নবীজির স্বপ্ন মোবারক
** হযরত সায়্যিদুনা আবদুর রহমান ইবনে সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,একদা হুযুরে আকরাম হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তশরীফ আনলেন আর ইরশাদ ফরমালেন," আজ রাতে আমি এক আশ্চর্যজনক স্বপ্ন দেখেছি। তা হচ্ছে -
১/ এক ব্যক্তির রুহ কবজ করার জন্য
'মালাকুল মওত' আলাইহিস সালাম আসলো,
কিন্তু তার মাতা - পিতার আনুগত্য করার সাওয়াব সামনে এসে দাঁড়ালো এবং সে বেঁচে গেল।
২/ এক ব্যক্তিকে কবরের আযাব ছেয়ে ফেললো,কিন্তু তার অযু ( রুপী নেকী) তাকে রক্ষা করলো।
৩/ এক ব্যক্তিকে শয়তান ঘিরে ফেললো,কিন্তু আল্লাহ তায়ালার যিকির(রুপী নেকী) রক্ষা করলো।
৪/ এক ব্যক্তিকে আযাবের ফিরশতারা ঘিরে
নিলো,কিন্তু তাকে ( তার) নামায ( রুপী নেকী) রক্ষা করলো।
৫/এক ব্যক্তিকে দেখলাম,পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ায় তার জিহবা বের হয়ে পড়ছিলো।আর একটা হাউযে পানি পান করার জন্য যাচ্ছিলো;কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছিলো।এর মধ্যে তার রোযা এসে গেলো।আর ( এ নেকী) তাকে পরিতৃপ্ত করে দিলো।
৬/ এক ব্যক্তিকে দেখলাম,যেখানে সম্মানিত নবীগণ আলাইহিমুস সালাম গোল হয়ে বসে আছেন। সেখানে সে তাঁদের নিকট যেতে চাচ্ছিল। কিন্তু তাকে( সেখান থেকে) তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল।এর মধ্যে তার - জানাবাতের ফরয গোছল!এসে হাজির হলো। আর ( এ নেকী) তাকে আমার নিকটেই বসিয়ে দিলো।৭/ এক ব্যক্তিকে দেখলাম,তার সামনে ও পেছনে, ডানে ও বামে; উপরে ও নিচে অন্ধকারই অন্ধকার।সে ওই অন্ধকারে হতভম্ভ ও পেরেশান।তখন তার হজ্জ্ব ও ওমরা সামনে
এসে গেলো।আর ( এ নেকীগুলো) তাকে
অন্ধকার থেকে বের করে আলোর মধ্যে
পৌঁছিয়ে দিলো।
৮/ এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে,সে মুসলমানদের সাথে কথা বলতে চাচ্ছিলো;
কিন্তু কেউ তার সাথে কথা বলতে রাজি না।তখন,আত্মীয়দের প্রতি সদ্ব্যবহার রুপী নেকীটা মু'মিনদের বললো," তোমরা তার
সাথে কথাবার্তা বলো" সুতরাং মুসলমানরা
তার সাথে কথা বলতে আরম্ভ করলো।
৯/ এক ব্যক্তির দেহ ও চেহারার দিকে আগুন
এগিয়ে আসছিল।আর সে তার হাতে তা দ্বারা দূর করতে চাচ্ছিল।তখন তার সদকা এসে পড়লো এবং তার সামনে ঢাল হয়ে তার
মাথার উপর ছায়া হয়ে গেল।
১০/ এক ব্যক্তিকে, যাবানিয়্যা ( আযাবের বিশেষ ফিরস্তাগণ) চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেললো। কিন্তু তার সৎ কাজের নির্দেশ দান ও অসৎ কাযে বাধা প্রদান;(রুপী নেকী)এসে হাযির হলো। আর তা তাকে রক্ষা করলো এবং
রহমতের ফিরিশতাদের হাতে সোপর্দ করে
দিলো।
১১/এক ব্যক্তিকে দেখলাম, সে হাঁটুর উপর ভর করে বসা ছিলো।কিন্তু তার ও আল্লাহ তায়ালার মধ্যভাগে পর্দা ছিলো। কিন্তু তার সচ্চরিত্র আসলো।এ ( নেকী) তাকে রক্ষা করে নিলো এবং আল্লাহ তায়ালার সাথে মিলিয়ে দিলো।
১২/ এক ব্যক্তিকে দেখলাম,তার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হচ্ছে।তখন তার ' আল্লাহর ভয়'( তাকওয়া এসে পড়লো।আর এ (মহান নেকীর বরকতে) তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হলো।
১৩/ এক ব্যক্তির নেকীর ওজন।হালকা ছিলো।কিন্তু তার দানশীলতা এসে পড়লো এবং নেকীর ওজন ভারী করে দিলো।
১৪/ এক ব্যক্তি জাহান্নামের কিনারায় দাঁড়ানো ছিল; কিন্তু তার ' আল্লাহর ভয়' ( রুপী নেকী) আসলো এবং সে বেঁচে গেলো।
১৫/ এক ব্যক্তি জাহান্নামে পতিত হলো,কিন্তু তার 'আল্লাহর ভয়ে' বিসর্জনকৃত অশ্রু এসে গেলো।আর (এ অশ্রুর বরকতে) সে বেঁচে গেলো।
১৬/ এক ব্যক্তি পুলছিরাতের উপর দাঁড়ানো ছিলো।এবং গাছের ডালের মতো কাপছিলো,
কিন্তু তার ' আল্লাহর প্রতি।ভাল ধারনা', যে " তিনি তাকে দয়াই করবেন।" তার (এ নেকী) তাকে রক্ষা করলো এবং সে পুলছিরাতের উপর দিয়ে অতিক্রম করে চলে গেলো।
১৭/ এক ব্যক্তি পুলছিরাতের উপর দিয়ে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে চলছিলো।তখন তার নিকট ' আমার উপর দুরুদ শরীফ পাঠ করা।' ( রুপী নেকী) এসে পড়লো। আর ( এ নেকী) তাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে।পুলছিরাত পার করিয়ে দিল।
১৮/ আমার উম্মতের এক ব্যক্তি জান্নাতের দরজাগুলোর নিকট পৌঁছলো।ওই সব দরজা তার জন্য বন্ধ ছিলো।তখন তার " লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" মর্মে সাক্ষ্য দেয়া (নেকীটি)আসলো।আর তার জন্য জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হলো।এবং সে জান্নাতে প্রবেশ করলো।১৯/ কিছু মানুষের ঠোটগুলো কাটা হচ্ছিল।আমি জিব্রাঈল আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞাসা করলাম।ওরা কারা? বললো,এরা মানুষের।মধ্যে চোগলখোরী করতো।
২০/ মানুষকে তাদের জিহবার সাথে লটকিয়ে রাখা হয়েছিলো।আমি জিব্রাঈল আলাইহিস
সালামকে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। বললো," এরা বিনা কারণে মানুষের বিরুদ্ধে গুনাহের অপবাদ দিত।"( শরহুস সূদুর,পৃ:-
১৮২,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৩৫ - ৩৬ - ৩৭)।
__________________
ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)
লেখক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন