হুযূর পূর নূর (ﷺ) এর তাঁর বুদ্ধিমত্তা


বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে সকল জ্ঞানের শাখার শেকড়, জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞা প্রবাহিত হওয়ার মূলাধার ও উৎসমুখ। এর থেকেই নিঃসৃত হয় সুতীক্ষ্ণ উপলব্ধি, স্পষ্ট চিন্তা ও ধারণা, নিখুঁত পর্যবেক্ষণ, সঠিক মতামত, নিজ সত্তার জন্যে কী ভালো তা জানা, ক্ষুধা ও কামনা-বাসনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম, বিচক্ষণ নীতি ও তার বাস্তবায়ন, আর সৎ গুণাবলী অর্জন ও দোষত্রুটি বর্জন।


আমরা ইতোমধ্যে এক্ষেত্রে মহানবী (ﷺ)-এর মাক্বাম বা মর্যাদার কথা ইঙ্গিত করেছি এবং মেধার ক্ষেত্রে তাঁর অর্জন-ও উল্লেখ করেছি; আর তাঁর সুগভীর জ্ঞান সম্পর্কেও বলেছি, যে জ্ঞানের পর্যায়ে অন্য কোনো নশ্বর সত্তা পৌঁছুতে পারেনি। তাঁর শাহী (রাজকীয়) মর্যাদা এ থেকেই নিঃসৃত এবং তা এরই এক বহিঃপ্রকাশ, যার সত্যাসত্য নির্ধারণ এমন যে কেউ করতে পারবেন, যিনি অধ্যয়ন করেছেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আহওয়াল তথা (আধ্যাত্মিক) অবস্থার ক্রমবিকাশ, তাঁর জীবনের পথ-চলা, তাঁর হাদীস তথা বাণীর জ্ঞান-প্রজ্ঞা, তৌরাত, ইনজিল ও পূর্ববর্তী ঐশীগ্রন্থসমূহে নিহিত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান, পুণ্যাত্মাবৃন্দের অন্তর্দৃষ্টিমূলক জ্ঞান ও পূর্ববর্তী জাতিগুলোর ইতিহাস ও যুদ্ধসম্পর্কিত জ্ঞান, রূপক দ্বারা কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁর গুণ, মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, শরীয়তের আইন-কানুন প্রয়োগ, তাঁর অতুলনীয় আদব (শিষ্টাচার) ও প্রশংসাযোগ্য অভ্যেস ও আচার-আচরণের ভিত্তি স্থাপন।


এটা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয় জ্ঞানের প্রতিটি শাখায়, যেখানে মানুষেরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বাণীকে মডেল বা দৃষ্টান্ত এবং তাঁরই উদাহরণগুলোকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করেন, যেমনটি করা হয় স্বপ্নের তা’বির করার সময়, চিকিৎসা ও ওষুধের বেলায়, উত্তরাধিকারের অংশীদারিত্বে, বংশপরম্পরায় এবং অনুরূপ অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেগুলো আমরা তাঁর মো’জেযা তথা অলৌকিক ঘটনাগুলোর আলোচনাকালে আলোকপাত করবো, ইনশা’আল্লাহ। এগুলোর সব কোনো শিক্ষা বা নির্দেশনা গ্রহণ বা পূর্ববর্তী শাস্ত্রলিপি পাঠ অথবা তাদের পণ্ডিতদের কাছ থেকে জানা ব্যতিরেকেই হয়েছিল। তিনি ছিলেন উম্মী নবী (عليه السلام), যিনি এগুলো সম্পর্কে জেনেছিলেন আল্লাহ (ﷻ) কর্তৃক তাঁরই বক্ষ সম্প্রসারণ, বিষয়াবলীর দিকনির্দেশনা দান এবং কুরআন মজীদ তেলাওয়াতকরণ দ্বারা।


মহানবী (ﷺ) কী রকম ছিলেন সে সম্পর্কে অনুসন্ধান করে এবং তাঁর নবুওয়্যতের ফায়সালাকারী প্রমাণগুলো যাচাই করে সামান্যতম সন্দেহ ছাড়াই এ বিষয়টি নির্ধারণ করা যায়। আমরা প্রতিটি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে এটাকে দীর্ঘ করবো না, কেননা সেগুলোর সর্বমোট সংখ্যা নির্ণয় করা বা সেগুলো সম্পর্কে সামগ্রিক বর্ণনা দেয়া একটি অসম্ভব ব্যাপার।


আল্লাহ (ﷻ) হুযূর পূর নূর (ﷺ)-কে ভবিষ্যতে যা ঘটবে এবং অতীতে যা ঘটেছিল, মহান প্রভুর বিস্ময়কর ক্ষমতা ও তাঁরই মালাকুতের বিশালত্ব সম্পর্কে যা শিখিয়েছিলেন এবং জানিয়েছিলেন, তা স্বীকার করাটাই মহানবী (ﷺ)-এর মেধার জন্যে যথোপযুক্ত ছিল।


❏ আল্লাহ (ﷻ) ইরশাদ ফরমান, “আর (হে মাহবূব) আল্লাহ আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা কিছু আপনি জানতেন না এবং আপনার প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ রয়েছে।” [আল-কুরআন, ৪:১১৩]


মহান প্রভুর এই মহা অনুগ্রহ নিরূপণ করতে গিয়ে বুদ্ধি হতভম্ব হওয়ার দশা হয়। আর বাকশক্তি-ও লোপ পায়, যা এর পূর্ণ বিবরণ দেয়া তো দূরে, কোনো রকম বর্ণনা দিতেও অপারগ।

________________

কিতাবঃ আশ শিফা [অসম্পূর্ণ]

মূল: ইমাম কাজী আয়াজ (رحمة الله)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন


সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন