মাজারের উপর গিলাপ দেওয়া

 ২ল

মাজারের উপর গিলাপ দেওয়া


উলামায়ে কেরামের দৃষ্টিতে আল্লাহর ওলীগণের মাজারের উপর গিলাফ ছড়ানাে জায়েয রয়েছে। এ ব্যাপারে একাধিক দালায়েল রয়েছে। মাজারের মধ্যে গিলাফ দেওয়ার ব্যাপারেও সহিহ হাদিস বর্ণিত আছে। যেমন,

أخبرنا عمران بن موسی بن مجاع ، مما عثمان بن أبي شيبة ، حنا وكيع ، وتمندر ، كلاهما عن شعبة ، عن أبي جمرة ، عن ابن عباس: أنه وضع في قبر رسول الل صلى الله عليه وسله قطيفه حمراء

-"হজরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর রওজা শরীফের মধ্যে একটি লাল চাদর বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।"(সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৬৬৩১ ; সহিহ মুসলীম, হাদিস নং ৯৬৭ ; মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ২০২১ ; সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং ২০১২ ; মুসনাদে ইবনে জাদ, হাদিস নং ১২৮৬ ; ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৬৮৭৬)



এই হাদিসের চাদর মােবারক কবর শরীফের ভিতরে অথবা বাহিরে উপরে হতে পারে। তবে সর্বাবস্থায় প্রমাণিত হবে সম্মানার্থে গিলাফ দেওয়া যেতে পারে। যার কারণে অনেক ফকিহগণ আল্লাহর ওলীগণের কবরের উপর গিলাফ দেওয়া জায়েয বলেছেন। তবে ইবনে আব্বাস এর বর্ণিত হাদিস সম্পর্কে অনেকেই বলেছেন ইহা রাসূল (ﷺ) এর জন্য খাছ ছিল। আল্লাহর ওলীগণের মাজারের উপরে গিলাফ ছড়ানাের ব্যাপারে উলামা, ফোকাহাগণ স্পষ্ট ফাতওয়া প্রদান করেছেন। যেমন,



 এ ব্যাপারে বিশ্ব বরেন্য ফকিহ্ ও মুফাচ্ছির আল্লামা ইসমাইল হাক্কী (رحمة الله) { ওফাত ১১২৭ হিজরী } কবরে গিলাফ দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন,



فبناء القباب على قبور العلماء والأولياء والصلحاء ووضع الستور والعمائم والشباب على قبورهم امر جائز إذا كان القصد بذلك التعظيم في أعين العامة حتى لا يحتقروا صاحب هذا القبر



-"উলামা, আউলিয়া ও নেক বান্দাহ গণের কবরের উপর ইমারত তৈরী করা জায়েয এবং তাদের কবরের উপর পাগড়ী কিংবা কাপড় দ্বারা গিলাফ ছড়ানাে জায়েয। যদি মানুষের মনে শ্রেষ্টতম ধারণা তৈরী করার উদ্দেশ্যে হয়। যাতে লােকেরা কবরবাসিকে নগণ্য মনে না করেন।"(তাফছিরে রুহুল বয়ন, ৩ য় খন্ড, ৪৮২ পৃঃ)



সুতরাং ফকিহগণের অভিমত দ্বারাও প্রমাণ হয় কবর পাকা করা কিংবা পাশে যিয়ারতকারীর সুবিধার্থে ঘর তৈরী করা জায়েয বরং মুস্তাহাব।



হিজরী ১১ শ শতাব্দির মােজাদ্দেদ প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী হানাফী (رحمة الله) তদীয় কিতাবে বলেন:



وقد أباح الممل البناء على قبر المشايخ والعلماء والمشهورين ليژورهم الاش ، ويستريحوا بالجلوی فيه



-"পূর্বসূরী উলামা ও মাসাইখগণ কবরের উপর ইমারত তৈরী করা জায়েয বলেছেন, যাতে লােকেরা সেখানে বসে আরাম পায় ও যিয়ারত করেন। (ইমাম মােল্লা আলী: মিরকাত শরহে মিসকাত, ৪ র্থ খন্ড, ১৫৬ পৃ:)



আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এর মত মােজাদ্দিদ যেখানে কবর পাকার করার পক্ষে ফাতওয়া দিচ্ছেন, সেখানে যুগের মােজাদ্দেদ এর ফাত্ওয়ার মােকাবেলায় নিম মােল্লার ফাত্ওয়া অবশ্যই গ্রহণযােগ্য হবেনা। সুতরাং নেক বান্দাহগণের কবর পাকা করা জায়েয ও মুস্তাহাব।



১১ শ শতাব্দির অন্যতম মােজাদ্দেদ ভারত উপমহাদেশের সর্বপ্রথম মােহাদ্দিছ, আল্লামা শেখ আব্দুল হক মােহাদ্দেছ দেহলভী (رحمة الله) বলেন: শেষ যুগের মানুষ বুজুর্গানে দ্বীনের কবরের উপর ইমারত তৈরীর প্রতি বিশেষ অভিপ্রায় হবে। যেমন-মুসলমানগণ আওলিয়কেরাম প্রতি শ্রদ্ধাশিল হয়। (শরহে ছফরুছ ছাদৎ।



উল্লেখিত দলিল-আদিল্লাহ দ্বারা প্রমাণ হয় যে, ফকিহ, মুজতাহিদ, যুগের মােজাদ্দিদগণ, হক্কানী উলামা-মাসাইখগণ ও রাসূলে পাক (ﷺ) এর বংশধরের কোন লােকের কবর পাকা করাতে দোষের কিছু নেই বরং মুস্তাহাব। তাদের মাজারের পাশে যিয়ারতকারীর সুবিধার্থে ঘর তৈরী করাও . জায়েয, এতে যিয়ারতকারীর যিয়ারত করে আরাম পায়।

_______________

সহিহ হাদিসের আলােকে মাজার যিয়ারত পূজা নয় ও কদমবুছির সমাধান

গ্রন্থনায়ঃ  মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জিহাদী 

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন