গাউছে পাকের খেদমতে খাজা গরীবে নেওয়াজের আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন
হুজুর সাইয়্যেদেনা সুলতানুল হিন্দ খাজায়ে খাজেগান নায়েবে মুস্তফা আতাউর রসূল মুঈনুদ্দীন হাসান সানজিরী চিশ্তী (رحمة الله) হুজুরে গাউছে পাক (رحمة الله) এর প্রতি তাঁর আন্তরিক ভক্তি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে বলেন:
অনুবাদ: হে সরকারে গাউছে পাক! আপনার পবিত্র সত্তা হেদায়েতের আলোক বর্তিকা। আর আপনি হচ্ছেন হুজুরে মুস্তফা (ﷺ) এবং আল্লাহ্ জাল্লা শানুহুর নির্বাচিত এবং উভয় জগতের বাদ্শাহ ও কুত্বুল আকতাব হলেন আপনি। আপনার শান্ মর্যাদা দেখে আসমান এবং যমীন স্তম্বিত হয়েছে।
অনুবাদ: আপনার পবিত্র সত্তা সততার মধ্যে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক এর গুণে গুণান্বিত। ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় আপনি হযরত ওমর (رضي الله عنه) এর ন্যায়। আপনি হযরত উসমান গণী (رضي الله عنه) এর ন্যায় লজ্জার খনি। বদান্যতা ও দানশীলতায় আপনি হযরত আলী (رضي الله عنه) এর সাদৃশ্য।
অনুবাদ: হুজুর গাউছে পাক (رحمة الله) শরীয়তের আমলের ব্যাপারে পরিপূর্ণ ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন। তিনি হযরত জা’ফর ত্বাইয়ার (رضي الله عنه) এর মত অত্যন্ত হুশিয়ার ছিলেন। আরশে মুয়াল্লায় উড়ে বেড়াতেন। قَابَ قَوْسَيْنِ اَوْ اَدْنٰى এর গুঢ় রহস্য সম্পর্কে ওয়াকিফহাল অর্থাৎ মে’রাজ শরীফের রাতে হাবীবে খোদা (ﷺ) এবং আল্লাহ্ তা’য়ালার মাঝে নৈকট্য এর গোপন রহস্যের আলাপচারিতা সংঘটিত হয়েছিল সে সম্পর্কে তিনি ওয়াকিফহাল ছিলেন।
অনুবাদ: হুজুর আলাইহিস্ সালাতু ওয়াস্সালাম এর পবিত্র দরবারে তাঁর শান-মান ছিল অনেক শীর্ষে। তিনি তাঁর গোলামদের দোষ-ত্রুটি গোপনকারী। সমস্ত আউলিয়াগণের বাদশাহ্ এবং দয়া, করুণা, দান-বখশিশের ছিলেন অতুলনীয় ভাণ্ডার।
অনুবাদ: যেহেতু হুজুর (ﷺ) এর পবিত্র কদম তাঁর (গাউছে পাকের) মাথা মুবারকের তাজ। সেহেতু তাঁর পবিত্র কদম সারা জগতের সকলেরই মাথার তাজ। জগতের সকল কুতুব তাঁর পবিত্র দরবারে এমনভাবে পড়ে আছেন যেমনিভাবে ভিখারীরা বাদশাহর দরবারে পড়ে থাকে।
অনুবাদ: যদিও হযরত ঈসা (عليه السلام) মৃতকে জীবিত করেছেন তা তো কোন বড় কিছু করেননি। আপনি তো হুজুর (ﷺ) এর মৃত দ্বীন ইসলামের প্রাণের সঞ্চার করেছেন। সমগ্র জগত আপনাকে দ্বীনের পুনর্জীবন দানকারী উপাধি দ্বারা ডেকে থাকে এবং আপনার সৌন্দয্যের মোহে জগতবাসী কুরবান হয়েছে।
অনুবাদ: আমার নফ্স আমার উপর বিজয় লাভ করে আমাকে মেরে ফেলেছে। আমি রুগ্ন, লজ্জিত এবং চেহারায়ও রয়েছে মলিনতা। আমার একান্ত প্রত্যাশা যে, হুজুর (গাউছে পাকের) দয়া ও করুণায় আমার এ দুঃখ নিবারণের ঔষধ আমি পেয়ে যাব।
অনুবাদ: হযরত খাজা গরীব নাওয়াজ (رحمة الله) পরিশেষে গাউছে পাকের দরবারে নিজের দীনতা ও হীনতা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, আমি ‘মুঈনুদ্দীন’ হুজুরের পবিত্র নামের গোলাম মাত্র। আমি আপনার দয়া ও করুণার ভিখারী। আপনার গোলামীর মর্যাদা অর্জনের কারণে আমি খাজা হতে পেরেছি। আপনার সন্তুষ্টি অর্জনই আমার কাম্য। (দিওয়ানে মুঈনুদ্দীন, কালামুল আউলিয়া)
হযরত গরীব নেওয়াজ (رحمة الله) গাউছে পাকের শানে
غوث معظم، مختارنبى، مختار خدا، نور هدى
গাউছে মুয়াজ্জম, মুখতারে নবী, মুখতারে খোদা, নূরে হুদা ইত্যাদি উপাধি দ্বারা সম্বোধন করেছেন। বর্তমান যামানায় মানুষ নিজ পীরকে মনগড়া উপাধি যেমন কুতুব, গাউছে আজম, গাউছ, কুতুবুল আকতাব উপাধি দ্বারা স্মরণ করে থাকে, যদিও তারা ঐ পদ মর্যাদার যোগ্য নন। সরকারে গরীব নেওয়াজ যে সমস্ত উপাধি দ্বারা গাউছে পাককে স্মরণ করেছেন, অথচ তিনি না ছিলেন মুরীদ এবং ছিলেন না তাঁর সিল্সিলার সাথে সম্পৃক্ত। এতদসত্ত্বেও কত সরল অন্তরে, ফয়েজে পরিপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেছেন এবং আন্তরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। আর এ ভক্তি শ্রদ্ধাই মূলতঃ প্রত্যেক মানুষের নিকট সমাদৃত। সরকারে গরীব নেওয়াজ বলেছেন, আমি তো গাউছে পাকের নামের গোলাম মাত্র। যার কারণে জগতে খাজা উপাধি দ্বারা খ্যাতি লাভ করেছি। শত্রু-মিত্র সকলের মুখেই জারী রয়েছে খাজা এর আলোচনা। গরীব নেওয়াজের বুজুর্গী ও মর্যাদা সম্পর্কে জানে না, এমন কোন ব্যক্তি পৃথিবীতে নেই। যিনি লাখ লাখ অমুসলিমকে আহলে তাওহীদ বানিয়েছেন। তিনিই হিন্দুস্তানে তৌহিদের ঝাণ্ডা উড়িয়েছেন। স্বজাতির মধ্যে তৌহিদের ঝাণ্ডা উড়ানো বড় কথা নয়। হিন্দুস্তানের একে তো সবাই ছিল মুশরিক, রাজত্বও চলছিলো তাদের। আর এ মুশরিকদের ভেতরে থেকে তৌহিদের ঝাণ্ডা উড়ানোই বড় কথা। সাথে সাথে রাসূলে পাকের দেয়া মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা করাই বিশাল কৃতিত্ব।
_____________
কালামুল আউলিয়া ফি শানে ইমামিল আউলিয়া
রহমাতুল্লাহে তায়ালা আলাইহিম আজমাঈন
রচনায়:মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী
অনুবাদ: অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ নুরুল আলম খাঁন
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন