" মুহাম্মাদ " ও" আহমদ" নামের ফযীলত
** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," তোমরা আমার নামে নাম রাখো,আমার 'কুনিয়াত' ( উপনাম) রেখো না।" হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," যার পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে,আর সে আমার প্রতি ভালবাসা ও আমার পবিত্র নামের বরকত হাসিল করার জন্য তার নাম " মুহাম্মাদ" রাখে, সে ও তার পুত্র উভয়েই বেহেশতে যাবে।(হাফেয আবু তাহের সালাফী ও ইবনে বুকায়র)।
** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," কিয়ামত দিবসে দু' ব্যক্তিকে আল্লাহ রব্বুল ইজ্জতের মহান দরবারে দাঁড় করানো হবে। নির্দেশ দেওয়া হবে -" তাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাও!" তারা আরয করবে," হে আল্লাহ! আমরা কোন আমলের বিনিময়ে জান্নাতের উপযোগী হয়েছি?" আমরা তো বিশেষ কোন কাজ জান্নাত পাবার মতো করিনি!" মহা মহিম রব এরশাদ করবেন," জান্নাতে যাও! আর আমি ক্বসম করেছি যে,যার নাম আহমদ কিংবা মুহাম্মদদ হবে সে দোযখে যাবে না। (হাফেয আবু তাহের সালাফী ও ইবনে বুকায়র)। অর্থাৎ যখন মুমিন হবে।আর ক্বুরআন,হাদীস ও সাহাবা - ই কেরামের পরিভাষায় মু'মিন তাকেই বলে,যে সুন্নী ; বিশুদ্ধ আক্বীদায় বিশ্বাসী হয়।
যেমন," তাওযীহ" ইত্যাদি কিতাবে ইমামগণ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।অন্যথায় বদ - মাযহাবী ভ্রান্ত আক্বীদা সম্পন্ন লোকদের সম্পর্কে তো হাদীস সমূহ এরশাদ করছে যে, তারা জাহান্নামের কুকুর। তাদের কোন আমল ক্ববুল হয় না। বদ - মাযহাব যদিও হাজর - ই আসওয়াদ ও মাক্বাম - ই ইব্রাহীমের মধ্য ভাগে মযলুম অবস্থায় নিহত হয়, আর সে ও এ নিহত হবার উপর ধৈর্য ধারন করে এবং সাওয়াবের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে,তবুও আল্লাহ তায়ালা তার কোন কিছুর দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।"( দার - ই কুতনী,ইবনে মাজাহ,বায়হাকী ইত্যাদি)।
** আমীরুল মু' মিনীন হযরত মাওলা আলী কাররমাল্লাহু তায়ালা ওয়াজহাহুল করীম থেকে বর্নিত,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,"যে দস্তরখানার উপর লোকেরা বসে আহার করে,আর তাদের মধ্যে কেউ " মুহাম্মাদ "কিংবা " আহমদ " নামের থাকে, তাদেরকে প্রত্যহ দু'বার পবিত্র করা হবে।" ( হাফিয ইবনে বুকায়র,দায়লামী,মুসনাদ - ই আবু সাঈদ নক্বক্বাশ ইবনে আদী কামিল), মোট কথা: যে ঘরে ওই পাক নাম দুটির কেউ থাকে,দিনে দু'বার ওই ঘরে আল্লাহর রহমত নাযিল হবে।
** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,"আমার মহা মহিম রব আমাকে এরশাদ করেছেন, "আমার ইজ্জত ও মহত্বের শপথ! যার নাম আপনার নাম অনুসারে রাখা হবে,তাকে দোযখের আযাব দেব না।( হুলিয়া - ই আবু নূ'আইম)।
** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," তোমাদের মধ্যে কার কি অসুবিধা আছে,যদি তার ঘরে একজনের নাম " মুহাম্মাদ" হয়? ( তাবাক্বাত - ই ইবনে সা'দ)।এ কারণে আল্লাহ তায়ালার রহমতে, এ ফক্বীর; আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন, আপন সব পুত্র ও ভাতিজাদের আক্বীক্বায় শুধু ' মুহাম্মাদ' নাম রেখেছি। তারপর পবিত্রতম এ নামের হিফাযত ও আদব রক্ষার্থে এবং পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের জন্য পৃথক পৃথক ডাকনাম নির্ধারণ করেছি।মহান আল্লাহর প্রশংসাক্রমে, আমার এখানে ' মুহাম্মাদ' নামের পাঁচজন মওজুদ রয়েছে।
** রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,"যখন কোন সম্প্রদায় কোন পরামর্শের জন্য একত্রিত হয়,আর তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি " মুহাম্মাদ" নামের থাকে এবং তাকে নিজেদের পরামর্শে শরীক না করে,তাহলে তাদের ওই পরামর্শের মধ্যে কোন বরকতই রাখা হবে না। (ত্বারাইফী,ইবনে জওযী)।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,"যার তিনটি পুত্র সন্তান পয়দা হয়,আর সে তাদের মধ্যে কারো নাম " মুহাম্মাদ" রাখলো না,সে অবশ্যই মূর্খ।(তাবরানী,কবীর)।
** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," যদি পুত্র সন্তানের নাম " মুহাম্মাদ" রাখো, তবে তার প্রতি সম্মান দেখাও,মজলিসে তার জন্য জায়গা প্রশস্ত করে দাও। তাকে কোন মন্দের সাথে সম্পৃত্ত করোনা,কিংবা তার মন্দ দো'আ করোনা।( হাকিম,মুসনাদুল ফিরদাউস, তারীখ - ই খতীব)।
** রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," যে পুত্র সন্তানের নাম ' মুহাম্মাদ' রাখবে,তাকে না মারধর করবে,না বঞ্চিত করবে। (মুসনাদ - ই বাযযার)। উত্তম হচ্ছে এটাই যে,শুধু ' মুহাম্মাদ' কিংবা ' আহমদ' নাম রাখবেন। সেটার সাথে ' জান' ইত্যাদি অন্য কোন শব্দ সংযোজিত করবেন না। কারণ,ফযীলত সমূহ তো শুধু বরকতময় নাম দু'টিরই বর্ণিত হয়েছে। (আন নূর ও আদ্ব দ্বিয়া, পৃ:- ১৮ - ২৪ সংক্ষেপিত,উপরোক্ত ১০ টি হাদীস শরীফ ও আলোচনা " ইরশাদাত - ই আলা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি ( বাংলা) এর ৩৭,৩৮ ও ৩৯ নং পৃষ্ঠা থেকে উল্লেখ করা হয়েছে।)
__________________
ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)
সংকলক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন