রোযা ও ইফতারের ফযীলত

 

রোযা ও ইফতারের ফযীলত


** হযরত সায়্যিদুনা আবুদ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বানী হচ্ছে," কিয়ামতের দিন রোযাদারদের জন্য আরশের নিচে স্বর্ণের দস্তরখানা বিছানো হবে। যাতে মনি - মুক্তা ও হিরা - জহরত খচিত থাকবে। তাতে জান্নাতী ফল - মুল, জান্নাতী পানীয় ও বিভিন্ন প্রকারের খাবার বাছাইকৃত থাকবে। রোযাদারগণ (সেগুলো) খাবেন আর স্বাদ উপভোগ করবেন। যখন অন্য সব মানুষ কঠিন হিসাব - নিকাশ দিতে ব্যস্ত থাকবে।( আল বুদুরুসসা - ফিরাহ,পৃ:- ২৬০,ক্ষুদার ফযীলত,পৃ:- ১৮)।


** হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,মক্কী মাদানী

সারকার,শফীয়ে রোযে শুমার হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন," রোযা ও কুর'আন বান্দার জন্য

কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে।" রোযা আরয।করবে, " হে দয়ালু প্রতিপালক! আমি আহার ও প্রবৃত্তিগুলো থেকে দিনে তাকে বিরত রেখেছি।আমার সুপারিশ তার পক্ষে কবুল করুন।" কুর'আন বলবে, " আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুমাতে দেইনি। আমার সুপারিশ তার পক্ষে কবুল করুন।" সূতরাং উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে।( মুসনাদে ইমাম আহমদ,খন্ড - ২য়,হাদীস নং- ৬৬৩৭,পৃ:- ৫৮৬,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৩)।


** হযরত সায়্যিদুনা সালমা ইবনে কায়সার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবীগণের সরদার হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খুশবুদার ফরমান," যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য একদিনের রোযা পালন করেছে,আল্লাহ তাকে

জাহান্নাম থেকে এতো দূরে রাখবেন যেমন

একটা কাক,যা সেটার শৈশব থেকে উড়তে

আরম্ভ করে,শেষ পর্যন্ত বুড়ো হয়ে মারা যায়।"

(মুসনাদে আবী ইয়ালা,খন্ড - ১ম,হাদীস

নং- ৯১৭,পৃ:- ৩৮৩।


গুনিয়াতুত ত্বলিবীন এর মধ্যে রয়েছে," কথিত

আছে যে,কাকের বয়স পাঁচশ বছর পর্যন্ত হয়।"।রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩০৭,হযরত আবু হুয়ায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় - মুসনাদে আহমদ থেকে ও বায়হাকী শোআবুল ঈমানে।


** হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে

আওফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

মাহবুবে রব্বে আকবর হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূরানী বানী," রোযাদারদের ঘুমানো ইবাদত,তার নীরবতা হল তাসবীহ পাঠ করা,তার দু'আ কবুল এবং তার আমল মকবুল।" ( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৯৩৮,পৃ:- ৪১৫,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৮৪)।


** উম্মুল মু'মিনীন সায়্যিদাতুনা আয়িশা

রদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন,আমার মাথার

মুকুট,মিরাজের দুলহা হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মহান

বানী," যে বান্দা রোযা পালনরত অবস্থায়

ভোরে জাগ্রত হয়,তার জন্য আসমানের

দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়,তার অঙ্গ - প্রত্যঙ্গ

তাসবীহ পড়ে এবং প্রথম আসমানের

অবস্থানকারী ফিরশতা তার জন্য সূর্য অস্ত

যাওয়া পর্যন্ত মাগফিরাতের দু'আ করে; যদি

সে এক অথবা দুই রাকা'আত নামায পড়ে তবে আসমানে তার জন্য আলো উদ্ভাসিত হয়ে

যায়।আর হুরদের মধ্য থেকে তার স্ত্রীরা

বলে,"হে মহা মহিম আল্লাহ তায়ালা তাকে

আমাদের নিকট পাঠিয়ে দাও! আমরা তার

সাক্ষাতের জন্য অত্যন্ত আগ্রহী।আর যদি সে

" লা ইলাহা আল্লাল্লাহ" কিংবা ছুবহানাল্লাহ " অথবা "আল্লাহু আকবর" পড়ে,তবে সত্তর হাজার ফিরিশতা তার সওয়াব সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত লিখতে থাকে।( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়, হাদীস নং- ৩৫৯১,পৃ:- ২৯৯,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৮৫)।


** হযরত সায়্যিদুনা কা'আবুল আহবার

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন," কিয়ামতের দিন একজন আহবানকারী এ বলে আহবান করবে," প্রতিটি আমলকারীকে তার আমলের সমান সাওয়াব দেয়া হবে, কুরআনের জ্ঞানে জ্ঞানীগণ ও রোযাদারগণ

ব্যতিত। তাদেরকে সীমাহীন ও হিসাব ছাড়া

সাওয়াব দান করা হবে।(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৯২৮,পৃ:- ৪১৩,রমযানের

ফযীলত,পৃ:- ৮৭)।


** আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু বলেন,নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," যে কেহ

চাশতের নামায পড়বে,প্রতি মাসে তিনটি

রোযা রাখবে এবং কখনোও বিতির নামায

ছাড়বেনা - মুকিম অবস্থায় হোক অথবা

মুসাফির অবস্থায় হোক তার জন্য শাহাদাতের ছাওয়াব লিখা হবে।( আবু নুয়াইম,হায়াত - মউত কবর - হাশর,পৃ:- ৯৮ - ৯৯)।


** হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যে আল্লাহর রাস্তায় ( অথবা আল্লাহর ওয়াস্তে) একটি রোযা রাখবে,আল্লাহ তায়ালা তার চেহারাকে দোযখের আগুন থেকে সত্তর বছরের পথ দূরে রাখবেন।( অর্থাৎ,বহু দূরে রাখবেন)।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৯৫৫,পৃ:- ৩০৫)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন,"সোমবার ও বৃহস্পতি বার

বান্দার আমলসমূহ ( আল্লাহর দরবারে) পেশ

করা হয়। অতএব,আমি চাই যে,আমার আমল পেশ করা হোক আমার রোযা অবস্থায়।(তিরমিযী শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৯৫৮,পৃ:- ৩০৫)।


** হযরত আবু যর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম একবার আমাকে বললেন,হে আবু যর! যখন তুমি মাসের তিন দিন রোযা রাখবে তখন তার ১৩,১৪,ও ১৫ তারিখে রাখবে।( তিরমিযী ও নাসায়ী শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৯৫৯,পৃ:- ৩০৫)।


** হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে

আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

আল্লাহ তায়ালার প্রিয় রসুল, হযরত আমিনা রদ্বিয়াল্লাহু আনহার বাগানের সুবাসিত ফুল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুসংবাদরুপী বানী হচ্ছে," যে ব্যক্তি বুধবার ও বৃহস্পতি বার রোযা রাখে,তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লিখে দেয়া হয়।( আবু ইয়ালা,খন্ড - ৫ম,হাদীস নং- ৫৬২০,পৃ:-১১৫,রমযানের ফযীলত,পৃ:-৪২৫)।


** যে ব্যক্তি রমযান, শাওয়াল,বুধ ও

বৃহস্পতি বার রোযা রাখে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।( সুনানুল কুবরা নাসায়ী,খন্ড -২য়,

হাদীস নং- ২৭৭৮,পৃ:- ১৪৭,রমযানের

ফযীলত,পৃ:- ৪২৬)।


** হযরত সায়্যিদুনা আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু থেকে বর্নিত,আল্লাহ তায়ালা তার

জন্য ( অর্থাৎ,বুধ,বৃহস্পতি ও শুক্রবার রোযা

পালনকারীর জন্য) জান্নাতে মনি - মুক্তা,

পদ্মরাগ ও পান্না দ্বারা মহল তৈরী করবেন। আর তার জন্য দোযখ থেকে মুক্তি লিখে দেয়া হবে।( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৮৭৩,পৃ:-৩৯৭,রমযানের ফযীলত,পৃ:-৪২৬)।


** তাজেদারে মাদীনা হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বরকতময় বানী," যে ব্যক্তি জুমার দিন রোযা

রেখেছে,আল্লাহ তায়ালা তাকে আখিরাতের দশ দিনের সমান সওয়াব দান করবেন। আর সেগুলোর সংখ্যা দুনিয়ার দিনগুলোর মতো নয়।( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৮৬২,পৃ:- ৩৯৩,রমযানের ফযীলত,

পৃ:- ৪২৭)।


** আল্লাহর মাহবুব হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উৎসাহমুলক বানী, " যদি কেউ একদিন নফল

রোযা রাখে আর যমিন পরিমান স্বর্ণ তাকে

দেয়া হয়,তবু সেটার সওয়াব পূর্ণ হবে না।

সেটার সওয়াব তো কিয়ামতের দিনই পাবে।

( মুসনাদে আবী ইয়া'লা,খন্ড - ৫ম,পৃ:- ২৫৩,

ক্ষুধার ফযীলত,পৃ:- ১৮)। 


** হযরত হাসান বসরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

থেকে বর্ণিত," মক্কা শরীফে একদিন রোযা

রাখা এক লাখ রোযার সমান। এক দেরহাম

দান করা এক লাখ দেরহাম দান করার সমান।

এমনিভাবে প্রত্যেক সাওয়াবের কাজ এক

লাখ সওয়াবের কাজের সমান।( ইহইয়াউল

উলুমুদ্দীন,পৃ:- ২০২)।


** হযরত সায়্যিদুনা আমের ইবনে লুদায়ন

আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে।বর্ণিত,

আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি,জুমার

দিন তোমাদের জন্য ঈদ। শুধু এ দিনে রোযা

রেখোনা। বরং আগে কিংবা পরের দিন

মিলিয়ে রোযা রাখবে।

(আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, খন্ড - ২য়,হাদীস নং- ১১,পৃ:- ৮১,রমযানের ফযীলত,

পৃ:- ৪২৯)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন," আল্লাহ তায়ালা বলেন,

আমার বান্দাদের মধ্যে আমার নিকট অধিকতর প্রিয় তারাই,যারা শীঘ্র ইফতার

করে।( তিরমিযী শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৮৯২,পৃ:- ২৯৯)।



রমযানুল মোবারক ও রমযানের রোযার ফযীলত

__________________

** সায়্যিদুনা আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,মক্কী - মাদানী সুলতান,

রহমতে আলামিয়ান,হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রহমতপূর্ণ বানী হচ্ছে," যখন রমযান মাসের প্রথম রাত আসে,তখন আসমানগুলো ও জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। আর সেগুলো সর্বশেষ রাত পর্যন্ত বন্ধ হয় না।যে কোন বান্দা এ বরকতময় মাসের যে কোন রাতে নামায পড়ে,তবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতিটি সিজদার পরিবর্তে ( অর্থাৎ বিনিময় স্বরুপ) তার জন্য পনের শত নেকী লিপিবদ্ধ করেন।আর তার জন্য জান্নাতে লাল পদ্মরাগ পাথরের মহল তৈরী করেন।যার ষাট হাজার দরজা থাকবে,প্রতিটি দরজার কপাট স্বর্ণের তৈরী হবে; যাতে লাল বর্ণের পদ্মরাগের পাথর খচিত থাকবে।সুতরাং যে কেউ রমযানের প্রথম রোযা রাখে তার জন্য আল্লাহ তায়ালা রমযানের শেষ দিন পর্যন্ত গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা।মাগফিরাতের দো'আ করতে থাকে।রাত ও দিনে যখনই সে সিজদা করে,তার ওই প্রতিটি সিজদার বিনিময়ে তাকে ( জান্নাতে) একেকটা এমন গাছ দান করা হবে,সেটার ছায়া অতিক্রম করতে ঘোড়ার আরোহীকে পাঁচশ বছর দৌঁড়াতে হবে।( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৬৩৫,পৃ:-৩১৪,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৫)।


** তাজেদারে মদীনা,সুরুরে কলবো সীনা

হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম ইরশাদ করেছেন," যখন রমযানের

প্রথম রাত আসে,তখন আল্লাহ তায়ালা আপন

সৃষ্টির দিকে দয়ার দৃষ্টি দেন। বস্তুত: যখন

আল্লাহ কোন বান্দার দিকে দয়ার দৃষ্টি দেন,

তাকে কখনো আযাব দেবেন না।আর প্রতিদিন দশ লক্ষ ( গুনাহগারকে) জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেন।( এভাবে) যখন উনত্রিশতম রাত আসে,তখন গোটা মাসে যত সংখ্যক লোককে মুক্তি দান করেছেন,তার সমসংখ্যক মানুষকে ওই রাতে মুক্তি দান করেন। অত:পর যখন ঈদুল ফিতরের রাত আসে,তখন ফিরিশতাগণ আনন্দ প্রকাশ করে।আর আল্লাহ তায়ালা আপন নূরকে বিশেষভাবে বিচ্ছুরিত করেন এবং ফিরিশতাদেরকে বলেন," হে ফিরিশতার দল! ওই শ্রমিকদের কি প্রতিদান।হতে পারে, যে তার দায়িত্ব পালন করেছে? ফিরিশতাগণ আরয করেন," তাকে পরিপূর্ণ প্রতিদান দেয়া হোক।" আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান," আমি তোমাদেরকে সাক্ষী করছি,আমি তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি।( কানযুল উম্মাল,খন্ড - ৮ম,হাদীস নং- ২৩৭০২,

পৃ:-  ২১৯,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ১৯)।


** হযরত দ্বামুরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে

বর্ণিত,নবী করীম রউফুর রহীম হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মহান বানী হচ্ছে,মাহে রমযানে পরিবারের

লোকজনের ব্যয়কে বাড়িয়ে দাও।

কেননা,মাহে রমযানে খরচ করা আল্লাহ

তায়ালার রাস্তায় খরচ করার মতোই।( আল -

জামেউস সাগীর,হাদীস নং- ২৭১৬,পৃ:- ১৬২,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২১)।


** হযরত সায়্যিদুনা ইব্রাহীম নাখই

রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,রমযান মাসে

একদিন রোযা রাখা ( অন্য সময়) এক হাজার

রোযা রাখার চেয়ে উত্তম।রমযান মাসে

একবার ' তাসবীহ' পাঠ করা ( ছুবহানাল্লাহ)

অন্য মাসে এক হাজার বার তাসবীহ পাঠ করা

( অর্থাৎ ছুবহানাল্লাহ বলার) চেয়ে উত্তম।

রমযান মাসে এক রাকা'আত নামায পড়া,

রমযান ব্যতিত অন্য মাসের এক হাজার

রাকা'আত অপেক্ষা উত্তম।(আদ - দুররুল

মানসুর,খন্ড - ১ম,পৃ:- ৪৫৪,রমযানের

ফযীলত,পৃ:-২৭)।


** হযরত আমীরুল মু'মিনীন সায়্যিদুনা উমর।ফারুকে আযম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে

বর্ণিত,নবীকুল সরদার, হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর।রহমতপূর্ণ বানী," রমযান মাসে আল্লাহর

যিকিরকারীকে ক্ষমা করা হয় এবং আল্লাহর

দরবারে প্রার্থনাকারী বঞ্চিত থাকে না।

(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৬২৭,

পৃ:-৩১১,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৮)।


** হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে

আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত,

আহমদে মুখতার হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন," যে ব্যক্তি মক্কা মুকাররমায় রমযান মাস পেলো,রোযা রাখলো এবং রাতে যথাসম্ভব জেগে জেগে ইবাদত করলো,আল্লাহ তায়ালা তার জন্য অন্য জায়গার এক লক্ষ রমযান মাসের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন।আর প্রতিদিন একটা গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব, প্রতি রাতে একটা গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব, প্রতিদিন জিহাদে ঘোড়া সাওয়ারী দেয়ার সওয়াব এবং প্রতিটি দিনে ও রাতে সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন।( ইবনে মাজাহ,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩১১৭,পৃ:- ৫২৩,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৪)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন," যে ঈমানের সাথে ও

সাওয়াবের নিয়তে রমযানের রোযা রাখবে

তার পূর্বের ( সগীরা) গুনাহসমূহ মাফ করা হবে।এবং যে ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের নিয়তে রমযানের রাত্রি ইবাদতে কাটাবে তার

পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করা হবে, আর যে ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের নিয়তে ক্বদরের রাতে ইবাদতে কাটাবে তার পূর্বকৃত গুনাহসমূহ মাফ করা হবে।(বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৮৬২,

পৃ:- ২৯৫)।



মুহাররমের রোযার ফযীলত

_______________

** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন," রমযানের রোযার পর

আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযাই হল শ্রেষ্ঠ

রোযা এবং ফরয নামাযের পর রাতের

(তাহাজ্জুদের) নামাযই হলো শ্রেষ্ঠ নামায।

(মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং-

১৯৪১,পৃ:- ৩০৪)।


** নবী করীম,মদীনার তাজেদার,হযরত

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

ইরশাদ করেছেন," মুহাররাম মাসের প্রতিদিনের রোযা, এক মাসের রোযার সমান।( আল - মু'জামুস সাগীর লিত তাবরানী,খন্ড - ২য়,পৃ:- ৭১,খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী,

পৃ:- ২৮২)।


** রহমতে আলম, হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ

করেছেন,"যে ব্যক্তি মুহাররাম মাসে তিনদিন

বৃহস্পতিবার,শুক্রবার ও শনিবার দিন রোযা

রাখে,তার জন্য দু' বছরের ইবাদতের সাওয়াব

লিখা হবে।( মাজমাউয যাওয়ায়িদ,খন্ড - ৩য়,

হাদীস নং- ৫১৫১,পৃ:- ৪৩৮,খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী,পৃ:- ২৮২)।


** হযরত রসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম বলেছেন," আরাফার দিনের

রোযা রাখা একাধারে দু'বৎসর রোযা রাখার

সমান ফায়দা আর আশুরার দিনে রোযা রাখা

এক বৎসর রোযা রাখার সমতুল্য।( তানযীহুশ

শরীআহ,খন্ড - ২য়,পৃ :- ১৬৫,মুসনাদে আহমদ,তাম্বিহুল গাফিলীন,পৃ:- ২৬২)।


** প্রসিদ্ধ মুফাচ্ছির, হাকিমূল উম্মত হযরত মুফতি আহমদ ইয়ার খান রহমাতুল্লাহি

আলাইহি বর্ণনা করেন," মুহাররাম মাসের ৯ ও

১০ তারিখে রোযা রাখলে অনেক বেশী সাওয়াব পাওয়া যায়। সন্তান - সন্ততির জন্য

১০ ই মুহাররাম যদি ভাল খাবার রান্না করা

হয় তাহলে ইনশা আল্লাহু আযযা ও জাল্লা

সারা বছর ঘরে বরকত থাকবে। উত্তম হচ্ছে এই যে,খিচুড়ী রান্না করে হযরত সায়্যিদুনা

শহীদে কারবালা ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু নামে যদি ফাতিহা পাঠ করা হয় তবে

তা ভাল হয়। ঐ তারিখে অর্থাৎ ১০ই মুহাররমে যদি গোছল করা হয়,তবে সম্পূর্ণ বছর ইনশা আল্লাহ, রোগ থেকে থেকে নিরাপদ থাকবে।

কেননা,এইদিন সমস্ত পানির সাথে জমজমের

পানি মিশে থাকে।( তাফসীরে রুহুল বয়ান,খন্ড - ৪র্থ,পৃ:- ১৪২,কোয়েটা। ইসলামী জিন্দেগী,

পৃ:- ৯৩)।


** সারওয়ারে কায়েনাত,শাহে মওজুদাত হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন," যে ব্যক্তি আশুরার দিন, " ইছমাদ সুরমা" চোখে লাগাবে, তবে তার চোখ কখনো রোগাক্রান্ত হবে না।( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৭৯৭,পৃ:- ৩৬৭,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৭৮ - ৩৭৯)।



রজবের রোযার ফযীলত

______________

** হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে

আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে,

হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দয়াময় বানী হচ্ছে," রজবের ১ম দিনের রোযা তিন বছরের গুনাহের কাফফারা। ২য় দিনের রোযা দুই বছরের এবং

৩য় দিনের রওযা ১ বছরের গুনাহের কাফফারা। এরপর প্রতিদিনের ১টি রোযা

১মাসের গুনাহের কাফফারা স্বরুপ। ( আল

জামেউস সাগীর,হাদীস নং- ৫০৫১,পৃ:- ৩৩১,

রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৮৫)।


** হযরত সায়্যিদুনা আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু

আনহু থেকে বর্ণিত,রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন," যে ব্যক্তি রজব মাসের একটি রোযা রাখলো, তবে তা পরিপূর্ণ এক বছর রোযা রাখার মত হবে। যে সাতটি রোযা রাখবে, তার জন্য জাহান্নামের সাতটি দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যে ব্যক্তি আটটি রোযা রাখবে,তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে।যে ব্যক্তি ১০টি রোযা রাখবে,সে আল্লাহর কাছে যাই চাইবে তা আল্লাহ তাকে দান করবেন।যে ব্যক্তি পনেরটি

রোযা রাখবে,তখন আসমান থেকে এক

আহবানকারী আহবান করে বলবে যে,তোমার

অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে।তুমি

আজ থেকে নতুন করে আমল শুরু কর।তোমার গুনাহ সমূহ নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। আর যারা এর বেশী করবে,

আল্লাহ তায়ালা তাকে বেশী পরিমানে দান করবেন। আর রজব মাসেই হযরত নূহ আলাইহিস সালাম কিশতিতে আরোহন করেছিলেন,তখন তিনি নিজেও রোযা রেখেছেন,সাথে সাথে সাথীদেরকে রোযা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।তার কিশতি ১০ই মুহাররম পর্যন্ত ছয় মাস সফর অবস্থায় ছিল।(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৮০১,

পৃ:- ৩৬৮,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৮৭ - ৩৮৮)।


** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রজবের সাতাইশ

তারিখ রোযা রাখে, তার জন্য আল্লাহ তায়ালা ষাট মাসের রোযা লিখে দেন। ( তানযিহুশ শরীয়াহ,খন্ড - ২য়,হাদীস নং- ৪১, পৃ:-১৬১,

ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,পৃ:- ৩০৬,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৯০)।


** আলা হযরত,আজিমূল বরকত, ইমাম আহমদ রযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইরশাদ করেন যে," ফাওয়ায়িদে হানাদে" হযরত সায়্যিদুনা আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে,নবীয়ে করীম,রউফুর রহীম হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন," ২৭শে রজবে আমার নবুওয়্যত প্রকাশ হয়েছে। যে ব্যক্তি এই দিন রোযা রাখবে আর ইফতারের সময় দু'আ করবে, (তাহলে তা) ১০ বছরের গুনাহের কাফফারা হবে।( সংশোধিত ফাতাওয়ায়ে

রযবীয়্যাহ,খন্ড - ১০মম,পৃ:- ৬৪৮,রমযানের

ফযীলত,পৃ:- ৩৮৯ - ৩৯০)।


** হযরত সায়্যিদুনা সালমান ফারসী

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,আল্লাহর

মাহবুব হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম এর বানী হচ্ছে," রজবে এমন

একটি দিন ও রাত রয়েছে যে,সেই দিনে যে

রোযা রাখবে ও রাতে কিয়াম তথা ইবাদত

বন্দেগী করবে সে যেন একশত বছর রোযা

রাখলো।আর সেই দিন হলো ২৭শে রজব।এই দিন।হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম কে আল্লাহ তায়ালার প্রতি প্রেরণ

করেছেন।( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৮১১,পৃ:- ৩৭৪,রমযানের ফযীলত,

পৃ:- ৩৯০)।



     শবে বরাতের রোযার ফযীলত

          `````````````````````````````

** হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধারাবাহিকভাবে এতো বেশী নফল রোযা রাখতেন যে,আমরা বলাবলি করতাম হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম হয়তো আর রোযা ছাড়বেন না। আবার কখনো এতো বেশী রোযা থেকে বিরত থাকতেন যে, আমরা বলতাম হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হয়তো আর রোযা (নফল) রাখবেন না। তাই আমরা রমযান মাস ছাড়া আর অন্য কোন মাসে তাঁকে পূর্ণ মাস রোযা রাখতে দেখিনি এবং সবচেয়ে যে মাসে সর্বাধিক নফল রোযা রাখতেন তা হলো শা'বান মাসে। ( বুখারী, হাদীস নং- ১৮৬৮,মুসলীম,হাদীস নং- ১১৫৬,

মাহে শাবান ও শবে বরাত,পৃ:- ১৩ - ১৪)


** হযরত উসামা বিন যায়েদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, আমি প্রিয় নবীর দরবারে আরয করলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম!  শা'বান মাসের ন্যায় অন্য কোন মাসে আপনাকে এতো বেশী (নফল) রোযা রাখতে কখনও দেখিনা কেন? উত্তরে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, শা'বান এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস - যার সম্পর্কে অনেক মানুষ অনবগত। যেটি রজব ও রমযানের মধ্যবর্তী মাস, এটি ওই মহান মাস যে মাসে বান্দার আমলনামা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের দরবারে সরাসরি পেশ করা হয়। তাই আমি চাই আল্লাহর দরবারে আমার আমলসমূহকে এ অবস্থায় উঠানো হোক যে,আমি রোযাদার। ( নাসায়ী, হাদীস নং- ২৩৫৭,মুসনাদে আহমদ,হাদীস নং- ২১২৪৬,মাহে শাবান ও শবে বরাত, পৃ:- ১৪)


** হযরত আনাছ রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো,আপনার কাছে মাহে রমযানের পর কোন মাসের রোযা অধিক উত্তম? তিঁনি বললেন, রমযান মাসের সম্মান প্রদর্শনকল্পে শা'বানের রোযা উত্তম। ( তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং- ৬৬৩,মাহে শাবান ও শবে।বরাত,

পৃ:- ১৫)


** সুনানে ইবনে মাযাহ শরীফে হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ; প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন," যখন শা'বানের মধ্য রজনী ( ১৪ শা'বান দিবাগত রাত)  উপস্থিত হবে, তখন তোমরা এ রাতটিকে  (ইবাদতের মাধ্যমে) উদযাপন কর এবং আগত দিনটিকে রোযার মাধ্যমে। কেননা আল্লাহ তা'আলা ওই রাতের সূর্যাস্তের পরক্ষন থেকেই পৃথিবীবাসীর প্রতি বিশেষ করুনার দৃষ্টি  প্রদান করেন এবং এ ঘোষণা দেন - আছো কি কেউ ক্ষমা চাওয়ার? তাকে ক্ষমা করবো। আছো কি কেউ রিযিক প্রার্থনা করার? রিযক দ্বারা ধন্য করবো। আছো কি কেউ অসুস্থ? তাকে আরোগ্য দান করবো। আছো কি এমন কেউ আছো কি এমন কেউ সুবহে সাদেক হওয়া পর্যন্ত এভাবে বলা হবে।( সুনানে ইবনে মাযাহ, হাদীস নং- ১৩৮৮ - ১৩৯০, মাহে শাবান ও শবে বরাত,পৃ:- ১০৮ - ১০৯)



শাওয়ালের রোযার ফযীলত

________________

** হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যে রমযানের রোযা রেখেছে শাওয়ালের ছয় দিন ( রোযা), এটা তার পূর্ণ বছরের রোযার সমান।( মুসলীম

শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৯৪৯,

পৃ :- ৩০৫)।


** হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত,আল্লাহ

তায়ালার রসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন," যে

ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখলো,তারপর

শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোযা রাখলো,তবে

সে গুনাহসমূহ থেকে এমনিভাবে মুক্ত হয়ে

যাবে,যেন সে আজই মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হলো।( মাজমাউয যাওয়ায়িদ,খন্ড - ৩য়,

হাদীস নং- ৫১০২,পৃ:- ৪২৫,রমযানের

ফযীলত,পৃ:- ৪১৭)।


** হযরত সায়্যিদুনা আবু আইয়ুব

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

এর সুগন্ধময় বানী হচ্ছে," যে ব্যক্তি রমযানের

রোযা রাখলো,তারপর আরো ছয়টি রোযা

শাওয়াল মাসে রাখলো,সে যেন সারা জীবনই

রোযা রাখলো।(সহীহ মুসলীম,হাদীস নং- ১১৬৪,পৃ:- ৫৯২,রমযানের ফযীলত,

পৃ:- ৪১৭)।



যিলহজ্জের রোযার ফযীলত

_____________

** হাদীসে পাকে রয়েছে,আল্লাহ

তায়ালার মহান দরবারে যিলহজ্জ মাসের

প্রথম দশ দিন ইবাদত অন্য দিনের তুলনায়

অধিক পছন্দনীয়। সেগুলোর মধ্যে প্রতিদিনের

রোযা এক বছরের রোযা এবং প্রতি রাতে

জাগ্রত রয়ে ইবাদত করা শবে ক্বদরের সমান।

( জামে তিরমিযী,খন্ড - ২য়,হাদীস নং- ৭৫৮,

পৃ:- ১৯২,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৪১৯)।


** হযরত সায়্যিদুনা আবু ক্বাতাদা

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, সুলতানে

মদীনা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম এর মহান বানী,"আল্লাহ

তায়ালার প্রতি আমার ধারনা হচ্ছে," আরাফার দিবসে যে রোযা রাখে তার এক

বছর পূর্বের ও এক বছর পরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন।(সহীহ মুসলীম,হাদীস নং- ১৯৬,পৃ:- ৫৯০,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৪১৯)।



ইতিকাফের ফযীলত

__________

** উম্মুল মু'মিনীন সায়্যিদুনা আয়েশা

সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত,

তাজেদারে মদীনা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুগন্ধিময় বানী, " যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে এবং সাওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে ইতিকাফ করে,তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।( জামিউস সগীর,হাদীস নং- ৮৪৮০,পৃ:- ৫১৬,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৪৭ - ২৪৮)।


** হযরত সায়্যিদুনা আলী মুরতাজা

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,হাবীবে

কিবরিয়া হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এরশাদ হচ্ছে," যে ব্যক্তি রমযান মাসে (দশ দিনের) ই'তিকাফ করলো,

তা দুই হজ্জ্ব ও দুই ওমরার মতো হলো।

(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ২৯৬৬,

পৃ:- ৪২৫,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৫১)।


** হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,ইতিকাফকা

রী প্রতিদিন এক হজ্জ্বের সওয়াব পায়।"

(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৯৬৮,

পৃ:- ৪২৫,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৫২)।


** সায়ীদ ইবনে জুবায়র রহমাতুল্লাহি

আলাইহি এর এক বর্ণনায় নবী করীম

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,যে ব্যক্তি মাগরিব ও ইশার মাঝখানে জামাতের মসজিদে ইতিকাফ করবে এবং নামায ও তিলাওয়াত ছাড়া সকল প্রকার কথাবার্তা হতে বিরত থাকবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে দু'টি বালাখানা নির্মান করবেন। প্রত্যেক বালাখানার দূরত্ব ১০০ বছরের রাস্তা হবে। উভয় বালাখানার মধ্যস্থলে বৃক্ষ রোপণ করা হবে। এসব বাগানে সারা পৃথিবীর মানুষের স্থান সংকুলান হবে। (ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,

পৃ:- ৩০১)।


** যে ব্যক্তি রমযানুল মোবারক ছাড়াও

শুধু একদিন মসজিদে নিষ্ঠার সাথে ই'তিকাফ

করে,তার জন্যও অসংখ্য সাওয়াবের সুসংবাদ

রয়েছে। ই'তিকাফের প্রতি উৎসাহিত করে

আমরা অসহায়দের প্রতি সমবেদনশীল, বিচার দিনের সুপারিশকারী,মক্কী - মাদানী

তাজেদার হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,"যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য একদিনের ই'তিকাফ করবে,আল্লাহ তায়ালা তার ও জাহান্নামের মধ্যভাগে তিনটি খন্দককে অন্তরাল করে দেবেন,যেগুলোর দূরত্ব পূর্বপ্রান্ত ও পশ্চিম প্রান্তের দূরত্ব অপেক্ষাওও বেশী হবে। ( রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৪৭)।

__________________

ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)

লেখক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন