কুরবানির গোশত এবং চামড়ার বিধান


উত্তম এই যে, গোশত তিন ভাগ করবে। একভাগ ফকির মিসকিনদের জন্য, একভাগ বন্ধু-আত্মীয়-নিকটজনদের জন্য এবং আরেক ভাগ নিজেদের জন্য।

গোশত, চামড়া ইত্যাদি কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে দেয়া যাবে না।

যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানি করা হয়, তবে এরও একই হুকুম। নিজে খাবে অন্যকেও দিবে। আর যদি মৃত ব্যক্তির ওসিয়ত থাকে যে, তার পক্ষ হতে যেন কুরবানি করে দেওয়া হয় তবে কুরবানিকারী গোশত খাবে না। বরং সম্পূর্ণ গোশত সদকা করে দিতে হবে।

কুরবানির চামড়া সদকাও করে দিতে পারবে, আবার নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। যেমন, নামাযি বানিয়ে নিজে ব্যবহার করা জায়িয, কিন্তু যদি তা বিক্রি করে দেওয়া হয়, এর মূল্য সদকা করে দিতে হবে।

দ্বিনি মাদরাসা এবং মসজিদেও তা দান করা জায়িয। তবে মসজিদের ইমামকে বেতন হিসেবে দেওয়া জায়িয না।

জবাই করার আগে কুরবানির পশুর পশম ও দুধ গ্রহণ করা মাকরূহ এবং পশু থেকে কোন উপকার হাসিল করাও মাকরূহ। যেমন, এর উপর সাওয়ার হওয়া বা বোঝা বহন করানো ইত্যাদি।

কুরবানির পশু থেকে যদি পশম কাটা হয়, তাও সদকা করে দিবে।

দ্বিনি মাদরাসার গরিব ছাত্রদেরকেই চামড়া সদকা করা উত্তম। কেননা এতে সদকার ছাওয়াবও হলো এবং দ্বিনের খিদমতও হলো, কিন্তু এর মধ্যে অত্যধিক সর্তক হওয়া প্রয়োজন যে, তা যেন সুন্নি-সহিহ মাদরাসা হয়। বেদ্বিন, বদ-মাযহাবকে কখনই দেয়া যাবে না। এগুলি ঈমানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এমন যেন না হয়ে যায় যে, তারা কুরবানির চামড়ার সাথে ঈমানও ছিনিয়ে নেওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কুরবানির গোশত কাফির, হিন্দু, মুরতাদ, বেদ্বিন বা এ জাতীয় কাউকে দেয়া যাবে না। - বাহারে শরিয়ত।



হালাল পশুর অংঙ্গ-প্রতঙ্গের বিধান

 হালাল পশুর সব অংশই হালাল। তবে কিছু অংশ রয়েছে হারাম, অথবা নিষিদ্ধ, অথবা মাকরূহ্। এগুলো মোট ২২টি। তা হলো.

১.        রগের রক্ত।

২.        পিত্ত।

৩.        মূত্রথলি.

৪.        পুংলিঙ্গ।

৫.        স্ত্রী লিঙ্গ।

৬.        অন্ডকোষ।

৭.        জোড়া, শরীরের গাঁট।

৮.        হারাম মজ্জা।

৯.        ঘাড়ের দো পাট্টা, যা কাধ পর্যন্ত টানা থাকে।

১০.        কলিজার রক্ত।

১১.        তিলির রক্ত।

১২.        মাংসের রক্ত, যা জবাই করার পর গোশত থেকে বের হয়।

১৩.        হৃদপিন্দের রক্ত।

১৪.        পিত্ত অর্থাৎ ঐ হলদে পানি যা পিত্তের মধ্যে থাকে।

১৫.        নাকের আর্দ্রতা (ভেড়া-ভেড়ীর মধ্য অদিক হারে হয়ে থাকে) ।

১৬.        পায়খানার রাস্তা।

১৭.        পাকস্থলি বা ওজুরী।

১৮.        নাড়িভূড়ি।

১৯.        বীর্য।

২০.        ঐ বীর্য, যা রক্ত হয়ে গেছে।

২১.        ঐ বীর্য, যা মাংসের টুকরা হয়ে গেছে।

২২.        ঐ বীর্য, যা পূর্ণ জানোয়ার হয়ে গেছে এবং মৃত অবস্থাই বের হয়েছে অথবা জবাই করা ছাড়া মারা গেছে।১০১

১০১ - ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া, খন্ড: ২০, পৃষ্ঠা: ২৪০-২৪১।


কলিজা, বকরির সিনা এবং সামনের দু’পা  হুযুর পাক (ﷺ)-এর খুবই পছন্দের ছিল।

_________________

কুরবানি (ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও আহকাম)

গ্রন্থনা ও সংকলন:

মুফতি মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন আন-নাজিরী

অধ্যক্ষ, জামি‘আ-এ-‘ইলমে মদীনা, নেত্রকোণা

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন