সমাজে প্রচলিত কার্যকলাপ শরীয়ত নির্দেশিত পাবন্দীরই নামান্তর
‘মোজাল্লাতুল আহকাম’ ও ‘তাশরীউল ইসলাম’ এ মুসলিম সমাজে প্রচলিত কার্যকলাপ প্রসঙ্গে কয়েকটা ‘কায়দা’ (قاعده) উল্লেখ করা হয়। যথা-
المعروف عرفا كالمشروط شرطًا المشروط عرفا كا المشروط شرعًا .
অর্থাৎ- সমাজে প্রচলিত কার্যকলাপের পাবন্দী অপরিহার্য; যেমনি শর্ত সাপেক্ষ বিষয়াদির উপস্থিতির জন্য তার শর্তাবলীর উপস্থিতি আবশ্যকীয়। অন্যভাবে তার অর্থ এরূপ দাঁড়ায়- মুসলমানদের মধ্য প্রচলিত বিষয়াদির পাবন্দি শরীয়ত নির্দেশিত বিষয়ের পাবন্দীরই নামান্তর মাত্র। তাই অন্যত্র বলা হয়-
والعادة المطردة تنزل منزل الشّرط .
অর্থাৎ- ‘মুসলিম সমাজে প্রচলিত বিষয় কোন শর্ত সাপেক্ষ বিষয়ে তার পূর্ব শর্তেরই পর্যায়ভূক্ত।’ অন্যরূপে,
التعبين بالعرف كالتعبين بالنص .
অর্থাৎ- ‘ওরফ’ বা প্রচলিত বিষয়াদিকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করে কোন নীতি নির্ধারণ করা, কোরআন মজিদ ও হাদিস শরীফ দ্বারা নীতি নির্ধারণেই শামিল। তাই বলা হয়-
الثابت بالعرف كالثابت بالنص.
অর্থাৎ- ‘ওরফ’ দ্বারা প্রমাণিত বস্তু পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত বিধানাবলীরই সমতুল্য। যেমন, আহারের সময় সালাম না দেয়া বা সালামের জবাব না দেয়া মুসলিম সমাজের একটা প্রচলিত নিয়ম। অথচ তা নিষিদ্ধ বলে কোরআন মজিদ কিংবা হাদিসলব্ধ কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় না।
এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ্য যে, একদা শেখ আবুল কাসেম নাছীরাবাদী (যিনি হযরত আবু ছায়ীদ আবুল খায়রের (رحمة الله) পীর ছিলেন) স্বীয় সঙ্গী ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আহারে রত ছিলেন। তখনি ইমাম গাজ্জালীর (رحمة الله) ওস্তাদ হযরত ইমামুল হারামাঈন (رحمة الله) সেখানে এসে পৌঁছলেন। তিনি আহাররত সবাইকে ‘সালাম’ বললেন। কিন্তু তাঁর দিকে কেউ ভ্র“ক্ষেপও করেননি। আহার সমাপনের পরক্ষণেই ইমামুল হারামাঈন (رحمة الله) তাঁদের লক্ষ্য করে বললেন, আমি ‘সালাম’ বললাম; অথচ আপনারা তার কোন জবাবই দিলেন না। তা কি মোটেই উচিৎ হয়েছে? শেখ আবদুল কাসেম তদুত্তরে বললেন- ‘ওরফ’ বা প্রচলিত নিয়ম হলো- ‘‘যদি কেউ কোন আহাররত লোক সমাগমে উপস্থিত হয়; তবে সে আগত ব্যক্তি প্রথমে তাদের সাথে আহারে বসে যাবেন এবং আহার পর্ব শেষ হলে দাঁড়িয়ে জামায়েতের সবাইকে ‘সালাম’ বলবেন।” তখন ইমামুল হারামাঈন প্রশ্ন করলেন- এ নিয়মের উৎস কি? শুধু বিবেক যুক্তি? না, পবিত্র কোরআন কিংবা হাদিস শরীফেও তার কোন প্রমাণ রয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন- ‘আক্বল’ বা যুক্তি বিবেকই তার প্রমাণবহ। কেননা, ‘আহার শুধু এবাদতের জন্য শক্তি সঞ্চায়ের নিমিত্তই।’ যে আহারে এ নিয়ত বা উদ্দেশ্য থাকে, সে আহারও একটা ‘এবাদত’ বলে বিবেচিত হয়। কাজেই আহাররূপী এবাদতরত অবস্থায় সালামের জবাব কিভাবে দেয়া যায়?
অনুরূপ, একদা হযরত খাজা কুতুব উদ্দীন (رضي الله عنه) তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে আহারে রত ছিলেন। এমতাবস্থায় শেখ নিজাম উদ্দীন আবুল মোআয়্যাদ (رحمة الله) এসে তথায় উপস্থিত হলেন। তিনি তাঁদের প্রতি সালাম প্রদর্শন করলেন। কিন্তু খাজা সাহেব তাঁর সালামের জবাবতো দেননি; এমনকি তাঁর দিকে ভ্র“ক্ষেপও করেননি। এতে হযরত আবুল মোআয়্যাদ মনক্ষুন্ন হয়ে তাঁদের আহার সমাপনান্তে সালামের জবাব না দেয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তদুত্তরে হযরত খাজা ছাহেব বললেন- আমরা তো আল্লাহর এবাদতেই ছিলাম; সালামের জবাব তখন কিভাবে দেয়া যায়? (ফাওয়ায়েদুচ্ছালেকীন)।
ইব্নে ক্বাইয়্যেম্ বলেছেন- শরীয়তের আহকাম বা নির্দেশাবলীর (উছুলভিত্তিক) পরিবর্তন স্থান, কাল, অবস্থা এবং মানুষের নিয়ত ও স্বভাবের পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত।
‘মোজাল্লাহয়’ উল্লেখ করা হয়-
لا ينكر تغير الاحكام وبتغير الزمان وبتغير الامكنة والاحوال .
অর্থাৎ- এটা অনস্বীকার্য যে, স্থান, কাল ও অবস্থা বা পরিস্থিতির পরিবর্তনের ফলে শরীয়তের আহকামও পরিবর্তিত হয়। তবে দ্বীনের বুনিয়াদী বিষয়াদি, তাওহীদ ও ঈমানের বিধানসমূহ নিখুঁত, অপরিবর্তনীয় এবং চিরস্থায়ী। এ সব বিধানে কোরআন মজিদ ও হাদিস শরীফের যথাযথ অনুসরণ একান্ত আবশ্যকীয়।
‘পরিবেশ, স্থান ও কালের পরিবর্তনে কোরআন ও হাদিস সঞ্চাত দলিল লব্ধ আহকামের পরিবর্তন হয়’- এ ‘উছুলের’ ভিত্তিতে আনুসঙ্গিকক্রমে এমন সব মাছআলার অনুমতিও প্রচলিত হয়, যেগুলোর প্রাসঙ্গিক সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলে না। অথচ সেগুলোও পালনীয়।
মোদ্দাকথায়, কালের পরিবর্তনে ‘মাছআলা’ ও পরিবর্তিত হতে পারে। সম্ভবতঃ তারই ভিত্তিতে ছদ্রুশ্ শরীয়ত হযরত মৌলানা আমজাদ আলী (رحمة الله) তাঁর প্রণীত ‘বাহারে শরীয়ত’-৪র্থ খণ্ডে উল্লেখ করেছেন যে, বর্তমানে (তৎকালীন) ওলামায়ে কেরাম জানাজার সাথে চলার সময় পদাতিকদের জন্য ‘সরবে যিকির’ করার অনুমতি দিয়েছেন।
আল্লামা সৈয়দ মুহসিনুল আমীন আল-হুসাইনী মিসরী বলেন-
ورفع الصوت بالذكر عند حمل الميت اذا كان فى رفع الصوت فائدة كالاعلان بذكر الله واتعاظ السامع ونحو ذالك، نعم لو فعلت بقصد الحصوصية والورود كانت بدعة ويرادبها اهداء الثواب إلى الميت، فيعمها ما دل على جواز اهداء الثواب للميت .
অর্থাৎ- জানাজা নিয়ে পথচলার সময় উচ্চস্বরে যিকির করা। যখন উচ্চস্বরে যিকির করার মধ্যে বিশেষ উপকার রয়েছে। আল্লাহর যিকিরের এ’লান কিংবা প্রচার করা এবং শ্রোতাদের মৃত অন্তরকে জাগ্রত করা উদ্দেশ্য হবে। হ্যাঁ, শরীয়তে এটি করার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সে ধরণের ইচ্ছা ও খেয়াল করা বেদাত। আর এ ধরণের যিকির এবং তেলাওয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে মৃতের উপর ছাওয়াব পৌঁছানো। কাজেই শরীয়তে যেখানে মৃতের উপর ছাওয়াব পৌঁছানো জায়েয বলে প্রমাণিত রয়েছে সেহেতু জায়েযের দলীল সর্বসাধারণের ক্ষেত্রে প্রমাণিত। এ সমস্ত কিছু ইচছা ও নিয়্যতের উপরই নির্ভরশীল। আল্লাহর যিকির সর্বাবস্থায় জায়েয ও মুস্তাহাব। সেটি উচ্চস্বরে হউক কিংবা নিম্নস্বরে (গোপনে) হউক। সাধারণভাবে আল্লাহর যিকির জায়েয। সাধারণ তথা অনির্দিষ্টকে নির্দিষ্ট করা নিজের খেয়াল-খুশি অনুযায়ী কখনো জায়েয নয়। হ্যাঁ, তবে এটি শরীয়তে বাধ্যবাধকতা আছে মনে করা বেদাত ও নাজায়েয।
‘মুহীত বুরহানী’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে- উচ্চস্বরে অর্থাৎ رفع الصوت দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে হৈ চৈ (চিল্লাচিলি) করে কান্নাকাটি করা, কাপড় ছিঁড়ে ফেলা, পাগলামী করা, মাতামদারী করা এ সমস্ত কিছু মাকরূহ। যিকির করা, কালেমা পাঠ করা নিষেধ নয়।
যেমন হযরত ইমাম হাছান বসরী (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে-
ذكر وقرأت القرآن لاتنافى بيـنهما .
অর্থাৎ- যিকির করা ও কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করার মধ্যে কোন অসুবিধা নাই।
رفع الصوت এর উদ্দেশ্য হচ্ছে-
كان عليه اهل الجاهلية من الافراط فى مدح الميت عند جنازة حتى كانوا يذكرون ماهو سبب المحال، (محيط برهانى، جلد-৬، صفحه: ৪১)
অর্থাৎ- জাহেলী যুগে লোকগণ মৃত ব্যক্তির প্রশংসা জানাজার সময় এমনভাবে বর্ণনা করত যা হওয়াটা মোটেই সম্ভব নয়। অর্থাৎ অতিমাত্রায় প্রশংসা করত। ইহাই ফকীহগণ মাকরূহ বলেছেন।
‘জা-আল হক্ব’ এ ‘হাদিকাতুন্নদীয়্যাহ’ নামক কিতাব থেকে উদ্ধৃত ‘ইমাম আবদুল গণি নাবিলিছীর’ (رحمة الله) এক মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়-
ان بعض المشائخ جوزوا الذكر الجهرىّ ورفع الصوت بالتعظيم قدام الجنازة وخلفها لتلقين الميت والاموات والاحياء وتنبيه الغفلة والظلمة ورطابة صداء القلوب وقساوتها بحبّ الدنيا ورباستها .
অর্থাৎ- কোন কোন ফকীহ ‘জানাজার’ সম্মুখে ও পশ্চাতে মৃত ও জীবিতদের ‘তাল্ক্বীন’ বা শিক্ষা প্রদান অন্য মনষ্ক ও পার্থিব কথাবার্তায় লিপ্ত হয়ে সীমালঙ্ঘনকারীদের সতর্ককরণের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ‘যিকির’ করা জায়েজ বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া পার্থিব ভালবাসা এবং কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা লাভের মোহে যাদের অন্তর পাষাণ হয়ে গিয়েছে, তাদের অন্তরে আল্লাহর স্মরণ (ذكـر) দ্বারা ধার্মিক সূলভ নম্রতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে উচ্চরবে যিকির করা ওলামা ও ফকীহ সম্প্রদায়ের মতে বৈধ।
মোটকথা, কোন কোন ‘ইমাম’ জানাজার সম্মুখে পশ্চাতে উচ্চরবে ‘যিকির’ পাঠ করা জায়েজ বা বৈধ বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন; যাতে তদ্বারা মৃত ও জীবিত সবাই শিক্ষা গ্রহণে প্রয়াস পায় এবং অন্য মনষ্ক বা অলস ব্যক্তিবর্গের অলসতা, অন্তরের কলুষতা, কঠোরতা, পার্থিব লোভ, কর্তৃত্ব বা ক্ষমতার মোহ দূরীভূত হয়ে যায়।
আ’লা হযরত মৌলানা শাহ্ আহমদ রেজা খাঁন (رحمة الله) তাঁর প্রণীত পুস্তিকা ‘‘মাওয়াহেবু আরওয়াহিল কুদুছ;’’ ৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন যে, ‘ওরফে আম’ (عرف عام) বা সমাজে সাধারণভাবে প্রচলিত বিষয়ও শরীয়তের বিশেষ দলিল হিসেবে পরিগণিত; এ ধরণের দলিল দ্বারা ‘মোস্তাহাব’ পর্যায়ের কার্যাদি প্রমাণিত হয়। এ জন্যই তো প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের আলেম, ছুফী, অলী ও বুজুর্গগণ জানাজার সাথে চলার পথে উচ্চরবে যিকির’ করে আসছেন।
‘আল্-আশবাহ্ ওয়ান্নাজায়ের’ নামক কিতাবে উল্লেখ করা হয়-
العادة محكمة واصلها قوله عليه السلام ما راه المسلمون حسنا فهو عند الله حسن .
অর্থাৎ- সমাজে প্রচলিত কাজ শরীয়তে গ্রহণযোগ্য। তা প্রমাণিত হয় হুজুর (ﷺ) এর এ পবিত্র এরশাদ থেকে “মুসলমানগণ যা ভাল মনে করে তা আল্লাহ্ তায়ালার নিকটও ভাল এবং পূণ্যময়।”
এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ করা হয়-
واعلم ان اعتبار العادة والعرف برجع اليه الفقه فى رسائل كثيرة حتى جعلوا ذالك اهلًا .
অর্থাৎ- ‘সামাজিক প্রচলন’ বা ‘ওরফ’ শরীয়তে গ্রহণযোগ্য হয় উক্ত হাদিসের অনুসরণেই। এ প্রসঙ্গে ফিক্হ শাস্ত্রে যথেষ্ট সংখ্যক পুস্তক- পুস্তিকা প্রণীত হয়েছে। এমনকি ফকীহ সম্প্রদায়ের নিকট তা ‘‘উছুল’’ (মৌলিক প্রমাণ) এর মর্যাদা রাখে।
‘বরজন্দী’ নামক কিতাবে উল্লেখ করা হয়-
العرف ايضا حجة بالنص قال عليه السلام ماراه المسلمون فهو عندالله حسن
অর্থাৎ- ‘ওরফ’ শরীয়তের একটা গ্রহণযোগ্য দলিল। তার উৎস হল নবী করীম (ﷺ)-এর পবিত্র হাদিস ‘মুসলমানরা যা পূণ্যময় মনে করে’ আল্লাহ্ তায়ালার নিকটও তা পূণ্যময় হিসেবে পরিগণিত।
শরহে ‘হেদায়া’ ‘আইনী’তে উল্লেখ করা হয়-
وبذلك جرت العادة الغاشية وهى من احد الحجج التى يحكم بها قال عليه السلام ماراه المسلمون حسنا فهو عندالله حسن .
অর্থাৎ- যে প্রচলিত বিষয় সর্বজনবিদিত ও সর্বস্বীকৃত তা শরীয়তের একটা বিশেষ দলিল। বিচারের রায়ও তদানুসারেই হয়। কেননা হুজুর (ﷺ) এরশাদ করেছেন ‘মুসলমানগণ যা ভাল মনে করে তা আল্লাহ্ তায়ালার নিকটও ভাল বলে গণ্য হয়।’
‘মুহীতে বোরহানী’তে উল্লেখ করা হয়-
لان العرف اذا استمر نزل منزلة الاجماع .
কেননা, ‘ওরফ’ যখন ‘স্থায়ী প্রচলন’ লাভ করে, তখন তা ‘ইজমা’র পর্যায়ে পড়ে। যেমন- ‘নফল নামাজ’ জমা’ত সহকারে আদায় করা ফকীহদের মতে মাকরূহ হলেও যুগের পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে তা জায়েজ বলেই স্বীকৃতি লাভ করেছে।
لا يكره الاقتداء بالامام فى النوافل مطلقًا نحو القدر والرغائب وليلة النصف من شعبان ونحو ذالك لان ماراه المسلمون حسنا فهو عندالله حسن خصوصًا اذا استمرّ فى بلاد الاسلام والامصار .
অর্থাৎ- নফল নামাজসমূহে ইমামের পিছনে ‘ইক্তেদা’ করা সাধারণত জায়েজ; মকরূহ নয়। যেমন- লায়লাতুল ক্বদর, লাইলাতুর রাগায়েব, পনরই শাবানের রাত্রি এবং অন্যান্য নফল নামাজসমূহ। যেহেতু মুসলমানরা এ নামাজসমূহ জমাত সহকারে পড়া অধিক পূণ্যময় মনে করে সেহেতু তা আল্লাহ্ তায়ালার নিকটও পূণ্যময় হিসেবেই গৃহীত বলে অনুমিত; বিশেষত, যখন তা মুসলমান অধ্যুষিত দেশ কিংবা শহরসমূহে নিয়মিতভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে।
(নফল নামাজ জমাতসহকারে আদায় করা জায়েজ এ মর্মে আমার লিখিত কিতাব ’’الصلواة التطوع باقتداع المطوع‘‘ নামক কিতাবটি দেখুন)
উপরোক্ত বর্ণনাসমূহ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল যে, জানাজার সাথে চলার পথে উচ্চরবে যিকির করা শুধু জায়েজ নয়; বরং মোস্তাহাব।
আ’লা হযরত শাহ্ আহমদ রেজা খাঁন (رضي الله عنه) তাঁর রচিত ‘ফতোয়ায়’ ‘জানাজা’ নিয়ে পথ চলার সময় সরব যিকির মোস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন। তার সপক্ষে তিনি বহু অকাট্য প্রমাণও দাঁড় করেছেন।
হযরত হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ এয়ার খাঁন নঈমী (رضي الله عنه) এ মাছআলা সম্পর্কে ‘জাআল্ হক্ব’-১ম খণ্ডে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং এ প্রসঙ্গে উদ্ভুত বিভিন্ন প্রশ্নাবলীর উত্তর দিয়ে একথাই প্রমাণিত করেছেন যে, জানাজার সাথে পথ চলার সময় সরবে যিকির করা মোস্তাহাব।
_____________
আল্-ক্বাওলুল হক্ব
(জানাজায় উচ্চরবে যিকির জায়েয প্রসঙ্গে)
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী (رحمة الله)
অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মন্নান (এম.এম.এম.এফ)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন