মাজারে খালি পায়ে যাওয়ার কারণ
সাধারণত মুসলমানের কবরস্থানে খালি পায়ে প্রবেশের বিধান শরিয়তে রয়েছে যা ইতিপূর্বে আলােচনা করা হয়েছে। আল্লাহর ওলীগণের মাজারে খালি পায়ে চলা নিয়ে কিছু আলােচনা ও সমালােচনা করে। আবার বাতিল পস্থিরা বলছেন ইহা ঠিকত নয়'ই বরং ফেরাউনের কাজ ইত্যাদি ইত্যাদি (নাউজুবিল্লাহ। তাই এ বিষয়টি আলােচনা করার প্রয়ােজন মনে করছি। প্রিয় মুসলীম ভাই ও বােনেরা! আমাদের বক্তব্য হলাে, পীরের বাড়িতে খালি পায়ে যাওয়া কোন ফরজ, ওয়াজিব নয় বরং ইহা একটি উত্তম আদব ও মুস্তাহাব। কারণ প্রিয় নবীজি (ﷺ) সাহাবীদেরকে কবরস্থানে জুতা পায়ে যেতে নিষেধ করেছেন। সাধারণ মু'মীন-মুসলমানের কবরস্থানে খালি পায়ে যাওয়ার নির্দেশ থাকলে আল্লাহর ওলীগণের মাজারে কিভাবে জুতা পায়ে যাওয়া যাবে? সর্বোপরি আল্লাহর ওলীগণের মাজারে খালি পায়ে যাওয়ার ঈশারা মূলত পবিত্র কোরআন থেকে পাওয়া যায়। পাশাপাশি রাসূলে পাক (ﷺ) এর হাদিস ও অনেক সূফি-সাধক এবং আউলিয়া কেরামগণের জীবন কর্ম থেকেও ইহা প্রমাণিত হয়। নিচে বিষয়টি সংক্ষিপ্তাকারে আলােচনা করা হলোঃ
প্রথমত: কামেল পীরের মাজারের পাশে দায়রা শরীফে সাধারণত নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর নামাজের স্থান পবিত্র হওয়া সালাতের অন্যতম শর্ত। তাই পবিত্রতার উদ্দেশ্যেই খালি পায়ে সেখানে প্রবেশ করা। হয়, কারণ অজান্তে বা অনিচ্ছায় জুতার নিচে যেকোন নাপাকী থাকতে পারে। ফলে নামাজের স্থান নাপাক হওয়ার আশংকা থাকে। নামাজের স্থান নাপাক হলে নামাজ শুদ্ধ হবেনা। আর এ কারণেই পীরের দায়রা শরীফে খালি পায়ে চলা হয়।
দ্বিতীয়ত: মহান আল্লাহ তা’লা হজরত মূসা (আঃ) কে লক্ষ্য করে এরশাদ করেন:
فا خلع تعليم إمام بالواد المقدس طوي
-"তােমার জুতা খুলো! কেননা তুমি একটি পবিত্র উপত্যকায় রয়েছ।"(সূরা ত্বহা: ১২ নং আয়াত।
হজরত মূসা (আঃ) যখন ত্বোয়া উপত্যকায় আরােহন করেন তখন আল্লাহ পাক তাকে জুতা মােবারক খুলে উঠার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মূল কারণ হচ্ছে ইহা একটি পবিত্র স্থান, আর পবিত্র স্থানে গেলে জুতা খুলে যেতে হয়। এই শিক্ষা মূসা (আঃ) কে স্বয়ং আল্লাহ পাক’ই দিয়েছেন। কামেল পীরের মাজারে অবশ্যই মুসলমানের কাছে পবিত্র, তাই জুতা খুলে যাওয়াই উচিৎ। এই আয়াত সম্পর্কে আল্লামা ইমাম কুরতবী (رحمة الله) { ওফাত ৬৭১ হিজরী } এ তদীয় তাফছির গ্রন্থে বলেন,
أمر يخلع التغليين للخشوع والتواضع عند مناجاة اللير تعالی ۔
-"বিনয়, নম্রতা ও আল্লাহ তা'লার দরবারে মােনাজাতের কারণেই জুতা খুলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"(তাফছিরে কুরতবী, ১১ তম জি: ১৪৭ পৃঃ)
এই এবারত দ্বারা প্রমাণিত হয়, ৩ টি কারণে জুতা খুলা যায়। যথা: ১ . বিনয়, ২, নম্রতা, ৩, আল্লাহ তা'লার কাছে মােনাজাতের সময়। কামেল পীরের মাজারে বিনয়, নম্রতা ও আল্লাহ তা'লার কাছে মােনাজাত সবই করতে হয়। তাই এসব কারণে সেখানে খালি পায়ে চলা উচিৎ। এ বিষয়ে অন্যত্র আরাে উল্লেখ আছে,
لأن الحفوة أدخل في التواضع . وحسن الأدب ولذلك كان السلف الصالحون يطوفون بالكعبة حافين ،
-"কেননা খালি পায়ে প্রবেশ করা মূলত নম্রতা ও উত্তম আদব। বিনয় ও আদবের কারণে ছলফে ছালেহীনগণ খালি পায়ে পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফ করতেন।"(তাফছিরে রুহুল মাআনী, ১৬ তম জি: ৬৭৭ পৃঃ ; তাফছিরে কুরতবী শরীফ, ১১ তম জি: ১৪৭ পৃ:)
প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন! কাবা ঘরে তাওয়াফের সময় খালি পায়ে তাওয়াফ করা ফরজ ওয়াজিব নয়, কিন্তু সূরা ত্বোহা এর ১২ নং আয়াতের প্রতি কেয়াস করে সাফ এবং খালফগণ আদৰ বিনয় প্রকাশার্থে খালি পায়ে তাওয়াফ করেন। কারণ এটা ছিল কাবা ঘরের প্রতি তাজিম ও সম্মান। আমরা পূর্বে জেনেছি মুসলমানের কবরস্থানের সম্মানেও খালি পায়ে করবস্থানে প্রবেশ করতে হয়। সেখানে আল্লাহর ওলীগণের মাজারে প্রবেশের সময় জুতা খােলা যাবেনা এটা কি ধরণের যুক্তি হতে পারে। কাবার সম্মানে জুতা খােললে শিরিক হয়না, মুসলমানের কবরস্থানে সম্মানে জুতা খােললে শিরিক হয়না, তাহলে আল্লাহর ওলীগণের সম্মানে জুতা খোললে শিরিক হবে এটা কি হাস্যকর কথা নয়?
ইমাম কুরতবী (رحمة الله) আরাে বলেন,
أن الحرة لا يدخل نعلين إعظاما له .
-"নিশ্চয় হারাম শরীফে জুতা পায়ে প্রবেশ করবেনা ইহা কা'বার তাজিমের কারণে।"(তাফছিরে কুরতবী, ১১ তম খন্ড, ১৭৩ পৃঃ)
এ সম্পর্কে বিভিন্ন মােফাচ্ছেরীনে কেরামগণ তদীয় স্ব-স্ব তাফছির গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,
امر بذلك لان الحفرة ادخل في التواضع وحسن الأدب
-"এ জন্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, খালি পায়ে প্রবেশ করা নম্রতা ও উত্তম আদবের বহি: প্রকাশ।"
(তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ১৬ তম জিঃ ৬৭৭ পৃ:; তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ ম খন্ড, ৪২৭ পৃঃ ; তাফছিরে বায়দ্বাৰী, ৩ য় জি: ৫৫ পৃ:)
লক্ষ্য করুন! কাবা তাওয়াফের সময় খালি পায়ে তাওয়াফ করতে হবে এরূপ নির্দেশ পবিত্র কোরআনের কোথাও নেই, অথচ পূর্ববর্তী ছলফে ছালেহীনগণ কাবা ঘরের সম্মানে খালি পায়ে তাওয়াফ করার অনুমতি প্রদান করেছেন। উল্লেখ্য যে, ছলফে ছালেহীন ' বলতে সাহাবায়ে কেরামকে বুঝানাে হয়। কাবা ঘরের সম্মানে যদি খালি পায়ে যাওয়া যায়, তাহলে আল্লাহর ওলীগণের সম্মানে খালি পায়ে যাওয়া যাবেনা কেন? অথচ আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন,
ولله الوتر ولروله وللمؤمنين ولكن المنافقين لا يعلمون।
-"সম্মান আল্লাহর জন্য, সম্মান রাসূলের জন্য, সম্মান মু'মীন বান্দাগণের জন্য কিন্তু মােনাফেকরা তা বুঝেনা।"(সূরা মুনাফিকুনঃ ৮ নং আয়াত)
পবিত্র হাদিস শরীফে মু'মীন বান্দাণের সম্মান ও তাজিমের বিষয়ে রাসূলে পাক (ﷺ) এরশাদ করেন:
حدثنا محمد بن عبد الرحمن بن محمد بن منصور قال: نا يعقوب بن إسحاق أبو يوف قال: نا عبد الغفار بن عبد الله الكريزي قال: ثنا عبيد الله ين تمام قال: نا يونس بن عيد ، عن الوليد بن أبي بشر بن شغاف ، عن أبيه ، عن عبير الله بن عمرو قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ليس شي ؛ أكره على الله من المؤمن
-"হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম বলেছেন: আল্লাহর দরবারে মু'মীনদের চেয়ে অধিক সম্মানীত কিছুই নেই।"(ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৬০৮৪, ৭১৯২ ; ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ৮৯৭)
এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত উল্লেখ করা যায়,
أنبأ تميم بن سليمان ، فيما كتب إلى ، ثنا محمد بن سعد العوفي ، ثنا أبي ، ثنا تیار بن مسلم الوابش ، عن محمد بن الحسين بن عطية ، عن أبيه ، عن جده عطية عن أبيه غير بن جادة قال: قال ترشول الله صلى الله عليه وسلم: ما شي أكرم على الله من عبير مؤمن
হজরত সাঈদ ইবনে জুনদা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: আল্লাহর দরবারে মু'মীনদের চেয়ে অধিক সম্মানীত কিছুই নেই।"
(ইমাম আবু নুয়াইম ; মারেফাতুস সাহাবা, হাদিস নং ৩২৪১ ; ইমাম ইবনুল আছির: উসদুল গাবা, ১৯৭৪ নং রাবীর ব্যাখ্যায়)
হাদিস শরীফে মু'মীনদের মর্যাদার বিষয়ে রাসূলে পাক (ﷺ) আরাে এরশাদ,
حدثنا يحيى بن أكم ، والجارود بن معاني قالا: حتا الفضل بن موسى ، قال: حنا الحسين بن واقد ، عن أوقي بي دلهيم ، عن نافع ، عن ابن عمر قال: صيد رسول الله صلى الله عليه وسلم المنبر فنادى بصوت رفيع ، فقال ونظر ابن عمر يوما إلى البيت أو إلى الكعبة فقال: ما أغم و غم ځمت ، والمؤمن أعظم محترم عند الله من . هذا حديث حسين غريب ، وتروي عن أبي برة الأشكي ، عن النبي صلى الله عليه وسلم خو هذا .
-"হজরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) একবার কাবা ঘরের দিকে তাকালেন এবং বললেন ; কত মর্যাদা তােমার, কত বিরাট তােমার সম্মান! কিন্তু আল্লাহর নিকট মুমীনের মর্যাদা তােমার চেয়েও বড়। ইমাম আবু ঈসা তিরমিজি (رضي الله عنه) বলেন: এই হাদিস হাছান। আবু বারজা আল-আসলামী (رحمة الله).) এর বরাতেও নবী করিম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদিস বর্ণিত আছে।"
(তিরমিজি শরীফ, ২ য় জি: ২৩ পৃ: হাদিস নং ২০৩২ ; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং, ৫ ৭৬৩)
ইমাম তিরমিজি (রাহঃ) এর পাশাপাশি কুখ্যাত তাহকিককারী নাছিরুদ্দিন আলবানী হাদিসটিকে-হাছান বলেছে। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত উল্লেখ করা যায়,
حدثنا محمد بن عبد الله الحضرمي قال: ثنا القاسم بن دينار قال: نا إسحاق بن منصور قال: ثنا خالد العبد ، عن عبد الكريم الكري ، عن عمرو بن شعيب ، عن أبيه ، عن جده ، عن النبي صلى الله عليه وسلم تنظر إلى الكعبة ، فقال: لقد شقير الله وكرمي ، وعمل ، والمؤمن أعظم حرمة منك
-"আমর ইবনে শুয়াইব তার পিতা ও দাদার সূত্রে নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয় নবীজি (ﷺ) একদিন কাবা ঘরের দিকে তাকালেন এবং বললেন: অবশ্যই আল্লাহ আপনাকে পুতপবিত্র, সম্মানিত ও অধিক মর্যাদাবান করেছেন। একজন মু'মীনের মর্যাদা আল্লাহর কাছে তােমার চেয়েও বেশী।"
(ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৫৭১৯ ; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৮১৭ ; ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ২৬৩)
এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত উল্লেখযােগ্য,
كنا أحمد بن داود المكي ، ثنا حفص بن عمر الحوفي ، ثنا الحسن بن أبي جعفر ثنا لي بن أبي سليم ، عن طاوي ، عن ابن عباس رضي الله عنهما ، قال: نظر رسول الله صلى الله عليه وسم إلى الكعبة فقال: لا إله إلا الله ما أطيبك وأطيب ريح ، وأممم حترمتك ، والمؤمن أعظم محترم منك
-"হজরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কাবার দিকে একদিন তাকালেন ও বললেন: আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই যিনি তােমাকে পবিত্র করেছেন, তােমার বাতাসকে পবিত্র করেছেন এবং তােমার সম্মানকে মর্যাদাসীন করেছেন। একজন মু'মীনের মর্যাদা তােমার চেয়েও অনেক বেশী।"(ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ১০৯৬৬ ; মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদিস নং ২৭৭৫৪ ; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৮১৯)
সুতরাং রাসূলে পাক (ﷺ) এর এই হাদিস সাক্ষী দিচ্ছেন, মুমীনে কামিল তথা আল্লাহর ওলীগণের মর্যাদা কাবা ঘরের চেয়েও অধিক সম্মানিত। আর আল্লাহর ওলী যারা হয় তারাই প্রকৃত মু'মীনের কামেল। তাই কাবা ঘরের সম্মানে যদি কাবার কাছে খালি পায়ে যাওয়া যায়, তাহলে কাবার চেয়ে। অধিক সম্মানী আল্লাহর ওলীগণের কাছে খালি পায়ে যাওয়া যাবেনা কেন?
হাম্বলী মাজহাবে ইমাম, হজরত আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) এর সম্মানিত পীর ও মাের্শিদ বিশিষ্ট তাবেঈ হজরত বিশর হাফী (رحمة الله) স্বীয় পীরের বাড়িতে খালি পায়েই যেতেন। খালি পা অবস্থায় আপন পীরের তাওয়াজ্জুহ পাওয়ার কারণে তিনি কোনদিন জুতা পায় দেননি। (তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ ম খন্ড, ৪২৭ পৃঃ ; আদাবুল মুরিদ।
বিশ্বখ্যাত আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) { ওফাত ১১২৭ হিজরী } তদীয় কিতাবে আরাে উল্লেখ করেন,
لا ينبغي لبس النعل بين يدي الملوك إذا دخلوا عليهم
-"রাজ্যের বাদশার সামনে জুতা পরিধান করবেনা যখন তার নিকট তােমরা প্রবেশ করবে।"(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ ম খন্ড, ৪২৭ পৃ:)
লক্ষ্য করুন! জাগতিক একজন বাদশার সামনে যদি জুতা পায়ে যাওয়ার অনুমতি না থাকে, তাহলে যারা দুনিয়া ও আখেরাতের সু-সংবাদ প্রাপ্ত এবং আল্লাহ তা'লার মনােনিত বান্দাহ তাদের মাজারে জুতা পায়ে যাওয়া আদব সম্মত হবে কিভাবে?
মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী (رحمة الله) বলেন:
"তুমি যদি আল্লাহ সাথে বসতে চাও
তাহলে ওলীগণের কাছে বস ”
অন্যত্র মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী (رحمة الله) বলেন:
"তুমি যদি ওলীগণের মজলিস থেকে জুদা হও-
তাহলে আল্লাহ তা'লা থেকে জুদা হয়ে যাবে।"
আল্লাহর ওলীগণের কাছে বসলে আল্লাহর কাছে বসার হক্ব আদায় হয়ে যায়, এবং তাঁদের মজলিসে বসা আল্লাহর মজলিসে বসার তুল্য। মূসা (আঃ) পাহাড়ে নূর দেখে জুতা খুলে ছিলেন, আর সেখানে স্বয়ং আল্লাহর বন্ধুর কাছে আল্লাহর মজলিসে কিভাবে জুতা পায়ে দিবেন? এ বিষয়ে সহিহ। হাদিসে আছে,
گنت سمعه الذي يسمع به ، وتمر الذي يبصر به ، ويده التي يبطش بها ، ورجله التي يمشي بها ،
-"আমি আল্লাহ তাঁর কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনে, আমি তার চোখ হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে ধরে, আমি তার পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলাফেরা করে।"(সহিহ বুখারী, ২ খন্ড, ৯৬৩ পৃঃ ; সহিহ ইবনে হিব্বান, ২১০ পৃঃ) সহিহ হাদিস।
হাদিস শরীফে আছে,
لسانه لسان الله وعينه عين الله وقلبها قلب الله
-"আল্লাহর ওলীগণের জিহ্বা আল্লাহর জিহবা, তাদের চোখ আল্লাহর চোখ, তাঁদের ক্বাল্ব ' আল্লাহর ক্বাল্ব।"(ভেদে মারেফত, ২৯ পূ, কৃত ; মাওঃ ইসহাক সাহেব চরমোনাই।
সুতরাং আল্লাহর ওলীগণের সর্বাঙ্গ আল্লাহর মনােনিত। তাই তাঁদের কাছে গেলে অতিব আদবের সাথেই যাওয়া উচিৎ। কারণ মহান আল্লাহ তা'লা অন্য কোন স্থানে যাওয়ার ব্যাপারে (আলা) তথা সাবধান ' কথাটি বলেননি, একমাত্র আল্লাহর ওলীগণের কথা বলতে গিয়েই বলেছেন: (আলা) সাবধান। যেমন:
ألا إن أولياء الله لا خوف عليهم ولا هم يحزنون
-"সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহর ওলীগণের কোন ভয় নাই ও তাঁরা চিন্তিত হবেনা।"(সূরা ইউনূছ: ৬২ নং আয়াত।
অত্যাধিক পাওয়ারফুল বােল্টেজ সম্পন্ন বিদ্যুতের কাছেই সাবধান ' কথাটি লিখা থাকে। তাই যাদের ব্যাপারে সাবধান বাণী উচ্চারিত হয়েছে, তাদের কাছে অতিব আদব, বিনয়, নম্রতা ও সাবধানতার সাথেই যাওয়াই উচিৎ।
_______________
সহিহ হাদিসের আলােকে মাজার যিয়ারত পূজা নয় ও কদমবুছির সমাধান
গ্রন্থনায়ঃ মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জিহাদী
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন