❏ কুরবানি করার পূর্বে পশুকে ঘাস-পানি দিবে, যেন ক্ষুদার্ত ও পিপাসার্ত অবস্থায় জবাই করা না হয়।
❏ একটি পশুর সামনে অন্যটি জবাই করবে না।
❏ প্রথমে ছুরি দাড়ালো করে নিতে হবে।
❏ অতঃপর পশুটিকে বাম পাশে কেবলামুখী করে শুইয়ে দিবে এবং নিজের ডান পা পশুটির গলার উপর রেখে তারাতারি জবাই করে দিবে।
❏ জবাই করার প্রথমে এ দু‘য়া পড়ে নিবে:
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ فَطَرَ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيْفًا وَّمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ إنَّ صَلَاتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ
উচ্চারণ: ইন্-নী ওয়াজ্জাহতু ওযাজহিয়া লিল্লাযী ফাতারাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বা হানীফাও ওয়ামা আনা- মিনাল্ মুশরিকীন। ইন্না ছলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রাব্বিল ‘আ-লামীন। লা-শারীকা লাহূ ওয়া বিযা-লিকা উমিরতু ওয়া আনা- মিনাল্ মুসলিমীন।
❏ কুরবানি নিজের পক্ষ হতে হলে জবাই করার পর নিম্নোক্ত এ দু‘আটি পড়বে:
اَللّٰهُمَّ تَقَبَّلْ مِنِّيْ كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ خَلِيْلِكَ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَبِيْبِكَ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা তাক্বাব্বাল্ মিন্নী কামা- তাক্বাব্বালতা মিন খালীলিকা ইবরা-হীমা ‘আলাইহিস্ সালাম, ওয়া হাবীবিকা সায়্যিদিনা- মুহাম্মাদিন ছল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
❏ আর যদি অন্যদের পক্ষ হতে জবাই করা হয় তবে مِنِّيْ (মিন্নী)-এর স্থলে - مِنْ (মিন্) বলে তাদের নাম বলবে।
❏ যতক্ষণ পর্যন্ত পশুটি নিরব ও ঠান্ডা না হয়ে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত হাত-পা কাটবে না, চামড়া আলাদা করবে না।
জবাই সম্পর্কিত কিছু জরুরি মাসআলা
নিজের কুরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করাই উত্তম। অন্যের দ্বারা জবাই করালেও জায়িয হবে, তবে জবাই করার স্থানে উপস্থিত থাকা উত্তম। ৯৪
৯৪ - ফাতওয়ায়ে শামী।
জবাই করার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলতে ভুলে গেলে, পরে পড়ে নিবে।
জবাইকারী ক্বিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। বিনা-প্রয়োজনে ছেড়ে দেওয়া মাকরূহ।
প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষ, বালিগ-নাবালিগ, সুস্থ-পাগল, পবিত্র বা অপবিত্র সকলের জন্যই জবাই করা জায়িয। তবে শর্ত হলো, জবাই করার শরয়ি পদ্ধতি জানতে হবে এবং জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। ৯৫
৯৫ - মালাবুদ্দামিনহু।
শরয়ি নিয়ম অনুযায়ী জন্তু জবাই করার সময় চারটি রগ কাটতে হয়। শ্বাসনালী, খাদ্যনালী এবং এর দুই পাশে দু’টি রক্তের মোটা রগসহ কমপক্ষে তিনটি কাটা গেলে খাওয়া হালাল হবে। অথবা উল্লেখিত চার রগের বেশির ভাগ কাটা গেলে জন্তু খাওয়া হালাল হবে, অন্যথায় হারাম হবে। ৯৬
৯৬ - ফাতওয়ায়ে শামী।
জবাই করার সময় সম্পূর্ণ গলা কেটে ফেলা মাকরূহ। ৯৭
৯৭ - ফাতহুল কাদির।
কুরবানির জন্তু মেশিন দ্বারা জবাই করা জায়িয। কিন্তু শর্ত হলো, সুইচ চালু করার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হবে এবং উল্লেখিত রগসমূহ কাটতে হবে।
জবাই করার সময় জন্তুর গলার উপর পা রাখা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
‘বিসমিল্লাহ’ পড়ার পর জন্তু পালিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার জবাই করতে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া ওয়াজিব।
অমুসলিমের হাতে পশু জবাই করা হলে:
কুরবানির পশু মুসলমানদের দ্বারা জবাই করানো চাই। যদি কোন অগ্নি উপাসক, কাফির, মুশরিক, হিন্দু, বেদ্বিন, অথবা মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) দ্বারা কুরবানির পশুটি জবাই করা হয়, তবে কুরবানি হবে না এবং গোশত খাওয়াও হারাম হবে। ৯৮
৯৮ - বাহারে শরিয়ত।
দু’জনে মিলে জবাই করতে চাইলে:
অন্যকাউকে দিয়ে পশু জবাই করালো এবং নিজের হাতও ছুরির উপর রাখল, যেন দু’জন মিলেই জবাই করল। এঅবস্থায় দু’জনকেই ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ওয়াজিব। একজনও যদি ইচ্ছা করে ছেড়ে দেয় এই ভেবে যে, দ্বিতীয় ব্যক্তি তো বলেই দিয়েছে, আমার বলার প্রয়োজন কী, তবে পশু হারাম হবে।
- আদ-দুররুল মুখতার।
_________________
কুরবানি (ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও আহকাম)
গ্রন্থনা ও সংকলন:
মুফতি মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন আন-নাজিরী
অধ্যক্ষ, জামি‘আ-এ-‘ইলমে মদীনা, নেত্রকোণা
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন