ্ছে। তিঁনি তাঁর হাত মোবারক তার ব্যথাযুক্ত চোয়ালে রেখে সাত বার এই দো'আ পাঠ করেন।( আরবী উচ্চারণ পরে উল্লেখ করা হবে)।" হে আল্লাহ! আপনার কাছে সম্মানিত ও আপনার বরকত মন্ডিত নবীর দো'আর বরকতে তার ব্যথা ও যাবতীয়

অনিষ্ট তার থেকে দূরীভূত করে দেন।" অত:পর তিনি সেখান থেকে চলে আসার পূর্বেই আল্লাহ তায়ালা তাকে শেফা দান করেন।

(আল - খাসায়েসুল কুবরা,খন্ড - ২য়,পৃ:-

১১৭,বিষয় ভিত্তিক মু'জিযাতুর রসূল

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,পৃ:- ৮৯)।


** হযরত ওসমান ইবনে আবিল আস

রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এলেন,তখন আমি অসহনীয় ব্যথায় আক্রান্ত ছিলাম।মনে হচ্ছিল আমি মরে যাব।তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,ব্যথার জায়গাটি তোমার হাত দ্বারা সাত বার মন্থন করো এবং বলো :- "'আউযু বি'ইজ্জাতিল্লাহি ও ক্বুদরাতিহী মিং শাররিমা আজিদু ওউহাযিরু।" উসমান ইবনে আবিল আস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,আমি তৎক্ষনাত তা পড়লাম আর আল্লাহ পাক আমার ব্যথা বেদনা দূর করে দিলেন।(মুসলীম,তিরমিযী,আবু দাউদ,ইবনে

মাজাহ,মুসনাদে আহমদ ও মুয়াত্তা মালিক,

তাম্বিহুল গাফিলীন,পৃ:- ৪৪৯)।


** ইমাম বুখারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু "

তারীখে" গ্রন্থে, মুহাম্মাদ ইবনে হাতেম

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,আমার মা

উম্মে জামিল আমাকে বলেছেন যে,আমি

তোমাকে হাবশা থেকে নিয়ে মদীনায় আগমন

করি।এক রাতে আমি মদীনা শরীফে চুলায়

ডেকচি তুলে রান্না করতেছি। লাকড়ি শেষ

হয়ে গেলে আমি লাকড়ি আনতে গেলে তুমি

ডেকচিতে হাত দিলে, ডেকচি উলটে তোমার

বাহুতে পড়ে হাত পুড়ে গিয়েছিলো।আমি

তোমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে নিয়ে গেলে,তিনি তোমার বাহুতে লালা মোবারক লাগিয়ে দিতে দিতে এই দো'আ পাঠ করলেন।( আরবী উচ্চারন পড়ে উল্লেখ করা হবে)।

" হে মানুষের প্রভূ! অনিষ্ট দূরীভূত করে দিন।

শেফা দান করুন।আপনিই শেফাদানকারী।

আপনার শেফা ব্যতীত পূর্ণ কোন শেফা নেই।

এমন শেফা দিন যাতে কোন রোগ অবশিষ্ট না

থাকে।"তখন আমি তাঁর সম্মুখ থেকে এখনো

উঠিনি,তোমার হাত ভাল হয়ে গিয়েছে।

( হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন,খন্ড - ১ম,

পৃ:- ৬৮৬,বিষয় ভিত্তিক মু'জিযাতুর রসূল

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,পৃ:- ১৫৯ -

১৬০)।


** হযরত হুমাইদ ইবনে আবদুর রহমান

রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে,তিনি ইরশাদ করেন,"যে ব্যক্তি জুমার দিন তার নখ কাটে,আল্লাহ তায়ালা তার শরীর থেকে রোগ - ব্যাধি বের করে তাতে সুস্থতা প্রবিষ্ট করান। (মুসান্নিফে ইবনে আবি শায়বা,খন্ড - ০২,পৃ:- ৬৫,নামাযের আহকাম ( হানাফী),পৃ:- ২৯৭)।


** মাদীনার তাজেদার, আল্লাহর হাবীব

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একবার জ্বর আসলো। তখন হযরত সায়্যিদুনা

জীব্রাঈল আমিন আলাহিস সালাম এই দু'আটি পাঠ করে ফুঁক দিলেন:- " বিছমিল্লাহি

আরক্বিকা মিং কুল্লি দা - য়িঁ ইউ যি কা ওমিং শাররি কুল্লি নাফচিন আও 'আইনিন হাচিদিন আল্লাহু ইয়াশফিকা বিছমিল্লাহি আরক্বিক।"

অনুবাদ:- আল্লাহর নামে আপনার উপর ফুঁকছি প্রত্যেক ঐ অসুখের জন্য যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং অন্যদের ক্ষতি এবং হিংসাকারীর কুদৃষ্টি থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুক। আমি আপনার উপর আল্লাহর নামে ফুঁক দিচ্ছি।(মুসলীম শরীফ,

হাদীস নং- ২১৮৬,পৃ:- ১২০২, জরাক্রান্ত রোগীকে শুধুমাত্র আরবীতে দু'আটি ( শুরু ও শেষে একবার করে দুরুদ শরীফসহ) পড়ে ফুঁক দিয়ে দিবেন। (বিসমিল্লাহর ফযীলত,

পৃ:- ৫৭)।


** শা'বানুল মুআযযাম ১৫ তারিখের (শবেবরাতের) রাতে ৭টি ' কুল পাতা' ( বরই

পাতা) পানিতে সিদ্ধ করে যখন গোসল করার

উপযুক্ত হয়ে যাবে তা দিয়ে গোছল করবেন।

ইনংশা আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা! সারা

বছরই জাদুর প্রভাব থেকে নিরাপদ থাকবেন।

( ইসলামী যিন্দেগী, পৃ:- ১১৩,রমযানের

ফযীলত,পৃ:- ৪১১)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন,"লা - হাওলা ওলা কুওয়াতা

ইল্লা বিল্লাহ" হল নিরাবব্বইটি রোগের ঔষধ,

যাদের সহজটা হল চিন্তা।(বায়হাকী শুআবুল ঈমান,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ২২১২,পৃ:- ৩৩৮)।


** হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,এক ব্যক্তি

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল,আমার ভাই এর।পেট ছুটেছে।তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,তাকে মধু পান করাও।সে মধু পান করাল।সে আবার এসে বলল,আমি তাকে মধু পান করিয়েছি।এতে তার।দাস্ত আরও বেড়ে গেছে।এভাবে তিনি তাকে তিনবার বললেন,( অর্থাৎ - লোকটি এসে তার ভাইয়ের দাস্ত ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ জানাত।আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে প্রত্যেকবার মধু পান করানোর নির্দেশ দিতেন।) তারপর সে চতুর্থবার এসে একই অভিযোগ করল।এবারও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

বললেন,তাকে মধু পান করাও।সে বলল,আমি

অবশ্যই তাকে মধু পান করিয়েছি। কিন্তু তার

দাস্ত আরো বেড়ে গেছে।তখন রসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

আল্লাহ ( তাঁর কালামে) যা বলেছেন,তা সত্য।তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যা।( অর্থাৎ, পেটে এখনও দূষিত পদার্থ রয়ে গেছে)।তারপর

( চতুর্থবার) তাকে মধু পান করাল এবং সে

আরোগ্য লাভ করল।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ৪৩২২,

পৃ:- ৬৪১)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।বলেছেন," যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন ভোরে কিছু মধু চেটে খাবে,সে কোন বড় ধরনের বিপদে বা রোগে আক্রান্ত হবে না।

(বায়হাকী শুআবুল ঈমানে।মিশকাত শরীফ,

হাদীস নং- ৪৩৬৯,পৃ:- ৬৪৬)।


** খাওয়ার শুরু ও শেষে লবন বা লবন

জাতীয় কিছু খাবেন। এতে ৭০টি রোগ দূরীভূত

হয়।( রদ্দুল মুখতার,খন্ড - ৯ম,পৃ:- ৪৯১,

খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী,পৃ:- ১২১)।


** আমার আকা আলা হযরত মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা উদ্ধৃত করেন," খাওয়ার আগে তরমুজ খাওয়াতে পেটকে ভালভাবে ধুয়ে দেয় আর রোগ মূল থেকে নি:শেষ করে দেয়।

(ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ নতুন সংস্করন,খন্ড -

৫ম,পৃ:- ৪৪৬,খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী,

পৃ:- ১২৩)।


** গাভীর শিং পিষে খাবারের সাথে

মিশিয়ে চাওথিয়া ওয়ালা ( অর্থাৎ - যার চার দিন পর পর জ্বর আসে) কে খাওয়ালে আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় শিফা লাভ হয়। গাভীর পশম পুড়ে পানিতে মিশিয়ে পান করাতে দাঁতের ব্যথা দূরীভূত হয়।( হায়াতুল হাইওয়ানুল কুবরা,খন্ড - ১ম,পৃ:-২১৯)।

কবুতরের মত হালাল পাখীর হাড্ডি পুড়ে আঘাত প্রাপ্ত স্থানে লাগালে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে আঘাত প্রাপ্ত স্থান ঠিক হয়ে যায়।

(আ'জাইবুল হাইওয়ানাত,পৃ:- ১৪৭ ও খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী, পৃষ্ঠা :- ৩৭৯)।


** ১০ই মুহাররমে যদি গোছল করা হয় তবে সম্পূর্ণ বছর ইংশা আল্লাহ আযযা ওয়া

জাল্লা রোগ থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা,এইদিন সমস্ত পানির সাথে জমজমের

পানি মিশে থাকে।( তাফসীরে রুহুল বয়ান,খন্ড -৪র্থ,পৃ:- ১৪২,কোয়েটা ও ইসলামী যিন্দেগী,

পৃ:-৯৩,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৭৯)।


** সারওয়ারে কায়েনাত,শাহে মওজুদাত

হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম ইরশাদ করেছেন," যে ব্যক্তি আশুরার

দিন " ইছমাদ সুরমা" চোখে লাগাবে, তবে

তার চোখ কখনো রোগাক্রান্ত হবে না।"

(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,পৃ:- ৩৬৭,হাদীস

নং- ৩৭৯৭,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৭৯ ও

বিসমিল্লাহর ফযীলত,পৃ:- ২৮৩)।


** জাওয়াহেরে কানজ, ৫ম খন্ড, ৬১৭

পৃষ্ঠায় আছে,মাহে সফরের শেষ বুধবার " সপ্ত

সালাম" লিখে তা পানিতে ধুয়ে পানিটুকু পান করবে। আব্দুল হাই লক্ষ্মৌভী সাহেব তার

মজমুয়ায়ে ফতওয়ায়ও এ কথা উল্লেখ

করেছেন। " তাযকিরাতুল আওরাদ" কিতাবে উল্লেখ আছে,যে ব্যক্তি আখেরী ছাহার শোম্বার

প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের পর আয়াতে

রহমাত ( সাত সালাম)পাঠ করে নিজের

শরীরে ফুঁক দেয় বা তা পানের উপর লিখে

ধুয়ে পান করে,আল্লাহ পাক তাকে সব রকম

বালা - মুছিবত ও রোগ ব্যাধি হতে নিরাপদ

রাখবেন। এছাড়াও কলা পাতায় বা কাগজে লিখে তা পানীয় জলে দিয়ে তা পান করলে আল্লাহর রহমতে বহু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।



সাত সালাম

_______

১/ সালামুং ক্বওলাম মির রব্বির রহীম।

২/ সামামুন 'আলা নুহিং ফিল 'আলামিন।

৩/ সালামুন 'আলা ইব্রাহীম।

৪/ সালামুন 'আলা মুছা ও হারুন।

৫/ সালামুন 'আলা ইলইয়াছিন।

৬/ সালামুন 'আলাইকুম ত্বুইবতুম ফাদ খুলুহা

খলিদীন।

৭/ সালামুন হিয়া হাত্তা মাত্বলা'য়িল

ফাজরি।

(মাসিক তরজুমান - মাহে সফর,১৪৩৪হি:,

ডিসেম্বর - জানুয়ারী,২০১২ -১৩। পৃ:- ১০)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

থেকে বর্ণিত হয়েছে। বনু আসলাম গোত্রের

এক ব্যক্তি এসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লামকে বললেন,আজ রাতে ঘুম

আসেনি।রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম বললেন,কেন? লোকটি বলল,

একটি বিচ্ছু দংশন করেছিল।তাকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

শোন; যদি তুমি সন্ধ্যার সময় বলতে "

'আউযু বিকালিমাতিত তা - ম্মাতি কুল্লিহা

মিং শাররিমা খলাক্ব।" তাহলে অবশ্যই

তোমাকে কোন কিছুই ক্ষতি করত না।

( মুসলীম,তিরমিযী,আবু দাউদ,ইবনে

মাজাহ,মুসনাদে আহমদ, মুয়াত্তা মালিক,

দারিমী ও তাম্বিহুল গাফিলীন,পৃ:-৪৫১)।

__________________

ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)

লেখক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন