মা - বাবা ও আত্মীয় - স্বজনের ফযীলত
** হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যখন কোন সদাচরনকারী সন্তান আপন মাতা - পিতার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকায়,তখন আল্লাহ তায়ালা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে তার আমলনামায় একটি " মকবুল হজ্জ্ব" লিপিবদ্ধ করেন।সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, যদি সে দৈনিক একশত বার দৃষ্টি করে? তিনি বললেন: হ্যাঁ,আল্লাহ অতি মহান,অতি পবিত্র।(বায়হাকী শরীফ,
মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ৪৭২৭,
পৃ:- ৬৯৪)।
** হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," মাতা - পিতার সন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং মাতা - পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহর অসন্তুষ্টি নিহিত। (তিরমিযী শরীফ।মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ৪৭১০,পৃ:- ৬৯১)।
** হযরত আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন," যে ব্যক্তি স্বীয় জীবিকার বৃদ্ধি এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে, সে যেন ; আত্মীয় - স্বজনের সাথে উত্তম ব্যবহার করে।(বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ৪৭০১,পৃ:- ৬৯০)।
** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," তোমরা নিজেদের
বংশসমূহের এ পরিমান পরিচয় অর্জন কর যাতে।তোমরা নিজেদের আত্মীয়তার হক আদায়।করতে পার। কেননা,আত্মীয়তা রক্ষার দ্বারা আপনজনদের।মধ্যে সম্প্রীতি, ধন - সম্পদে সমৃদ্ধি ও দীর্ঘ।জীবন লাভ হয়।(তিরমিযী।মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ৪৭১৭, পৃ:- ৬৯২)।
** হযরত রবীয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামকে যখন বলা হল যে,হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে। তখন তিনি সেই বাঘকে ডেকে বললেন" তুমি কি আমার চোখের নয়ন কলিজার টুকরা ইউসুফকে খেয়েছ? উত্তরে বাঘ বলল - " না, আমি এ কাজ করিনি।" তিনি বাঘকে জিজ্ঞেস করলেন,তুমি কোথা থেকে এসেছ আর কোথায় যাবার ইচ্ছে করেছ? বাঘে উত্তর দিলো,মিশর থেকে আসছি আর জুরজান
যাওয়ার ইচ্ছে করেছি।তিনি পূনরায় জিজ্ঞেস করলেন,এই ভ্রমনের উদ্দেশ্য কি? বাঘ উত্তরে বলল,আমি আপনার পূর্ববর্তী আম্বিয়াগণের কাছে শুনেছি যে," যে ব্যক্তি কোন বন্ধু কিংবা নিকটতম আত্মীয়দের সাথে সাক্ষাত করে, তবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি কদমে এক হাজার নেকী লিখে দেন। আর এক হাজার গুনাহ মুছে দেন এবং এক হাজার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।অত:পর হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তাঁর সন্তানদের ডাকলেন এবং বললেন,এই বাঘ থেকে হাদীস খানা লিখে নাও।কিন্তু বাঘ তাদেরকে হাদীস বর্ণনা করতে অসম্মতি জানাল।তিনি এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বাঘ উত্তর দিলো
-" কেননা, তারা অপরাধী গুনাহগার।"
( হযরত.ইউসুফ আলাইহিস সালামকে কূপে ফেলে দেওয়ার কারনে) তাই আমি তাদেরকে হাদীস বর্ণনা করবোনা।( আল - খাসায়েসুল কুবরা, খন্ড - ২য়,পৃ:- ৩০৮,
কৃত: ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি,বিষয়
ভিত্তিক মু'জিযাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,পৃ:- ১৯৬ - ১৯৭)।
__________________
ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)
লেখক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন