অনেক সময় মুসলমান জিনেরা পাপী মানুষকে শাস্তিও দিয়ে থাকে। যেমন- ইবনে আকীল “কিতাবুল ফুনূন” উল্লেখ করেন: আমাদের একটি ঘর ছিল।
–––––––––––––
(আমীরে আহলে সুন্নাত دامت برکاتهم العاليه উর্দু ভাষায় শাজারায়ে কাদেরীয়া, রযবীয়া, আত্তারিয়া সংকলন করেছেন।) এতে নিরাপদ থাকার বিভিন্ন ওয়াযীফা দেয়া রয়েছে। এ শাজারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাতে অনুবাদ করা হয়েছে। যেমন- এটি লেখার সময় পর্যন্ত আরবী, বাংলা, সিন্দি, হিন্দী, গুজরাটী, ইংরেজী, কেন ও ফ্রান্স ইত্যাদি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। আমীরে আহলে সুন্নাত دامت برکاتهم العاليه নিজের মুরীদ ও তালিবদেরকে এটা পাঠ করা সাধারণ অনুমতি প্রদান করেছেন। এ পকেট সাইজ শাজারা মাকতাবাতুল মদীনার প্রতিটি শাখা থেকে হাদিয়া প্রদান পূর্বক সংগ্রহ করতে পারেন।
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তির নিকট আমার আলােচনা হল আর সে আমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করল না তবে সে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ ব্যক্তি।” (আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব)
যে কেউ এটাতে থাকত এবং রাতে ঘুমাত তবে সকালে তার লাশই পাওয়া যেত! একদা একজন পশ্চিমা মুসলমান আসল আর সে এ ঘরটি পছন্দ করে কিনে নিল। সে সেখানে রাত কাটাল আর সকালে একেবারে ভাল ও জীবিত অবস্থায় ছিল। এতে প্রতিবেশীরা অবাক হয়ে গেল। ঐ ব্যক্তি ঐ ঘরে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করার পর কোথাও চলে যায়। যখন তার কাছে (এ ঘরে নিরাপদ থাকার কারণ) জিজ্ঞাসা করা হল তখন সে বলল: যখন আমি এ ঘরে রাত কাটাতাম তখনই ইশার নামাযের পর কুরআনে করীম তিলাওয়াত করতাম। একবার একজন রহস্যে ভরা যুবক কুয়া থেকে বের হয়ে আমাকে সালাম করল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। সে বলতে লাগল, ভয় করবেন না, আমাকেও কিছু কুরআনে করীম শিক্ষা দিন। সুতরাং আমি তাকে কুরআনে করীম শিক্ষা দিতে লাগলাম। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এ ঘরের ব্যাপারটা কি রকম? সে বলল: “আমি মুসলমান জিন।” আমি কুরআনে পাকও তিলাওয়াত করে থাকি আর নামাযও আদায় করি। এ ঘরে প্রায়ই অধিকাংশ শরাবী ও পাপী লােক থাকার জন্য এসেছে, তাই আমি তাদেরকে গলা টিপে হত্যা করেছি। আমি তাকে বললাম: রাতে আপনাকে ভয় লাগে, দয়া করে দিনে আসতে থাকুন। সে বলল: ঠিক আছে। সুতরাং সে দিনে কুয়া থেকে বাইরে আসত আর আমি তাকে পড়াতাম। একদা এমন হল যে, ঐ জিন আমার কাছে কুরআন শিখছিল। তখন এক আমিল ঐ মহল্লায় আসল আর ডাক দিয়ে বলছিল, “আমি সাপে দংশন, বদন্যর ও জ্বীন-পরীর আছরের জন্য ঝাড় ফুঁক দিয়ে থাকি।” ঐ জিন বলল: “এটা কে?” আমি বললাম: “এটা ঝাড়-ফুককারী।” জ্বিন বলল: “একে আমার কাছে ডেকে নিয়ে আসুন। অতএব আমি গেলাম আর তাকে ডেকে আনলাম। দেখতে না দেখতেই ঐ জ্বিন ছাদের উপর একবড় অজগরে রূপ নিল! ঐ আমিল দম করলে তারপর অজগরের রূপ নিল! তখন ঐ আসল ফুঁক মারল আর ঐ অজগরটি ছটফট করতে লাগল শেষ পর্যন্ত ঘরের মাষখানে ঐ আমিল (সাপ মনে করে) সেটাকে ধরে নিজের ঝুড়িতে আবদ্ধ করে ফেলল।
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “তােমরা যেখানেই থাক আমার উপর দরূদে পাক পড়, কেননা তােমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছে থাকে।” (তাবারানী)
আমি তাকে নিষেধ করলে সে বলল: “এটা আমার শিকার এটা আমি নিয়ে যাব।” আমি তাকে একটি আশরাফী (স্বর্ণমুদ্রা) দিলাম তখন সে তা ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। সে চলে যাওয়ার পর ঐ অজগরটি নড়াচড়া করে পূর্বের আকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল। কিন্তু সে দূর্বল হয়ে পীতবর্ণ ধারণ করল! আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “তােমার কী হয়েছে? ” জ্বিন জবাব দিল, “ঐ আমিল বরকতময় নাম সমূহ পাঠ করে ফুঁক দিয়েছে তাই আমার এ অবস্থা হয়েছে।” আমার জীবিত থাকার আর নেই। যখন আপনি কুয়াতে চিৎকারের আওয়াজ শুনবেন তখন এখান থেকে চলে যাবেন। ঐ পশ্চিমা মুসলমান বলল, আমি রাতে চিৎকারের আওয়াজ শুনলাম তখন আমি ঘর ছেড়ে দূরে চলে গেলাম। (লকতুল মারজান ফী আহকামিল জান, ১০৫ পৃষ্ঠা)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এ কম্পন সৃষ্টিকারী ঘটনা থেকে এটা শিক্ষা পাওয়া গেল, অনেক সময় তামাসা করতে গিয়ে চরম মূল্য দিতে হয়। সম্ভবত ঐ জ্বিন অজগর সেজে ঐ আমিলকে এই ভাবে উপহাস করার চেষ্টা করেছিল যে, দেখে নেই সে কি করে? কিন্তু ঐ আমিল নিজের কাজে দক্ষ ছিল আর সে ‘আসমায়ে মােবারাকা পাঠ করে এমন ফুঁক মারল যে, ঐ বেচারা জ্বিনের বেঁচে থাকার আশাই রইলাে না। সুতরাং কাউকে দূর্বল মনে করে উপহাস করা উচিত নয়। এছাড়া জানা গেল, গুনাহের অমঙ্গলের কারণে দুনিয়াতেই বালা-মুসিবত আসতে পারে। যেভাবে ঐ জ্বিনাক্রান্ত ঘরে আগত শরাবী ও মন্দকর্মকারীদের জ্বিন গলা টিপে হত্যা করে ফেলত। এ থেকে ঘরে ফিল্ম, নাটক দর্শনকারী ও বিভিন্ন ধরণের গুনাহের মধ্যে ব্যস্ত ব্যক্তিদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। কেননা আবার যেন এমন না হয় যে, দুনিয়াতেই গুনাহের শাস্তি স্বরূপ কোন জ্বিন চেপে না বসে! এছাড়া এটাও জানা গেল, ইবাদত ও তিলাওয়াতের কারণে বালা-মুসিবত দূরীভূত হয়। যেরূপ ঐ রহস্যে ভরা ঘরের জ্বিন নামাজী ও তিলাওয়াত কারী মুসলমানদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে নিল। সুতরাং নিজের ঘরকে নামাজ, তিলাওয়াত ও নাত দ্বারা সাজিয়ে রাখুন। আর ফিল্ম, নাটক ও গান-বাজনার অমঙ্গল পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন।
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “প্রতিটি উদ্দেশ্য সম্বলিত কাজ, যা দরূদ শরীফ ও যিকির ছাড়াই আরম্ভ করা হয়, তা বরকত ও মঙ্গল শূণ্য হয়ে থাকে।” (মাতালিউল মুসাররাত)
انشاء اللّٰه عزّ وجل কল্যাণই কল্যাণ হবে। গুনাহের অভ্যাস থেকে মুক্তিও ইবাদতের প্রশিক্ষণ লাভের জন্য দাওয়াতে ইসলামীর মাদানী কাফেলায় আশিকানে রাসুলদের সাথে সফর করুন। আখিরাতের মহান সাওয়াবের সাথে সাথে انشاء اللّٰه عزّ وجل দুনিয়াবী বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি লাভের উপায়ও হবে।
_______________
কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন