তাদের বিধান


মোদ্দাকথা হল- দীর্ঘ ও বিরক্তিকর হওয়ার আশংকায় এতটুকুতে যথেষ্ট মনে করলাম। সংক্ষিপ্ত পরিসরে তাদের সকল ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য এবং এদের সমস্ত দল উপদল সমূহকে তলে ধরা সম্ভব হয়নি। ওরা তাদের দলভুক্ত হবে, যারা দাজ্জালের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করবে।


হে মুফতিয়ে মিল্লাত ওয়াদ্বীন!


এখন আপনার সমীপে প্রশ্ন রইল যে, এ বাতিল মৃতবাদী ওয়াহাবীরা অন্যান্য পথ ভ্রষ্ট খারেজী রাফেজী ফেরকা গুলোর মত কিনা?


اُولٰٸِكَ هُم شَرُّالبَرِيَّةِ , 


▪ (তারা সৃষ্টি কুলের মাঝে সবচেয়ে নিকৃষ্ট)

(সুরা, বাইয়্যিনাত আয়াত, নংঃ ৬)


اُولَٸِكَ کَالاَنعَامِ بَل هُم اَضَلُّ


▪ (তারা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়’ বরং তা অপেক্ষা ও অধিক পথভ্রষ্ট ) 

(সুরাহ আ'রাফ-১৭৯)


فَمَثَله کَمَثَلِ الکَلبِ اِن تَحمِل عَلَیهِ یَلهَث اَو تَترُکهُ یَلهَث


▪ (সুতরাং তার অবস্থা কুকুরের ন্যায়, তুমি তার উপর হামলা করলেও সেটা জিহবা বের করে দেয় এবং ছেড়ে দিলেও জিহবা বের করে দেয়।

(সুরা আরাফ-১৭৬)


উপরোক্ত কুরআনী ভাষ্যের আওতায় পড়ছে কিনা?


▪ হাদিসে পাকে আছে , 


مِثلُ اَهلِ البِدعِ شَرُّالخَلقِ وَالخَلِیقَةِ وَاَهلُ البِدعِ کِلاَبُ اَهلِ النَّارِ


(বিদয়াতীরা সৃষ্টির সর্ব নিকৃষ্ট ও জাহান্নামের কুকুর)


এ বাতিল মতবাদী ওয়াহাবীরা উপরোল্লিখিত হাদীসে নববীর অন্তর্ভূক্ত কিনা? নামাযে তাদের পিছনে ইকতিদা (অনুসরণ) করা, তাদের লিখিত পুস্তকাদি অধ্যয়ন করা এবং তাদের সাথে সংশ্রব রাখার ব্যাপারে হুকুম বা বিধান কি? যারা তাদেরকে মুহাব্বত করে এবং এ সব ভন্ডদের আলিম ও সুন্নাতপন্থী পীর মনে করে এদের সম্পর্কে মন্তব্য কি? কোরানের অকাট্য দলীলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা, উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়া, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতকে কাফের ও ফাছিক বলে আখ্যায়িত করা, সর্বজ্ঞাতা দাবী করা, আমিত্ব প্রকাশ করা, বিদ্রোহ করা এবং নবীর (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম) শানে ধিক্কারমূলক ও মান হানিকর উক্তি করা-এসব ফের্কাগুলোর মধ্যে কম-বেশী বিদ্যমান।


উত্তরঃ


হে প্রভু! আমি শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং তাদের উপস্থিতি হওয়া থেকে পানাহ চাচ্ছি। প্রাগুক্ত প্রশ্নটি কি উত্তরের মুখাপেক্ষী? স্বয়ং তদস্থলে সঠিক উত্তরটি রয়েছে। সম্মানিত প্রশ্নকারী মা শয়তানদের থেকে যে অভিশপ্ত উক্তি সমূহ বর্ণনা করেছেন, তা দ্বারা ওদের সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতা, কুফরী এবং মুরতাদ হওয়া অবশ্যম্ভাবী। আর এটাই মুসলমানদের কাছে দ্বি-প্রহরের ন্যায় স্পষ্ট।


وَسَیَعلَمُ الَّذِینَ ظَلَمُوا اَیَّ مُنقَلَبٍ یَّنقَلِبُونَ


▪ (এবং শিগগিরই যালিমগণ জানবে যে, কোন পার্শ্বের উপর তারা পলট খাবে)

(সুরাহ-শূয়ারা - আয়াত নং ২২৭)


اَلاَ لَععنَةُ اللّٰهِ عَلٰي الظّٰلِمِینَ


▪ (ওহে! যালিমদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাৎ)

(সুরাহ- হুদ- আয়াত নং- ১৮)


وَلَٸِن سَأَلتَهُم لَیَقُولَنَّ اِنَّمَا کُنَّا نَخُوضُ وَنَاعَبُ- قُل اَبِا للّٰهِ واٰبَاتِهٖ وَرَسُولِهٖ کُنتُم تَستَهزِنُونَ- لاَ تَعتَذِرُوا قَد کَفَرتُم بَعدَ اِیمَانِکُم-


▪ (এবং হে প্রিয় মাহবুব! যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তবে বলবে, আমরা তো এমনি হাসি খেলার মধ্যে ছিলাম। আপনি বলুন- তোমরা কি আল্লাহ, তার আয়াত সমূহ এবং তদীয় রাসুলকে বিদ্রুপ করছিলে? মিথ্যা অজুহাত রচনা করোনা, তোমরা ঈমান আনয়নের পর কাফির হয়ে গেছো।)

(সুরাহ তাওবা - আয়াত নং- ৬৫)।


یَخلِفُونَ بِاللّٰهِ مَا قَالُوا وَلَقَد قَالُوا کَلِمَةَ الکُفرِ وَکَفَرُوا بَعدَ اِسلاَمِهِم


▪ (আল্লাহর কসম করে যে, তারা বলেনি এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তারা কুফরের কথা বলেছে এবং ইসলাম গ্রহণের পরে তারা কাফির হয়ে গেছে।)

(সুরাহ তাওবা - আয়াত নং- ৭৪)


لَعَنَهُمُ اللّٰهُ بِکُفرِهِم فَقَلِیلاً مَّا یَٶمِنُونَ


▪ (বরং আল্লাহ তাদের উপর অভিশাপ করেছেন তাদের কুফরের কারণে। সুতরাং তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যকই ঈমান আনে।)

(সুরা বাক্বারাহ আয়াত নং- ৮৮)


وَالَّذِینَ یُٶذُونَ رَسُولَ اللّٰهِ لَهُم عَذِابُُ اَلِیمُُ


▪ (আর যারা আল্লাহর রাসুলকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।)

(সুরাহ তাওবা- আয়াত নং- ৬১)


اِنَّ الَّذِینَ یُٶذُونَ اللّٰهُ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ فِي الدُّنیَا وَالاٰخِرَةِ وَاَعَدّ لَهُم عَذَابًا مُّهِینًا


▪ (নিশ্চয় যারা কষ্ট দেয় আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে, তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত দুনিয়া ও আখিরাতে এবং আল্লাহ তাদের জন্য লাঞ্ছনার শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।)

(সুরাহ্ আহযাব- আয়াত নং- ৫৭)।


উপরোক্ত আয়াতে করীমার বোধগম্য বিষয় হল যে, যারা সাধারণ মুসলমানের উপর অত্যাচার চালায় তাদের পরিণাম অত্যন্ত খারাপ, তাদের আশ্রয়ন জাহান্নাম এবং তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত হয়ে থাকে। আর যারা ওলীগণ, আম্বিয়ায়ে কেরাম ও স্বয়ং ছরকারে দো'আলম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামা’র শান-মানের উপর অত্যাচারের ষ্টীম রোলার চালায়, তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত কতইনা প্রবল? তাদের আশ্রয়ন দোযখের সর্ব নিকৃষ্ট স্তরে।


হে সুন্নী ভায়েরা!


যদি আপনারা তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন কিভাবে এত মারাত্মক অভিশপ্ত কুফরী কথা বার্তা বলতে পেরেছ? তখন তারা কৌশল এঁটে বসে। আদ্যোপান্ত ভ্রান্ত বিশ্লেষণ করবে, যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে বলবে- আমাদের উদ্দেশ্য কারো মানহানি করা ছিল না। আমরা এমনি ভাবেই হাস্যচ্ছলে তা বলে দিয়েছি।


পরাক্রমশালী আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন— হে মাহবুব! আপনি তাদেরকে বলে দিন, আল্লাহ, তাঁর আয়াত এবং তদীয় রাসুলের সাথে কি তোমরা বিদ্রুপ করতেছ? তাল-বাহানা করো না তোমরা ঈমান আনয়নের পরে কাফির হয়ে গেছো।

তাদের উপরোক্ত ভ্রান্ত বক্তব্য সম্পর্কে আপত্তি করা হলে নিজেদেরকে সামলানোর যখন কোনই কৌশল বাকী থাকবে না তখন সে মিথ্যুক শয়তানরা একটু পিছু হঁটে বলবে আল্লাহর শপথ, আমরা তো এ ধরনের মান হানিকর উক্তি করিনি। এ রকম কটুক্তি আমাদের কিতাবাদিতে নেই, এটা আমাদের উপর জঘন্যতম অপবাদ। তোমরা তো অজ্ঞদের সামনে ধূর্তামী করে যাচ্ছ। মহাশক্তিশালী আল্লাহ বলেন- নিশ্চয়ই তারা কুফরী আচরণ করেছে এবং ইসলাম গ্রহণের পর কাফির হয়ে গেছে।


মহান আল্লাহ বলেন- وَاَنَّهُم لاَ اَیمَانَ لَهُم , 


▪ (তাদের কসমের কোন গ্রহণ যোগ্যতা নেই।)


প্রজ্ঞাময় আল্লাহ পাক আরো বলেন-


وَاَتَّخَذُوا اَیمَانَهُم جُنَّةً فَصَدُّوا عَن سَبِیلِ اللّٰهِ فَلَهُم عَذَابُُ مُّهِینَ-


▪ (তারা আপন শপথগুলোকে ঢাল স্বরূপ গ্রহণ করে নিয়েছে। অতঃপর আল্লাহর পথে বাধা দিয়েছে। সুতরাং তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি ।)

(সুরাহ্ মুজাদালাহ- আয়াত নং- ১৬)


তাদের কুফরীর কারণে আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর অভিশাপ করেছেন, তাইতো তাদের খুব কম লোক ঈমান আনয়ন করে। যারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দিয়ে থাকে তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তাদের উপর দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশাপ দিয়ে থাকেন আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।


উল্লেখিত ওয়াহাবী, ন্যাচারী (প্রকৃতিবাদ) কাদিয়ানী, গায়রে মুকাল্লিদীন, দেওবন্দী এবং চাকড়ালুভী (আল্লাহ তাদের সবাইকে নিরাশ করুন) ইত্যাদি ফের্কা গুলো অত্র আয়াতের মর্মানুসারে নিঃসন্দেহে কাফির ও ধর্মত্যাগী। ইসলামী আইন মতে যদিও তাদের মধ্যে দু'একটি কুফরী পাওয়া গেছে; কিন্তু শত শত কুফরী তাদের উপর আরোপিত হয়েছে । যেমনিভাবে মৌলভী ইসমাঈল দেহলভীর উপর আরোপ করা হয়ে থাকে। ইদানিং তাদের অনুসারী ও বংশধরদের মাঝে এমন কাউকে পাওয়া মুশকিল; যে কাফির হয়নি। তা এভাবে যে, مَن شَكَّ فِي کُفرِهٖ فَقَد کَفَرَ; অর্থাৎ (যে কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ করে নিশ্চয় সে কাফির হয়ে গেছে) যারা ওয়াহাবীদের অভিশপ্ত উক্তি সমূহের উপর অবগত হয়েও তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে তারাও কাফির। নিঃসন্দেহে তাদের পূর্বসূরী, উত্তরসূরী, অনুসারী এবং অনুসৃত সকলেই প্রশ্নোল্লিখিত হাদিসের আওতায় পড়েছে। অবশ্যই তারা সকলেই বিদয়াতী, জাহান্নামী এবং জাহান্নামের কুকুর। এদের (ওয়াহাবী) কে খারেজী ও রাফেযীদের সাদৃশ্য বলা, এটা খারেজী-রাফেযীদের উপর জুলুম করা ও ওয়াহাবীদের বেয়াদবীর কমতি স্বীকার করার নামান্তর। কেননা খারেজী রাফেযীদের স্বেচ্ছামূলক বেয়াদবী শুধুমাত্র সাহাবীগণ ও আহলে বায়াত (রাঃ) এর উপর সীমাবদ্ধ ছিল। আর তাদের (ওয়াহাবী) বেয়াদবী সম্মানিত নবীগণ এবং খোদ্ ইমামুল আম্বিয়া হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামা’র শানে হয়েছে। সুতরাং উভয়ের মাঝে পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে গেল। এ সমস্ত আলোচনা অধিক কলেবরে আমি অধমের সালিস্ সুয়ূফ, কাওকাবুহু শিহাবিয়্যাহ, সুবহানাস্ সুব্বুহ, ফতওয়াল হেরামাঈন, হুসামুল হেরামাইন, তামহীদ এ ঈমান, ওয়া আম্বাউল মোস্তফা, খালিসুল ই'তিক্বাদ, ক্বছীদাতুল ইস্তেমদাদ ও তার ব্যাখ্যা কাশফে দ্বালালে দেওবন্দ ইত্যাদি পুস্তিকাসমূহে সবিস্তারে রয়েছে। (ওয়ালিল্লাহিল হামদ) তাদের পিছনে ইক্বতিদা করা সম্পূর্ণ বাতিল, যেমনিভাবে আন-নেহী আল আকীদ- কিতাবে আমি (আ’লা হযরত) বর্ণনা করেছি। তাদের বই পুস্তক অধ্যয়ন করা হারাম, কিন্তু রদ্ করার উদ্দেশ্যে আলিমদের জন্য বৈধ। তাদের সাথে সংশ্রব রাখা, তাদের সাথে সালাম বিনিময় করা, তাদের সংস্পর্শে বসা, তাদেরকে পাশে বসানো, অসুস্থ হলে সেবা শুশ্রুষার উদ্দেশ্যে দেখতে যাওয়া, মৃত্যু বরণ করলে মুসলমানদের রীতি-নীতি অনুযায়ী গোসল ও কাফন দেয়া, তাদের কফিন বহন করা, ইছালে সাওয়াব করা ইত্যাদি হারাম। এমনকি জানাযার নামায পড়া কুফরী পর্যায়ের।


▪ আল্লাহ বলেন—


وَاَمَّا یُنسِیَنَّكَ الشَّیطَانُ فَلاَ تَقعُد بَعدَ الذِّکرٰی مَعَ القَومِ الظَّالِمِینَ-


(এবং যখন শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দিবে, অতঃপর স্মরণ হলে জালিমদের নিকট বসো না)।

(সুরাহ্ আনআম আয়াত নং-৬৮)।


▪ আরো বলেন-


 وَلاَ تَرکَنُوا اِلٰی الَّذِینَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّکُمُ النَّارُ


(তোমরা জালিমদের প্রতি ঝুঁকে যেয়ো না, কেননা এতে তোমাদেরকে আগুন স্পর্শ করবে)।

▪ এ প্রসঙ্গে উম্মতের কান্ডারী নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-


فَإِیَّاکُم وَاِیَّاهُم لاَ یُضِلُّونَکُم وَلاَ یَفتِنُونَکُم


 (তোমরা তাদের থেকে সতর্ক থাক, আর তাদেরকে তোমাদের থেকে দূরে রাখ। যাতে তারা গোমরাহী ও ফিৎনায় তোমাদেরকে জড়িত করতে না পারে)।


▪ অন্য একটি হাদিসে নববীতে রয়েছে-


لاَتُجَالِسُوھُم وَلاَتُٶَاکِلُوھُم وَلاَتُشَارِبُوھُم وَاِذَا مَرِضُوا فَلاَ تَعُودُوھُم وِاِذَا مَاتُوا فَلاَ تَشهَدُوھُم وَلاَ تُصَلُّوا عَلَیهِم لاَ تُصَلُّوا مَعَهُم-


অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাদের পাশে বসোনা, তাদের সাথে পানাহার করো না, তারা অসুস্থ হলে সেবা শুশ্রুষা করো না, তারা মৃত্যু বরণ করলে তাদের জানাযায় হাজির হয়ো না, তাদের উপর জানাযার নামাজ পড়ো না এবং তাদের সাথে নামায আদায় করো না।


▪ আল্লাহ জাল্লাশানুহু বলেন-


وَلاَ تُصَلِّ عَلٰی اَحَدٍ مِّنهُم مَاتَ اَبَداً وَّلاَتَقُم عَلٰی قَبرِهٖ-


অর্থাৎ হে মাহবুব! তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু উপর কখনো জানাযার নামায পড়বেন না এবং তাদের কবরের পাশে দাঁড়াবেন না।

(সুরা তাওবা আয়াত নং- ৮৪)।


যারা ওয়াহাবীদের বিভ্রান্তিমূলক উক্তিসমূহের উপর অবগত হয়েও তাদেরকে ভালবাসবে, তারাও অনুরূপভাবে কাফির।

▪ মহান আল্লাহ বলেন-


وَمَن یَّتَوَلَّهُم مِنکُم فَاِنَّهُ مِنهُم-


(এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে কেহ তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখে, সেও তাদের অন্তর্ভূক্ত)

(সুরা মায়েদা আয়াত নং-৫১)।


▪ দয়াল নবী এরশাদ করেছেন-


مَن اَحَبَّ قَوماَ حَشَرَهُ اللّٰهُ مَعَهُم-


(যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসবে, আল্লাহ তাকে তাদের সাথে হাশর করাবেন)।


▪ আরো বলেন-


مَن ھَوٰی الکَفَرَةَ فَهُوَ مَعَهُم-


(যে কাফিরদের সাথে মুহাব্বত রাখবে, সে তাদের সাথী হবে)।


যে তাদেরকে আলেমে দ্বীন এবং সুন্নাতানুসারী মনে করবে সে নিঃসন্দেহে কাফির ধর্মত্যাগী।


▪ শেফায়ে কাজী আয়ায, যখীরাতুল উক্বা, বাহরুর রায়িক্ব, মাজমায়ুল আনহার, ফতওয়ায়ে বাযযাযিয়াহ্ এবং দুররুল মুখতার ইত্যাদি নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে রয়েছে—


مَن شَكَّ فِی عَذَابِهٖ وَکُفرِهٖ فَقَد کَفَرَ-


(যে তার শাস্তি এবং কুফরির ব্যাপারে সন্দিহান হবে, নিশ্চয় সেও কাফির)।

১.ইমাম কাজী আয়াজঃ আশ শিফা-২/২১১) 

২.ইমাম ইবনে আবেদীন শামীঃ তাম্বীহুল ওলাত ওয়াল আহকাম

৩.ইমাম ইবনে আবেদীন শামীঃ রাসায়েলে ইবনে আবেদীন-১/৩১৬

৪.ইমাম ইবনে আবেদীন শামীঃ দুররে মুখতার’।

৫.আ'লা হযরতঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা।

৬.আ'লা হযরতঃ ইরশাদে আ'লা হযরত।


যখন তাদের মুসলমান বলাতো দূরের কথা, তাদের কুফরির ব্যাপারে সন্দেহ করলে কাফির হয়ে যায়, (নাউযুবিল্লাহ) তাহলে তাদেরকে আলেমে দ্বীন অথবা সুন্নাতের অনুসারী মনে করা কতইনা নিকৃষ্টতম কুফরী!


وَذَالِكَ جَزَاءُ الظَّالِمِینَ


(এটাই হল জালিমদের প্রতিদান)।


  

পরিশিষ্ট


মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ আল্লাহ তায়ালা মানবরূপী শয়তানদের অনিষ্ট থেকে পানাহ করুন। মুসলমান ভাইদের অন্তর দৃষ্টিকে খুলে দিন এবং শত্রু-মিত্র পার্থক্য করার তাওফীক দান করুন। ভাবতে অবাক লাগে শত্রুতা করে কার সাথে? নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা'র সাথে? আফসোস! হাজারো আফসোস! দোস্ত-দুশমন পরিচয় লাভ করা, নিজেদের শত্রুদের কবল থেকে পলায়ন করা এবং তাদের চেহারা দেখে রক্তাশ্রু ঝরানো উচিত।


হে মাহবুবে খোদার (ﷺ) বিরুদ্ধাচরণকারী, তার সম্পর্কে কটুক্তি ও গালমন্দকারী, তাঁর প্রতি গালমন্দ লিখে প্রকাশকারী গোষ্ঠী, ঐ শয়তানদের সাথে সংশ্রব রক্ষাকারী!

কেয়ামত ও হাশরের দিন কি অনুষ্ঠিত হবেনা? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কি মুখ দেখাতে হবেনা? তাঁর সুপারিশ ভিক্ষার জন্য কি হাত বাড়াতে হবেনা? প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! আল্লাহকে ভয় করুন এবং তদীয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে সমীহ  করুন। আল্লাহ রাব্বল আলামীন আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।


আমিন! আল্লাহ অধিক জ্ঞাত। বিহুরমাতি সাইয়্যিদিল মুরসালীন।


  ________________

কিতাবঃ ওয়াহাবীদের ভ্রান্ত আকিদাহ ও তাদের বিধান।

মুলঃ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান ফাজেলে বেরলভী (রহঃ)।

ভাষান্তরঃ মাওলানা মুহাম্মদ ইছমাইল।

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন