পুর্বপুরুষ কেউই মুশরিক ছিলেন না
উপরোক্ত হাদীসগুলো এবং এরকম সমার্থক আরো বহু হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, রাসূলে পাক (ﷺ) এর পিতা-মাতা থেকে আদম (عليه السلام) পর্যন্ত সমস্ত বংশধারা পবিত্র ছিলো। আর যারা পবিত্র তারা মুশরিক হতে পারেন না।
✦যেহেতু আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, ‘নিঃসন্দেহে মুশরিকরা অপবিত্র।’
✦তাছাড়া উপরোক্ত হাদীসগুলোতে দেখা যায়, রাসূলে পাক (ﷺ) তাঁর বংশকে শ্রেষ্ঠ বংশ বলেছেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের শ্রেষ্ঠ মানুষ বলেছেন। যদি তারা মুশরিক হতেন তাহলে তাঁদের শ্রেষ্ঠ বলা যেত না।
✦অন্য হাদীসে রাসূলে পাক (ﷺ) ইরশাদ করেছেন,
-‘আমি সত্য নবী এবং আমি মিথ্যাবাদী নই। আর আমি আবদুল মুত্তালিবের সন্তান।’ এ হাদীসে দেখা যায় রাসূলে পাক (ﷺ) নিজের দাদা আবদুল মুত্তালিবকে নিয়ে গর্ববোধ করেছেন। যদি তাঁর দাদা মুশরকি হতেন তাহলে তিনি তাকে নিয়ে গর্ববোধ করতেন না।
✦ইবরাহীম (عليه السلام) যখন ইসমাইল (عليه السلام) কে নিয়ে কা’বা শরীফ নির্মান শেষ করেন তখন তাঁরা যে দু’আ করেন তার একটি অংশ ছিল-
-‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুজনকে তোমার অনুগত (মুসলিম) বানাও, আর আমাদের বংশধরদের মধ্য থেকেও এক দল লোককে তোমার অনুগত (মুসলিম) বানাও।’ (সূরা বাকারা)
✦এ দু’আর পরবর্তী অংশে তিনি উল্লেখ করেন-
-‘হে আমাদের প্রতিপালক, তাদের মধ্য থেকে তাদের মাঝে একজন রাসূল প্রেরণ করো।’
এখানে প্রথম দু’আ থেকে প্রমাণিত হয়, ইবরাহীম (عليه السلام) এবং ইসমাইল (عليه السلام) এর বংশে সর্বযুগে একদল লোক ‘উম্মতে মুসলিমাহ’ থাকবেন এবং পরবর্তী দু’আয় শব্দকে কেউ কেউ উম্মতে মুসলিমাহ এর দিকে সম্পর্কিত কওে বলেন, থেকে প্রমাণিত হয়, রাসূল যিনি আসবেন তিনি সেই ‘উম্মতে মুসলিমাহ’র মধ্য থেকে আসবেন। সুতরাং ইবরাহীম (عليه السلام) এর দু’আর ফসল হলেন হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এবং তাঁরই দু’আ অনুযায়ী তাঁর পিতা-মাতা এবং পূর্ব পুরুষগণ সেই ‘উম্মতে মুসলিমাহ’র অন্তর্ভুক্ত।
✦তাছাড়া সূরা ইবরাহীমে উল্লেখিত হযরত ইবরাহীম (عليه السلام) অপর দু’আঃ
-‘হে প্রতিপালক! আমাকে নামাযী বানাও এবং আমার বংশধরদের থেকেও এক দল লোককে নামাযী বানাও’। এ আয়াতে ‘একদল লোক’ দ্বারা প্রমাণিত হয় কিয়ামত পর্যন্ত সকল যুগে ইবরাহীম (عليه السلام) এর বংশে নামাযী এবং ঈমানদার একদল লোক বেঁচে ছিলেন এবং থাকবেন।
আর একথা প্রণিধানযোগ্য যে, কোনো যুগে ইবরাহীম (عليه السلام) এর বংশধর একদল মানুষ ঈমানদার থাকবেন অথচ সেই রাসূলে পাক (ﷺ) এর পিতা-মাতা সেই ঈমানদার দলের অন্তর্ভূক্ত হবেন না, সে কথা চিন্তাও করা যায় না।
✦অন্য হাদীসে রাসূলে পাক (ﷺ) গর্ববোধ করে বলেছেন, ‘আমি দুই কুরবানীকৃত ব্যক্তির সন্তান’। আর এরা হলেন তাঁর পূর্বপুরুষ হযরত ইসমাইল (عليه السلام) এবং তাঁর স্বীয় পিতা হযরত আবদুল্লাহ (رضي الله عنه)।
এ হাদীসে দেখা যায় রাসূলে পাক (ﷺ) তাঁর পিতাকে নিয়ে গর্ববোধ করেছেন। যদি তিনি মুশরিক হতেন, তাহলে কুরবানীর জন্য আল্লাহ পাক তাঁকে মনোনীত করতেন না এবং তাকে নিয়ে রাসূলে পাক (ﷺ) গৌরববোধ করে বাণী প্রদান করতেন না।
আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখযোগ্য যে, ‘আবদুল্লাহ’ নামের অর্থ হল ‘আল্লাহর বান্দা’ আর ‘আমিনা’ নামের অর্থ হল বিশ্বস্ত, আমানতদার, আল্লাহর উপর ভরসাকারীনী, সংরক্ষিতা। সুবাহানাল্লাহ! নাম থেকেই তাদের ইমানদার হওয়ার পরিচয় পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, যারা এ নাম রেখেছেন তারাও নিশ্চয়ই ঈমানদার ছিলেন। তা না হলে এমন পবিত্র নাম কিভাবে রাখলেন? অথচ সে সময় তো মূর্তির নামের সাথে মিলিয়ে ‘আবদুল ওজ্জা’ ‘আবদুল লাত’ ইত্যাদি নাম রাখা হতো।
_________________
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মাতা-পিতা জান্নাতী না জাহান্নামী
কৃতঃ খায়রুল হুদা খান
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন