এক নজরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের রাকাত সমূহ


ওয়াক্ত    ফরয    ওয়াজিব    সুন্নাতে মোয়াক্কাদা    সুন্নাতে গায়রে মোয়াক্কাদা    নফল    মোট রাকাত


ফযরঃ    

২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ  +   ২ রাকাত ফরজ =  ৪ রাকাত



যোহরঃ    


৪ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ +   ৪ ফরজ +২ সুন্নাত = ৬ রাকাত   +   ২ রাকাত নফল = ১২ রাকাত



আছরঃ    


৪ রাকাত সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ    +   ৪ রাকাত ফরজ   =    ৮ রাকাত



মাগরিবঃ    


৩ রাকাত    ফরজ  +  ২ রাকাত    সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ +    ২ রাকাত   নফল = ৭ রাকাত



এশাঃ    


৪ রাকাত +  ২ রাকাত + ৪ রাকাত +  ২ রাকাত = ১২ রাকাত + ৩ রাকাত    +    ২ রাকাত  =  সর্বমোটঃ    ১৭ রাকাত  ।  



জুমার নামায ১৪ রাকাত। ৪ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্, ২ রাকাত ফরয, ৪ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, ২ রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদাহ, ২ রাকাত নফল। তাছাড়াও ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল অযু এবং ২ রাকাত দুখূলুল মসজিদ নামায রয়েছে।



নামাযের ফরয সমূহ



নামাযের বাইরে এবং ভেতরে ১৩টি ফরয। এ ১৩টি ফরযকে আরকান ও আহ্কাম বলে। আহ্কাম ৭টি, আর আরকান ৬টি। এ ১৩টি ফরযের যে কোন একটি ছুটে গেলে বা বাদ পড়লে নামায হবে না। নামায পুনরায় আদায় করতে হবে।



নামাযের আহকাম ৭টি



(নামাজের বাইরের ফরয)


(১) শরীর পাক হওয়া।


(২) কাপড় পাক হওয়া।


(৩) সতর ঢাকা।


(৪) নামাযের জায়গা পাক হওয়া।


(৫) কেবলামুখী হওয়া।


(৬) ওয়াক্ত মত নামায পড়া।


(৭) নামাযের নিয়ত করা।



নামাযের আরকান ৬টি



(১) দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা। দাঁড়িয়ে পড়তে অক্ষম হলে বসে নামায পড়া, বসতে অক্ষম হলে শুয়ে নামায পড়া। বিনা কারণে ফরয নামায বসে পড়লে আদায় হবে না। তবে নফল নামায পড়া যাবে।


(২) তাকবীরে তাহরিমা বলা।


(৩) ক্বেরাত পড়া।


(৪) রুকু করা।


(৫) সিজদা করা।


(৬) শেষ বৈঠকে বসা।



নামাযের ওয়াজিব সমূহ



(১) নিয়ম কানুনের প্রতি লক্ষ্য রেখে নামায পড়া।


(২) রুকু-সিজ্দায় কিছুক্ষণ দেরী করা।


(৩) রুকু ও সেজ্দা যথাযথ ভাবে আদায় করা।


(৪) দুই রাকাতের পর বসা। অর্থাৎ নামায ৪ রাকাত, ৩ রাকাত অথবা ৮ রাকাত হলে ২ রাকাতের পর বসা।


(৫) আত্তাহিয়্যাতু পড়া।


(৬) সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করা।


(৭) বিতরের নামাযে দোয়া কুনুত পড়া।


(৮) দুই ঈদের প্রত্যেক নামাযে অতিরিক্ত ৬ (ছয়) তক্বীর বলা।


(৯) মাগরিব ও এশার নামাযের প্রথম দুই রাকাতে, ফজরের দুই রাকাত ফরয নামাযে, জুমার নামাযে, দুই ঈদের নামায ও তারাবীহের নামাযে ইমামকে উচ্চস্বরে ক্বেরাত পাঠ করা এবং যোহর ও আছরের নামাযে চুপে চুপে ক্বেরাত পাঠ করা।


(১০) সূরা ফাতিহা পড়া।


(১১) সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন একটি সূরা অথবা একটি বড় বা তিনটি ছোট আয়াত পড়া।


(১২) ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য কোন সূরা বা ক্বেরাত পাঠ করা।



উক্ত ওয়াজিব সমূহের মধ্যে যে কোন একটি বাদ পড়লে সিজ্দায়ে ছহু বা ভুল সংশোধনী সিজ্দা দিতে হয়।



নামাযের সুন্নাত সমূহ



(১) আল্লাহু আক্বর তথা তাক্বীরে তাহরীমা বলার সময় পুরুষ কানের লতি পর্যন্ত এবং স্ত্রীলোক কাঁধ বরাবর দুই হস্ত উত্তোলন করা এবং হস্ত উত্তোলন করার সময় আঙ্গুলগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় খোলা রাখা।


(২) ইমাম বড় আওয়াজে তাক্বীর বলা এবং তাক্বীরে তাহরীমার পর ফরয, সুন্নত, বিতর, নফল, তারাবীহ্ ইত্যাদি যাবতীয় নামাযে ইমাম, মোক্তাদি এবং একা নামাযী প্রত্যেকেরই ছানা পড়া।


(৩) তারপর চুপে চুপে আউযুবিল্লাহ্ ও বিছ্মিল্লাহ্ সম্পূর্ণ পড়া।


(৪) ইমাম, মোক্তাদি ও একা নামাযী সূরা ফাতিহার পর ‘আমীন’ নি:শব্দে বলা।


(৫) জমাতে ইমাম ক্বেরাত উচ্চস্বরে পড়ার সময় وَلَا الضَّآلِّـيْـنَ বলা শেষ করলে মোক্তাদিগণ প্রত্যেকে নিঃশব্দে ‘আমীন’ বলা।


(৬) পুরুষ ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রেখে নাভীর নীচে বাম হাতের তালু দ্বারা ধরা। স্ত্রীলোক বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রেখে বাম হাতের তালু দ্বারা সীনা চেপে ধরা।


(৭) রুকুতে যাবার সময় তাক্বীর বলা এবং রুকুতে দুই হাতের তালু দ্বারা আঙ্গুলগুলি নীচের দিকে রেখে দুই হাঁটুর মালা চেপে ধরা।


(৮) রুকুতে سُبْحَانَ رَبِّـىَ الْعَظِيْمِ ৩ বার বলা।


(৯) রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়াবার সময় একা নামাযী سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ও رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ উভয়ই বলা এবং ইমাম سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলার সময় মোক্তাদীগণ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ  বলা।


(১০) সিজ্দায় যাবার সময় তাক্বীর বলে যাওয়া এবং সিজ্দায় হস্তদ্বয় ও হাঁটুদ্বয় জমিনে রাখা।


(১১) সিজ্দায় سُبْحَانَ رَبِّـىَ الْاَعْلٰى ৩ বার বলা।


(১২) সিজ্দা হতে তাক্বীর বলে উঠে পুরুষ বাম পা বিছিয়ে ডান পা খাড়া করে বাম পায়ের উপর বসা এবং স্ত্রীলোক নীতম্বের উপর বসে পদদ্বয় ডান দিকে বাহির করে দেয়া।


(১৩) দুই সিজ্দার মধ্যবর্তী সময়ে সোজা হয়ে বসা এবং রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ান।


(১৪) শেষ বৈঠকে দরূদ ও দোয়া মাছুরা পাঠ করা।


(১৫) তারপর ডান ও বাম দিকে সালাম ফিরে নামায শেষ করা।



নামাযের মুস্তাহাব সমূহ



(১) নামাযের মধ্যে যথাসাধ্য হাঁচি বন্ধ করার চেষ্টা করা ও হাই আসলে মুখে হাত রাখা।


(২) জমাতে নামায পড়ার সময় حَـىَّ عَلٰى الصَّلٰوةِ বলার সময় নামাযের জন্য দাঁড়ান এবং قَدْ قَامَتِ الصَّلٰوةُ বলার সময় ইমামকে নামায আরম্ভ করা।


(৩) রুকুতে মাথা ও পিঠ সোজা রাখা এবং সিজ্দায় যাবার সময় প্রথমে দুই হাঁটু তারপর দুই হাত, পরে নাক অতঃপর কপাল মাটিতে রাখা। উঠবার সময় প্রথমে কপাল, তারপর নাক উত্তোলন করা।


(৪) সিজ্দা হতে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হলে দুই হাতের তালু দ্বারা দুই হাঁটুর মালাতে ভর দিয়া উঠা।


(৫) নামাযে দাঁড়ানো অবস্থায় দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থানে চারি আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁক রাখা।


(৬) বৈঠকে দুই জানুর উপর দুই হাত রাখা।


(৭) বেজোড় সংখ্যা তছ্বীহ্ পাঠ করা।


(৮) সিজ্দায় পেট হতে বাজু পৃথক রাখা ও পেটকে রান হতে পৃথক রাখা এবং রানকে নলা হতে পৃথক রাখা। কিন্তু স্ত্রীলোকের এই সমস্তের বিপরীত করা অর্থাৎ প্রত্যেক অঙ্গ মিলিয়ে রাখা।


(৯) দাঁড়ান অবস্থায় সিজ্দার জায়গায় দৃষ্টি রাখা।


(১০) রুকুতে পায়ের পিঠের উপর দৃষ্টি রাখা।


(১১) বসা অবস্থায় দুই রানের মধ্যবর্তী স্থানে দৃষ্টি রাখা।


(১২) নামাযের নিয়ত বাঁধবার সময় চাদরের মধ্য হতে হাত বের করা। মহিলাদের ক্ষেত্রে হাত বের করতে হবে না।

___________________

গাউছিয়া আজিজিয়া নামায শিক্ষা

রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী (রহ)

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন