হজ্জ্ব ও কুরবানীর ফযীলত

 

হজ্জ্ব ও কুরবানীর ফযীলত


** নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেন," যে ব্যক্তি হজ্জ্ব অথবা

ওমরা করার নিয়তে ঘর থেকে বের হয়, তারপর মারা যায়; তাকে হিসাব - নিকাশের জন্য পেশ না করেই বলা হবে - জান্নাতে প্রবেশ

কর।( ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,পৃ:- ২০১)।


** যে ব্যক্তি নিজের মা অথবা পিতার

পক্ষ থেকে হজ্জ্ব করে তবে তাঁর ( অর্থাৎ -

মা অথবা পিতার) পক্ষ থেকে হজ্জ্ব আদায়

হয়ে যাবে এবং তার ( অর্থাৎ - হজ্জ্ব

পালনকারীর) অতিরিক্ত দশটি হজ্জ্বের

সাওয়াব অর্জন হবে।( দারে কুতনী,খন্ড -

২য়,হাদীস নং- ২৫৮৭,পৃ:- ২২৯,নামাযের আহকাম (হানাফী),পৃ:- ৩৫০)।


** হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস

রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,রসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," রমযান মাসের ওমরা হজ্জ্বের সমান।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ২৩৯৫,পৃ:- ৩৬১)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন," যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব করেছেন এবং তাতে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কাজ করেনি, সে হজ্জ্ব থেকে (বেগুনাহ হয়ে) ফিরবে সে দিনের মত,যে দিন তার মা তাকে প্রসব করেছে।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ২৩৯৩,পৃ:- ৩৬১)।


** হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলেছেন," যখন তুমি কোন হাজীর

সাক্ষাত পাবে তাকে সালাম করবে,মুসাফাহা করবে ও তাকে অনুরোধ করবে যেন তোমার জন্য আল্লাহর নিকট মাফ চায়,তার ঘরে প্রবেশের পূর্বে। কেননা,হাজী গুনাহ মাফ করা পাক ব্যক্তি।( মুসনাদে আহমদ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ২৪২৩,পৃ:-:৩৬৪)।


** হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা

হইতে বর্ণিত,হযরত রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলিয়াছেন,"আদম

সন্তান কুরবানীর দিন যে সব নেকীর কাজ

করিয়া থাকেন,তন্মধ্যে আল্লাহ পাকের

নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল হল কুরবানী

করা।কাল কিয়ামতে কুরবানীর পশু তার তার

শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত হইবে।(যা

কুরবানী দাতার পাল্লায় দেওয়া হইবে। যাহাতে নেকীর পাল্লা ভারী হইয়া যাইবে।)

কুরবানীর পশুর রক্ত যমীনে পড়ার পূর্বেই উহা

আল্লাহ পাকের নিকট কবুল হইবে।অত:পর,

তোমরা এই পুরষ্কারে আন্তরিকভাবে খুশী

হও।( তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ শরীফ,

মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৩৮৬,পৃ:- ২৩০)।


** একদা হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ফাতেমা

রদ্বিয়াল্লাহু আনহা কে ডাকিয়া এরশাদ

করেন," হে ফাতেমা! তুমি তোমার কুরবানীর

জন্তুর নিকটে যাও,কেননা; কুরবানীর জন্তু

জবাই করার পর রক্তের প্রথম ফোঁটা মাটিতে

পড়ার সাথে সাথে তোমার যাবতীয় গুনাহ

মাফ হইয়া যাইবে। হযরত ফাতেমা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা জিজ্ঞেস করিলেন,ইয়া রসূলাল্লাহ! এইটা কি শুধু আমার জন্য?

রহমাতুল্লীল 'আলামীন জবাব দিলেন,এইটা

আমাদের জন্য ও সকল মুসলমানদের জন্য।

(তারগীব,তরীকুল ইসলাম - দ্বিতীয় ভাগ,পৃ:-

৪২৩)।


** হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে

জিজ্ঞাসা করিলেন যে,কর্য করিয়া কুরবানী

করিব কিবা? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম এরশাদ করিলেন,"হ্যাঁ, করো।আল্লাহ তায়ালা কর্য পরিশোধের ব্যবস্থা করিয়া দিবেন।(দারে কুতনী ৪ - ২৭৭পৃ:,

তরীকুল ইসলাম - দ্বিতীয় ভাগ,পৃ:- ৪২৩)।


** হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,একদিন রসুলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর

সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন,ইয়া রসূলাল্লাহ! এ কুরবানী কি? হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর করলেন,তোমাদের পিতা হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের সুন্নাত ( নিয়ম)। তাঁরা পূনরায় জিজ্ঞেস করলেন,ইয়া রসুলাল্লাহ! পশমওয়ালা পশুদের পরিবর্তে কী হবে? (এদের পশম তো অনেক বেশী)। হুযুর

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

পশমওয়ালা পশুর প্রত্যেক পশমের পরিবর্তে একটি নেকী রয়েছে।( আল্লাহর দানের ভান্ডারকে কি তোমরা সংকীর্ণ মনে করছ?)।(আহমদ ও ইবনে মাজাহ শরীফ,মিশকাত

শরীফ,হাদীস নং- ১৩৯১,পৃ:- ২৩০)।


** হযরত ইমাম হাসান বিন আলী

রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হইতে বর্ণিত,হযরত

রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম বলিয়াছেন," যে ব্যক্তি আল্লাহর

ওয়াস্তে সন্তুষ্ট চিত্তে খুশি হইয়া কুরবানী

করিবে,এ কুরবানী তাহাকে জাহান্নামের

আগুন হইতে মুক্ত রাখিবে।( তাবরানী

শরীফ,তরীকুল ইসলাম - দ্বিতীয় ভাগ,পৃ:- ৪২৩)।

__________________

ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)

লেখক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন